ছাতিম ফুলের গন্ধ (পর্ব-০৫)

বিতস্তা ঘোষাল
উপন্যাস, ধারাবাহিক
Bengali
ছাতিম ফুলের গন্ধ (পর্ব-০৫)

হিয়া- দিয়া ও কৃষ্ণাদেবী

দিয়া বাড়ি ফিরে দেখল মা মন দিয়ে লেখায় ব্যস্ত। সে, মা একবার আমাকে জড়িয়ে ধরো, বলে নিজেই পিছন থেকে জাপটে ধরল। তারপর বলল, তোমার কি দেরি হবে?

কেন বল? খিদে পেয়েছে?

 ভাবলাম এক সঙ্গে খাব। বাবা তো আজ ফিরবে না। জান?

হ্যাঁ। আম্মা বলল।

ও। বাবা আমাকে বলেছে।

আচ্ছা। চল খেয়ে নিই।

দিয়া বলল, মা একটা কথা বলব? আজ ঠাম্মার মুড অফ ।

কেন রে, কী হয়েছে ? নিশ্চয়ই খুব জ্বালিয়েছিস ?

সব সময় আমি কেন জ্বালাতে যাব ? তুমি নাকি গ্যাস রাখা নিয়ে কী বলেছ ,সেই নিয়ে বাবাকে বলছিল ,যতই আমি কাজ করি না কেন, সংসারের সব সামলাই না কেন হিয়ার মন পাওয়া যায় না। মাঝে মাঝে ভাবি কী পাপ করেছিলাম আমি যে এমন বৌমা পেলাম ?

গ্যাস রাখা নিয়ে? ল্যা্পটপ বন্ধ করে হিয়া মনে করার চেষ্টা করল। হ্যাঁ, মনে পড়েছে। সেতো মাস দুয়েক আগের ঘটনা। বারান্দা থেকে ড্রইং রুমে ফাঁকা সিলিন্ডারটা রেখে দিয়েছিল সে। কৃষ্ণাদেবীর তাতে আপত্তি ছিল।

 হিয়া তখন বলেছিল, তুমি একা থাকো মা ,আর বারান্দায় যেতে গেলে তোমার ঘরের মধ্যে দিয়েই যেতে হয়। কী দরকার বাইরের লোককে ঘরে ঢুকিয়ে? বলা তো যায় না, দিনকাল ভাল না। দেখে নিল বাড়িতে কেউ নেই, তখন বিপদ হতে কি আর সময় লাগে বেশি! তার থেকে বাইরের ঘরে থাকলে ওখান থেকেই নিয়ে নেবে । ভাববে ঘরে কেউ আছে। কিন্তু উনি রাজি হন নি। বললেন, সিলিন্ডার বারান্দায় রাখাই ভাল। আমি বুড়ো মানুষ। আমার কে ক্ষতি করবে ?

হিয়া আর এই নিয়ে কথা বাড়ায়নি। আসলে কিছুদিন আগেই সে পড়েছিল মিশনে ঢুকে বৃদ্ধার উপর নৃশংস অত্যাচারের খবর। সেটা পড়ে তার মনে হয়েছিল মা একা থাকেন , যদি এমন কিছু ঘটে যায় ! আজকাল মানুষ এত পাষন্ড হয়ে গেছে যে বড় ছোট কিছু দেখে না ,যা পেল তাতেই হামলা ..

হিয়ার খুব কান্না পেল। এত জটিল এদের মন ,তবু এদের কথাই সে এত কেন ভাবে ? যা হচ্ছে হোক না! আমি যতই ভাবি উনি আমার মা ,আসলে তো উনি তা নন। শাশুড়ি কোনোদিন মা হতে পারেন না। সে নিজের মনেই বিড় বিড় করল , হিয়া, তুমি শুধু কর্ম করে যাও ,এই সংসার থেকে কিছু পাবার আশা কোরো না। এই জগতে কেউ তোমার না ,শুধু জন্মদায়ী বাবা মা আর সন্তান ছাড়া। বাকি সব স্বার্থের সম্পর্ক। একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বারান্দা থেকে ভিতরের ঘরে এল ।

কৃষ্ণাদেবী সিরিয়্যাল দেখা শেষ হলে ঘর অন্ধকার করে শুয়েছিলেন। হিয়া বলল , মা খাবার বাড়ব ?

ক’টা বাজে? রিককে ফোন করেছিলে?

না মা। তুমি তো জানো ও বাইরে থাকলে ফোন করা বা ধরা কোনোটাই পছন্দ করে না। করলে ,ব্যস্ত আছি বলে কেটে দেয় ।

তাহলেও করতে হয়। তোমাদের বুঝি না কেমন সম্পর্ক । বর বলল ,আর উনি ফোন করলেন না। আমাকে তো তমালের বাবা দুবেলা মতের অমত হলেই বাড়ির বাইরে বের করে দিতেন। তা বলে কি আমি তার সাথে কথা বলা বন্ধ করেছিলাম ,নাকি আমাদের ভাব ছিল না ?

হিয়ার মনে হল, উনি কি তাহলে চাইছেন রিক ওকে বাড়ি থেকে বের করে দিক? দূর কী সব ভাবছি ! এ সব ভেবেই মানুষের মন বিষিয়ে যায়। ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। নিজেকে শান্ত রেখে হিয়া বলল , মা বাবা যখন বের করে দিতেন তখন তুমি কোথা দিয়ে আবার ঘরে ঢুকতে ?

সদর দরজা দিয়ে বের করত আর আমি পিছনের দরজা, যেটা দিয়ে সব কাজের লোকেরা কাজ করতে ঢুকতো সেখান দিয়ে আবার ঢুকে পড়তাম। তোমার শশুরের রাগ তো দেখনি ! যতটা দেখলে শুধু হিয়া হিয়া,তার বাইরে যেন ওনার কিছু জানার, ভাবার ছিল না। পড়তে আমার শাশুড়ির পাল্লায় ! এতটুকু এদিক ওদিক হলে সোজা বাপের বাড়ি ।

মা ,বলতে পারো মেয়েদের নিজের বাড়ি কোনটা ? বিয়ের আগে বাপের। বিয়ের পর শশুরের ,তারপর বর কিম্বা ছেলের। নিজের তার কোন বাড়িটা? কোনোটার ওপরেই কি তার নিজের জোর নেই মা ? তারপর অল্প  হেসে বলল ,আপাতত আমার কোনো বাড়ি নেই, তোমার আর তোমার ছেলের বাড়িতে আছি। এত রাতে বাবার বাড়ি যেতে পারব না। তার থেকে তুমি খেয়ে নিলে আমিও খেয়ে নিতে পারি। খিদে পেয়েছে খুব।

খেতে খেতেই শাশুড়ি বললেন ,সারাদিন বাইরে না ঘুরে এবার সংসারে মন দাও ।

আমার সংসার নয় মা ,এটা সম্পূর্ন তোমার। আমি আছি তেলে ঝোলে অম্বলে , কেন বেকার আমায় জড়াচ্ছ ?

 বিরক্ত নিয়ে কৃষ্ণাদেবী বললেন, কোন ছোট বয়স থেকে ঘানি টেনে যাচ্ছি ,আর এখন তোমাদেরও সামলাতে হবে ? আমার তো বয়স হচ্ছে।

হিয়া জানে কোনো নারীই তাঁর নিজের সংসারের কর্ত্তৃত্ব চট করে ছেড়ে দিতে চায় না। সংসারের মায়া ছেড়ে বেরনো বড়ই শক্ত। সে, আমি তোমায় কোনো হার্ডওয়ার্ক করতে বলছি না , কিন্তু তুমি না থাকলে আমার চলবে না, শাশুড়িকে জড়িয়ে ধরে বলল। তারপর দিয়া কী করছিস বলতে বলতে ঘরের মধ্যে ঢুকে গেল সে ।

খুব চালাক তো তুই ! আমি কোথায় এবার ধর্ম কর্ম করব ,তা না এখনো আমায় ভাবতে হবে বাজার থেকে কি আনতে হবে ,কী রান্না হবে, দিয়া কী খাবে …

 রিক যে দুপুরে বেরিয়েই তাকে ফোন করেছে সে কথা শাশুড়িকে আর বলল না । সে রিককে ফোন করে সাধারণ ভাবেই জানতে চেয়েছিল কোথায় আছে সে। তার উত্তরে গম্ভীরভাবে রিক জানিয়েছিল, জাহান্নমে।

রিকের এহেন কথায় বিস্মিত হয়ে হিয়া জিজ্ঞেস করেছিল, কী হয়েছে? এনি প্রবলেম? তার উত্তরে রিক চিৎকার করে উঠল।

প্রবলেম তো তুমিই সৃষ্টি করেছ আমাদের পরিবারে আসার পর থেকে। শান্তি পাওয়া কি আমার কপালে আছে তোমায় নিয়ে ?

আমাদের পরিবার ? মানে রিক আর ওর মা’র পরিবার ? সেখানে ও কোথাও নেই। অনাহুতের মত রয়েছি আমি, ভেবে সেই মুহুর্তে হিয়া চোখ জলে ভরে গেল তীব্র অভিমানে। এভাবে এদের সাথে থাকার চেয়ে একা থাকা অনেক ভাল। এখানে মা -ছেলে কেউই চায় না তাকে। কিন্তু দিয়া !ওকে কোথায় রাখবে ? সে ঠাম্মার সাথে থাকতে ভালবাসে। তাছাড়া এটাও ঠিক প্রত্যেক বাচ্ছা তার প্রিয় জনের কাছে থাকতেই স্বচ্ছন্দ। আমাকে কতটা সময়ই বা পায় ? কিন্তু এভাবে আর কতদিন ?

চোখের জল মুছে শুতে গেল হিয়া। দিয়া পাশ ফিরে শুয়েছিল। হিয়া বিছানায় শোওয়া মাত্র তার দিকে ফিরে বলল, মা আমি ছেলে না হয়ে মেয়ে হয়েই ভাল হয়েছি।তুমি ছেলের মা হলে শাশুড়ি হয়ে যেতে ,মা হতে পারতে না কোনও দিন।

হঠাৎ এ কথা বললি ?

জানো মা আমি অনেক ভেবে দেখলাম একটা মেয়ে যখন শশুরবাড়ি আসে সে চেষ্টা করে শাশুড়ির মনোমতো হয়ে উঠতে , শাশুড়ি যাতে তাকে মেয়ে ভাবে সেই ভাবে সে আপন হয়ে উঠতে চায়। কিন্তু শাশুড়ি তো তার শাশুড়ির কাছেও একই চেষ্টা করে ব্যর্থ। সে তাই একটু একটু করে নিজেকে শাশুড়ি বানিয়ে নেয় নিজের অজান্তেই। মা হতে আর পারে না ।

তুই এত ভাবিস ? মেয়েকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরল হিয়া ।

মা আমি বিয়ে করব না। করলেও শাশুড়ি নিয়ে থাকব না। আমায় এভাবে কথা শোনালে রোজ অশান্তি হবে। আমি তো তোমার মত বোকা আর ভাল মানুষ নই।একা একা কষ্ট পাব অথচ মুখ খুলবো না ,সমানে এডজাস্ট করব …এসব আমার দ্বারা হবে না।

দূর বোকা ,সবাই কি এক রকম হয় ? কত শাশুড়ি-বৌয়ের সম্পর্ক দেখে বোঝাই যায় না তারা মা- মেয়ে না। তাছাড়া শাশুড়ি হলেও সে তো বরের মা। তার সাথে মানিয়ে চলতেই হয় , নইলে সেই বা কোথায় যাবে ছেলের বিয়ে দিয়ে ? এভাবে ভেব না ।

তুমি বড্ড ভাল আর সরল মা। মায়ের বুকে আরো নিবিড় ভাবে ঢুকে গিয়ে দিয়া বলল, এইজন্যই তোমায় নিয়ে আমার এত চিন্তা হয়। সবাই তোমায় কষ্ট দেয় আর তুমি সবার ভাল করার কথা ভাবো। এবার একটু নিজের কথা ভাব মা। অনেক তো করলে সবার জন্য। বাবা পর্যন্ত তোমাকে ব্যবহার করে নেয়। নিজে সারাদিন ব্যস্ত।তুমি চাকরি সামলে সব করছ একা হাতে, দোকান বাজার রান্না ,ডাক্তার ,হাসপাতাল … অথচ ঠাম্মা যেই কিছু বলল তোমার বিরুদ্ধে তখনি মার পক্ষ নিয়ে তোমাকে কাঁদাতে দুমিনিটও ভাবে না। খুব স্বার্থপর মা এরা। তুমি এবার বদলাও মা ।

অন্ধকারেও হিয়া বুঝতে পারল দিয়া কাঁদছে। সে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে বলল ,বাবান ,যার যার ধর্ম তার তার কাছে। কে কী করল ভেবে নিজের মনকে কষ্ট দিতে নেই। আত্মা এতে দুঃখ পায়। তুমি যদি অন্যায় না করো তবে একদিন সত্যের জয় হবেই ।

মা আমি আর একটু বড় হয়ে রোজগার করতে শুরু করলে তোমাকে নিয়ে আলাদা হয়ে যাব। থাকব না এদের সাথে। এরা বাজে ।

আচ্ছা সে দেখা যাবে,এখন ঘুমো। আমাকে আবার ভোরে উঠতে হবে। তোর স্কুল আছে। তোকেও তো উঠতে হবে। ঘুমো এবার।

হুঁ। মা কাল তুমি খালি কাঁচা পোস্ত বাটা আর ভাত করবে। আর কিচ্ছু করবে না। রোজ এবার থেকে শুধু এটাই করবে।

কেন ?

ক’দিন খালি এটা খেলে বাবা ঠাম্মা দুজনেই বুঝবে তুমি না রাঁধলে ওদের এটাই খেতে হবে ।তখন দেখ ঠিক তোমাকে তোয়াজ করবে।

শুধু তোয়াজ করে কোনো সম্পর্ক টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না সোনা। সম্পর্কের মধ্যে নানা রঙ খেলা করে। ঠিক রামধনুর মত। কখনো আলোর ছটা, কখনো গাঢ় মেঘ ,এই তুমুল বৃষ্টি, তো পরমুহুর্তেই রোদ ঝিলমিল করে উঠছে, ভালবাসা তীব্র থাকলেই মান-অভিমান, অভিযোগ, আক্রমণ। যদি ভালবাসা না থাকে তবে এগুলোর কোনটাই থাকে না। সেখানে সম্পর্ক নামক গাছটায় শ্যাওলা পড়ে যায়। অনেকটা নিস্তরঙ্গ পুকুরের মত , আছে কিন্তু কোনো ঢেউ নেই ।

মা তোমার মত করে যদি সবাই ভাবতো তাহলে এত বধূ হত্যা ,অত্যাচার, ডিভোর্স  হতো না। এত আইন বানানোরও দরকার পড়ত না।

তাই কি? কেউ তো ভাবেই সোনা। নইলে এত কিছুর পরেও কিভাবে পৃথিবী টিকে আছে? এই এবার ঘুমো। নইলে কাল উঠতে পারবি না। দিয়ার কপালে চুমু খেল হিয়া ।

গুড নাইট, বলে পাশ ফিরে শুলো দিয়া ।

হিয়ার ঘুম এল না। খানিক বাদে উঠে পড়ল বিছানা থেকে। বারান্দায় বসে সে আকাশ দেখতে লাগল। অজস্র গ্রহ, তারা ,চাঁদের  জড়োয়া পরে আকাশ নিজেকে সাজিয়ে রেখেছে। ওখানে কি কোনো দুঃখ নেই! সূর্য যখন নিজের আলোয় এদের ঢেকে ফেলে এদের কি তখন কষ্ট, অভিমান হয় না? তা বলে কি এদের থাকাটা মিথ্যে হয়ে যায় ? না , এই মুহুর্তে যেটা অন্ধকার বলে মনে হচ্ছে পরমুহুর্তেই সেখানে হয়তো আলোর বন্যা বইবে।

তার মনে হল জীবনটাও আসলে এমন-ই এক আলো আঁধারের লুকোচুরি। হয়তো এখন তাঁর আচরণ আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু ক্লান্ত শরীর নিয়ে যখন বাড়ি ফিরি , চা খাব কিনা জিজ্ঞেস করেন,শরীর খারাপের সময় মাথায় হাত বুলিয়ে দেন, তখন তো তিনি আলাদা হয়ে যান না। একটা মানুষের মধ্যে অনেকগুলো সত্ত্বা কাজ করে। যখন তিনি শাশুড়ি তখন তিনি নানান ইগোয় আক্রান্ত। কিন্তু যখন সবাইকে বাদ দিয়ে মা তখন তার সেই সত্ত্বাটাই কি প্রকট হয়ে ওঠে না ? তিনি না থাকলে কি সত্যি আমি ভাল থাকব? এতটুকু স্নেহ মায়া মমতা না পেলে কী আমি পারতাম দীর্ঘদিন এখানে থাকতে ! নাকি আমার যদি সব খারাপ হতো উনিও পারতেন আমার সাথে এক ছাদের তলায় থাকতে !

 সম্পর্ক আসলে সোনার পরশ পাথর যাকে খুঁজে চলি আমরা প্রতিমুহুর্তে। আর পাশাপাশি ঘটি বাটি থাকলে ঠোকাঠুকি লাগবেই।এ নিয়ে মন খারাপ করে কি হবে ? জীবন তো আকাশের মত বড় নয় ,স্থায়ীও নয় ,যা পেয়েছি, যেভাবে পেয়েছি, তাতেই সুখ খুঁজে নেওয়াটাই বাঁচা। বাকি তো সব কালের স্রোতে ভেসে যাবে। নিজের মনেই বিড়বিড় করছিল সে।

এসব ভাবতে ভাবতেই হিয়া দেখল রাত এসে ভোরকে কখন চুমু দিয়ে চলে গেছে ,লাল আভা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে উড়ালপুলের গা বেয়ে। তীব্র হর্ন বাজিয়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স সেই রহস্যমোড়া সদ্য ঘুম ভাঙা রাস্তায় ছুটে গেল।

হিয়ার হঠাৎ কৃষ্ণাদেবীর জন্য চিন্তা হল। হার্টের রোগী তিনি। বেশিরভাগ সময়ই ভোরের দিকেই হার্ট এট্যাক হয়। সে বারান্দা ছেড়ে দ্রুত শাশুড়ির ঘরে গেল। ঘরে নেই। বাইরের ঘরে গিয়ে দেখল সেখানে অকাতরে ঘুমোচ্ছেন তিনি। একটা হাত বিছানার নিচে নেমে গেছে। গুটিসুটি দিয়ে তাকে শুয়ে থাকতে দেখে হঠাৎ কেমন মায়া হল তার। ভেতরের ঘর থেকে চাদর এনে তাঁর গায়ে জড়িয়ে দিয়ে খানিকক্ষণ ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। সেই মুহূর্তে মনে হল ভদ্রমহিলা যদি আমার মা হতেন ভাল হত, রিকের মা হওয়াতেই যত বিপত্তি।

বিতস্তা ঘোষাল। কবি, গল্পকার ও অনুবাদক। জন্ম ৫ই জানুয়ারি, ভারতের কলকাতায়। ইতিহাসে এম এ, কলেজে সাময়িক অধ্যাপনা। অনুবাদ সাহিত্যের একমাত্র পত্রিকা ‘অনুবাদ পত্রিকা’র সম্পাদক। ‘বাংলা আকাডেমি’, ‘একান্তর কথা সাহিত্যিক', 'চলন্তিকা' পুরস্কারপ্রাপ্ত। বিতস্তার প্রকাশিত বই ২২টি। তাঁর কবিতা হিন্দি, ওড়িয়া, অসমিয়া ও ইংরেজিতে...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ