ঝরা শিউলি
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
মাঝে মাঝে মধুছন্দার ইচ্ছে করে ইহজীবনটার ইতি টানতে। ঘরে বাইরে সামাল দিতে দিতে ক্লান্ত। অথবা সামাল কিছুই দেয় না, এমনিই ক্লান্ত। জীবনে যা কিছু পাওয়ার ছিলো পাওয়া হয়ে গেছে, এবার গেলেই হয়। এইরকম একটা ভাব নিয়ে আজ অফিস ফেরত ট্রামে চড়ে বসল। সিটও পেল। ইচ্ছে করে ট্রামে উঠল। সেই ছোটবেলার কথা মনে করে। ছোটবেলায় খুব ট্রামে উঠত।
আজ আর বাড়ি ফেরার কোনও তাড়া নেই। মোটামুটি ডিসিশন নেওয়া হয়েই গেছে জীবন কে টা টা বলে দেবে। তাহলে আর ভয় কি। যত রাত হোক ঘুরে ফিরে বাড়ি ফিরবে। কিন্ত মরবেটা কিভাবে? দড়ি , আগুন, জল, ব্লেড কোনটাই পছন্দ নয়।বড্ড কেমন লোকজন জড়ো হবে। চেঁচামেচি হই হই। সিনক্রিয়েট। ছিঃ। তাহলে? ঘুম? একটু ভাবলো। তারপর শিউরে উঠল। মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে কেমন গলা শুকিয়ে যায়। একদিকে গভীর ঘুম। অন্যদিকে গলা শুকিয়ে গেছে। কেমন যেন একটা হাঁসফাঁস অবস্থা সৃষ্টি হয়। যদি ঘুমের ওষুধে ভেতরে ভেতরে ওরকম দম আটকানো কষ্ট হয়? কথা আটকে গোঁ গোঁ। এদিকে ভেতরে ভেতরে জ্ঞান আছে। ভেবেই মধুছন্দা ঘেমে উঠল। নাঃ জীবনের ইতি টানার কথা ভাববে না। ভেবেছিল কি? মধুছন্দার মনে হল ভাবেই নি। ও আজ একটু হালকা বিন্দাস আছে নিজের মনে, যখন খুশি বাড়ি ঢুকবে। কোনও দায় দায়িত্ব নেই, ব্যস এইটুকুই।
ট্রাম থেকে নেমে রাত দুপুরে একটা ফলের রস খেলো। গরমকাল। খেতেই পারে। এক প্লেট মোমো খেলো তারপর। খেতেই পারে। ছেলে গোগোল আর মেয়ে জিনির জন্যে নেওয়ার দরকার মনে হল না। নটা বাজে। ওরা এতক্ষণে রাতের খাবার খেয়ে না থাকলে একটু পরেই সেটা খাবে, অতএব এসবের আর দরকার নেই এখন। তারপর একটা মিষ্টির দোকানে ঢুকে এক কাপ ঠান্ডা মিষ্টি দই খেয়ে এসে বুঝলো… ও আসলে জীবন থেকে ছুটি চায় নি, একটু নিজের মতো থাকার ছুটি চেয়েছিল। সব সময় কি আর দায়িত্ব নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে? নিজেই নিজের চাপ বাড়িয়েছিলো। নিজেই আবার হালকা হল। আর একটা টোটো রিসার্ভ করে হাওয়া খেতে খেতে যখন বাড়ি ঢুকলো তখন পৌনে দশটা।
ঢুকেই দেখলো বাড়িতে খুশির ফোয়ারা। জিনি আর গোগোল গান চালিয়ে আড্ডা মারছে। ওদের ক্লাস হল নাইন আর টেন। মধুছন্দার দেরি করে আসাতে ওরা পড়া থেকে বেশ ছুটি করে নিয়েছে। সামনে পরীক্ষা বলে মনে হচ্ছে না। মধুছন্দার মাথায় চড়াক করে আগুন লাগতে লাগতে লাগলো না। পৃথিবীকে টা টা করে চলেই তো যাবে ভাবছিলো, তখন কি আর দেখতে আসতো গোগোল আর জিনি কি করছে? ওদের পড়া ওরা বুঝুক। মধুছন্দার দায় না।
বর অতনু টিভি দেখছে হাসিমুখে। হাসুক। মধুছন্দা কারো কাছে সময় চায় না। এবং দোকান বাজারের দায়ও মধুছন্দার একার না। তিনি যদি রিলাক্স করে টিভি দেখতে পারেন, তবে মধুছন্দাও রিলাক্স করবে।
স্নান করে আরাম করে একটা সুতির নাইটি পরে নিজেকে এলিয়ে দিলো বিছানায়। ছেলে মেয়ে এসে জিজ্ঞেস করল, “মা আজ তোমার এত দেরি হল?” বর হেসে হেসে জিজ্ঞেস করল,”জ্যামে পড়েছিলে তো?”
মধুছন্দা দীর্ঘ একটা শ্বাস নিয়ে দীর্ঘ একটা শ্বাস ছাড়লো। তারপর বলল,”তোরা সবাই আজ সন্ধ্যেটা দারুণ ছুটি কাটালি। না? তোদেরকে হ্যাট হ্যাট করে পড়তে বসানোর কেউ নেই! তোমাকে দোকানে পাঠানোর কেউ নেই!”
তিন জনেই আকর্ণ হেসে বলল। “একদম তাই।”
মধুছন্দা আরেকটা নিশ্বাস ফেলে বলল,”বেশ তাহলে এবার আমাকে আমার মতো থাকতে দে। নিজেরা একটু খাবার বেড়ে একটা দিন খেয়ে নে। আমি রেস্ট নিই। তোরা যা এখান থেকে।”
ওরা চলে গেল। ঘর অন্ধকার। চোখ বন্ধ করে নিলো মধুছন্দা। আজ একটা জিনিস বুঝে গেছে ও, ছুটি দিলে ছুটি পাওয়া যায়।
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
মালঞ্চার পথে ভোরবেলা। সূর্য সবে উঠছিল। বৈশালী দূর থেকে দেখতে পেল,বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে বালুরঘাটের দিকে মুখ…..
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..