জখম

নীলিমা দেব
ধারামুক্ত কবিতা
Bengali
জখম

জখম

প্রতিদিন আগুনের নকশায় সেলাই করি গোলাপের জখম। আঃ কী অবসন্ন শ্রাবণ ধমনীতে আঁকে বাঁশির ঘ্রাণ। জলের মতো পান করি মৃত হাড়ের চাঁদনী। ভাসা ভাসা আকাশ লুকিয়ে ফেলি আঙুলের শিখায়। সে কী দক্ষতায় তুমি প্রতিবার উপেক্ষা করে যাও আলোর ব্যবহার। শেষ ঠিকানায় ভিজতে থাকে গানের কঙ্কাল। আমি ধাক্কা দিতে থাকি আমাদের পারস্পরিক নিশানায়। বলতে পারিনা কেন হা হা হেসে উঠে পথের সিলসিলা। স্টেশন পেরিয়ে যাচ্ছে একজোড়া বেড়াল। সমস্ত যাত্রিই মিশরের চাঁদ। শুধু ঠিকানা হারিয়ে ফেলছে অন্ধকার জলের রিয়েল সিগন্যাল।

সংলাপ

ভাঙ্গা কাচের টুকরোয় সমস্ত গল্প থাকেনা। জুড়লেও কি আর? মনে হয় পৃথিবীটা কালো বাটিতে রাখা ছিপছিপে কমলালেবুর আঁখিয়া। সরোদে বাজছে মন খোলার শব্দ। কাচ-কাচ নীল বোতাম প্রসঙ্গের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন। কোন মানে নেই। হুঃ বেসুরে যন্ত্রণা! দ্যাখো আগুনের নৌকায় বৈঠা ধরেছে চাঁদ। ভাবছি সেতু অবধি নদীর মাংসে লিখে রাখবো জল ও স্থলের আপাত শূন্যতা। স্থিরচিত্রে বড় হবে দৃশ্যের ক্লোজশট। বেদানা গাছের মৃত্যুতে বোবা হয়ে আসা আলোয় বেঘর হচ্ছে মন। ঋতুসা অন্ধকার চুপসে যাচ্ছে দুভাগ হয়ে যাওয়া মহাকালের আয়নায়…

কবিতার দিকে

একটু জোর দিলেই জলে নেমে আসে ঈশ্বর। কবিতায় সেলাই করি চারপাতা অরণ্য। টুকরো টুকরো পাখি দিব্যি আলো খায়। দাউদাউ জ্বলে ঘরের ভিতর ঘর। মন ও মিলনের বাইরে চলে যাওয়া শাওন পৃথিবীর বিপরীতে এসে দাঁড়ায়। জলের লালায় পুরনো আগুনের থিয়োরি একটা নৈঃশব্দের ধারণার মতো সাদাকালো। কবিতার ছায়ায় আলাদা করে খোলা দরোজা পেরিয়ে যাচ্ছে ঋতুর গুদাম। আমি গমক্ষেত আঁকছি আর আঁকছি। কবিতা হচ্ছে, কবিতা কিছুই হচ্ছেনা। চলো বরং প্র্যাকটিস করি রাত…

মাধ্যাকর্ষণ

আগুন বানাতে বানাতে কখন যে জলের চাকার নীচে শ্রীমতী গ্রাম! আত্মার নীলে সময় হেভি হয়ে বসে। আরও আরও পাথুরে পাখী খেজুরের হৃদয়ে রোয়ে দিচ্ছে মাধ্যাকর্ষণ। ছাঁকা শরম কয়েকশ বিকেল পেরিয়ে প্রাচীন। লুণ্ঠিত হই। পারাপার হই না। বারবার মুছে যেতে চায় অভুক্ত আলোর জীবাণু। কোন পোষা নক্ষত্র থেকে করুণার আঙুল আত্মার ধারণা নিয়ে ক’য়েক পা পিছিয়ে গেলেই তনহা তনহা আগুন। ফ্যাকাশে গ্রাম কিসমিসে লুকিয়ে রাখে জলের দাগ। চাল কুমড়োয় ডুবে থাকে চাঁদের হুবহু …

ঘোর

ভুল নদী হুট করে সাইকেলের ভেতর। আমি তার নড়াচড়া টের পাচ্ছিনা আগের মতো। যেভাবে বুকে টেনে নিতে নিতে ঠাণ্ডা হয়ে যেতো সবগুলি শূন্য তার ভূমিকায় এখন ভেংচি কাটে মন্দিরার রসুইঘর। মন্দিরা বাতি জ্বালায়, বাতি নিভায়। এই অব্দিই আলো। মাঝঘুমে লণ্ঠনের ডাকে নদী দুয়ার হয়। সব রাস্তা মন্দির। মাই লর্ড! আলো আসবে না বেরুবে…

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ