জমিটুকু ভালবাসো

মৌ মধুবন্তী
কবিতা
Bengali
জমিটুকু ভালবাসো

সক্রিয়ভাবে কথাবলি

আমি একজন সক্রিয় মানুষ
.                             অতি সক্রিয় একজন মানুষ
কখনও কখনও
.                             আমি অন্যের কণ্ঠে কথা বলি
আমি অনুবাদকণ্ঠে কথা বলি
সত্যিকারের বক্তারা বলে,  এটা খুবই খারাপ
.                              এক ধরনের বদঅভ্যাস
আমি কোন অভ্যাসের দাস নই,
.       আমি প্রতিকূলতাকে কাটিয়ে উঠতে জানি
.                    আমি একটি চঞ্চল খরগোশের মত
একশান, ফ্যাশন, বিক্ষোভ,  প্রেরণা
এবং অনুপ্রেরণার ছাপ।
আমার সৃজনশীল কাজে সুর্যালোক দেখা যায়
আমি সুপিরিয়রিটির কোন চাপ-উপচাপ নিই না।

কোন সাহসে এই আরোপিত কণ্ঠস্বরটি আসে
এবং আমার ভয়েসকে অন্যের মতো করে তোলে
জেনে রাখো আমারও পছন্দ আছে,
আমিই আমাদের। আরোপিত এই ভয়েসের
কোনও শক্তি নেই
প্যাসিভ ভয়েস দর্শক এবং শ্রোতা
কারো মনোযোগ আকর্ষর্ণ করতে
পারে না, বিপন্ন পুরুষের মত।

আমি দর্শকদের জন্য কথানাচ করি,
.                     আমি পাঠকদের জন্য লিখামন গাঁথি
.                              আমি শ্রোতাদের জন্য গানমালা গড়াই;
আমি সক্রিয় মানুষ, আমি আছি
সবসময় সুপার অ্যাক্টিভ আছি।

আমি যা বলি তা সত্যিকার অর্থে বোঝাতে চাই
আমি যা-ই করি না কেন
আমি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভয়েস
আমাকে অবশ্যই সক্রিয় কণ্ঠে কথা বলতে হবে
আর কোনও দোষ ত্রুটির পরোয়া করি না

জীবন কোন তরলীকরন ব্যানযাইন নয়।
আমি সত্যের পক্ষে কথা বলি
.                   আমি সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে আছি
.                                      আমি সত্যের সন্ধান করি
এক দিন
.                   সত্যের জন্য আমি মরে যাব
এক দিন
.                   সবাই মারা যাবে
সবাই নিজের চরকায় তেল করো দল করো
জ্ঞান করো আর অবিরাম চেষ্টা করে যাও

আমরা সবাই মরে’ যাবো
.                                   আমরা সবাই একদিন মরে’ যাবো।

 

পলেস্তারা সমাজদূষণ

এক রোখা দিন
উলটো করে ভেজে নিচ্ছে
মুগসোনা চিরতারভাবনা
কাহারবা পদক খামছে ধরেছে কতক
জাতিস্মরের আস্তিন।
কিলবিল করছে
নিত্যদিনের বাজার দর
এমন সময় ভেতর থেকে কে
এসে চিৎকার করে বলে, থামা, এই বাজনা
আমাদেরকে নিয়ে যাচ্ছে
সমুদ্র থেকে খালের দিকে- অগাস্টিন!
মাথায় রক্ত উঠে বমি করে মরে
যাবে এই অবুঝ দিন। অবাধ্য
করিস না; যা কিছু নিজস্ব,
লোটা কম্বল নিয়ে
সেখানেই বসত গড়- চিৎকার
শুনে থেমেছে কি একটি ও পদক্ষেপ?

তবে কেন এইসব বাহানা?
ক্ষয়িষ্ণু এই সমাজ ধারায়
চলতে চলতে পৃথিবী ও একদিন
হাতের পিঠ চেটেপুটে
লোনা ঘামের স্বাদ পাবে না।

চারিদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং- নাচ
দেখে কী আতংক মনে হয়নি?
নুসরাত ফাতেহ আলীর
গানের মাঝে ডুবতে ডুবতে
সকাল সহ আমিও ডুবে গেছি।
কীটদংশিত সমাজ,
কাদা মাখা ভাবনা- কোথায় চলেছি?
কার হাত ধরে? ভেজেই যাচ্ছে ডালমুগ,
অথচ আবহ সঙ্গীত আবেগহীন,
গন্ধহীন দিনের বি্লাপ যেন
শ্বাশত ভাবনায় এক বিয়োগান্তিক
কঠোরতা। কুঠার
যেমন কাটে, দিন কেটে যাচ্ছে।
একরোখা!

কণ্ঠ যে রোধ করে

তোমাকে নিয়ে পাহাড়পুরে বেড়াতে গেছি
ঝর্ণার জলে ভাসব বলে, ফোয়ারার জলে নাচব
পাহাড় ডিঙ্গিয়ে নদীর সাথে সখ্যতা করব
কিন্তু তুমি অচেনা আতংকে পাহাড় থেকে গড়িয়ে গড়িয়ে খাদে পড়ে গেলে-
উদ্ধারবাহীনিতে কেউ লেখেনি নাম, তালিকা শূন্য।

আমার কাছে রাতের শেকড় আছে কোন রশি নেই
আমার কাছে বিবেক আছে, কোন ব্যবস্থা নেই
আমার কাছে প্রাসাদ আছে, কোন পানিসম্যান্ট নেই
আমার কাছে জল আছে। কিন্তু জলাতঙ্কের কারণ নেই

মাটির দেয়াল বেয়ে বেয়ে উঠে আসো কেঁচোর জীবন
ঢালের উপর সবুজ চত্বর বিছানো-বিছুটি পাতায় রঙ ধরেছে
কিসের ভয়? ভুল না করলে সে জীবন রঙ্গিন করবে না।
আপাদমস্তক ভুলের কম্বল পরো না;
একবার মানুষের মত নিজেকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেখ
ফোয়ারা ছুটে পায়ে নূপুর বাঁধে কিনা
একবার মানুষ হয়ে দেখ
ঝর্ণা চঞ্চল চপলা ভঙ্গিতে কোমর দুলিয়ে নাচ করে কিনা।
জীবন সুন্দরের পশমি আদরে এখনো
আদুরে কিশোরী- শুধু নবীন যৌবনের মত উথালি পাথালি উঠানে
ধান শুকায় না।
একবার মানুষ হয়ে দেখ
ধান খুঁটলে যুবতী চাল এখনো খলবল খলবল করে কিনা-
শুধু একবার মানুষ হয়ে দেখ
শুধু একবার মানুষ হয়ে দেখ

নিজেকে নিজে চিনতে পারো কিনা।
পাহাড়ের চারিধারে পরিভ্রমণ এখনো বাকি-

 

জমিটুকু ভালবাসো

গ্লোবাল ওয়ার্মিং দীর্ঘমেয়াদী একটি বিষয়
পৃথিবীতে প্রায়শই তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে
কোনও ধরণের অবিচার-অত্যাচার বুদ্ধিমানের কাজ নয়
পরিবারে কিংবা পৃথিবীর যে কোন স্থানে
বেঞ্চ যাই হোক না কেন
প্রাকৃতিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তিত হয়
উল্লেখযোগ্যভাবে গভীর মনোযোগ প্রয়োজন
অল-ওয়ার্ল্ড এলার্ট-এর প্রতি
যেভাবেই হোক, অপব্যবহার চরম ক্ষতি করছে
হিমবাহ গলে যাচ্ছে
বহু প্রজাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে
সমুদ্রের পানি স্তর বাড়ছে
এখন একবিংশ শতাব্দী
তবুও, নারীরা নির্যাতিত ও ধর্ষিত হচ্ছে
মানুষদের বাসস্থান বদলাতে হবে
আমরা জলবায়ু সম্পর্কে উদ্বিগ্ন
তবে পরিবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি
সম্ভবত আবহাওয়া আজ ভাল
প্রিয়জনকে উপসাগরের কাছে নিয়ে যাও
তার সাথে ভাল আচরণ করো
এই পৃথিবীর সবার সাথে শেয়ার করার জন্য
কোনও বিতাড়ন নয়, কোন অপহরণ নয়
কোন বন উজাড় নয়, নয় কোন প্রলোভন
ভালো উৎপাদনের জন্য জমিটুকুকে ভালবাসো!

 

দূরত্ব অন্বেষা

আমার দু’চোখেই ঘুম নেই
কবুতর উড়ে গেছে
এক চোখে কেউ ঘুমাতে পারে
জানা নেই
সরীসৃপ তো নই।
প্রিয় বন্ধুগুলো সব ঘুমিয়ে আছে
একা একা কুম্ভকর্ণ থাকলে
অথৈ ঘুমে একাকীত্বের দোলা লাগে
দু’চোখ বেয়ে জল, জল পড়ে পাতা নড়ে
ভুরুর উপরে চিন্তাগুলো ডিগবাজী খেলে
হঠাৎ একখণ্ড অতীত এসে
হাত মুচড়ে ধরে, ব্যথায় কঁকিয়ে উঠি
জেগে জেগে আবারো জেগে উঠি।
জাগতে জাগতে আমি ঘুমদের কাছ থেকে সরে যাই অনেক দূরে
দূরত্বের অবরোধবাসী বন্ধুরাও ভেসে ভেসে চলে গেছে দূর কোন গাঁয়ে

মৌ মধুবন্তী। কবি ও উদ্যোক্তা। পঁচিশ বছরের বেশী দেশ ছেড়ে উত্তর আমেরিকায় বাস। আবৃত্তি ধারণ করেন অন্তরের অন্তঃস্থলে। কবিতা লিখেন বাংলা ও ইংরেজি দুই মাধ্যমেই। তিনি মনে করেন, কাব্য ছাড়া কবির কোন পরিচয় থাকেনা। তাই আত্ম সমালোচনায় প্রত্যয়ী। কবিতাকে ভালোবেসেই...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..