রজকিনী রামি
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
সৌরজগতের বাইরে কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র আছে যার হিসাব রাখা অসম্ভব। ড. তুফান বকসি বসে বসে চিন্তা করেন আকাশ-পাতাল। তিনি একজন সহজ, সরল, বুদ্ধিমান মানুষ। নিজেকে বেশিরভাগ সময়ে মানব সমাজের বাইরে গুটিয়ে রাখেন। বসে বসে তিনি চিন্তা করেন এই বিশাল মহাবিশ্বের কথা আর আশ্চর্য হয়ে যান কোন বিশ্বপিতা এই সব নিয়ন্ত্রণ করেন। মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করতে তিনি ভালোবাসেন। নিজের ঘরে লক্ষ লক্ষ টাকার বই কিনে আলমারিতে ভরে রেখেছেন। আর সবসময় বই নিয়ে পড়ে থাকেন। গ্রামের সব লোক তাকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। তার কথা শোনেন এবং মান্য করেন।।
ড. তপন বকসি চিরদিন আপনভোলা মানুষ। অবসর সময়ে তিনি সংগীত শোনেন। মহাকাশে যে কোটি কোটি অজানা গ্রহ নক্ষত্র আছে তার একটি মধ্যে থাকে এক বিচিত্র ধরনের প্রাণী। গ্রহটির নাম টেকটিনো-২৫।
সে প্রায় আড়াইশো বছর পরে আজ পৃথিবীতে পদার্পণ করেছে। তার কোনো যানবাহনের প্রয়োজন হয় না। বেশ কয়েক হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় অনায়াসে উড়ে চলে মহাবিশ্বের প্রতিটি কোণে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তার কাছে কোন বাধা নয়।
সে পৃথিবীতে নেমে সবুজের ভক্ত হয়ে গেছে। গাছ তার খুব পছন্দের জিনিস। গিরিগিটির মতো সে রং পাল্টাতে
পারে। গাছের সবুজে মিশে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে। একদিন একটি লোককে সে গাছের আড়ালে বসে মলত্যাগ করতে দেখলো। মানুষের থেকে কয়েক হাজার গুণ বুদ্ধিমান এই গুটিয়ে প্রাণী। সে বুঝলো মানুষ এখনও কত বোকা। ‘মাঠে ঘাটে পায়খানা মৃত্যুর পরোয়ানা’ এই সহজ কথাটাও তারা জানে না ধিক। মনুষ্য সমাজ।’ বিড় বিড় করে বললো প্রাণীটি।
লোকটি পিছন ফিরে আওয়াজ শুনে ভূত ভূত বলে চিৎকার করতে করতে পালিয়ে গেলো। ভাষা বোঝার বাধা এই বুদ্ধিমান প্রাণীদের কাছে কোনো বাধা নয়। তাদের মগজে ভাষা ধ্বনি, প্রতিফলিত হয়ে বোধগম্য হয়ে ওঠে, এতটাই উন্নত তাদের মস্তিষ্ক। মানুষের এখনও এত কুসংস্কার দেখে সে লজ্জিত হলো। আড়াইশো বছর আগে এসেও এইসব কাটি দেখেছে, এবার বুদ্ধিমান প্রাণীটির দেহ বর্ণনা করতে গিয়ে, চিত্র ভূত দেখা লোকটি বলছে- ঠিক মাটির কুঁজোর মতো – দেখতে, মাথাটা বিরাট মোটা, যেন কুঁজোর ওপরে একটা পর্ণ বড়ো গামলা বসানো আছে। দেহ ওদের বড়ো নয়। একটা খাদ্য-পেলে কুড়ি বছর চলে যায়— কথাটা বলেন ড. তপন বকসি। উনি বললেন— আমি পড়েছি এরা খুব বুদ্ধিমান কান প্রাণী। পুনরায় দেখলে আমাকে ডেকে নিয়ে যেও। কিন্তু ওদের তো সহজে দেখা যায় না। রং পাল্টাতে পারে। এবার এক ব্যক্তির বাড়িতে জলের ট্যাঙ্কের পাশে বুদ্ধিমান প্রাণীটি লুকিয়ে থাকলো মানুষের কাণ্ডকারখানা দেখার জন্য। এরা বিভিন্ন
এবার যুগের ইঁদুর দৌড়ের দৌরাত্ম্যে গৃহশিক্ষক কিশোরটি খোলামেলা জায়গায় যেতে সুযোগ পায় না। বুদ্ধিমান প্রাণীটি তার হাতে স্পর্শ করলো। সঙ্গে সঙ্গে কিশোরটি টিকটিক ঘড়ির আওয়াজ শুনতে পেলো। প্রাণীটির ভাষা পৃথিবীর মানুষের বোঝা শক্ত। প্রাণীটি উন্নত মগজের গেছে। প ঝগড়া ব টেকনোলজির জোরে সব ভাষা বুঝতে পারেন। স্পর্শ গুলে নিঃশ্বাে কিশোরটি তাই উন্নত প্রাণীটির সব কথা বুঝতে পারল। প্রাণীটি বলল- তোমার নাম কী? (ডুং টং কেটা কিং)। প্রাণীটির ভাষা এইরকম ধরনের। কিন্তু উনি সব ভাষা সহজেই বলতে পারেন। নিজেদের ভাষা প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। তবু কিশোরটিকে নিজের আগমণ বার্তা বোঝানোর জন্যে বাংলা ভাষা ব’লে নিজের ভাষায় অনুবাদ করে শোনালেন। কিশোরটি স্পর্শ গুণে (Touching Techonology) সব বুঝতে পারলো। সে বলল, আমার নাম নীল গোপাল।
প্রশ্ন করল – তোমার নাম? প্রাণীটি বলল – জিহাকাংচু, জিহাকাংচু। সে আরও বলল— তুমি চুপ করে থাকবে কাউকে কিছু বলো না, আমি বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি কেমন দেখতে এসেছি। আমি এখন তোমার কষ্টের কথা মগজ টেকনো’র ফলে জেনে গেছি। এবার দেখি তোমার বাবা মাকে।
কিশোরটি সাহস পেয়ে বললো – ঠিক আছে, তাই হবে। একটু পরেই নীলগোপালের বাবা মা ছাদে এলেন ঝগড়া লক্ষ করতে করতে। কিশোরটির সামনেই বাবা, মা ঝগড়া করছে। নানারকম কটু কথা, গালাগালি দিচ্ছে।
অনেকক্ষণ পরে বাবা, মা নীলগোপালকে বলল— যাও তাে,পড় গিয়ে।
নীলগোপাল ধীরে ধীরে নীচের ঘরে চলে গেল— এবার বাবা, মা পুনরায় ঝগড়া শুরু করলেন। ঝগড়ার ফলে শেষ পর্যন্ত ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। জিহাকাংচু খুব বিমর্ষ হয়ে পড়লেন। পৃথিবীর মানুষের অধঃপতন দেখে। তিনি দেখছেন এই অবস্থা। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠজীব এরকম।
তাহলে পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে আরও খারাপ অবস্থা হবে নিশ্চয়।
‘জিহাকাণ্ডু’ নীচে নেমে কিশোরটির টেবিলের নিচে লুকিয়ে থাকল। ছেলের ঘর আলাদা, বাবা মা অন্যঘরে। একটুপরেই গৃহশিক্ষক এসে পড়লেন, এক ঘণ্টার মধ্যেই আজ কঠিন কঠিন অংক নীলগোপাল করে ফেলল অনায়াসে। গৃহশিক্ষক অবাক। জিহাকাংচুর স্পর্শগুণে কিশোরটির মস্তিষ্ক উন্নত হয়ে গেছে। পড়াশুনার পরে বাবা মা’র কাছে সে বলল, তোমাদের বাগড়া বন্ধ হল কেন? ডিভোর্স নিয়ে নাও, তাহলেই শাস্তি হবে তো। আর আমি যাযাবরের মতো ঘুরে ঘুরে কোনো এক সন্ত্রাসবাদীর দলে ঢুকে থাকব। এটাই কি তোমরা চাও? এক নিঃশ্বাসে নীলগোপাল ব্যাখ্যা করে সব কিছু বুঝিয়ে দিলো। ইংরাজিতে সে বাবাকে পরোক্ষভাবে উপদেশ দিলো যে জীবন খুব ছোটো, এটাকে এনজয় করতে শেখো।
ছেলের কথা শুনে বাবা মা লজ্জিত হলেন এবং আর কোনোদিন ঝগড়া করবেন না প্রতিশ্রুতি দিলেন। ছেলের মঙ্গল কোন বাবা, মা আর না চায়?
পরিণতির ভালো দেখে ‘জিহাকাংচু’ নীলগোপাল আসার আগেই উধাও হল। তাকে যে আরও অনেক কিছু দেখতে হবে, বুঝতে হবে। পৃথিবীর মানুষ, পশুপাখি এখন কেমন আছে এই নিয়েই,তার গবেষণা, তারপর সে ফিরবে তার নিজের দেশে।
জিহাকাংচু আড়াইশো বছর আগে যখন পৃথিবীতে এসেছিলো তখন মানুষ মানুষকে ভালোবাসতো। মাও বোনের সম্মান ছিলো, চুরি, ডাকাতি এসব কম ছিলো। তখন পৃথিবীতে ছিল ভালবাসা। পশুপাখিও ছিল নিশ্চিন্ত। খুব ভালোবেসে ফেলেছিল, সেই ভালোবাসার টানে টেকটিনো-২৫ গ্রহ থেকে আবার একবার ফিরে দেখা, পৃথিবীর মাটিতে এসে।
জিহাকাংচু’র গ্রহের নাম টেকটিনো-২৫। মহাকাশে লক্ষ লক্ষ গ্রহ নক্ষত্র আছে। মানুষ চন্দ্রে পদার্পণ করেছে। মঙ্গলগ্রহে ছে। গেছে। কিন্তু ‘জিহাকাংচু’ লক্ষ লক্ষ গ্রহ নক্ষত্র পরিভ্রমণ করেছে। সে তার নিজস্ব গতিবেগ বাড়াতে বা কমাতে পারে। ne তাদের কোনো যানবাহনের প্রয়োজন হয় না, নিজের গতি নিয়ন্ত্রণে রেখে বাতাসে ভেসে থাকতে পারে আর উড়ে যেতে পারে। পৃথিবীর এমন কোনো যান নেই যে তার গতির সঙ্গে শষ পাল্লা দেবে। পৃথিবীর মানুষ বিজ্ঞানের উন্নতি নিয়ে খুব বড়াই খুব করে। তারা কি আমাদের মতো উড়তে পারে। গতিবেগ বাড়াতে বা কমাতে পারে উড়ে যাবার সময়। এক লাফে পাঁচশো ফুট অতিক্রম করতে পারে’— বললো জিহাকাংচু।
3
বিজ্ঞানের উন্নতির কোনো শেষ নেই। তবু সবাই কেন এত অহংকার করে? শুধু বিজ্ঞানের কচকচানি জীবনে সব নয়, মানুষের পরমায়ু তো মাত্র একশ বছর। তারা কি আমাদের মতো পাঁচশো থেকে হাজার বছর বাঁচতে পারে। ‘জিহাকাংচু’ কিন্তু চিন্তা করে জীবনের মানবিক গুণের সব থেকে বেশি প্রয়োজন। পারমাণবিক বোমার ভয়ংকর ধ্বংসরূপ ‘জিহাকাংচু’ নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে। দয়া, মায়া, মমতা, প্রেম না থাকলে জীবনে বেঁচে থাকার কোনো মানে হয়। না। ‘জিহাকাংচু’ অনেক চিন্তা করে মানুষের রূপগ্রহণ করলো। সে দেখতে চায় পৃথিবীর মানুষের মানবিক রূপ। রূপ পাল্টাতে তার এক মিনিটের বেশি লাগে না। সে এবার মানুষের মতো রঙের পরিবর্তিত রূপে প্রকাশিত হলো।
পশ্চিমবাংলার কিশোর নীলগোপালকে বলল— মানুষের মতো হয়ে গেছি আমি। তুমি আমাকে ভালোবাসো, আমি জানি। তাই তুমি আমার একটা নাম দাও। ‘জিহাকাংচু’র নাম রাখলো নীলগোপাল সিতিকণ্ঠ। এখন থেকে ‘জিহাকাংচু’ সিতিকণ্ঠ হয়ে ঘোরা শুরু করলো। নীলগোপালের মামার বাড়ি নীলপুরে। সেখানে তার মামার পরম বন্ধু ড. তপন বকসি। নীলগোপাল পেটে কথা চাপে রাখতে পারলো না। সে মামার বাড়ি গেলো। ড. বকসি তখন পড়াশুনা করছিলেন। নীলগোপাল অনুমতি চেয়ে ঘরে প্রবেশ করে সব কথা খুলে বলল। সিতিকণ্ঠর আসল নাম ‘জিহাকাংচু’। সে টেকটিনো ২৫ গ্রহ থেকে এসেছে এবং তার অন্যান্য গুণাবলী। ড. তপন বকসি আগে এই প্রাণীটি সম্বন্ধে নিজের গ্রামের লোকের কাছে
মানুষের কান্তের পরিবর্তিত কালে প্রকাশিত হে
আমি আনি। তাই তুমি আমার মা। নাম রাখলো নীগোপাল সিকি। এখন থেকে বাড়ি নীলপুরে। সেখানে তার মামার পরম মামার বাড়ি গেলো। ড. বকসি তখন পড়াশুনা করছিলেন। নীলগোপাল অনুমতি চেয়ে ঘরে প্রবেশ করে সব কথা মুঙ্গে বলল। সিন্ঠির আসল নাম ‘জিহাকা’। ২৫ গ্রহ থেকে এসেছে এবং তার অন্যান্য গুণাবলী। ড. তপন বকসি আগে এই প্রাণীটি সম্বন্ধে নিজের গ্রামের লোকের কাছে শুনেছেন। সে ভূত মনে করে ‘জিহ্যকাছে’র বর্ণনা করেছিলো। আর ড. তপন বকসি নীলগোপালের কাছে একই কথা শুনলেন। তিনি বললেন, ‘তুমি আমাকে সিতিকণ্ঠের সঙ্গে পরিচয় করাতে পারবে??
নীল গোপাল বলল- হ্যাঁ, নিশ্চয়ই এবং যদি সিতিকণ্ঠ এখানে থাকতে চায় আপনি রাখবেন তো?
ড. বকসি বললেন— অবশ্যই, তার সম্পর্কে আমি সবকিছু জানতে চাই।
নীলগোপাল ফিরে এসে সব কথা বললো। সিতিকণ্ঠকে ঘুমিয়ে এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে গেলো। সে এখন এক করে দ বুদ্ধিমান মানুষের সঙ্গ চায়। বোকা লোককেও সে খুব ভালোবাসে। সে জানে তারা সহজ, সরল, ভালো মানুষ।
সিতিকণ্ঠ নীলকে কোমরে জড়িয়ে ধীরে পাখির মতো উড়ে ড. তপন বকসির বাড়ি চলে এলো। সিতিকণ্ঠর সঙ্গে ড. বকসি আজ মুখোমুখি। ড. বকসি বিশ্বাস করতে পারছেন না। একজন মানুষের মতো দেখতে প্রাণীটি কী করে রূপ পরিবর্তন করতে পারে। সিতিকণ্ঠ বা ‘জিহাকাংচু’ এবার মানুষ থেকে কুকুরের রূপ ধারণ করলো। আবার বিড়ালের মতো সাদা বর্ণের হয়ে গেলো। আবার কালো কুঁজোর মতো হয়ে গামলার মতো মাথা রূপে পরিবর্তিত হলো। ছাদে গিয়ে মানুষ হয়েও Ed পাখির মতো উড়ে দেখলো। এবার ড. তপন বকসি আনন্দে আত্মহারা, তিনি জিহাকাংচু’ বা সিতিকণ্ঠকে জড়িয়ে বুকে ধরলেন। সঙ্গে সঙ্গে তার স্পর্শ গুণে ড. তপন বকসি বিদ্যুতের শক খাওয়ার মতো কেঁপে উঠলেন। তার মনে শক্তির আলো, জ্ঞানের আলো বৃদ্ধি হলো। এবার ‘জিহাকাংচু’ সারা পৃথিবীতে 1. একবার ঘুরে আসতে চায়। তারপর বাংলায় এসে মানুষের মানবিক গুণগুলো পর্যালোচনা করতে চায়। ড. তপন বকসির মনে প্রশ্নের ভিড় জমা হলো। সিতিকণ্ঠ বা জিহাকাংচু ধীরে ধীরে সব প্রশ্নের উত্তর দিলো।
“জিহাকাংচু’ ড. তপন বকসির কোমর জড়িয়ে ধরল। বলল – এবার আমি আপনাকে নিয়ে সারা পৃথিবী একবার ঘুরে আসবো। তারপর আপনার সঙ্গে বসে সবরকম কথা হবে।
মানুষ তো খুব বেশি গতিবেগের হাওয়া সহ্য করতে পারে না। তাই ‘জিহাকাংচু’ বেগের হার নিয়ন্ত্রণে রেখে চলা শুরু করলো।মাঝে মাঝে রাত্রিতে কোথাও কোনও স্থানে বিশ্রাম নেবার জন্যে নামে। “জিহাকাংচু’র খাবার প্রয়োজন হয় না, নিদ্রারও প্রয়োজন হয় না। রাত্রির সময়টুকু অভিজ্ঞতার কাহিনি মগজে স্থাপন করে। ওরা লিখে রাখে না কাগজে কিংবা পাতায়। ওরা হৃদয়ে লেখে মগজে মনে রাখে।
ড. তপন বকসির খাবার প্রয়োজন হয়। নিদ্রারও প্রয়োজন হয়। তাই রাত্রিবেলা বিশ্রামের পালা। ‘জিহাকাংচু’র শরীর পরিবর্তিত হলো। ছাদে গিয়ে মানুষ হল, পাখির মতো উড়ে দেখালো। এবার ড. তপন বকসি আনন্দে আত্মহারা, তিনি ‘জিহাকাংচু বা সিতিকণ্ঠকে জড়িয়ে বুকে ধরলেন। সঙ্গে সঙ্গে তার স্পর্শে ড. তপন বকসি বিদ্যুতের শক খাওয়ার মতো কেঁপে উঠলেন। তার মনে শক্তির আলো, জ্ঞানের আলো বৃদ্ধি হলো। এবার ‘জিহাকাংচু’ সারা পৃথিবীতে একবার ঘুরে আসতে চায়। তারপর বাংলায় এসে মানুষের মানবিক গুণগুলো পর্যালোচনা করতে চায়। ড. তপন বকসির মনে প্রশ্নের ভিড় জমা হলো। সিঁতিকণ্ঠ বা জিহাকাংচু ধীরে ধীরে সব প্রশ্নের উত্তর দিলো।
‘জিহাকাংচু’ ড. তপন বকসির কোমর জড়িয়ে ধরল। বলল – এবার আমি আপনাকে নিয়ে সারা পৃথিবী একবার ঘুরে আসবো। তারপর আপনার সঙ্গে বসে সবরকম কথা
মানুষ তো খুব বেশি গতিবেগের হাওয়া সহ্য করতে পারে না। তাই ‘জিহাকাংচু’ বেগের হার নিয়ন্ত্রণে রেখে চলা শুরু করলো।
মাঝে মাঝে রাত্রিতে কোথাও কোনও স্থানে বিশ্রাম নেবার জন্যে নামে। ‘জিহাকাংচু’র খাবার প্রয়োজন হয় না, নিদ্রারও প্রয়োজন হয় না। রাত্রির সময়টুকু অভিজ্ঞতার কাহিনি মগজে স্থাপন করে। ওরা লিখে রাখে না কাগজে কিংবা পাতায়। ওরা হৃদয়ে লেখে মগজে মনে রাখে।
ড. তপন বকসির খাবার প্রয়োজন হয়। নিদ্রারও প্রয়োজন হয়। তাই রাত্রিবেলা বিশ্রামের পালা। “জিহাকাংচু’র হাসি পায়। এরা বিজ্ঞানের উন্নতির বড়াই করে। মানুষ শুধু ঘুমিয়ে গড়ে আট ঘণ্টা নষ্ট করে। খাওয়া, প্রাতঃকৃত্য, স্নান করে দুই ঘণ্টা এরা নষ্ট করে।
আগে এস্কিমোরা ঈগলু তৈরি করতো স্বচ্ছ ও অস্বচ্ছ বরফ সাজিয়ে। যাতে করে ভেতরের গরম বায়ু, বাইরে বেরিয়ে যায়। । মানুষ নিজেদের ধ্বংসের জন্যে পারমাণবিক বোমা বানিয়েছে। আর ‘জিহাকাংচু ইচ্ছে করলে বুড়ো আঙুলের চাপে বোতাম টিপে সারা পৃথিবী এক মুহূর্তে ধ্বংস করতে পারে। গতির ক্ষেত্রে ‘জিহাকাংচু’র একশো ভাগের এক ভাগও পৃথিবীর যানবাহনের নেই। ‘জিহাকাংচু তার গতিবেগ ইচ্ছেমত যত খুশি বাড়াতে বা কমাতে পারে। তার জন্যে কোনো যন্ত্রের প্রয়োজন হয় না। তাহলে মানুষ এখনও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কতটা পিছিয়ে আছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। ‘জিহাকাংচু’ পরমায়ুর ক্ষেত্রে দেখেছে মানুষে বড়জোর দেড়শো বছর বাঁচাতে পারে। কিন্তু ‘জিহাকাংচু’ ইচ্ছার জোরে বাঁচতে বা মরতে পারে। তবে সাধারণত এরা পাঁচশো থেকে হাজার বছরের মতো বাঁচতে চায়। একটা খাদ্যের ট্যাবলেটে এদের কুড়ি বছর চলে যায়। আবার মলত্যাগ, মূত্রত্যাগ বারবার করতে হয় না। বছরে একবার এরা জল পান করে এক কাপের মতো। শরীরে এদের অটোমেটিক ওয়াটার, উৎপাদনের অদ্ভুত ক্ষমতা আছে।
পরের দিন ‘জিহাকাংচু’ ড. বকসিকে নিয়ে আমেরিকা ঘুরলেন। এখন শুধু ঘোরার পালা। সমস্ত পৃথিবী ঘোরার পর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ রাজ্য বাংলায় পদার্পণ। এবার পর্যালোচনার পালা। মানুষ বিজ্ঞানের দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে। তাই বিজ্ঞানের বিষয়ে আর যাচ্ছি না, বললো ‘জিহাকাংচু’। কিন্তু মানবিক গুণগুলো আড়াই শো বছর আগে পৃথিবীতে যেমন ছিলো ঠিক তেমনটি দেখছি না। অনেক অধঃপতন হয়েছে। এর কারণ কী? ড. তপন বকসি বললেন,মানুষের অতিরিক্ত লোভ প্রকৃতিকে ধ্বংস করার কাজে লাগছে।মানবিক গুণ বলতে সামান্যই অবশিষ্ট আছে।
মানুষের অনেক অধঃপতন হয়েছে। এর কারণ কী বুঝলাম। ড. তপন বকসি লজ্জিত হলেন। পৃথিবীর বাইরের অন্য জগত থেকে আসা বুদ্ধিমান প্রাণীর কাছে মানুষের লজ্জা। আপনারা ছেলেদের কিছু ভুল শিক্ষা দেন। আপনারা শেখান একে চন্দ্র। এটা পৃথিবীর ক্ষেত্রে সত্য। কিন্তু মহাবিশ্বে কি চন্দ্ৰ একটা। বহু চন্দ্ৰ মহাবিশ্বে বিরাজ করে। আপনারা শেখান নবগ্রহ। মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্রহ আছে। কুয়োর ব্যাঙ না হয়ে কেন আপনারা এখনও মহাসমুদ্রে স্নান করছেন না’— খুব আফশোসের সঙ্গে বলল- – ‘জিহাকাংচু’। অনেক দেশ শুধু যৌন আবেদনকে শ্রেষ্ঠ মনে করছে। কেন ভালোবাসা, স্নেহ, মমতার কি কোনো দাম নেই। পৃথিবী পরিভ্রমণ করে ‘জিহাকাংচু’ খুবই হতাশ। প্রেমের নামে সবাই আনাচারে মত্ত।মানুষে মানুষে ভালোবাসারর নামে ছলনা। এবার বাংলায় মানবিক গুণ দেখতে ‘জিহাকাংচু’র বড়ই আগ্রহ হল।
‘জিহাকাংচু’ এখন এক সুন্দর মনুষ্য রূপ ধারণ করেছে। এত সুন্দর দেখতে যে যে কোনো বঙ্গললনা ‘জিহাকাংচু’র প্রেমে পড়তে বাধ্য। ‘জিহাকাংচু’ এখন ড. বকসির বাড়িতে থাকে। সেখানে অনেক ছাত্রছাত্রী পড়তে আসে। তার মধ্যে খুশি গৌরী নামে একটি মেয়েকে ‘জিহাকাংচু’ পরীক্ষা করার নামে প্রেমের অভিনয় করতে চায়। ড. বকসি সব কিছুই জানেন। তিনিও সম্মতি দিলেন।
এবার প্রথম দর্শনে গৌরী ‘জিহাকাংচু’র প্রেমে পরে গেলো। সে জিজ্ঞাসা করলো আপনার নাম কি? ‘জিহাকাংচু’ নাম পাল্টে বলল— আমার নাম সিতিকণ্ঠ। সিতিকণ্ঠের প্রেমে পড়ে এখনকার মেয়ে গৌরী একবার চা পান করতে সিতিকণ্ঠকে নিয়ে টি-হাউসে গেলো। সেখানে সিতিকণ্ঠ দেখছে দুটো করে সিট আর একটা করে চটের আড়াল। সবাই মুখে মুখ লাগিয়ে কিস করছে। কোনো কথা নেই। শুধু কেলোর কীর্তি। আর মোবাইলে অশালীন দৃশ্য দেখে আধুনিক হওয়ার চেষ্টা। সিতিকণ্ঠ কিছুক্ষণ বাদেই গৌরীকে নিয়ে বাইরে এলো। মনটা খুব খারাপ হয়ে গেলো সিতিকণ্ঠর। একটু অন্যমনষ্ক হয়ে গেছে। মিনিট পাঁচেক পরে পিছন ফিরে দেখে গৌরী নেই। সিতিকণ্ঠ মুহূর্তের মধ্যে নিজের গতিবেগ বাড়িয়ে কয়েক বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বনবন করে পাক খেয়ে নিলো। সে দেখলো গৌরীকে চারজন পুরুষ একটা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে জোর করে ধর্ষণ করতে চলেছে। এখন রাত্রি দশটা, সিতিকণ্ঠ মুহূর্তের মধ্যে গৌরীকে উদ্ধার করল চারজনকে ধরাশায়ী করে। সিতিকণ্ঠর কাছে এটা কোনো কঠিন কাজ নয়।
কি করে এটা সম্ভব হলো,মানুষের কি এতটা ক্ষমতা আছে। গৌরীর মনে সন্দেহ দেখা দিলো। সে সিতিকণ্ঠকে জড়িয়ে ধরে প্রশ্ন করতে লাগল। সিতিকণ্ঠ এখন ভালোবাসার অনুভবে বন্দি।
জিহাকাংচু বলে, আড়াইশো বছর আগে মানুষ এত জটিল ছিলো না।সরল, সহজ ছিলো। কী করে মানুষ এতটা নিষ্ঠুর হলো। । অনেক দেশে সন্ত্রাসবাদীর আক্রমণে মানুষ মারা যাচ্ছে শুনে তার মনে – ভালোবাসা, আক্রোশ আর ঘৃণার সৃষ্টি হলো। তাহলে পৃথিবী ঘুরতে এসে একি অভিজ্ঞতা। সিতিকণ্ঠ গৌরীকে নিয়ে আজ কলকাতায় নাচঘরে মত্ত। ঘুরতে গেছে, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শহরের মধ্যে অন্যতম এই শহর কলকাতায়।
5
গৌরীকে নিয়ে আজ হোটেলে ঢুকেছে। বেশ ভালোভাবে খাওয়া-দাওয়া সেরেছে গৌরী কিন্তু সিতিকণ্ঠের শরীর খারাপের বাহানায় খাওয়া বন্ধ রেখেছে। গৌরীর সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। চায়ের দোকানে সেদিনও সিতিকণ্ঠ চা খায়নি আজও খেলো না। কি অদ্ভুত ধরনের লোক। এমন লোক জন্মেও দেখেনি গৌরী। যেদিন গৌরী বিপদে পরেছিল সেদিনও সে দেখেছিলো এক লহমায় লাথির আঘাতে চারজনের ধরাশায়ী দেহ। কী করে সম্ভব? এত শক্তি কি একটা মানুষের থাকতে পারে? এইসব চিন্তা করতে করতে সে আর সিতিকণ্ঠ এগিয়ে চলেছে। এমন সময় গৌরী দেখলো একটা দশ চাকার লরি জনতার উপর দিয়ে চলেছে। উদ্দেশ্য মানুষকে মারা। একটার পর একটা মানুষ মারা যাচ্ছে। নারী, শিশু কেউ বাদ যাচ্ছে না। সকলের চিৎকার, কান্নাতে অনেকে সতর্ক হয়ে পাশ দিয়ে পালাবার চেষ্টা করছে। তবু তারা গুলি করছে সরে যাওয়া মানুষের দিকে, এ কোন দেশ? কোনো মায়া নেই, দয়া নেই। গৌরী সিতিকণ্ঠকে ডাকতে গিয়ে দেখতে পেলো না। সিভিকণ্ঠ কোথাও যেন উধাও হয়ে গেছে। এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করেন সে কিছু দেখতে পেলো না। এবার দেখতে পেলো গাড়িটা তার দিকেই এগিয়ে আসছে। আর একটু। তারপরেই সব শেষ। এইসব ভাবছে গৌরী। এমন সময় অবাক কাণ্ড। দশ চাকার লরির ড্রাইভার এখন সিতিকণ্ঠ,
গৌরী দেখলো একটা দশ চাকার লরি জনতার উপর দিয়ে চলেছে। উদ্দেশ্য মানুষকে মারা। একটার পর একটা মানুষ মারা যাচ্ছে। নারী, শিশু কেউ বাদ যাচ্ছে না। সকলের চিৎকার, কান্নাতে অনেকে সতর্ক হয়ে পাশ দিয়ে পালাবার চেষ্টা করছে। তবু তারা গুলি করছে সরে যাওয়া মানুষের দিকে, এ কোন দেশ? কোনো মায়া নেই, দয়া নেই। গৌরী সিতিকণ্ঠকে ডাকতে গিয়ে দেখতে পেলো না। সিডিকণ্ঠ কোথাও যেন উধাও হয়ে গেছে। এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করেন সে কিছু দেখতে পেলো না। এবার দেখতে পেলো গাড়িটা তার দিকেই এগিয়ে আসছে। আর একটু। তারপরেই সব শেষ। এইসব ভাবছে গৌরী। এমন সময় অবাক কাণ্ড। দশ চাকার লরির ড্রাইভার এখন সিতিকণ্ঠ, ব্রেকে পা দিয়ে লরিটা থামিয়ে দিলো। লরি থেমে গেছে। আর কোনো মানুষ মারা যাচ্ছে না। সিতিকণ্ঠ গৌরীর হাত ধরে। বাড়ি ফিরে এলো। খবরে দেখলো প্রায় একশো জন লোক মারা পড়েছে সন্ত্রাসবাদীদের হামলায়। আর কোনো এক অদৃশ্য ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদীদের হত্যা করে প্রাণ বাঁচিয়েছে— শত শত মানুষের, পুলিশ পৌঁছানোর আগেই। কে এই ব্যক্তি, কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। জানে শুধু দু’জন গৌরী আর ড. বকসি।
‘জিহাকাংচু’ ওরফে সিতিকণ্ঠ, রাত্রির বেলা যখন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে তখন রাস্তায় বেরোলো। সে দেখলো সেই আগের দিনের সরলতা জলাঞ্জলি দিয়ে মানুষ, মানুষ ঠকানোর খেলায় মেতে উঠছে। নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের পথে টেনে আনছে। রাত্রিতে অসহায় নারী ভিখারির মতো দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে বিক্রি করার ছলনার ছলে মেতে উঠেছে। কত বৃদ্ধ, শিশু ফুটপাতে শুয়ে আছে। রাত্রিতে কত নিশাচর উদ্যত ফণা নিয়ে মনের আনন্দে লুটের পসরা সাজায়। এই পৃথিবী সে
দেখতে আসেনি। নাঃ আর দেরি নয়, যা বোঝার তা বুঝে বীর গেছে। গৌরীকে সমস্ত কথা খুলে বলতে হবে। আর সময় নেই।
পরের দিন সকালবেলা গৌরীর ঘুম ভাঙ্গার পরে দেখলো ‘জিহাকাংচু’ বা সিতিকণ্ঠ নিজেই চা করে এনেছে। বর্তমানে গৌরী, ড. বকসি আর সিতিকণ্ঠ একসাথে থাকে। এবার গৌরীর প্রশ্ন— তুমি কী করে অসম্ভবকে সম্ভব করো? ড. বকসি বোঝাতে শুরু করলেন। আর সিতিকণ্ঠ মানুষের রূপ ছেড়ে প্রকৃত রূপ ধারণ করলো। গৌরী তো অবাক। টা একটা উল্টানো কুঁজোর ওপর গামলার মতো মাথা। রং পরিবর্তন ও নিজস্ব সব ক্ষমতার পরিচয় দিলো ‘জিহাকাংচু’। আর ছদ্মনাম নয়। এখন নিজস্ব রূপে পরিবর্তিত হয়ে ‘জিহাকাংচু’ তার স্পর্শ গুণে গৌরী ও ড. বকসির মস্তিষ্ক আরও উন্নত করলো।
‘জিহাকাংচু’ বলল – তোমরা এই পরিবেশ পাল্টে মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাও।
ড. বকসি বললেন— সেটা কি শুধু দু’জনের পক্ষে
সম্ভব?
‘জিহাকাংচু’ বলল – না, কখনোই নয়, সমস্ত মানুষ যখন একই মিলনের মেলায় সমবেত হবে। জাতি ধর্ম, নির্বিশেষে, একমাত্র তখনই এটা সম্ভব হবে।
নয়
ইত্যবসরে ‘জিহাকাংচু’র অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে অনেক, কিন্তু সঠিক ধারণা করতে পারেনি। তারা সবাই একজন মানুষকে দেখেছে। সাংবাদিক, জনগণ, সবাই গৌরীকে দেখেছে এবং খবর নিয়ে ঠিক জায়গায় এসে
একসাথে থাকে। এবার গৌরীর প্রশ্ন- তুমি কী করে অসম্ভবকে সম্ভব করো? ড. বকসি বোঝাতে শুরু করলেন। আর সিভিকণ্ঠ মানুষের রূপ ছেড়ে প্রকৃত রূপ ধারণ করলো। গৌরী তো অবাক। একটা উল্টানো কুঁজোর ওপর গামলার মতো মাথা। রং পরিবর্তন ও নিজস্ব সব ক্ষমতার পরিচয় দিলো ‘জিহাকাণ্ডু’। আর ছদ্মনাম নয়। এখন নিজস্ব রূপে পরিবর্তিত হয়ে ‘জিহাকাংচু’ তার স্পর্শ গুণে গৌরী ও ড. বকসির মস্তিষ্ক আরও উন্নত করলো।
‘জিহাকাংচু’ বলল – তোমরা এই পরিবেশ পাল্টে
মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাও। ড. বকসি বললেন- সেটা কি শুধু দু’জনের পক্ষে সম্ভব?
‘জিহাকাংচু’ বলল – না, কখনোই নয়, সমস্ত মানুষ যখন একই মিলনের মেলায় সমবেত হবে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে, একমাত্র তখনই এটা সম্ভব হবে।
ইত্যবসরে ‘জিহাকাংচু’র অলৌকিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে অনেক, কিন্তু সঠিক ধারণা করতে পারেনি। তারা সবাই একজন মানুষকে দেখেছে। সাংবাদিক, জনগণ, সবাই গৌরীকে দেখেছে এবং খবর নিয়ে ঠিক জায়গায় এসে পৌঁছেছে। তারা সবাই একবার দেখতে চায় শুনতে চায় সেই সাহসীর কথা। ‘জিহাকাংচু’ বাইরে এলো, এই অদ্ভুত প্রাণী দেখে অনেকে ভয় পেলো। ‘জিহাকাংচু’ পরিষ্কার বাংলা ভাষায় বলল— আমি অন্য জগতের প্রাণী, তোমাদের দেখতে স দেখলো সেই এসেছিলাম, পৃথিবী ঘুরে অনেক ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমি হতাশ হলাম। পৃথিবীর প্রায় সত্তর সের পথে টেনে শতাংশ মানুষ দুর্নীতিযুক্ত ও স্বার্থপর। আমি আর তোমাদের পৃথিবীতে কোনদিন আসব না।
সামান্য কয়েকটি বাক্য বলে ‘জিহাকাংচু’ সবাইকে বিদায় চর উদ্যত ফণা জানিয়ে প্রচণ্ড বেগে উড়ে চলে গেলো। তারপর তাকে আর দেখা গেলো না।
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
মালঞ্চার পথে ভোরবেলা। সূর্য সবে উঠছিল। বৈশালী দূর থেকে দেখতে পেল,বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে বালুরঘাটের দিকে মুখ…..
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..
ভার্সিটির বাস ধরতে হয় আমাকে খুব সকালে। বাড়ি থেকে একটু হেঁটেই রিকসা। তারপর বাস। হাঁটা…..