ঝরা শিউলি
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
বিট্টু দলের ক্যাপটেন।তার দল মাঠে মাঠে ঘোরে,নালায় ছোট মাছ ধরে আর খামখেয়ালী কত কাজ করে।বিট্টুর দলে আছে ইজাজুর,বল্টু,সুফল,রাজু আর কিরু।আজ বিট্টুর দল শীতকালে মাঠে এসে দেখল ধান ঝেড়ে চাষিরা খড়ের গাদা করে রেখেছে। বিট্টু বলল,খড়ের পালায় আমি উঠছি।কেউ আসছে নাকি লক্ষ্য রাখিস?
ইজাজুর বলল,তাড়াতাড়ি কর,লোক আসবে।
বিট্টু খড় ফেলে নিচে এল তারপর সকলে চার আঁটি করে খড় নিয়ে পাড়ায় এল।সেখানে দশ বারোটা কুকুরের বাচ্চা তাদের দেখে কিঁউ কিঁউ করে কাছে এল। বিট্টুরা সকলে খড় বিছিয়ে ওদের বিছানা করে দিল।কুকুরের ছা গুলো কেমন আয়েসে শুয়ে পড়ল বিছানায়। তারপর কিরু একটা গামলায় মুড়ি আর ভাত এনে খাওয়ালো।
পরের দিন সকালে পড়াশুনা শেষ করে হাজির বিট্টুর দল ফুটপাতের গরীব লোকগুলোর কাছে।ওরা সকলে নিজেদের টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে পাঁউরুটি কিনে দেয় অসহায়দের।ওদের কাজ দেখে টাক মাথার একজন লোক পাঁচটি পাঁউরুটি কিনে বিট্টুর হাতে দিল।বিট্টুর দল অসহায় লোকগুলোকে এভাবেই সাহায্য করে।
বল্টু আর রাজু চলে গেল বাউড়ি পাড়ায়। ওখানে নিরক্ষরদের লেখা, পড়া শেখানোর চেষ্টা করে।কেউ পারে আবার কেউ পারে না।তবু তারা হাল ছাড়ে না।
বিট্টুর দলকে সকলে ভালোবাসে।তবে যখন তারা প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের সামগ্রী সংগ্রহ করে তখন কিছু কৃপণ ধনীদের রাগ হয়।কারণ কারও খড়,কলা বা আম পেড়ে তারা অসহায়দের সেবা করে।
বিট্টুর দলে পড়াশোনায় সবথেকে ভাল ছিল সুফল।বিট্টুুর দল কাছের সুদপুর মানসিক হাসপাতালেও সেবাকার্যে অনেকবার গেছে।
এইভাবে তালেগোলে বিট্টুর দলের সকলে বড় হল।সংসারের ঘূর্ণিপাকে ছড়িয়ে গেল বিট্টুর দল চিরকালের নিয়েমে। তারপর একবার বিট্টু নতুন বন্ধু কমলকে নিয়ে সুদপুরে এক মানসিক রোগীর চিকিৎসা করার জন্য গেল। বিট্টু সেখানে সুফলকে দেখে অবাক হয়ে গেল।আনন্দে জড়িয়ে ধরল বাল্যবন্ধুকে
।কিন্তু ডাক্তারবাবু বললেন,কিছু মনে করবেন না।সুফল এখন চিকিৎসাধীন।ওকে সাধারণ মানুষের মত দেখতে হলেও জটিল মনেরোগী।সুফল বিট্টুকে চিনতে পারল না।সে এখন সুদপুর মানসিক চিকিৎসালয়ে গীটার বাজিয়ে লঘু সংগীতের সুর শোনাচ্ছে বিট্টু ও কমলকে।
বিট্টু আর তার নতুন বন্ধু কমল, একজন মানসিক রোগীকে ভর্তি করার জন্য এসেছে।হঠাৎ দেখা সুফলের সঙ্গে।সুফল আবার কমলকে বলল,একটা আবৃত্তি করে শোনাই, শুনুন।আবৃত্তি শেষ হলে বলল,দাঁড়াও বেহালায় রবীন্দ্রসংগীতের সুর বাজিয়ে শোনাই।বড় চমৎকার বাজায় সুফল।বিট্টু যখন কলেজে পড়ে তখন ওদের কোন্নগরের বাড়িতে পড়তে যেত সুফলের বাবার কাছে।সুফলের বাবা, তাদের কলেজের প্রফেসর ছিলেন। তিনি ছিলেন অঙ্কের হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট।
তখন সে দেখেছে সুফলের মন দিয়ে পড়াশুনা করা,গীটার বাজানো,বেহালায় সুর তোলার এলেম। সবকিছুতেই সুফলের নাম একনম্বরে থাকত।তারপর সকলে পাশ করে গেল কলেজ থেকে। বহুবছর আর খোঁজ ছিল না সুফল আর সুফলের পরিবারের।
আজ মানসিক চিকিৎসালয়ে সুফলকে দেখে ডাক্তারবাবুকে জিজ্ঞেস করল বিট্টু, কি করে সুফল এখানে এল?
ডাক্তারবাবু বললেন, ও পড়াশুনায় খুব ভাল ছিল।সবসময় বই পড়ত।ওর বাবার সঙ্গে একদিন হাওড়া যাচ্ছিল। এমন সময়ে সুফল বাবাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেবার চেষ্টা করেছিল।কোনরকমে বুঝিয়ে লোকজন বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।আবার একরাতে সুফল নিজের মা কে হাতুড়ি মেরে আঘাত করেছিল।তখন সুফলের বাবা, মায়ের সন্দেহ হয়।ডাক্তারবাবু কাউন্সিলিং করেন এবং মানসিক চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন।ডাক্তারের নির্দেশমত সুফল আজ এখানে। ওর কথাবার্তা কেমন অগোছালো, এলোমেলো হয়ে পড়ছে।
ডাক্তারবাবু আরও বললেন,দেখা যাক কতদিনে সুফল সুস্থ হতে পারে।
বিট্টু বলল,ডাক্তারবাবু সব মানসিক রুগী কি সুস্থ হতে পারে?
ডাক্তারবাবু বললেন,এ বড় কঠিন রোগ হে। চিরকাল হয়ত অপেক্ষায় কেটে যাবে জীবনের সময়।
বিট্টুর মনে পড়ল, সুফলের জননী আর তাদের বন্ধুর মুখের হাসিটা।সন্তানগর্বে জননীর আশার হাসি, আজ ম্লান হয়ে যায় স্মৃতির ক্যানভাসে।
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
মালঞ্চার পথে ভোরবেলা। সূর্য সবে উঠছিল। বৈশালী দূর থেকে দেখতে পেল,বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে বালুরঘাটের দিকে মুখ…..
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..