ট্রাংকুলাইজার

অনুশ্রী তরফদার
কবিতা
Bengali
ট্রাংকুলাইজার

অজ্ঞাতবাস

আঠারো মাসের অজ্ঞাতবাসে
খোলনলচের পূর্ণ বদল
শরীরময় মরচে জমা লাল
পৃথিবীটা ছোট হয়ে হাতের মুঠোতে বন্দি
মহীনের ঘোড়া ছোটে
মুখোশের আড়ালে সহিস চেনার ব্রত।

জমা জলে গুটিগুটি পায়েরা কাগজ নৌকা
মনের কবুতর খোলা আকাশে, ঘোলা জল
বেসাতির আগেই ভরাডুবি,
কাগজ দেহের ময়ুরপঙ্খী
কচি আশা স্বপ্নের টাইটানিক,
হিমশৈলের দেখা নেই, সারল‍্য কাঁদে
কাগজ ভাসে।

তৃষ্ণা

মেঘের কাছে বৃষ্টি চেয়ে চেয়ে
উপহার পেলাম কয়ক ফোঁটা তুষছিটে
ক‍ৃপণতার দানে ফুঁসতে ফুঁসতে
তপ্ত হাওয়া মিশিয়ে নিল নিজের চাদরে।

জলের কাছে তৃষ্ণারঞ্জনের ভিক্ষে চেয়ে
ক্লান্ত হলেও মাপনী লুকিয়ে
যতোটুকু অবশিষ্ট ছিল- দেহে
নিংড়ে নিংড়ে জলশূন‍্য আদর।

নদীর বুকে ভাসার ইচ্ছে প্রবল
পৌঁছতে পারিনি
যাত্রী তালিকায় সংরক্ষন অধরা
ত‍ৎকালীন পরিষেবা, খিল দিয়েছে,
কর্তার ইচ্ছেতে কর্ম।

পাহাড় ভীষণ দরাজ দিল্
নিজেকে উজার করে দেখায় প্রতিদিন
আমার বুকে লাফাতেই হবে?
মনের চোখ খুললেই
ভোরের আলোয়
জানালা খোলা রাখিস।

ইন্দ্রধনু

বাস্তব থেকে দৃশ্য চুরি করে
সিন্দুক ভরতে ভরতে উপচে পড়ে
লাল -নীল -হলুদ -সবুজ মাখামাখি
মিস্টি -তেতো -নোনতা, সতেজ দৃশ্য।

লাল দৃশ্য সাহসের কথা বলেও দু-কদম পিছিয়ে
নীল দৃশ্যের বিষাক্ত হাওয়ায়
মন ভারী হয়
হলুদ দৃশ্য কিছুটা মনোরঞ্জনের পদ সাজালেও
সবুজে খুঁজে পেতে চাই প্রাণের উচ্ছ্বাস।

লুডোর বোর্ডে চার রঙের দাপাদাপি
নিজেকে প্রমাণের তালবাহানা
ছক্কা পাঁচ তিন কোন চালে হবে বাজিমাত? আমরা তো বোরে
আঙুলের ইশারায় নেচে চলি।

ট্রাংকুলাইজার

আজাদীর ঘ্রাণ এসেছে
জন্মের বহু আগে
তার প্রভাবে আজন্ম দাঁড়িয়ে থাকার লড়াই স্বরাজ চাওয়ার সুযোগ আসেনি তাই –
দেশী বিদেশীর তফাৎ ডুমুরফুল।

বোঝাপড়ার স্বাধীনতাকেই অমূল্য ভাবি
সে যতই হাতে-পায়ে -মুখে
শেকল পড়ানো হোক।

চাহিদার যোগান ঘুমপাড়ানো বিবেকের দরজায়
ভিক্ষার মুষ্টি রাখে
ন্যায্য পাওনায় টুটি চেপে ধরে
শ্রী মাখানো ট্রাংকুলাইজার।

 

অনুশ্রী তরফদার। কবি ও সম্পাদক। জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের শিলিগুড়ি। দ্রোহকাল নামক ছোট কাগজ সম্পাদনা করেন।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..