তপনকান্তি মুখার্জির কবিতা

তপনকান্তি মুখার্জি
কবিতা
Bengali
তপনকান্তি মুখার্জির কবিতা

পেরেকে ঝোলানো জীবন

জীবন বয়ে যায় জীবনেরই মতো।
রেখে যায় একটা জগৎ – নক্ষত্রের।
এই নিয়েই মেঘ জমে, জ্যোৎস্না হাসে,
পথ দেখায় চাঁদ। তারপর তারা খসে,
জীবন ভাঁজ হয়ে ঝোলে মৃত্যুর পেরেকে।

এখন আমি

এখন আমি জানলা – আঁটা অমল
এখন আমি রুপুলি চুলের মাথা,
এখন আমি চুপচাপ সাঁঝবেলা
এখন আমি জরাজীর্ণ কাঁথা।

এখন আমি শীতল বিপদ সংকেত
এখন আমি ওপারের হাতছানি,
এখন আমি শেষ বেলাকার গান
এখন আমি ফ্রেমে আঁটা ছবিখানি।

চাওয়া – না – চাওয়া

আমরা ছেঁড়া কাপড়, টুকরো রুটি
আমরা শান্ত নিরীহ মানুষজন,
আমরা ব্যস্ত রোজগার সন্ধানে
আমরা বাবুর খেয়াল, বিনোদন।

আমাদের চাওয়া হাতে হাতে সব কাজ
আমরা চাইছি আমানি, শাকভাত,
আমরা চাইছি মেঘ কেটে যাওয়া দিন
আমরা চাইছি শিক্ষা, মাথার ছাদ।

আমরা মানুষ, মানবতাই ধর্ম
বিপদে আপদে পাশে থাকা প্রতিবেশী,
আমাদের নেই নীরব, মালিয়া যোগাযোগ
মাটি হাওয়া জলে আমাদের মেশামিশি।

পাখির বাসা ও কান্নাভেজা ঈশ্বর

বর্ষার ভেজা মাঠে ঝড়ের তান্ডবে গড়াগড়ি
খাচ্ছে পাখিটার বাসা, ভাঙ্গা ডিম, সেইসঙ্গে
নির্ভরতাও। পাখির চোখে জল। খোলা
জানালার সামনে দাঁড়িয়ে সবকিছু উপলব্ধি
করছে একটা কিশোর। স্মৃতিতে মৃত দাদার
কথা যে হাত ধরে তাকে মুরগিলড়াই দেখাতে
নিয়ে যেত রোদেলা শীতের দুপুরে। ঈশ্বরের
কথা মনে হয়। ঈশ্বরও বোধহয় কাঁদে। স্বপ্ন
ভেঙ্গে গেলে সবার চোখেই তো বৃষ্টি নামে,
সবার দৃষ্টিই তো চলে যায় আকাশের দিকে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ