ঝরা শিউলি
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
মুনা আমাজন প্রাইমে মাস্ক আর গ্লভস অর্ডার করেছে অনলাইনে। প্রাইম এর ফ্রি ট্রায়ালের অফারটা এখনো আছে ওর। এই সুযোগে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস অর্ডার করলো। হ্যান্ড স্যানিটাইজার একসাথে বড় কনটেইনার অর্ডার করলো।
ফ্রেশ ডাইরেক্টে এ অর্ডার করলো
তিন পাউন্ডের আপেল এর ব্যাগ তিন ডলার নিরানব্বই সেন্টস ।কলা,কমলা, অবকাডো আর চেরি । ব্রকলী, সেলারি,বেগুন, লাউ,লেবু।
দেশী একটা গ্রোসারি আছে সেখানে সে মাছ মাংস বললে রেডি করে রাখে। গিয়ে কল দিলে পুশকার্টে করে দিয়ে যায় গাড়িতে।
সকালে উঠে জামা জুতো মাস্ক গ্লভস পরে হাঁটতে বের হয়। বাড়ির কাছেই এক পার্ক। তিন চক্কর দেয়। সামনে লোকজন আসতে দেখলে রাস্তার বিপরীত দিকে হাঁটে।।
সামাজিক কোন বড় জমায়েতে যায় না বহুদিন ।যদি যায় তবে হাই হ্যালো বলে।হাগ দেয় না, জড়িয়ে ধরে না। রাস্তায় হাঁটার সময় মাস্ক দেখে। গোপনাঙ্গ ঢেকে রাখার মতোই এক পোশাক যেন। ব্রা আন্ডারওয়ারের মতো হলেও এটি আন্ডার ওয়ার না। আপারওয়্যার।তবে এ শহরে নানা রঙের নানা আকৃতির মানুষ বাস করে। কারো নাক খাড়া । কারও নাক বোঁচা।মাস্ক খাড়া নাকের মানুষদের একরকম।খর্বাকৃতি নাকের মানুষদের একরকম।আর এখন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় প্রস্তুতি পর্বে কিছু জিনিস ভুলে গেলে চলবে না। কারণ ভুল করলেই বিপদ।এরকম সতর্ক যে কয়েকটা মাস্ক রাখে ব্যাগে। ব্যাগের ভেতর হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখে। গ্লভসও।
বাসায় নীচে মেইল চেক করে দেখে আমাজন এর ফ্রেশ ডাইরেক্ট এর বাক্স।এরা দ্রুত ডেলিভারি দিয়ে যায়। বাক্সগুলো দরজায় রেখে স্প্রে করলো ডিসইনফেক্ট দিয়ে।আরো ছয়ঘন্টা পর সব বের করে ঢেলে দেয় সিঙ্কে।ধুয়ে তুলে রাখে কোরিয়েন্ডারে।
আজকাল দিনভর আনন্দ খুঁজে ফিরে অনলাইনে।লাইভে কবিতা পড়ছে, গান গাইছে। তবে দেশের ফেলে আসা সেই ছোট শহর খুব টানে এখনো কেন যে।ধুলো উডিয়ে সে শহরে গরু মহিষের গাড়ি চলতো।শহরের একটা ধুলো মাখা গন্ধ ছিল।এই শহরে সব বাড়ি ছিলো একতলা। দোতলা বাড়ি ছিলো না কোন।সয়েল টেস্ট করে জানা যায় মাটি নাকি উঁচু দালানের ভার বইতে পারবে না।
ফোনেটা বিপবিপ করে,ম্যাসেজ আসলো। চেক করে দেখে প্রোফাইল লক করা একজন টেক্স্ট করেছে। একটা সিরিয়াল দেখতে দেখতে ঘুম ঘুম ভাব এসেছে তখন কল আসলো।
হ্যালো।
হ্যালো ।
কে বলছেন? কাকে চান?
তোমাকে চাই।
কে আপনি?
আমি রাশেদ।
আমি আপনাকে চিনি না।
কথা বললে চিনবেন।
অনেক চেনা মানুষ আছে।আর চিনে কাজ নেই।
শোনেন আমি আপনার কবিতার ভক্ত। আপনার
‘শোভন’ সিরিজের পুরাটাই ‘রঙ পেন্সিল’ গ্রুপে পড়ি।পড়ে পড়ে আমিতো নিজেকে ‘শোভন ‘ ভাবতে শুরু করেছি।আজকাল সিগারেট ধরালেই মনে হয় আপনি বলছেন,
‘শোভন তোমাকে কতোবার বলেছি সিগারেট আর খাবে না। করোনার এই দিনে সিগারেট মোটেও নিরাপদ নয়।’
আপনার চোখ রাঙানো দেখতে দেখতে ছুঁড়ে ফেলে দিই আস্ত সিগারেট।হ্যালো আপনি শুনছেন মুনা?
-হুম শুনছি। আমি আসলেই মন্ত্র মুগ্ধের মতো শুনছিলাম।
এখন কী লিখবেন আপনি?
নাহ।
কখন লিখেন?
যখন মন চায় লিখি।
আপনি বিরক্ত হচ্ছেন নাতো?
হচ্ছি
তাহলে রেখে দিই?
রাখবেন? ফোন কেন করেছেন বললেন নাতো!
এতক্ষণ কী বললাম?
কই?
এই যে আমি শোভন হই। আমি মনে মনে কতো শতবার শোভন হই। আমি কী আপনার শোভন হতে পারি?
দেখা নাই চেনা নাই। শোভন হতে চাই বললেই হলো। বাই।
কিছু সময় পরে আবার কল করলো।
– আবার কী?
– আজ কী রঙের শাড়ি পরেছেন? টিপ কী দিয়েছেন?
– কী বললেন? বেগুনী ?
টিপ? কালো?
মুনা মুনা কাল দেখা করি চলেন।
এখন করোনার কাল চলছে। কোনো দেখা দেখি নাই।
ভিডিও কল করি?
নাহ।
আরো কিছুক্ষণ নানা কথার পর রাখলো। মুনা বাথরুমে ঢুকলো বাথটাবে পানি ভর্তি করে বাথিং ফোম ওয়াশ আলমন্ড তোরা ফ্লেভার দিয়ে হাল্কা কুসুম কুসুম গরম পানিতে ডুবে বসে থাকে।
‘মোর ভাবনারে কী হাওয়ায় মাতালে
মন দোলে অকারণে হরষে।’
গানের জ্যুক বক্স শ্রীকান্ত আচার্য্যর শুনতে থাকে।
এসময়টুকু মুনার নিজস্ব।কবিতার লাইন গুলো মাথায় ঘুরপাক খায়। গোসল সেরে মাথায় তোয়ালে জড়িয়ে ক্রীম ঘষেই বসে ল্যাপটপে ঝড় তোলে কখনো। অক্ষর গুলো ল্যান্ড করে মনমতো খাপেখাপে। কবিতা লিখে মুনা সেই কৈশোর থেকে। তবে প্রকাশ করে ইদানীং ‘রঙপেন্সিল ‘ নামক গ্রুপে। একদল ভক্তও তৈরি হয়েছে। তবে
এই ভক্তদের কেউ ম্যাসেন্জারে কখনো কথা বলেনি। এমনটা আজই হলো।
ইন পারসন ক্লাস বাতিল হয়েছে সেই মার্চে। এপ্রিল থেকে আর বাইরে বের হয়নি।ল্যাপটপে সব ক্লাস।রাশেদের কথাগুলো মাথায় ঘুরছে।এমন যে কেন হলো।
আজ পূর্ণিমা। আকাশে গোলাকার কাসার থালার মতো চাঁদ। মুনার ছাদে যেতে মন চায়। কিন্তু এ দেশে বাসার ছাদে যাওয়া যায় না।গাড়ি বের করে যদি ঘুরতে যেতে পারতো লং ড্রাইভে তাহলে বেশ হতো।
কল আসে তখনই । মুনা গাড়ি বের করে। ‘তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে’ কার লেখা যেন? বুদ্ধদেব? বুদ্ধদেব বসু? বুদ্ধদেব গুহ?
মুনা হার্ড ব্রেক করে ।তার আগেই প্রচন্ড শব্দে সংঘর্ষ।রাশেদ আর মুনা দুজনের মুখে মাস্ক।দুজনেই গাড়ি নিয়ে মুখোমুখি ।
অল্পক্ষণ আগে দুটি গাড়ির মুখামুখি সংঘর্ষ হয়। একটির আরোহী মুনা শিকদার। অন্যটির আরোহী রাশেদ খান।
দুজনেই স্পট ডেড।
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
মালঞ্চার পথে ভোরবেলা। সূর্য সবে উঠছিল। বৈশালী দূর থেকে দেখতে পেল,বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে বালুরঘাটের দিকে মুখ…..
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..