নাগরিকত্ব
আমার ধ্বসে যাওয়া কাদামাটি দিয়ে তুমি গড়ে নিলে তোমার নতুন ঘরের স্তম্ভ আমার স্বপ্নের…..
তোমার কোন সুখ নেই,
শুধু আমার আমার করে জড়িবুটি আঁকড়ে ধরা ছাড়া,
শুধুই বুকে আঘাত হানো,
অন্ধকারে লুকিয়ে রাখো নৃশংস কুঠার।
তোমার কোন দুঃখ নেই,
হঠাৎ হা-মুখ খুলে দিয়ে আমায় গিলে নেওয়া ছাড়া,
পাপিষ্ঠ বোবা রাত শুধু লেখনি রেখে যায়,
তোমার ইতিহাস আজ নিজেই বুনে চলেছ তুমি।
তোমার কোন ইতিহাস নেই,
দু একটা অন্ধ কবিতার পাতা ইতিহাসে স্থান পেয়েছে বলে,
মিথ্যে অহংকার করো;
আর আমার কবিতাগুলো ছুঁড়ে দিতে চাও কালরাত্রির শ্মশানে।
তোমার কোন কিছুই নেই,
পারুলডাঙা গ্রামের লাল রাস্তায়,
অথবা মজাপুকুরের পশ্চিমপাড়ে,
আমাকে খুঁজে নিতে চেয়েছিলে সবুজ পাতায় পাতায়,
আজ আর তোমার বলে তোমার কিছুই নেই;
তুমি নিজেই আজ আর নেই।
পুজো পুজো গন্ধ লেগে থাকতে শুরু করেছে ভোরের দিকে,
ফিকে হয়ে আসা রক্তের গন্ধ লেশ মাত্র ছেড়ে যাচ্ছে কাশের বনে
বুকের ফলাগুলো ঢেকে রাখতেই হয় নান্দনিক ভদ্রতার চাদরে,
হৃদয়ের ক্ষতগুলোর কথাই আজ আর বলতে নেই,
পুজো আসছে,
বেশ্যাবাড়ির মাটি পুণ্যের সেবায় নিয়োজিত হতে যাবে;
অনেক অনেক মাস পর,
অনেক অনেক মাস পর প্রবাসী পাখির ঘরে ফেরার দিন,
ধুপের ধোঁয়া ঢেকে দেবে এবারও মায়ের চোখের কাজল,
ও চোখ শুধুই মাটির ভেবে নিতে চাই এবারও
ঘাসে ঘাসে পা রাখার সময়ে পুজোর ফুল নিয়ে;
আনন্দের তীরে এসে বিজয়ার ফুল তুলে রাখ,
নয়ত আসছে বছর আবার;
পাঁঠাবলি, মাড়ভাঙ্গা শাড়ির নিচে ক্লান্ত পাদুখানি;
টেনে নিয়ে চলতে হবে অনেক রাস্তা;
এবারের পুজোয় একটা প্রেম করলে হয়!
একদিন এ শহরের বুকে হেঁটেছি আমি,
বাসের টিকিট বন্ধ করেছে হাঁ-মুখ,
এই শহরের অজস্র অলিগলি যেন অজস্র শিরা ধমনীর মতো,
ধর্মতলায় মেট্রোর নিচ থেকে শুরু করে লালদীঘি অবধি,
রসিমুদ্দি লেন থেকে হাড়কাটা গলি,
নেই কোন শীত অথবা হেমন্তের হাতছানি,
শুধু শহরের শিরাগুলো বেয়ে বেয়ে রক্তের মত আনাগোনা,
তখনও শিয়ালদা, হাওড়ায় পালাবার মতো মনের রসদ মজুত,
চলে গেলেই হতো কোন এক আধাচেনা নিম্নাঙ্গের দিকে,
শুধুই পল্লবিত শিরার মতো দিকে দিকে ধাবমান,
রক্ত বইতে বইতে ক্লান্ত হৃদপিণ্ডের পথ শেষ হতে চায়,
ভিক্টোরিয়ার সবুজ গালিচায় আবদ্ধ রীতি,
এ শহরের অভিধানে স্বাধীনতার মানে খুঁজতে খুঁজতেই –
আপন হাতের তুলিতে শুধুই আঁকিবুঁকি তোমার চালচিত্রে।
আর দিন শেষ হয়ে এলে, কাল আবার লালাভ আভা দেখার বাসনা;
সুপ্ত হতে হতে বিলীয়মান নক্ষত্রপুঞ্জে,
দু পায়ে বল্কল জমে জমে নিদারুন কাঠ, হাঁটা হয় না বহুদিন হয়ে গেল;
বহুদিন নিবিড়, স্থির, স্থবির….সবটাই;
শেকড়ের টান।
আমার ধ্বসে যাওয়া কাদামাটি দিয়ে তুমি গড়ে নিলে তোমার নতুন ঘরের স্তম্ভ আমার স্বপ্নের…..
নিজেদের ভেঙে পড়া ঝনঝনানি শব্দে প্রতিটি ভোর হয়। ভাঙা টুকরোগুলো নতুন অবয়বে জুড়ে দেয়ার…..
অচেনা আমি হতাশার নোনাজল ঢেউ খেলে হৃদয়ের আঙিনায়। ভাঙনের সুর মাতাল অগ্নি ঝরা সায়াহ্নে আঁধার…..
তোমায় নিয়ে বাঁচি একদিন আমাদের পৃথিবীটাকে সূর্যসমেত গিলে খাবে একটা কালো বিন্দু সেদিন কি পুরো…..