দৌড়
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
অন্যান্য দিনের মতো সেই দিনটিও শুরু হয়েছিল সূর্যের ঝলমলে হাসিমাখা রোদের আলোতে আর সাথে কাকের কর্কশ ডাক। সেইদিনও বিমলের বাবা সকালবেলাতে চা খেয়ে বাজারের থলি হাতে বেরিয়েছিল বাজার করতে, সেইদিনও অনু কাকিমা তার ছেলের মাথায় পুজোর ফুলটা ঠেকিয়ে বলেছিল বাবা সাবধানে যাস, রাস্তাঘাট সাবধানে দেখে পার হোস, তারপর অনু কাকিমার ছেলে ঝিন্টু, মাকে আসছি বলে অফিসে গিয়েছিল। তারপর সেই দর্জি কাকা সেই দিন ও তার দোকান খোলেনি, আর ঝুনুদি তার কলেজ যাওয়ার জন্য তার বাবার কাছ থেকে একশো টাকা নিয়ে কলেজ যাবার দিকের ভীর বাসটায় চেপে কলেজ গিয়েছিল।
সবই ছিল প্রত্যেক দিনের মতোই সমান্তরাল। কিন্তু আমি কোনো কারণবশত সেদিন সময়ে ঘুম থেকে উঠতে পারিনি কলেজ যাওয়ার জন্য, আর বাকি দিনের মতো
মা ও আমাকে জোর করে নি কলেজের ফাইনাল সেমিস্টার আসছে এই বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে। তাই বাকি দিনের মত তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে না উঠে একটু গা এলিয়ে দিয়েছিলাম বেশিক্ষণ বিছানায়। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখলাম ঘড়ির কাটায় ঢং ঢং করে বারোটা বাজছে, তারপরেও কিছুক্ষণ চোখ বুজে থাকার পর যখন ফাইনালি বিছানা থেকে উঠলাম তখন দেখলাম, পাশের বাড়ির অনু কাকিমা তারস্বরে চিত্কার করছে, আর তিনি চেঁচিয়ে কাজের মেয়েটা কে বলছেন যে “ছাদ থেকে তাড়াতাড়ি কাপড় জামা গুলো নিয়ে আয় আর তারপর বাড়ির পশ্চিম দিকের জানালাগুলো বন্ধ কর” তারপর আমার মা ও চেঁচিয়ে সেরকমই ইঙ্গিত দিলো আমাকে, যে উপর থেকে জামা কাপড়গুলো নিয়ে আয়, আমি অনু কাকিমা আর মায়ের চিৎকারে বিরক্তিতো হয়ে দৌড় দিলাম ছাদের দিকে, আর ছাদে গিয়ে আমি তো হতচকিত হয়ে পড়লাম সেই সুন্দর হাসি মাখা রোদ ম্লান হয়ে গেছে, আকাশ যেন আলকাতরার প্রলেপ লাগানো মুখোশ পরেছে, আর তার সাথে রাগান্বিত মনোভাবে নিয়ে গজড়ে চলেছে, পরিবেশটা কেমন এক অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে, চারিদিকে একটা গুমোট ভাব। তাই দেখে আমি তাড়াতাড়ি করে জামা কাপড় নিয়ে দৌড়ে আবার নীচে চলে এলাম। তারপর মা আমাকে দেখতে পেয়ে বলল বাইরে প্রচন্ড মেঘ ডাকছে, মনে হয় প্রবল ঝড় বৃষ্টি হতে পারে তুই তাড়াতাড়ি টিভির কানেকশনটা আর ফ্রিজের কানেকশন টা খুলে দিয়ে তারপর গিয়ে স্নানটা সেরে নে। আমিও মায়ের কথা মতো তাই করলাম।
তারপর যখন স্নান করে ঘরে ঢুকলাম তখন জানলার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেলাম আকাশের বুকে রক্ত প্রবাহের মাধ্যম শিরা-ধমনীর মতো বিদ্যুত খেলে যাচ্ছে, আর সাথে সাথে শুনতে পাচ্ছি প্রবল বেগে ঝড়ের শোঁ শোঁ শব্দ, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই কানে তালা ফেলে দেওয়ার মতো বিকট আওয়াজ করে একটা বাজ পড়ল, মনে হল খুব কাছেই। তারপরেই শুরু হল মুষলধারে বৃষ্টি আর তার সাথে শীল পরা, ‘ঠকঠক’ আওয়াজ করে।মাকে দেখলাম খাটের উপর জড়োসড়ো হয়ে বসে রীতিমতো ” সীতা রাম “নাম করতে, তারই মধ্যে ঝড়ের গতিবেগ বেড়ে চলেছে, যা বাড়ির ভিতরে বদ্ধ জানালার মধ্যে থেকেও উপলব্ধি করতে পারছিলাম। জানালার কাচের মধ্যে দিয়ে দেখতে পাচ্ছি প্রকৃতির এক নিদারুণ এবং ভয়ঙ্কর তাণ্ডব তারা যেন রুষ্ট হয়েছে এই জনজীবনের প্রতি, অনেক দিনের জমানো রাগ যেন আজ উগরে দিচ্ছে তারা, কোনরকমেই ক্ষমা করবে না। তারই মধ্যে অনেকবার প্রচন্ড আওয়াজ করে বাজ পড়ার শব্দ শুনতে পেলাম, আর বৃষ্টি ও প্রবল বেগে পড়ে চলেছে অবিরাম। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল প্রাকৃতিক দুর্যোগ থামার কোন বিরাম নেই, ঝড়,বৃষ্টি ও বিদ্যুৎ এর চমকানি যেন একে অপরকে সমান্তরালে পাল্লা দিচ্ছে। একইভাবে আরো ঘন্টা তিন যাবার পর আস্তে আস্তে ঝড়ের গতি কমতে লাগলো, আরো এক ঘন্টা পর বৃষ্টি কমলো প্রায় আরো আধঘন্টা পর প্রকৃতি শান্ত হল, শান্ত হলো ধরণী। তারপর আমি বাইরের ছাদে উঠে দেখতে লাগলাম প্রাকৃতিক প্রলয় থামার পর শান্ত প্রকৃতির স্বরূপ, চারদিক অন্ধকার হয়ে গেছে একটা ঠান্ডা হিমেল হাওয়া আমার গায়ে এসে লাগলো, তারপরে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি পাড়ার সমস্ত লোকজন বাইরে বেরিয়ে অনু কাকিমার বাড়ির দিকে যাচ্ছে, আমি কি হয়েছে চেঁচিয়ে বিল্টুকে জিজ্ঞেস করলাম? সে বললো অনু কাকিমাদের বাড়ি বাজ পড়েছে তাই শুনে আমিও দৌড়ে নিচে নেমে তাদের বাড়ির দিকে গেলাম আর দেখলাম অনু কাকিমার নিথর দেহটা পড়ে রয়েছে বারান্দার কাছে, ঝিন্টু কে খবর দেওয়া হয়েছে সে আসছে। তারপর আবারও আরেকটা খবর এলো
ঝড় বৃষ্টির খবর শুনে তাড়াতাড়ি করে বাড়ি ফিরবে বলে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে ছিল ঝুনুদি, হঠাৎ করে ঝড় শুরু হওয়াতে একটা গাছের আস্ত ডাল এসে পড়ে ঝুনুদির মাথার উপর, তাকে উদ্ধার করার পর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়, আর বিমলের বাবা এখনো বাড়ি ফেরেননি। আর এই অবস্থা দেখে আমি আমার মনকে ঠিক রাখতে পারলাম না সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে ফোন করলাম, বললেন আমি ঠিক আছি আসতে দেরি হবে রাস্তায় অনেক জল জমেছে, আর অনেক গাছ ভেঙে পড়েছে। আমি এত সব খবর মাকে জানালাম, আর মা তখন একটা কথাই বললেন ‘তাহলে তোকে কলেজ যেতে না দিয়ে ঠিক করেছি’। তারপর পাড়ার পরিবেশটা বেস থমথমে হয়ে রইল,পাড়ার মধ্যে এরকম একই দিনে দুজনের আকস্মিক মৃত্যুর কারণে, সবার মনেই একটা খুব খারাপ স্মৃতি হয়ে রইল এই দিনটা।
তারপর থেকেই মাসের সেই দিনটা এলে আমাদের পাড়ার সবার মন আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। সবাই মনে মনে প্রার্থনা করে একটাই “যেন সেই ভয়ঙ্কর ৩০ তারিখ টা আর না কোনদিন ফিরে আসে”।
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
সকালে উঠে মায়ের মমতামাখা মুড়ি ও লিকার চা খেতাম। তারপর দাদু বলতেন, এবার পড়তে বোস।…..
রোজকার সূর্য ওঠার মত বেলি ভোরে উঠে দরজায় সামনে জল দেয়,ঝাঁট দেয়, ফুল তোলে। তারপর…..
একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট অফিসের চাকরির ইন্টারভিউয়ে জটিল একটি প্রশ্ন করা হলো। প্রশ্নটি হচ্ছে –…..