এখন আমার নেই
না, এখন আর কোনো দিকে যাওয়ার বাসনা নেই ,
দর্শন সমাজ-নীতি রাজনীতি পরচর্চার জটিল
আবর্তে চায় না যেতে মন , পড়ে থাক সভা মহফিল ,
বন্ধুদের আড্ডার আসর থাক , তর্ক ক’রে কোনো লাভ নেই ।
ইদানিং বিষয়বস্তুর
নির্বাচনে মন বড়ো খুঁতখুঁত করে , এটা কোনো রোগ কিনা
জানা নেই , এবং জানার চেষ্টাও করিনা ,
অকারণ শব্দের পাখিরা শুধু করে ভাঙচুর
চৈতন্যের নিস্তব্ধতা । তোলে ঝোড়ো গান ।
সেই তীব্র প্রেরণায় যত্রতত্র করি পায়চারী
বন্ধ ঘরে ,খোলা মাঠে ,ভিড়ের রাস্তায় এক অন্ধ শিকারী কিংবা অনাথ ভিখারী ,
নিঃসঙ্গ প্রহরটাকে দ্বন্দ্ব-যুদ্ধে করি আহ্বান ।
এখন আমার আদর্শ বাসনা কিছু পেতে চায় ফুলের শহর ,
যেখানে সত্ত্বার শুষ্ক বিবর্ণ পাতায় ফুটে প্রেমের মুকুল
যেমন আসন্ন সন্তান-সম্ভবা নারী পেতে চায় একনিষ্ঠ নিজস্ব প্রহর ।
শব্দ ভাষা কথা প্রেম সভা সেমিনার
ইত্যাদির অন্তহীন অরণ্যের ভিড়ে
এখন আমার শব্দের পাখিরা শুধু যায় ফিরে ফিরে ,
গন্তব্য কোথায় জানা নেই ঠিক ,
নীলিমায় জঙ্গলে রোদ্দুরে মেঘে
বাই শুধু আনমনা হৃদয়ের দাঁড় ।।
দূরে
আজো তুমি দূরে ।
যদিও রয়েছো বুক জুড়ে , আছো তুমি দূরে।।
বিয়াকুল প্রণয়ের দিন
বাঁওয়া ডিমের মতোই মলিন
স্মৃতি-বিজড়িত
সব গর্হিত
প্রেম পাপ পথ
কাঙ্ক্ষিত হীরে জহরত
জ’মে আছে জীবাশ্ম হ’য়ে
জীবনের দিগ্বলয়ে
সেই প্রত্নকে আমি আজ
আনমনা ব্যাকুল দরাজ
দিনরাত রাতদিন শুধু যাই খুঁড়ে ।
আছো তুমি দূরে ।।
অপূর্ণ বাসনার রূপ
ভেঙে যাওয়া তাসের তুরুপ
বেদনার বোধ
প্রীতির দরদ
কামনার ফুল
অব্যক্ত বিরহের ঝুল
জ’মে আছে বিপন্ন বুকে
অসহায় ইচ্ছার অসুখে ,
সেই সব স্মৃতির মাধবী
ফুল-ঝরা পাপড়ির ছবি
অনুশোচনার কালল অনলে যায় পুড়ে ।
আছো তুমি আজো আছো দূরে ।।
ব্যর্থ বিবর্ণ ভালবাসার রঙ , —
অনাবাদী ইস্পাতেও ধ’রে যায় জং
মাতাল তরুণ
দৃপ্ত অকরুণ
উগ্র অফুরান
ক্ষুধার কৃপাণ
ক্রমশঃই পারিপার্শ্বিক
বিবর্তনে প্রাগৈতিহাসিক
হ’য়ে আসে অনুভূতির
আস্তরণে শিথিল স্নায়ুতে ,
আর নিঃসঙ্গ আয়ুতে
উড়ে শুধু অনুস্মৃতির
অনাবাদী পতাকা হ’য়ে উড়ে ।
আছো তুমি আজো আছো দূরে ।।