পাগল
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
পৃথিবীর সমস্ত মানুষ আজ আক্রান্ত, করোনা এবং করোনার আতঙ্কে আক্রান্ত। কতদিন ক.. ত..দিন মানুষ দেখেনি এমন দ্রোহকাল। আতঙ্কে মানুষ ভুলও করে ফেলে। মৃত্যুভয় এমনই এক ‘আতঙ্ক’। কোনো দেশের এক মন্ত্রী করোনার আতঙ্কে আত্মহত্যা করেছেন। সাইকোলোজিক্যাল ডিসঅর্ডার। এটি যদি ভুল হিসেবেও দেখি তাহলেও বলবো মানুষমাত্রই ভুল করে। ভগবানও ভুল করেন দ্রোহকালে। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে ভগবান কৃষ্ণও ভুল করেছিলেন, একবার নয়, দুবার। যুদ্ধের অষ্টম দিন। যুদ্ধের শুরুতে কৃষ্ণ কথা দিয়েছিলেন স্বয়ং যুদ্ধ করবেন না। তিনি অর্জুনের সারথি হবেন। তখন কৌরবপক্ষের সেনাপতি পিতামহ ভীষ্ম। অসম্ভব বীর। সেদিন ভীষ্মের সংহারমূর্তির সামনে পান্ডবেরা দাঁড়াতে পারে নি। কারও যেন রক্ষা নেই। পান্ডবদের নিদারুণ ক্ষয়ক্ষতি দেখে অর্জুনসখার সাহায্যার্থে সব কিছু ভুলে কৃষ্ণ নেমে পড়লেন অর্জুনের কপিধ্বজ রথ থেকে। পরম আক্রোশে তিনি ছুটে চলেছেন ভীষ্মের দিকে। সমগ্র যুদ্ধস্থান স্থানুবৎ। সকলের হাতে অস্ত্র ধরা, সকলে যুদ্ধ করতে ভুলে গেছে। দেখছে মর্যাদা পুরুষোত্তমের অগ্নিসম তেজ, প্রচন্ড দাবানলের মতো তাঁর ছুটে আসা। না, ভীষ্মও শর নিক্ষেপ করেন নি। মনে মনে বলে চলেছেন ইচ্ছামৃত্যুধীন পিতামহ — এসো, পরম দেবতা আমার। এই মুহূর্তে বধ করো আমায়। আমার পরম আত্মীয়দের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণের পাপ থেকে উদ্ধার করো আমায়। এই ভবযন্ত্রণা থেকে তোমার হাতেই মুক্ত হই।… ত্বরিত গতিতে অর্জুন রথের থেকে নেমে কৃষ্ণকে প্রাণপন শক্তিতে নিবৃত্ত করলেন। — এ তুমি কি করছো সখা, তুমি পুরুষোত্তম! তুমি প্রতিজ্ঞা করেছিলে অস্ত্র ধারণ করবে না এই যুদ্ধে। আজ প্রতিজ্ঞাচ্যুত হতে যাচ্ছিলে, এ কি তোমার শোভা পায়! কৃষ্ণ স্থির হলেন, রথে উঠে পড়লেন। ঠিক তার পরে পরে নবম অথবা দশম দিনে আবারও একই ভুল করতে চলেছিলেন কৃষ্ণ।
সেনাপতি হয়ে গুরুদায়িত্ব পালন করছিলেন ভীষ্ম। দূর্যোধনকে কথা দিয়েছিলেন –আজ এমন যুদ্ধ করবো লোকে চিরকাল মনে রাখবে। পান্ডবদের সৈন্যসামন্ত মেরে এমনই ক্ষয়ক্ষতি, তোলপাড় শুরু করলেন যে তাকে কিছুতেই আটকানো যাচ্ছিলো না। স্বয়ং অর্জুন পিতামহকে রোধ করতে পারছিলো না। অর্জুনের নাকাল অবস্থা। প্রিয় সখার করুণ অবস্থা কৃষ্ণর সহ্য হলো না। রথ থেকে নেমে পৃথিবী কাঁপিয়ে ক্ষোভে, ক্রোধে অন্ধ হয়ে ছুটে চললেন ভীষ্মের রথের দিকে। কৃষ্ণের অতিলৌকিক শক্তির কথা সকলেই জানে। দেবতা ও লোক সকলেই চিত্রার্পিত। পিতামহ এটিই চাইছিলেন। অস্ত্র সংবরণ করে আক্রোধে যাচনা করলেন মৃত্যু ভিক্ষা। নিজেকে সঁপেছি তোমার কাছে, বধ করো, আমার অভিলাষ পূর্ণ করো হে প্রিয়। ভীষ্মের আচরণ দেখে এবং প্রিয় সখার প্রতিজ্ঞা নষ্ট হচ্ছে দেখে সখাকে আবারও শান্ত হতে বললো অর্জুন, অনুনয় করলো অনেক। সংযত হও সখা, লোকে তোমাকে মিথ্যাবাদী বলবে এ আমি সইতে পারবো না। আমি কথা দিলাম পিতামহর মৃত্যু আমার হাতেই হবে। অনেকে বলেন কৃষ্ণের এই আচরণ ভুল নয়, ইচ্ছাকৃত। তাঁর আচরণের মধ্য দিয়ে পরোক্ষে তিনি অর্জুনকে উদ্দীপিত করেছেন অর্জুনের সমস্ত শক্তি দিয়ে ভীষ্মকে বধ করার জন্য। পিতামহের প্রতি অত্যধিক প্রেম থাকার জন্য মন প্রাণ দিয়ে পিতামহের সাথে যুদ্ধ করছিলো না এতোদিন অর্জুন।
সে যাই হোক, অর্জুন তার পরম মিত্রকে কিন্তু ভুল করতে দেয় নি। সাহায্য করেছে কৃষ্ণের যাতে ভুল না হয়। সে চায় নি লোকে যাকে পরম পাওয়া বলে, চরম মোক্ষ বলে মনে করে তাঁর দ্বারা যেন ভুল না হয়। প্রতিটি সুহৃদের তাই করা উচিৎ। আজ খবরের কাগজ, টিভি খুললেই করোনার খবর, আমাদের কথার মাঝে করোনার আতঙ্ক, ফোনের আলোচনা করোনার আগ্রাসন –প্রতিটি মানুষ ভুলে যাচ্ছে তার স্বাভাবিকত্ব এই ঘরবন্দিকালে। শুধু আতঙ্ক — ক’জন আক্রান্ত? ক’জন মৃত? আমাদের অঞ্চলের খবর কি? কি করে এই রাহুগ্রাস থেকে বাঁচবো? আদৌ বাঁচবো তো! মাথা স্থির রাখা দায়। এই চরম দুর্দিনে বন্ধুর প্রতি বন্ধুর সহমর্মিতা, দু-চারটি সদর্থক কথা বলে পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া যেমন কর্তব্য, তেমনি কর্তব্য তার প্রিয়জনকে ভুল থেকে রক্ষা করা।
“…আমাদের পথ নেই আর
আয়, বেঁধে বেঁধে থাকি…”
চৌদ্দ পনেরো বছর আগের কথা; আমি বসে আছি একটি দোকানে, দোকানটি মূলত আমাদেরেই। দোকানের সামনে…..
১৮ মার্চ ২০১৯ মধ্যরাত! চারদিক অন্ধকারে ঢেকে আছে শুধু বাড়ির চারিপাশে বিদ্যুতের বাল্বগুলো জ্বলছে তাদের…..
জোছনা করেছে আড়ি আসে না আমার বাড়ি গলি দিয়ে চলে যায়, গলি দিয়ে চলে যায়…..
পাঠকদের প্রায় জনেই হয়ত জানেন, সমকাম কি ? সমকামী কারা ? সমকামীর প্রকারভেদ, কেন…..