ধ্রুব চক্রবর্তীর কবিতা

ধ্রুব চক্রবর্তী
কবিতা
ধ্রুব চক্রবর্তীর কবিতা

জাতক

জীবন থেকে যা কিছু হারায়
জানু পেতে রাখি মহাজীবনের কাছে
তাবৎ সূর্য চিনে নেয় যত শোক
বলে- আছে,আছে,আছে।

স্বপ্নের নদী যা কিছু ভাসায়
জেগে থাকে রোজ
একফালি চাঁদ,বুকে তার ভাঙা সেতু
রাতপাহারায় ছিলা টানটান
অস্থির কালকেতু।

সীমানা কোথায় জানে না আগুন
নিভে যাওয়া কাঠ শরীর অধরা
ফিরে আসা মানে বাঁধভাঙা জল
বিরহিনী ফুল্লরা।

জীবন যাপনে যা কিছু সহজ
অক্ষরে বলা হয়নি কিছুই তার
চারপাশ ঘিরে জাতক পংক্তিমালা
ক্রমাগত এক সুদীর্ঘ কবিতার।

 

কাজের মেয়ে

উলুক্ ঝুলুক্
জ্যোৎস্না দুলুক্
গা ঢাকা দিই অন্ধকারে
তোমার পাশে আমার বাড়ি
অন্য সবাই নদীর ধারে।

উপুড় ঝুপুড়
বৃষ্টি দুপুর
গাছের পাতা ভিজছে না
বাকল চুঁয়ে রক্ত গড়ায়
শেকড় ছুঁয়ে যন্ত্রণা।

ছলাৎ ছলাৎ
দু’মুঠো ভাত
পেটের জ্বালা মিটছে কই
হলদেচাঁপা বকুলফুল
গোলাপকাঁটা আমার সই।

হুকুম দখল
শরীর ধকল
একনজরেই সম্প্রদান
ভাতারখাকি মেয়েমানুষ
ভোর না হতেই ইস্টিশান।

 

 

যেখানে দাঁড়াই ঘর

যেখানে দাঁড়াই ঘর
চৌকাঠে দিন
ভেতরে অন্ধকার

যেখানে দাঁড়াই ঘর
অক্ষরহীন
শব্দ মৌনতার

যেখানে দাঁড়াই ঘর
মানুষের ছবি
উঠোনে ধারালো ভীড়

যেখানে দাঁড়াই ঘর
নির্বাক সবই
ভাঙা আলো পৃথিবীর

যেখানে দাঁড়াই ঘর
মরা নদীখাত
ঝুঁকে থাকা কার সাঁকো

যেখানে দাঁড়াই ঘর
বাড়ানো দু’হাত
বাইরে এসেছি – ডাকো।

ধ্রুব চক্রবর্তী। লেখক ও পেশাজীবি। কলকাতায় জন্ম, ১৯৬৩ সালে। লেখালিখি করেন ভারতের বিভিন্ন বাংলা পত্রপত্রিকায় কবিতা এবং গল্প, ভারতীয় ও ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক জার্নালে ইংরেজি ভাষায় প্রবন্ধ।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ফ্রেম

ফ্রেম

দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..

সীমানার শর্ত

বিজ‌য়ের সব মুহূ‌র্তেই… তার অ‌ধিকার! কেন্দ্র হোক আর কেন্দ্রা‌তিগ ব‌লের আসন; কেউকেউ বোরকায় রমনীয় স‌ঙ্গানুসঙ্গের;…..