প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
আজ সকাল থেকেই ফোনে ব্যাস্ত অমল বাবু।গতকাল খবরের কাগজে ছেলের জন্য “পাত্রী চাই” বিজ্ঞাপন বেরানোর পর থেকে ফোনের বন্যা।আবার ফোনটা বেজে উঠলো-
-হ্যালো।
-বলছি।আমি পাত্রের বাবা।আপনি মেয়ের?
-ও আচ্ছা,আপনি মেয়ের বাবা বলছেন।আমাদের ছেলে ইজ্ঞিনিয়ারিং তারপর এম বি এ করেছে।এখন আই এম বি তে প্রোডাক্ট ম্যানেজার।কলকাতায় পোস্টিং।
-বাহ্ মেয়ে ওয়ার্কিং।বাকি ডিলেটস্ নয় মেলে পাঠিয়ে দেবেন।আমারও পাঠিয়ে দেবো..তারপর নয়…।
-হ্যালো হ্যালো…শুনতে পারছেন?বুঝলেন এই এক সমস্যা..কল ড্রপ…।
-শুনতে পারছেন?আপনার নাম আর ঠিকানাটা যদি বলেন।
-এ বাবা আপনি তো আমাদের ফ্ল্যাটের খুব কাছে থাকেন।
-কি বলছেন দীপন বাবু,এই রবিবার ঘুরে যাবো?
-দেখছি,আজ বিকেলে কনফার্ম করবো।যদি যাই ম্যক্সিমাম তিনজন।আমি,আমার গিন্নি আর ছেলে বা মেয়ের মধ্য একজন যাবো।
-হ্যা আমার ওই দুই সন্তান।মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে।
-ও হো আমার নামটা বলা হয়নি।অমল মিত্র,আমাদের বাড়ি সাউথ সিটির পেছনটায়।
রাখছি তাহলে, বিকেলে হ্যাঁ বা না দুটোই জানিয়ে দেবো।
-আপনিও ভালো থাকবেন।
ফোনটা রেখে দিলেন অমল বাবু।সুধা মানে অমল বাবুর গিন্নী ঘরে ঢুকলেন চায়ের কাপ হাতে।
-সুধা শুনলে?
-হু শুনলাম।শুধু বাবুর চশমার পাওয়ারটা বলোনি।ফোন সব কথা বলার কি আছে?সুধার মুখে বিরক্তির ছাপ।
-ও সব বলে দিলাম? তাহলে সব তোমরাই করো।তোমার ছেলের জন্য শুধু খুঁজেই চলেছি সারাজীবন,ছোটবেলাতে স্কুল,তারপর কলেজ।তারপর পেপারে কর্মখালীর বিজ্ঞাপনে আর এখন পাত্রীর জন্য।একটা মেয়েকে পর্যন্ত পটাতে পারে না।ওর থেকে তো রজত ভালো আমার ওই রাগী মেয়েটা কে কেমন মানিয়ে রেখেছে সেই প্রেম পর্ব থেকে।
সুধা দপ করে জ্বলে উঠলো।
-সেই?সব আমার ছেলের দোষ।তোমার কর্মখালী দেখে বাবু চাকরী পাইনি।আর মেয়ে?সেটা তো তোমার ধাত পেয়েছে।আমি নিজে থেকে না বললে সারাজীবন আইবুড়ো থাকতে।
-তাই বুঝি?কি কুক্ষণে সেদিন হ্যাঁ বলেছিলাম,তার ফল আজও ভুগছি।
-সে তো বলবেই ওই শাঁকচুন্নিটা জীবনে আসলে বুঝতে পারতে।সুধার গলা ভারী হয়ে এসেছে।
-যা বাব্বা এর মধ্যে আবার সে এলো কোথা থেকে।
সুধা কাঁদতে আরম্ভ করলো।
-এই দ্যাখো আবার কাঁদছো কেন?সবাই দেখছে..শুধু শুধু আশান্তি..।
অমলকে বেশ বিব্রত,তার ফোনটা আবার বেজে উঠলো…।রেগে ফোনটা কেটে দিলো সে।
-তোমরা আবার শুরু করলে?ঘরে ঢুকলো বছর তিরিশে এক যুবক।বেশ লম্বা,শ্যাম বর্ণ নাম অনল।এ গল্পের পাত্র।
-বাবু তোর বাবা সারা জীবন শুধু আমার দোষই দেখে গেল।
-আচ্ছা সে ঠিক আছে।আমি কি এককাপ চা পেতে পারি?
সুধা একটু ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
-তবে মা সেই শাঁকচুন্নিটা কে?
-বাবু উনি তোমার বাবা হন।গুরুজন….
-তুমি তো বলছিলে…।
তিনজন একটু মুখ চাওয়া চায়ি করে হেসে উঠলো।দুপুরের দিকে অমল দীপন বাবুকে জানিয়ে দিলেন তিন জন যাবেন সে,তার স্ত্রী আর ছোটো মেয়ে তীথি।না পাত্রের সময় হবে না সে পরে যাবে।
পৃথিবীটা যে খুব ছোট অনল সেটা বুঝতে পেরেছে কিছুদিন হলো।পাত্রী অদিতি মজুমদার তার কলেজ জুনিয়ার।মানে অনলের যখন ফাইনাল ইয়ার তখন অদিতির ফাস্ট ইয়ার।ইজ্ঞিনিয়ারিং কলেজের নিয়ম মানলে অদিতি কে সেরকম ভাবে চেনার কথা নয়।ফাইনাল ইয়ারে মোটামুটি সবাই ব্যাস্ত থাকে চাকরি বাকরি নিয়ে।তবে অদিতি তাকে চেনে অনল মিত্রের নামে।কলেজে অবশ্য তার নাম ছিলো “অন্ন-দা” জুনিয়ারদের ত্রাস।অনলের সেই রূপ অদিতি দেখেনি,তবে অনলদের গ্রুপটাকে তারা এড়িয়ে চলতো।যদি ধরে “চেটে” দ্যায়।
আজ গোলপার্কের এই ক্যাফে অদিতি এক অন্য অনলের সাথে দ্যাখা করতে এসেছে।দুই পরিবারের কয়েক প্রস্থ দেখা শুনার পর ব্যাপার বেশ এগিয়েছে।অনলের সঙ্গী হিসাবে তার বোন তিথী আর অদিতির সঙ্গে তার মামাতো বোন নীরা।
মেনু কার্ডটা বেশ কয়েক বার দেখে অনল বললো-
-তোরা আর্ডার কর।
নীরা,তিথী কিছুই অর্ডার দিলো না।
-বাপরে তোদের হলো কি?অদিতি তুই কি নিবি?
অদিতি একটু মুচকি হেসে বললো
-দাও না তুমি যা দেবে তাই দুটো বলে দাও।
-ওয়ে ওয়ে কি প্রেম পারি না পারি না।এই দাদা তুই অদিতিদি কে তুই বলছিস কেন?এটা তোর কলেজ নয়..।তিথীর গলায় একটা ছদ্ম রাগ।
জীব কেটে অনল বললো সরি।দুটো কোল্ড কফির অর্ডার হোলো।নীরা আর তিথী চলে গেল গড়িয়াহাটে “ছদ্ম” শপিং এর ছুতোয়।এক ঘন্টায় চলে আসবো,তোরা আবার হাওয়া খেতে লেকে চলে যাস না; বসন্ত কাল তো ।যাবার সময় নীরার লেগ-পুলিং চললো।
সত্যি শহরে যেন আজ বসন্ত,সামনে রামকৃষ্ণ মিশনের পলাশ গাছ গুলো ফুল চলে এসেছে।সোডিয়াম ভেপারের আলো গুলো যেন রাস্তা ধুয়ে দিচ্ছে।দেড় ঘন্টা যে কখন শেষ হয়ে গেল তারা দুজনেই বুঝতে পারলো না।কলেজের গল্প,অফিসের গল্প,নিজেদের গল্প..গল্পের যেন শেষ নেই।
মোটামুটি সবই চলছে ভালো ভাবেই।বৈশাখের চার হাত এক হবে।মাঝে আর দেড় মাস।বিয়ের কার্ড,কনের বেনারসী,ছেলের আংটি সব কিছুই করতে কিন্তু সময় সীমিত।নীরা আর তিথীর দম ফেলার সময় নেই।আর শনি রবি পাত্র-পাত্রীর।
এই সুখের মধ্যেও অমল বাবুর মনটা ভালো নেই।না তার কারণ জানা নেই তার।এক রবিবার সে ফোনটা করেই ফেললো।
-দীপন বাবু,বলছি এদের কুষ্ঠিটা কি একবার মিলিয়ে নেবেন।
-যাক বাঁচালন,না হলে আবার খরচ বাড়তো,বাবু ওসব তো করা নেই।
-ও দিতি মায়ের নেই।মনটা হালকা হোলো।
-হ্যাঁ বলছেন…হ্যালো..হ্যালো…নেটওয়ার্কের আবস্থা যাতা..রক্ত পরীক্ষা..ভুলেই গিয়েছিলাম..আমার জামাই অবশ্য বলেছিলো।আর এদের কথা ভাবুন যাদের বিয়ে তারা অফিস করে চলেছে।যাই হোক কালই বলে দিচ্ছি,স্যামপেল কালেক্ট করে নিয়ে যাবে।
-হ্যাঁ এটা জরুরি।রাখি তাহোলে ভালো থাকবেন।
কে জানতো এই ফোন কলটা দুটো পরিবার কে এক নিদারুন পরিস্থিতির সামনে নিয়ে আসবে, বসন্তের আকাশে বজ্রপাত ডেকে আনবে,মেঘ ছাড়াই।
তিন.
ব্লাড রিপোর্ট দুটো যেন এলো সুনামির মোতো।দুটো পরিবারের যত সুখ আনন্দ সব যেন ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেল।গত পাঁচদিনে তিন বার রক্ত পরীক্ষা করেছে দুজনে।ফলাফল একই দুজনের বিয়ে হলে পরবর্তী প্রজন্মের থ্যালাসেমিয়া হতে বাধ্য।দুই পরিবারের চেনা জানা যত ডাক্তার ছিলো সবার একমত,নতুন জীবন আসলে তার রক্তে থাকবে সেই মারন ব্যাধী,যার ওষুধ কারুর জানা নেই।অদিতি,অনল গত কয়েকদিনে কয়েক হাজার ওয়েভ সাইট ঘেটে নিয়েছে,তাদের বন্ধুদের মাধ্যমে বিদেশে ডাক্তারদের সাথেও কথা বলেছে,না কোনো লাভই হয়নি।
দুই পরিবার এক চরম সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে।কি করবে,কি বলবে?বিয়ে ভাঙ্গার কথা বলবে?আর বললেও কে আগে বলবে।একটা সম্পর্ক তৈরি হতে না হতেই শেষের হবার ডঙ্কা।দুজনের বাড়ি ফিরতে যেন ভালো লাগেনা,সব কিছু যেন গিলে খেতে আসে।
অফিস থেকে অদিতি ঘরে একা বসে আছে।ফাগুনের শেষ,হালকা গরম শহর।মাথার উপরের ফ্যানটা উদাস ভাবে একটানা চলছে।
-দিতি আসবো?
-এসো বাবা..।
দীপন বাবু খুব শান্ত হয়ে অদিতির পাশে বসলেন,তার স্ত্রী মালা পাশে দাড়িয়ে।
-মা এবার তো একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।নরম গলায় বললেন দীপন।গলার স্বরটা অদিতি ছোট বেলার কথা মনে করালো,যখন মন খারাপ হতো দীপন একই ভাবে পাশে বসে এভাবে কথা বলতো।তারপর সব কিছু মিলে যেত।
-মা তুই কিছু বল।সম্বিত ফিরল অদিতির।
-আমি অনল ছাড়া ভাবতে পারছিনা বাবা।পরিণতি যাই হোক।
-এই কটা দিনের তো সম্পর্ক..।মালা বলে উঠলো।
-তো কি?সম্পর্ক কি এক্সপায়েরী ডেট নিয়ে আসে নাকি মা।
-কিন্তু এই ভালোবাসা দিয়ে সারাজীবন চালাতে পারবি?বয়স বাড়লে কিন্তু এই ব্যাপারটা নিয়ে ঝামেলা হবে।তুই বুঝতে পারছিস..।
দীপন অদিতির মাথায় হাত বুলিয়ে চলেছে..খুব ভালো লাগছে..ঠিক ছোটো বেলার মতো।সিদ্ধান্তটা নিতে যেন সে মনের বেশ জোর পাচ্ছে।
-মা তুমি বলতে চাও যাদের সন্তানদের এই রোগ থাকে বা সন্তান থাকে না তারা সব ডিভোর্স করে নেয়।শান্ত ভাবে বললো সে।
-না দিতি এই কথা বলিস না,জেনে শুনে কাউকে এনে তাকে খুন করিস না।এ মহাপাপ..।
-না সেটা বলতে চাইনি;সারা জীবন নিসন্তান হয়ে নয় থাকলাম..তোমার মতো মা না হয় হতেই পারলাম না।
-দিতি..মালা কেঁদে উঠলো..।
-আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি অনলকে বিয়ে করতে না পারলে আমি না হয় তোমাদের কাছেই সারাজীবন থেকে যাবো…।
-অনলকে বলেছিস?দীপন অনেকক্ষণ বাদে কিছু বললো।
-না,এটা আমার সিদ্ধান্ত,সেটা আমি ওর উপর চাপিয়ে দেবো।
মালা কিছু বলতে যাচ্ছিল,দীপন ওকে থামিয়ে দিলেন।
-তুই যা সিদ্ধান্ত নিবি তাতে আমরা পাশে আছি।
ঘর থেকে দুজনে বেরিয়ে গেল।
চার.
এমন একজন মানুষের বাবা হবার হতে পেরেছি বলে আমি গর্বিত।ধন্যবাদ মালা..শিক্ষাটা হয়ত ও স্কুল থেকে পেয়েছে..কিন্তু নৈতিক শিক্ষাটা তুমি দিয়েছো..।
না আর কিছু শুনতে পেল না অদিতি।মনটা বেশ হালকা,যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো।একটা সিদ্ধান্ত সে নিতে পেরেছে।ফোন টা বেজে উঠলো…,অনলের ফোন।
-হ্যালো বলো।
ও প্রান্ত থেকে আসা কথা গুলো অদিতি খুব মন দিয়ে শুনছে।
-কি বলবো বলো?
-তুমি তোমার বাড়িতে কথা বলছো।
-না অনল সেটা হয়না।তুমি আগে তোমার বাড়িতে কথা বলো।
-হ্যাঁ এটা আমার জেদ বলতে পারো।
-আচ্ছা রাখো।
সারা দিনের ক্লান্তিও এখন আর চোখে ঘুম আনে না অনলের।ব্যালকনিতে সিগারেট জ্বলছে অনবরত,মুখটা বেশ তেতো লাগছে।
-বাবা তোমার সাথে আমার একটু কথা আছে।
অনল দেখলো ড্রয়িংরুমে সুধা,তিথি আর অমল বসে,সবাই যেন তার আপেক্ষাতেই ছিলো।
-হ্যাঁ বল।
-আমি অদিতিকেই বিয়ে করবো।
-মানে তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।সুধা বলে উঠলো।
-ওকে বলতে দাও সুধা,কিন্তু বাবু তুই কি সারা জীবন নি:সন্তান কাটাবি?তাহলে আমাদের বংশ..।
-ছি ছি বাবা এসব তুমি কি বলছো? বংশ রক্ষা এসব আবার কি কথা।আমি দাদার পাশে আছি।
-তুই চুপ কর তিথি,বাবার মুখে মুখে কথা বলিস না।
-চুপ করার কি আছে মা।আমরা সবাই অ্যাডাল্ট।বংশ রাখা যদি বিয়ের শর্ত হয় তবে আমরা একজনকে নয় দত্তক নেবো।
অনল বেশ দৃঢ় ভাবে বললো।তিথির কথা গুলো তার দাবিকে যেন অক্সিজেন যোগালো।
-বাবু তুই এক অচেনা রক্ত ঘরে নিয়ে আসবি শুধু ওই মেয়েটার জন্য।
-মা আমি দাদার সাথে একমত।আর রক্তের তো শুধু মাত্র চারটে গ্রুপ হয়।এখানে আবার চেনা- অচেনা কোথা থেকে এলো?
-বেশী বক্ বক্ করিস না।কোন অজাত-কুজাত…।
-মা তুমি এসব কি বলছো?মানুষের চরিত্র নির্ভর করে সে কিভাবে বেড়ে ওঠে তার উপর।তুমি তো ছোট বেলায় এসব শেখাতে।নিজের ছেলের ব্যাপার সব গুলিয়ে ফেললে।
-তোরা চুপ করবি।ব্যাপারটা মানা খুব কঠিন,বাবু তুই পারবি তো?এই মুক্তচিন্তাটা সারা জীবন ধরে রাখতে।দেখিস্ বাবা দিতি মা যেন এসব নিয়ে কোনোদিন চোখের জল না ফ্যালে..।অমল শান্ত ভাবে কথা গুলো বললো।
-পারবো বাবা দেখো,ঠিক পারবো।
-ও তাহলে আমি শুধু তোমাদের কাছে ভিলেন..সুধা আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলো।
-সুধা তুমি রত্নগর্ভা,ভালোবাসার জন্য এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।আমি এও জানি এই সিদ্ধান্তে তুমি ও একমত।তবে একবার দীপন বাবুদেরও মত জানা দরকার।এক বার ফোন করে বলি কাল আমরা যাচ্ছি।
-এত রাতে আবার ওনাদের ব্যস্ত করবে বাবা?তিথি বললো।
-ভালো খবরের আবার সময় হয় নাকি?বলে অমল ফোনটা নিয়ে ব্যালকনি তে চলে গেল।সুধা তখনও মুখ ভারী করে বসে।অনল সুধার কাছে গিয়ে বুকের কাছে টেনে নিয়ে বললো
-আচ্ছা মা একটা কথা বলো আমি আর বোন না আসলে তোমাদের ভালোবাসা কমে যেত নাকি তুমি অমলবাবু কে ওই শাঁকচুন্নিটার হাতে তুলে দিতে?
-বাবু তুই কিন্তু খুব পেকেছিস।বিয়ে করছিস বলে ভাবিস না বড় হয়ে গেছিস।ছোটবেলার পিটুনি গুলো ভুলে গেছিস?সুধা জড়িয়ে ধরলো অনলকে।
অনল একটা স্বস্থির শ্বাস ফেললো।ইতি মধ্যে অমল ঘরে এলো।
-কি রে তিথি,মা ছেলের মেলোড্রামা শেষ হলো?এবার জরুরি কিছু কথা বলেনি।কাল সকালে তোরা তিনজন যাস,আমি আর সুধা নয় বিকেলে যাবো।
-সব সময় তুমি ওমন করবে না বলে দিচ্ছি..।
-বাবা তুমি চুপ করবে।অনল বলে উঠলো।কাল অফিস যেতে হবে বাবা।
-বাবু কাল দোল।এ কদিন দু পরিবারের যে বেরঙ্গীন দিনরাত গেছে তা সুদে আসলে তুলতে হবে বুঝলি।তবে দিতি মাকে আর ফোন করিস না।কাল সকালে সারপ্রাইস দিবি।
ওহো তাইতো ভুলেই গিয়েছিলো সে।কাল দোল নানা রং এ আবার নতুন ভাবে শুরু করা।
পরদিন সকালে অনল,তিথি আর রজত অদিতিদের বাডিতে।অদিতি ঘুম থেকে ওঠেনি তখনও।
-দিতি এই দিতি দেখ কারা এসেছে।
-ওহ্ মা প্লিস।বলে দাও আমি এবার দোল খেলবো না।
-অনল মিত্রের সাথে ও না?
তড়াক করে উঠে বসলো সে।সবাই কে দেখে একটু চমকে গেল সে।
অনল রক্ত পলাশের লাল আবীরটা মাথায় ছুঁয়ে সারা মুখে মাখিয়ে দিলো।
-হোলি হে অদিতি।তোমাকে নিতে আসাটা কনফার্ম করতে এলাম।
-কিন্তু তোমার বাবা মা।
-সবাই রাজি অদিতিদি,সবাই রাজি।
অদিতি মায়ের দিকে তাকালো,মায়ের চোখে সন্মতির ইঙ্গিত।
-তিথি আর অদিতি বললে হবে না,আমাদের বৌদি প্রাকটিস্ করতে হবে।এবার সব ঘর খালি করো,দুজনের যা মানসিক যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গেছে..।মাসীমা খুব ক্ষিদে পেয়েছে..।
-আহা রজত..।
-তোমরা চল..আজ লুচি,আলুরদম মিষ্টি রেড়ি।
সবাই চলে যেতে অনলকে জড়িয়ে ধরলো অদিতি।
-এই তুই কাঁদছিস কেন?লাল রং এ তোকে বেশ মানায় তো।
-এখনও তুই বলছো অন্ন-দা।
-বিয়ের পর একবার নয় কলেজটা ঘুরে আসবো।কি বলিস্ থুড়ি বলো?
হেসে উঠলো দুজনেই…।
নতুন বসন্তের রং মেখে দুজনের যে পথ চলা শুরু হলো ..সেটা চলুক…।
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..