দীর্ঘশ্বাস
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
ভালোবাসার কবিতা
এক.
এই নাও একমুঠো জোনাকি
ঝুপ্ করে নামে যদি আঁধার
নিশ্চিত পথ দেখাবে!
শিশিরসিক্ত শিউলির ভোর
সযতনে বুকপকেটে রাখা,
যখন খুশি রাঙিয়ে নিও
তোমার পৃথিবীটা!
এক নদী জোছনা
লিখেই না হয় দিলাম,
অন্ধকার অসহ্য মনে হলে-
চুপি চুপি দিও ডুবসাঁতার!
দুই.
এই ঘর ছাড়া আমার আর
কোথাও যাওয়ার উপায় নেই,
এক তুমি ছাড়া আমার জন্য আর
কেউ অপেক্ষা করে থাকে না!
অনেক বছর ধরেই তো দেখছি…
আমার কবিতার প্রথম পাঠক
অসুস্থতায় প্রথম সেবিকা
দুঃসময়ের প্রথম কান্ডারি
আমার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত প্রথম
নারী, সেই তুমি!
যে ‘নিষ্ঠুর’ এপ্রিলকেও করে তুলেছে
প্রেমময়,
সুতো ছেঁড়া ঘুড়িকে উড়তে দিয়েছে
বিশাল আকাশ;
এই আকাশ ছেড়ে আমি কোথায় যাব?
আমার তো আর কোন গন্তব্য নেই!
লক্ষণরেখা
উড়ে যায় পাখি-
এক দেশ থেকে অন্য দেশে
পাখিদের এই ভিসাহীন ওড়াউড়ির
খোঁজ রাখে না কেউ!
মেঘেরও পাসপোর্ট নেই;
তবু বাধাহীন ভেসে বেড়ায় বিশ্বময়
এক আকাশ থেকে অন্য আকাশে!
নদীও স্বাধীন খুব;
জার্মান না জেনেও কী অবলিলায়
রাইনের সঙ্গে খুনসুটি করে যমুনা !
কেবল মানুষই বৃত্তাবদ্ধ
মানচিত্রের খাঁচায়,
চাইলেই পারে না ডিঙ্গাতে
লক্ষণরেখা সীমানা দেয়াল।
নিষ্ক্রিয় কমিউনিস্টের ডায়েরি থেকে
পল্টন মোড়ে এলেই মনে পড়ে-
পথের এই বাঁ দিকটা ধরে
একসময় হাঁটতাম
বন্ধুদের নিয়ে,
আমাদের লক্ষ্য থাকতো
লাল নিশান ওড়ানো
বাড়িটা!
সেই পুরনো একতলা আর নেই
জমিটুকুও দ্বিখন্ডিত
শত বছরের ইতিহাস
মাটি চাপা দিয়ে,
সেখানে এখন মাথা হেঁট করে
দাঁড়িয়ে আছে একজোড়া
বহুতল ভবন !
মনে পড়ে-
গ্লাসনস্ত আর পেরেস্ত্রইকা ঝড়ে
শুধু বাড়ি নয়,
বন্ধুরাও পড়েছিলাম ছিটকে;
কেউ বামে, কেউ ডানে
আমি মাঝখানে…
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
প্রেমের কবিতা যা কিছু পাষাণ, মনে হয় আঁশ বটিতে কুচি-কুচি করে কাটি পালানো ঘাতক সময়…..
তর্জমা স্নানে শুচি হবার পর বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নিচে দোলনাচেয়ারে ছড়িয়ে বসা কিছুটা…..
হয়তো একদিন অস্তিত্বে খুঁজে আত্মপরিচয় নিভৃতে অপেক্ষার প্রহরে এ মন ভালোবাসার রূপালী আলোয় রাঙা মুখ…..