ফিরে এসো
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..
আকাশটা গাঢ় অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে তীব্র ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করলো। হয়ত ঝুম বৃষ্টি হবে, ভিজবো বলে পথে নেমে গেলাম। ইতোমধ্যে রাজপথ ফাঁকা হয়ে গেছে। হঠাৎ বজ্রপাতে বিদ্যুতের দুটো তার ছিড়ে ঠিক আমার দুপাশে পড়লো, কয়েক ইঞ্চি মাত্র। বুকের ভিতর প্রচন্ড এক ধাক্কা খেলাম। একটু সরে গিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে ভাবছি তবে কি এ যাত্রা রক্ষা পেলাম! বৃষ্টি নেমে এসেছে বেশ জোরে সোরে। চকচকে কালো গাড়ীটা ঠিক আমার পাশে সশব্দে ব্রেক কষলো। পেছনের দরজা খুলে গেল, ভেতর থেকে এক নারী কন্ঠ-ঝটপট উঠে এসো। আমি যন্ত্রচালিতের মতো ভেজা শরীরে গাড়ীতে উঠে বসে ভাবছি কে এই নারী যে কিনা আমাকে তুমি বলে সম্মোধন করলো।
সিটের পিছনে রাখা ব্যাগ থেকে এক খানা শুকনো টাওয়েল বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে তিনি বললেন, ভাল করে মুছে নাও, নইলে ঠান্ডা লেগে যাবে। মাথা মুছতে মুছতে জানতে চাইলাম, আমি কি আপনাকে চিনি? কেন যেন মনে পড়ছে না আমার! তার চিবুকে রহস্যের হাসি-লেখক মহাশয় তার সৃষ্টিকেই ভুলে গেছে। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম, কে হতে পারে! তিনি চোখ থেকে চশমাটা খুলে জানালা দিয়ে কিছুক্ষণ বাইরে তাকিয়ে রইলেন, তখন বৃষ্টির মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। ধীরে ধীরে আমার দিকে ফিরে চেয়ে বললেন, তোমার কি মনে আছে, কোন এক ঝুম বৃষ্টির রাতে ছাদে ভিজতে ভিজতে সুনীলের কবিতায় আমাকে স্মরণ করেছিলেঃ
কখনো কখনো আকাশের দিকে তাকালে চোখে পড়ে
নক্ষত্রের মৃত্যু
মনের মধ্যে একটা শিহরণ হয়
চোখ নেমে আসে ভূ-প্রকৃতির কাছে;
সেই সব মূহুর্তে, নীরা, মনে হয়
নশ্বরতার বিরুদ্ধে একটা যুদ্ধে নেমে পড়ি..আমি সেই নীরা, তোমার “অবসেশন” গল্পের নায়িকা “নীরা”।
আমি নড়ে চড়ে সোজা হয়ে বসলাম। তিনি বললেন, শোনো, নিজের সৃষ্টিকে আপনি আপনি করতে হয়না, তাতে তার অকল্যাণ হয়। বলে হাসতে লাগলেন। আমি বললাম, ঠিক আছে। কিন্তু?
কিন্তু আমি কি করে তোমার সামনে এলাম-এই তো? তুমি তো আমার অস্তিত্বই স্বীকার করোনি। অথচ দেখ আমি সৃষ্টি হয়েছি তোমার কল্পনায় যা তুমি কোন ভাবেই অস্বীকার করতে পারো না। গল্পে তুমি রহস্যের বেড়াজালে আমাকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছ, অথচ চরিত্রটা ঠিকই তৈরি হয়ে মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছে। আর এই আমি অভিমানে অনেক কষ্ট পেয়েছি। দেশত্যাগী হযে ইউরোপে কাটিয়েছি অনেক গুলো বছর। কিন্তু তোমার প্রকৃতির বর্ণনা আমাকে সব সময় দেশে টানতো। মনে হতো সেই সব জায়গা গুলোতে তোমার সাথে কি সময় কাটানো হবে না! এমন ভাবনা থেকে ফিরে এসেছি দেশে।
ভাবছিলাম এটিও কি কখনো সম্ভব! গল্পের চরিত্র অভিমান করে দেশত্যাগী হবে আবার সামনা সামনি হাজির হয়ে যাবে! গাঁজা-টাজা খেয়েছে বলেও তো মনে হয়না। নিশ্চয়ই পরিচিত কেউ হবে, হয়ত আমার সাথে মজা করছে। বললাম, ঠিক আছে কিন্তু যাচ্ছিটা কোথায়?
যদি বৃষ্টির দিন না হয়ে জোছনা রাত হতো তবে কাশ বনে যেতাম। গল্পে তোমার সেই বর্ণনা কত সহস্র বার যে পড়েছি, “নীরার স্পর্শ, তার শরীরের গন্ধ, বকুলের ঘ্রাণ সাথে করে সাদা কাশ ফুলের দোলা দেখতে দেখতে, ঝাউবনের পাশ দিয়ে মেঠো পথ বেয়ে, হালকা কুয়াশা ঢাকা মাঝরাতে, জ্যোৎস্নায় ভিজে ভিজে, ভরা পূর্নিমায়, ক্লান্ত পায়ে আমি বাড়ীর পথে পা বাড়াই।” আহা! কি নেশা উদ্রেককারী প্রকৃতির বর্ণনা! অমন পাগল করা জোছনায় কত বার তোমাকে কাছে পেতে চেয়েছি। আচ্ছা, আমার স্পর্শ কি তুমি ভুলে গেলে?
কিন্তু সে রাতে তুমিইতো আমাকে বাড়ী ফিরে যেতে বলেছিলে।
সে তো, তোমার কল্পনার কথা! আমি নীরা কি চেয়েছিলাম তা কি কখনো ভেবেছ?
দেখ, গল্পের চরিত্র লেখকই নিয়ন্ত্রন করে থাকে। সেখানে কাল্পনিক চরিত্রের চাওয়া পাওয়া বা ইচ্ছে অনিচ্ছের কোন মূল্য নেই। তাছাড়া যা কাল্পনিক তা ইচ্ছের প্রকাশ ঘটাবেই বা কি করে? তুমি আসলে কে তা খুলে বলো, আর কোথায় যাচ্ছি তা তো বলছ না!
কিছু্ক্ষণ আগে তুমিই বললে সে রাতে আমি তোমায় বাড়ী চলে যেতে বলেছিলাম। তাহলে আমি কাল্পনিক হলাম কি করে? এই নাও, চোখ বুঁজে আমার হাত স্পর্শ করে দেখ সেই সে রাতের মতো একই স্পন্দন পাও কি না! জোরে শ্বাস নাও, আমার শরীরের সেই মাতাল করা ঘ্রাণ পাও কিনা দেখ!
নীরা’র কথা শেষ হতে না হতেই আমি তার শরীরের ঘ্রাণ পেতে শুরু করি। হ্যা, ঠিক সেই সে রাতে পাওয়া ঘ্রাণ। চোখ বুঁজে তার হাতে হাত রাখি। সেই নীরাই তো! এখনো স্পষ্ট মৃদু কম্পন। আমার সমস্ত শরীর কেমন অসাড় হয়ে আসে। ঘুম ঘুম চোখে বাইরে তাকিয়ে আছি-বর্ষণ মূখর আকাশ। মাঝে মাঝে গাড়ীর ঈষৎ হর্ণ বেজে যাচ্ছে। কতটা সময় পেরিয়ে গেছে জানিনা। নীরা আমার হাত ধরে গাড়ী থেকে নামতে বলছে, নেমে এসো, আমরা চলে এসেছি।
অগনিত গাছের ছায়া ঘেরা বিশাল এক বাগান বাড়ী। সদ্যস্নাতা নারীর মতো সারি সারি সবুজ বৃক্ষ, সামনেটা খোলা- দীর্ঘ জলাশয়। স্বচ্ছ জলের উপর ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে মাঝিরা জাল ফেলে চলেছে। আকাশটা এখন ফুরফুরে সাদা, সূর্য নেই, বাতাস বইছে জোরে সোরে। গাড়ী থেকে নেমেই মনটা ভাল হয়ে গেল। এক গুচ্ছ নারকেল গাছের নীচে বসে পড়লাম। নীরাকে বললাম, জায়গাটা কোথায়?
তা তোমাকে বলবো না, কেমন লাগছে তাই বলো?
খুব ভাল লাগছে। কিন্তু তুমি এই জায়গা খুঁজে বের করলে কি করে?
তোমার বর্ণনা পড়েই আমি প্রকৃতি প্রেমী হয়ে উঠেছি। তাই খুঁজে বের করেছি। কি আশ্চর্য তাই না, মানুষ ভাল লাগলেও প্রকৃতির কাছে যায়, কষ্ট পেলেও যায়। আমার গল্পের শেষ দৃশ্যে তুমি নৌকায় বুড়িগঙ্গার বুকে ভাসছিলে। জীবনানন্দের কবিতা ভেবে ভেবে কষ্ট পেয়েছ। সোনা মিয়ার বাশীঁর সুর মিস করছিলে। সেই মূহুর্তটার কথা ভেবে আমি যে তোমার জন্য কতটা কষ্ট পেতে পারি তা এক বারও ভেবে দেখনি। বরং দেখাতে চেয়েছ আমার বিরহে তুমি কতটা কষ্ট পেয়েছ। লেখকরা আসলে স্বার্থপর হয় আর পক্ষপাতিত্ব করে।
আমি আবার কোথায় পক্ষপাতিত্ব করলাম?
কেন আমার গল্পে আমার অস্তিত্ব অস্বীকার করে তা “অবসেশন” নামে চালিয়ে দিলে অথচ তার পর পরই “দ্যা স্লীপ অব এনডাইমিয়োন” গল্পে মাধবীর সাথে তোমার মিলন দেখালে। সে কি রোমাঞ্চকর-আর্টিষ্টিক শেষ দৃশ্য! মাধবীকে তুমি যে ভাবে আপন করে নিলে তা কি পক্ষপাতিত্ব নয়?
আশ্চর্য়, গল্পের প্রয়োজনে বিরহ কিংবা মিলন এসে যায়, তাকে পক্ষপাতিত্ব বলা কি ঠিক? তাছাড়া গল্পের আমি আর এই আমি কি এক?
নিশ্চয়ই, তুমিই সেই “আমি” চরিত্র। আমার সাথে চালাকী করার চেষ্টা কোরো না। আর অবশ্যই পক্ষপাতিত্ব করো-মাধবীই তার প্রমাণ। কোনো যুক্তি দিয়েই তুমি তাকে অস্বীকার করতে পারবে না। আমার মতো চরিত্র গুলো যে কষ্ট পায় তা তোমরা লেখকরা কখনো বুঝতে চাওনা। তটিনীর ক্ষেত্রেও একই কাজ করেছ।
এখানে আবার তটিনী এলো কি করে?
কেন, “সমুদ্র সমুজ্জল” গল্পে বেচারা তটিনী সমস্ত নিউইয়র্ক শহর তন্ন তন্ন করে সমুদ্র নামের সেই বোহেমিয়ান গিটার বাদক যুবককে খুঁজে ফিরছে। তুমি তার সাথে তটিনীর আর দেখা করালে না! ভারী অন্যায় করেছ। তটিনীর সাথে আমার দেখা হয়েছিল।
কি যা তা বলছ, তটিনীর সাথে তোমার দেখা হলো কি ভাবে?
তোমার সাথে যদি আমার দেখা হতে পারে, তাহলে তটিনীর সাথে দেখা হতে পারবে না কেন? শুধু তটিনী নয় অপ্সরার সাথেও আমার দেখা হয়েছে, হয়েছে বলবো না দেখা করেছি। মাধবীর সাথে ইচ্ছে করেই দেখা করিনি। কারণ ও খুব ভাল আছে, কোন কষ্ট নেই।
তোমরা কি আমার বিরুদ্ধে জোট গড়ছ, বিদ্রোহ করবে?
নিশ্চয়ই, পক্ষপাতিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ তো করতেই হবে। আমরা আজীবন নিজেদের চাওয়া পাওয়া থেকে বঞ্চিত থেকে যাব কেন?
তোমাদের দল আমি ছোট করে দেব, বিভাজন সৃষ্টি করে দেব যাতে প্রতিবাদের কন্ঠ ক্ষীণ হয়ে আসে।
বিভাজন সৃষ্টি করে দেবে বলছ কেন, ইতোমধ্যে করে দিয়েছ?
মানে! কি বলতে চাইছ?
অবাক হওয়ার ভান করছ কেন, “কৃষ্ণচুড়া কিংবা আরবান ক্যানোপি’র গল্প” অপ্সরার এই গল্পটা ছোট গল্প থেকে বের করে তাকে উপন্যাসে রূপ দিতে চাইছ না? গল্প থেকে যতই উপন্যাসে নিয়ে যাও অপ্সরাকে আমাদের দল থেকে সরিয়ে নিতে পারবে না। বেচারা আমার মতোই বঞ্চিত। ওকে আমি ঈর্ষা করি যদিও, কিন্তু ওর সৌন্দর্য-আদর্শ-রুচি-শিক্ষা-দৃষ্টিভঙ্গি এ সবের জন্য ভীষণ পছন্দ করি, বলতে গেলে সমীহ করি।
এত সব গোপন খবর পাও কি করে? উপন্যাস লিখার খবর তোমাকে কে দিয়েছে?
কেন লেখক হয়েছ বলে কি আজীবন আমাদের ইমোশন নিয়ে খেলবে, আমাদের মনের কথা নিজের মতো করে লিখবে আর আমরা কি তোমাদের মনের খবর রাখতে শিখব না? আমরা ঠিকই বুঝতে পারি তোমরা কাকে বেশী পছন্দ করো, কার কথা বেশী বেশী ভাব, কাকে নিয়ে কি পরিকল্পনা করো।
এ সব অর্থহীন প্রলাপ বন্ধ করবে? জায়গাটা সুন্দর! এই সৌন্দর্যটা উপভোগ করতে দাও অন্তত।
হ্যা, প্রসঙ্গ তো পাল্টাতে চাইবেই, সুবিধে করতে পাচ্ছ না যে।
সুবিধা-অসুবিধার কিছু নেই। আচ্ছা বলো আর কি বলতে চাও।
হ্যা, যে কথাটা বলছিলাম, তটিনী আর অপ্সরার সাথে কেন যোগাযোগ করেছি জানো, পারস্পারিক স্বার্থে, পারস্পরিক স্বার্থ অভিন্ন হলে যোগাযোগ হওয়াটা কি অস্বাভাবিক?
এখানে আবার পারস্পরিক স্বার্থ এলো কি করে?
দেখ, বুঝেও না বোঝার ভান করবে না। তুমি আমাদের তিন জনকেই কষ্ট দিয়েছ, না পাওয়ার কষ্ট। আমাদের স্বার্থ এক-অভিন্ন। ধরো যদি তটিনী আমার মতো কখনো তোমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে, “আমার গিটার বাদক সমুদ্র কে আপনি কোথায় লুকিযে রেখেছেন?” তখন কি উত্তর দেবে?
মহা জ্বালায় পড়লাম তো দেখছি, আমি গল্প লিখেছি। গল্পের প্রয়োজনে চরিত্র সাজিয়েছি। আর তুমি চরিত্র হয়ে আমার সাথে এমন করছ? সমুদ্রকে আমি কোথায় পাবো, সে তো কাল্পনিক।
কিন্তু তটিনী তো সমুদ্রকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে আছে, সে কি দোষ করেছে বলো, তুমি ওর মনে সমুদ্রের জন্য এত মায়া তৈরি করতে গেলে কেন?”
তটিনী সমুদ্রের কথায় মুগ্ধ হয়েছে তাই মায়া জন্মেছে, এখানে আমার কি করার আছে?
অনেক কিছুই করার ছিল, ইচ্ছে করে করোনি। সমস্ত নিয়ন্ত্রণ তো ছিল তোমার হাতে-
আচ্ছা বলোতো, তুমি চাইলে কি সেই কৃষ্ণচুড়ার বাগানে অতনুকে দিয়ে অপ্সরাকে একটা চুম্বন করাতে পারতে না? তাকে তো মনের মাধুরী মিশিয়ে ঠিক অপ্সরাই সাজিয়েছ। আগুন রঙ্গা শাড়ী পড়িয়েছ, ম্যাচিং ব্লাউজ, কপালে লাল টিপ, কৃষ্ণচুড়ার বাগানে ফুটে আছে অসংখ্য রাঙ্গা ফুল। অতনুকে নিয়ে সেখানে সে গেল কতো না বাহানা করে। এত করে মনে মনে চাইল একবার সে অন্তত বলুক কিছু একটা, অপ্সরাকে সেখানে জড়িয়ে ধরে প্রগাঢ় এক চুম্বন এঁকে দিক-বলুক তোর প্যারিসে গিয়ে কাজ নেই, আমার বুকেই থেকে যা। অথচ অতনুকে তুমি কেন যে মুনী-ঋষী বানালে! কি এমন অশুদ্ধ হতো যদি অতনু অপ্সরাকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করতো? নাকি তুমি নিজে পারোনি বলে তোমার গল্পের চরিত্রকেও সন্যাসী সাজাতে হবে-যার পরিণামে মনে প্রচন্ড হাহাকার নিয়ে অপ্সরা ছন্দহীন এক অনিশ্চিত জীবন বয়ে বেড়াবে, কি নিষ্ঠুর তোমরা লেখকরা!
আচ্ছা, তুমি গল্পের ঘটনা প্রবাহ নিয়ে এত ক্ষেপলে কেন, যাকে যেভাবে দেখানো হয়েছে মানুষ তো সেভাবেই গ্রহণ করেছে। অপ্সরার গল্পটাকে উপন্যাসে রূপান্তরিত করার পরামর্শ এসেছে, আমি তো সেভাবেই এগুচ্ছি।
তাতে আমাদের কি লাভ? তুমি তো মানুষের বাহবা পেতে যে ভাবে ইচ্ছে লিখবে আর আমরা সারা জীবন কষ্ট গুলো বয়ে বেড়াবো? শুধু পাঠকের কথা ভাববে অথচ পাঠককে আনন্দ দেয় যে চরিত্র, তাদের কথা এত টুকু ভাববে না, তা তো হতে পারে না!
আমাকে তুমি কি করতে বলো?
তুমি আমাদের সবার কথা শুনবে এবং সেভাবেই লিখবে। হ্যা, আমরা যে ভাবে বলবো সেভাবেই, সেভাবেই, সেভাবেই…….
পিউ কাহা! পিউ কাহা! পিউ কাহা! পাখিটা গলা চড়িয়ে সঙ্গীকে ডেকেই যাচ্ছে।
রাত জাগা চোখে জলের ঝাপটা দিয়ে বসেছিলাম পড়ার টেবিলে, তখনো ভোর হতে দেরী। বইয়ের পাতা উল্টোতেই মনে হলো একটা কিছু লিখে ফেলি। কিন্তু কি লিখব ভাবতে ভাবতে দু’চোখের পাতা ভারী হয়ে এসেছিল। লেখার কাগজের উপর মাথা ঠেকে আছে, কলমটা হাত থেকে খসে পড়েছে। পিউ কাহা’র আর্তনাদ আরও করুণ সুরে আমার কানে বেজে যাচ্ছে। তবে কি নীরা আসেনি! স্বপ্নে নীরা’র ইন্টারোগেশন থেকে বেরিয়ে এসে কিছুটা স্বস্তি অনুভব করলেও কেন যেন মনটা খারাপ হয়ে গেল-ভালই তো ছিলাম এতক্ষণ। ভীষণ ইচ্ছে হলো আমিও পাখিটার সাথে গলা মিলিয়ে ডাকি, পিউ কাহা…
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..
ভার্সিটির বাস ধরতে হয় আমাকে খুব সকালে। বাড়ি থেকে একটু হেঁটেই রিকসা। তারপর বাস। হাঁটা…..
আজকের সন্ধ্যাটা থমকে যাওয়া মেঘেদের। ঝিরিঝির বৃষ্টি ছিল দিনভর। ঢাকা শহরের পথঘাট জল কাদায় মাখামাখি।…..
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..