নুনে পোড়া বৃদ্ধ উপদেশ

অভিজিৎ দাসকর্মকার
কবিতা
Bengali
নুনে পোড়া বৃদ্ধ উপদেশ

কখনো পিছলে পড়ি

ভুঁই ফুড়ে উঠে এলো ১টি প্রাণী
নাম দিলাম ভিনাস ফ্লাইট্র্যাপ। এটি ১টি উদ্ভিদ। এর সাথে মাটির গন্ধ, বাতাস ভরা বায়োলজি মুখ
পেট
খিদে আস্তে আস-তে ভর্তি করতে থাকলো— আম জনতাকে। গণতান্ত্রিক গলার স্বর। অর্থনৈতিক অঞ্চল। রসালো এবং শাঁসালো অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। আর
ফুৎকারে উড়ে যাচ্ছে ধূমপায়ী শ্বাসোশ্রবণ। মাদক স্নায়বিকতা। মচমচে জ্বলন্ত ইচ্ছা। বাড়ির উঠোনের রোদ। রোদে পিঠ এলানো পেলব প্রাচীর। অভাবি সিলিং-এর প্লাস্টার। চুন ও কাম।
দিন দিন চাপা পড়ছে ওই মাটিফোঁড় ট্র্যাপগুলোর ভবিষ্যত। তার সাথে গজিয়ে ওঠা দুঃস্বপ্ন। বুক ধড়ফড়িয়ে ওঠা গণ, প্রজাতি শ্রেণীর বৈশিষ্ট্য।
ছুটতে ছুটতে লিবার্টির শুকতলা রাস্তায় লেগে থাকছে বাড়ি ফেরার পথে।
এখন পিঠ উপুড় করে শুয়ে পড়ি। কারণ, পিঠের উপর বিনাগ্যাস ওয়ালা পুঁজিবাদের ছায়াগন্ধ। তাদের গতর ও মুখের মিষ্টতা শংকর মাছের মার্জিন টেনে দ্যায়। আর আমি-
পিছিয়ে পড়ি
কখনো পিছলে পড়ি
কখনো বেদর্দি চোখের শব্দে, শব্দ খুঁজি। সকালে। দুপুরে। পুকুর। ডোবা। মাটি পার করে আবার ১টি প্রাণী জন্মদ্বার দিয়ে পিচ্ছিল ভাবে বেরিয়ে আসে
নাম দিই মেফিস্টোফিলিস। এই প্রাণীটি…সঞ্চয়। গাছের গোঁড়া অধিগ্রহণ। প্রতিশ্রুতির সঙ্গবাস। তারপর সুইসাইড নোট ছাড়াই আত্মহননের লিপ্সায় উলঙ্গ নাচ। নাচের সাথে ডানা ঝাপটে উড়ে যাওয়া।
অতএব,ইট ইজ ইকুয়ালস্ টু সর্বহারা, সুতরাং
সারবস্তুটি হোলো, প্রাণীটি ১টি অভি-দানব।

নুনে পোড়া বৃদ্ধ উপদেশ

চোখের কোণে কোনো প্রসন্নতা নেই
অন্ধকার ছায়াপথ ধরে হাঁটছি-
বিপরীত ক্যারেকটারে আমাকে ব্যবহারের পরেই দূরপাল্লার শপথবাক্যগুলো
কখনো নিয়মরক্ষা করছে, কখনো মগজের আলো নিভিয়ে
আমাকে মেল করছে।

মাটিতে মিল ও মেশানো নদীর শুকনো শুকনো জ্যোৎস্না।
গাছের সমান নুনে পোড়া বৃদ্ধ উপদেশ। আর
আবাদ বিকেলের আড্ডাগোলে বসে টিসটিসে, অথচ
পিচ্ছিল হোমওয়ার্কগুলো নীরবে পরিচর্যা করে নেয়া-

হাতে রইলো মধ্যযুগ। মনের ফেলোপিয়ানে টিমটিম করা বিশ্বাসী শ্রদ্ধা। অক্ষরে বুঁদ হয়ে থাকা সোঁদা গুজব। চারটে কাব্যপুস্তিকা প্রকাশে তির্যক-ইচ্ছা, আর এরপর
নিজের মেধার দুঃখজনক স্রোতের নিরামিষে হাত-পা ছড়িয়ে বসে আছে, এবং
হৃদশব্দের ভিতর গুজব সংক্রান্ত অশ্বক্ষুরাকৃতি উচ্চারণগুলো ঢেলে দিয়ে যাচ্ছে-

কী নির্মম! হে অন্যমনস্ক ফিলোসফিকাল গাজন মুহুর্ত- কেতকীর অন্দরমহলে পুরোহিত শ্রেণিবিন্যাসের চর্চা করছে আর
বুকফুলিয়ে নিউজপেপারের হেডলাইন ধরে হাঁটা মুখস্থ করছে?

আমি তোমার চোখের আড়ালজলে সাঁতার কাটবো-

প্লাস্টারে হাঁ-করা জরাজীর্ণতা

হে সবুজ নৈর্ঋতের গোলাপি গন্ধের বাতাস
তুমি আজ আমার বিস্তীর্ণ ডাকবাক্স ঘেঁষে অথবা মশারির পাড় ধরে বয়ে আসো-

আস্তে আস্তে নিধু বাবু লেনের সেমিকোলন ধরে অল্প দাঁড়াও। শুদ্ধ লোকাচারের ব্যাকরণক্লাস। মাথায় আসা আচমকা কাজের ঠাসা ভিড়। তবুও-
সমস্ত পরিযায়ী এবং আলস্যপ্রিয় বিকেলগুলো দুপুরের ধসভেঙে ঘাড়ে, তারসাথে
পিত্তথলির স্টিচের অপ্রয়োজনীয় আকাঙ্ক্ষারা গুমরে গুমরে শুকোচ্ছে।

সমবেত গুঞ্জন থামান। কারণ কোলবালিশটির ছলাকলা এবং ধস্তাধস্তি, চারদেয়ালের বাইরের ইটে জ্যামিতি
প্লাস্টারে হাঁ-করা জরাজীর্ণতা , এবং অজান্তেই মুখস্থ হয়ে যাওয়া ১৭ ঘরের নামতাটি, স্নায়ুপল্লি দিয়ে থরথর করে হেঁটে চলেছে-

তবুও পৌনঃপুনিক যোগ কোরে…
ওঁৎ পাতা শরীরের মার্জিনে ছায়া
ঋতুমতি গাছের বৈভব-যন্ত্রণা,আর
গাছের ফাঁকে জাফরানি চাঁদবলয়। তোমাদের সাথে আমার বিচ্যুত খবরাখবরগুলো ঠুংরি ঠুংরি সুরে ধাওয়া খেয়ে আসছে-

অভিজিৎ দাসকর্মকার। কবি। জন্ম ও বাস ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের বাঁকুড়ায়।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

যাযাবর

যাযাবর

যাযাবর যাযাবরদের ছোঁড়া কাঠে আগুনও অসংযত,ঝড় উঠে ইত্যবসরে কিছু লবণ দানাও জমা পড়েছে… উদ্বাস্তু রোমে…..