পরদেশী

তুলোশী চক্রবর্ত্তী
কবিতা
Bengali
পরদেশী

নৌকা সফর

ও মাঝি, তোর নৌকাখানি দিবি একটিবার?
ওপারেতে যেতে চাই,জানিনে যে সাঁতার
সেই ঘাটেতে আমার কানাই আছে অপেক্ষায়
আমি তারে আনতে যাবো তোর এই নৌকায়
ঐ দেখায়ায় থৈ থৈ বালুচর
ধোয়া ধুলোয় আজ এ শহর বড্ড বিরক্তিকর,

ও মাঝি,তোর নৌকাখানি দিবি একটিবার?
আপন হাতে বৈঠা বেয়ে আমি তারে আনবো এপার,
জলের মৃদু স্রোতধারা বইছে অনুকূলে
ভেসে ভেসে যাব আমি তোর নৌকায় দুলেদুলে,
ঘুমহীন চোখে তারে রাখবো খুব কদরে
চেয়েছিলো যেতে সে পূর্নিমা রাতের নৌকা সফরে,
হয়তো পথ দেখাতে রুপালি মাছ করবে সহায়তা
পানিতে চাঁদের আলোর ঝিকিমিকিতে আমার স্বপ্নেরা পাবে পূর্ণতা।

 

পরদেশী

দিনের পর দিন,যুগের পর যুগ
হয়ে যাবে পার
মোর সনেতে তোমার দেখা
হবে না তবু একটি বার?

তব প্রেমে মাঝে মাঝেই
মনযে দেয় নাড়া
আমার ডাকে পরদেশী তুমি কিগো
তবু দেবেনা একটু সাড়া?

শীত-গ্রীস্ম-বর্ষাতেও
রাখবো হৃদয়কোনে
লোক দেখানো নয়যে তা
প্রেম শুধুই মনে মনে,

কোন কালে রাখবে কিগো?
তোমার পাশাপাশি?
পাশে বসে দেখবো আনি
তোমার মুখের মধুর হাসি,

প্রেমে মত্ত সখীরা তোমার
আসবে যখন দলে দলে,
তখন থাকবো নাকো পাশে তোমার
চলে যাবো আড়ালে,

তবু আমি চাই না দিতে
তোমার সাথে আড়ি,
নিধু বনেই লুকিয়ে যাবো
ছেড়ে ঘর বাড়ি,

প্রত্যহ নাম না জানা
হরেক রকম ফুলে
গাঁথবো মালা
পড়াতে তোমার গলে,

চুপিসারে কানে কানে
বলবো তোমায় ভালোবাসি,
প্রজাপতির রঙ্গিন ডানায়
চলো পৃথীবিটা ঘুরে আসি।

 

অবলা

অবলার মন
বলো বোঝে কতজন?
কিছু বোঝাতে না পেরে যার
কেটে যায় আমরন,

যেদিকে তাঁকায় ,ছিল সব অজানা
তবু মনে হয় ,সবই তো চেনা
অবুঝ মন কিছু বোঝাতে পারে না
শুধু বারে বারে বহে নয়নের ঝরনা,

দগ্ধ আঁখি,দগ্ধ মন
নীরে শান্ত হয় কি কখন?
তবু অবলা মানে না যে ক্লান্তি
ভালোবাসাই তার সব সুখ শান্তি,

দশটা মাইল হাটতে হলেও
খাওয়া দাওয়া ভুলে গিয়েও
ধৈর্য্য নিয়েও চাইবে মাপ
মাথায় থাকনা যতই প্রখর রোদ্র তাপ,

তবু দেখো দেবতার এ কেমন খেলা
ভালোবাসায় পায় সে শুধুই অবহেলা
অবলা হওয়ায় পাওনা শুধু নিষ্ঠুর জ্বালা,
বিধির অভিশাপে সে যে এক কালা,

তার সহজ সরল মন
ভালোবাসাই যার শ্রেষ্ঠ প্রিয় ধন,
মানিয়ে নিতে পারতো ঠিকই সবার সব চাওয়া
ইচ্ছ শুধু ছিল মনের মাঝের ভালোবাসাকে পাওয়া।

 

হেমন্তেরই প্রাক্কালে

আজি চিন্তামুক্ত সকালে
হেমন্তের প্রাক্কালে,
দেখি শিশির কণা গুলি জ্বলে
একটু রোদের আলো পেলে,

গাছে গাছে পাতায় পাতায়
আছে ফোঁটা ফোঁটা শিশির জমে,
হচ্ছে মনে রুপোলি দুল পড়েছে
তাহার সবুজ কানে,

কার্ত্তিকের প্রারম্ভে
হালকা হিমেল প্রাতে,
পুষ্ট ধানের শিষ গুলি
দুলছে গাঁয়ের ক্ষেতে,

এখন ঠান্ডা দিঘির জলে,
ভরে আছে শাপলা ফুলে,
মন মাতানো আবেগ আসে
বসলে কোনো নদীর কুলে,

চলছে বাউল গান গেয়ে
সবুজ মাঠের পথটি ধরে,
জানান দিচ্ছে আসছে নবান্ন
প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে।

 

শিশু

শিশু সত্যস্বরূপীনি, শিশু মোদের নয়নমনি
তাদের মাঝেই লুকিয়ে আছে সব রত্নের খনি,
শিশুরা তো স্নিগ্ধ প্রকৃতির,ফুলের কড়ির মতো সুন্দর
প্রতিটি শিশুরই আছে নিস্পাপ অন্তর,
শিশুরা আনন্দ দ্বায়িনী,শিশু মায়াময়
শিশুর হাতের স্পর্শে জুড়ায় হৃদয়,
শিশু ব্রহ্মরূপা শিশু প্রাণের সুখ
তাদের হাসি এক পলকে ভুলিয়ে দেয় মনের সব দুখ্,
শিশু পূর্ণ্যস্থীত, ঈশ্বরের প্রেরিত দূত
শিশুর ভালোবাসায় নেই যে কোনো খুত্,
আজকের শিশুরাই
আগামীদিনের দেশের ভবিষ্যৎ
তাই প্রথমেই করো বাঁধা মুক্ত, তাদের চলার পথ,
শিশুকালে মন যে শুধু খেলাধুলায় আর হাসিখুশি
পড়াশুনাও তার সাথে চলবে পাশাপাশি,

তবে বর্তমানের অধিক শিশুই পায়না তাদের অধিকার
তারা প্রায়ই হচ্ছে শোষক শ্রেণির নির্যাতনের শিকার,
সোহাগহীন, অবহেলায় তাদের জীবন যে ছাড়খার
বহু শ্রম করেও তারা পায়না আধপেটা খাবার,
রেলস্টেশনে- হাটে ঘাটে-কিংবা গ্যারেজে-কারখানায়
এই ফুলের মতো কুঁড়িগুলি একটু খাবারের আশায় ঘাম ঝড়ায়,
শিশু নির্যাতনের হতো যদি সঠিক প্রতিকার
ফিরে পেতো যেদিন সব শিশুরা তাদের অধিকার,
ঘটতো তখন জাতীর এক অপূর্ব মেলবন্ধন
স্বার্থক হতো সেদিন শিশু দিবস পালন।

 

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু

প্রথমে জানাই তোমার প্রতি
স্বশ্রদ্ধ প্রণাম সহস্র কোটি,
হে ভারত মাতার বীর সন্তান
শুনতে তো পারছো? বুভুক্ষু নরনারীর কলতান,
তোমা বিনা যেনো মনে হয় পিতৃহীন মোরা
ভারতভূমে কুরুক্ষেত্রের অর্জুনরূপেই আবির্ভাব হও তরা,
তোমার মতো যুগাবতারের আগমনের অপেক্ষায়,
দেশের সবাই রাত্রিদিন রয়েছে প্রতিক্ষায়,
সত্যযুগে পালনকর্তা ছিল নারায়ণ ভগবান
তুমি ও কলির ভগবানরূপে আজো রয়েছো বিদ্যমান,

হে বিশ্ববাসীর সন্মানীয় বীর
তুমি পূনরায় আবির্ভূত হও, না করে ধীর
ফিরে এসো, কেউ ভুলেনি আজো তোমার অবদান
মনেপ্রাণে তুমিই রাখতে পারো ভারতমাতার সঠিক সন্মান,
নররূপে স্বার্থলোভী কিছু পিশাচেরা
প্রাণের মাতাকে আজো পরাধীন করেই চলছে যে তারা,
আপন জননীকে রক্ষার জন্য দিবারাত্র কতো কষ্ট সয়েছো
জানিনা শেষে কেনো কিছু অমানুষের জন্য এতো অবহেলা পেয়েছো,
পৃথিবী নামে গ্রহটি যতদিন সৌরজগতে থাকবে
বিশ্বাস করি তুমিও ততদিন ভারতবাসীর প্রাণে মনে অমর রবে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..

ফ্রেম

ফ্রেম

দেবী না পরিণীতা রাতটা একা থাকে এবং নিঃসঙ্গ অন্ধকার মানে রাত; তাহলে অন্ধকার নিজেও একা…..