প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
কতদিন আমি তাদের জানো তো
পাই নি চরণধূলি
কতদিন আমার কাছেতে আসে নি
কেকা আর বুলবুলি।
কতদিন আমি দেখি নি তাদের
হয় নি আদর করা
কতদিন তাদের হয় নি ধরা
আমারই দেওয়া সে পড়া।
কতদিন তাদের গন্ধ পাই নি
হয় নি গন্ধ শোঁকা
কতদিন তাদের মনের ভিতরে
হয় নি আমার ঢোকা।
আমি শিক্ষিকা তাদের দিশা তো আমি
তারাই আমার কাছেতে আজও
সবচেয়ে বেশি দামি।
জানো কতদিন নূপুরছন্দে
তাদের বাসি নি ভালো
কতদিন জানো ওদের বলি নি
চোখেতে আগুন জ্বালো।
কতদিন ওরা আমার সামনে
কোমরে দেয় নি হাত
কতদিন জানো আমার খাবারে
ওদের ভরে নি পাত!
কতদিন ওরা শাড়িও পরে নি
পায়েতে আলতা নেই
কতদিন ওরা নাচতে নাচতে
হারিয়ে ফেলে নি খেই।
আমি শিক্ষিকা ওদের পাই না কাছে
কতদিন বল আর কতদিন
মানবী এভাবে বাঁচে!
ওদের কাছেতে পাই না বলে
আমিও তো মনমরা
যাদের চোখেতে ধরা থাকে রোজ
সাধের বসুন্ধরা।
কতদিন ওদের গালও টিপি নি
বসানো হয় নি কোলে
কবির কবিতা যাদের ঠোঁটেতে
চোখেতেও ওঠে জ্বলে।
কতদিন ওরা আদর করে না
আমার কাছেতে এসে
তারাই বড় যারা প্রতিদিন
ছোটদের সাথে মেশে।
আমি শিক্ষিকা একা একা আজও থাকি
ইচ্ছে করে জানো তো আমার
ওদের গন্ধ মাখি।
আমি যেন আজ ভুলতে বসেছি
চেনা সঙ্গীত ধারা
ওরা যে আজ সবাই ছুটিতে
আমার লাগামছাড়া।
কতদিন জানো ওদের হাতের
স্পর্শের থেকে দূরে
কতদিন জানো হাতে ধরে রিড
বলি নি গা তো সুরে।
আমি যেন আজ ঝরাপাতা এক
বাড়িও দীর্ণ বড়
কাউকে বলি না সারেগামাপা
এবারে এভাবে কর।
আমি শিক্ষিকা মন ভারি করে বসে
ওদের সহজ সরল মনের
জটিল অঙ্ক কষে।
ওরা কি জানে কেন স্থিতিশীল
প্রতিকূলতার হাল
ওরা কি জানে কারা হাওয়া দেয়
কারা খোলে তাতে পাল।
ওরা শৈশব ওরা কৈশোর
বড়র সঙ্গ পেয়ে
কতকিছু ওরা সহজেই জানে
জানো বড়দের চেয়ে।
ওরা ভালবাসে ইস্কুলে যেতে
তালিম নিতেও জানে
ওরাই তো পড়া-কবিতায় থাকে
থাকে ওরা নাচে-গানে।
আমরা যে শিক্ষিকা থাকি দিদিমনি হয়ে
আমরাও থাকি পরাধীনতায়
বন্দিদশাকে সয়ে।
জানো আমি পড়াশোনায় খুব ভাল যে নই
আজও আমার ঘুম পেয়ে যায় পড়তে বসলে বই
গুরুমশাই যখন আসেন
আমায় দেখে শুধুই হাসেন
আমায় বড় ভালবাসেন
কিন্তু আমার পড়াশোনায় মন বসে আর কই
পড়াশোনায় আজও আমি খুব ভাল যে নই।
পড়াশোনা যে শেখাবে গুরুমশাই সেই
কে বলেছে এমন কথা কোথাও লেখা নেই
গান শেখাতে যিনি পারেন
তিনিও সবার নজর কাড়েন
ভুল করলে তিনিও মারেন
উত্তর কেউ দেয় না আমায় প্রশ্ন করি যেই
সবাই কেমন ঢোঁক গিলে নেয় হারিয়ে যেতেই খেই।
নাচ শেখাতে পারেন যিনি তিনিও হলেন গুরু
যাঁর কাছেতে নাচের তালিম আমার নেওয়া শুরু
ভালবাসেন আদর করেন
নিজের হাতে আমায় গড়েন
নাচের কত মুদ্রা ধরেন
হয় না আমার তাঁর কাছেতে বক্ষ দুরু দুরু
কপট রেগে যদিও তিনি কোঁচকান তাঁর ভুরু।
আবৃত্তি যে গুরু শেখান তাঁরই কোলে বসে
কতদিন যে তালিম নিলাম বলব হিসেব কষে!
ভীষণ ভাল মানুষ তিনি
করেন না তাই বিকিকিনি
ভীষণ ভাল তাঁকে চিনি
কই কখনও দেখি নি তো তিনিও আছেন রোষে
গুরুর কোনও হয় না গো জাত আমরা ফেলি দোষে।
কত কিছু শিখতে যে হয় ভাল্লাগে রোজ বল
সবাই বলে চাঁদের মতো রবির মতো জ্বলো
হয় না কি তা হয়েছে কি তা
মন্দোদরি হয় কি সীতা
সব মেয়ে হয় রাজদুহিতা
হে বিধাতা তুমিও কেন শৈশবকে দলো
কত কিছু শিখতে যে হয় ভাল্লাগে রোজ বল!
পরিক্রমা
কতদিন আমি ঘুরেছি যে তার সাথে
আজও আমি তার সাথে করি খেলা
তার সাথে আজও আমারই তো কাটে বেলা
ভোর থেকে শুরু শেষ হয় ভোর রাতে।
আজও আমার আনন্দে দিন কাটে
আজও আমি সেই ছোটটিই আছি
আজও আমি তেমন করেই বাঁচি
আমারই মন সে রকমই আজ হাঁটে।
ঝমঝমঝম বৃষ্টিতে আজও ভিজি
শরীরের সাথে কাপড় লেপটে থাকে
প্রতি ক্ষণে ক্ষণে সেই তো আমাকে ডাকে
আজকে আমার বাঁচাটা বড়ই ইজি।
ব্যস্ত থাকি ঘরকন্নার কাজে
একটা-দুটো-তিনটে শোবার ঘর
এত বড় বাড়ি আমি থাকি আর বর
গরিব মেয়েকে এত বড় বাড়ি সাজে!
আজও আমি সেই গরিব বাবার মেয়ে
আজ আমি এক ভার্যা ধনীর ঘরে
কখনও কথা হয় নি উচ্চ স্বরে
উপরে উঠি নি ধাপে ধাপে সিঁড়ি বেয়ে।
কখনও কিছুতে জোর তো করে নি ও
কখনও কিছু সে চাপিয়ে দেয় নি ঘাড়ে
কত কাজ ও নিজেই করতে পারে
বলেছে : কেবল স্বাধীনতা কিছু দিয়ো।
অনেক কিছুই শিখেছি যে তার কাছে
অনেক কিছুই তার থেকে আজও শিখি
বসন্তে যেমন আড়ালেতে থাকে পিকই
তেমন করে সেও তো আমায় ডাকে।
যেদিন থেকে বুঝতে শিখেছি আমি
সেদিন থেকে আজও শেখায় সে তো
আমার মতন যদি কোনও মেয়ে পেতো
আমার বর থাকত কি অত দামি।
আমারও তো সেই ভালবাসা করে বিয়ে
ছাত্রী তখন মগ্ন টিচার প্রেমে
অনেক কষ্টে শিক্ষক এল নেমে
মাধ্যমিক বা একাদশ শ্রেণি দিয়ে।
এখনও আমি শিষ্যাই তার আছি
সেই তো এখন পতি পরম গুরু
বাসরঘরেতে লজ্জার হলো শুরু
ফুলশয্যায় সেদিন হই নি রাজি।
ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হয়ে এলো
তার সন্তান আমার এসেছে পেটে
যেদিন জেনেছে হাসিতে পড়েছে ফেটে।
আমাকে বলেছে এইভাবে তুমি হেসো।
মা ডাক শোনার আসে পালা রোজ কাছে
আর কয়েকটা মাসের তো অবসান
কে বলে এতে শিক্ষার অপমান
কোন্ সন্তান শুধু দুধে-ভাতে বাঁচে!
এমনি করেই চলবে পরিক্রমা
এমনি করেই তারাও পড়বে প্রেমে
বসুন্ধরা না হলে যাবে যে থেমে
তোমরা পারবে তাদের করতে ক্ষমা!
বিধাতা নিজেকে কি যে ভাবে!
আমাকে তার সাথেই বিয়েটা দিলে বিধাতা!
হতে পারে একসাথে খেলা করেছি
আমি যখন দশম শ্রেণি সে তখন কলেজে
আমাকে ওই কলেজেই ভরতি হতে হলো
কি পরিহাস তোমার বিধাতা!
স্কুলেই তার জন্য মনটা কেমন কেমন করত
কলেজে গিয়ে প্রগাঢ় প্রেম
আজ এখানে তো কাল সেখানে
পরশু হাত ধরাধরি অন্য কোনও জায়গায়
বিধাতা আমি কি করে ওকে বললাম
আমি তোমায় ভালবাসি খুব ভালবাসি!
লজ্জার মাথা খেয়ে বুঝি!
কিন্তু আমি তো এমন ছিলাম না
কত দিন কত রাত যে ভেবেছি
তারপরেও হঠাৎই বলে দিলাম
না আমায় সে কোনও
খোঁটা দেয় না তার জন্য
আসলে সেও আমাকে ভালবাসে যে
বলতে পারে নি বলা হয়ে ওঠে নি হয়ত।
হে বিধাতা তুমি জানতে না
আমি কি চাইতাম!
অনেক দূরে শ্বশুরবাড়ি হবে
ভেবেছিলাম শ্বশুর শাশুড়ি দেওর ননদ
ওফ একদম ভরপুর সংসার!
বড় একা লাগে।
শাশুড়ির সঙ্গে কত কথা বলা যায়
খুব অল্প সময়ে সব কথা শেষ হয়ে যায়
পরিণামের গভীরতা যখন বাড়ে
তখন বোধহয় কথার জোগানও কমে যায়
তাই না বিধাতা বল না
তুমি তো সব জানো।
আজ আমি পুরোপুরি সংসারি।
সে বলে শাড়িতে আমায় খুব ভাল মানায়
শুধুমাত্র রাতের অন্ধকারে অন্য পোশাকে
অন্য মেরুদণ্ড নিয়ে থাকি।
তখনই আমি কেবলমাত্র তার।
তার ছাত্রীও নয় সে শিক্ষকও নয়।
ওরা খুব গরিব ছিল।
ও যখন ক্লাস এইটে আমি তখন ফাইভে।
তখন থেকেই ওর সাথে আলাপ।
আমাকে পড়াতে আসত বাড়িতে
ভয় পেতাম না ভয় পাব কেন
শিক্ষককে কেউ ভয় পায়!
থাকে শ্রদ্ধা থাকে ভক্তি থাকে মান্যতা।
আমাকে পড়াতে আসত বাড়িতে
সেই বয়সেই বাবা হারা সে
অনেক টিউশনি করত
সংসার ছিল ওর কাছে আরাধ্য
আজও তাই।
বহু ছেলেমেয়ে সরকারি আমলা হয়েছে
ডাক্তার হয়েছে শুনেছি কেউ কেউ
গবেষণাও করছে বিভিন্ন বিষয়ে।
আমি তার স্ত্রী ছাড়া আর কিছু হতে পারি নি
সেও সরকারি কেরানি ছাড়া কিছু হয় নি
তবুও সে আজও আমার শিক্ষক
আমার দর্শন আমার স্বামী।
হে বিধাতা তোমার কাছে
আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই
আমি পরিপূর্ণ আমায় ক্ষমা করো।
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..