পলাতক শব্দ

আলী রেজা
কবিতা
Bengali
পলাতক শব্দ

পলাতক শব্দ

ভেতরের কথাগুলি জ্বলে উঠে মেহগনি রঙ ঢেলে
গিলে ফেলি শিখার শীর্ষে মেলে ধরা তরল অহঙ্কার,
একেই কি কথা হজম বলে? শেষ রক্ষা হলা না,
পোয়াতির নিঃশব্দ বমনের সাথে ঘন ঘ্রাণের ঢল নামে।

আঙ্গুলের সুচাগ্র ডগায় তাগার বর্ণালির খেলা
তুমি যতই পটু হও সীবন শিল্পে সুতো খুলে যাবে।

তরলের সান্দ্রতা ভুলে আমিও হাত পাতি
আঁচলের গিট খুলে দাও যেভাবে খোল
স্নানের দুপুরে রেশমি নিবীবন্ধ।

মদিরার সাথে মাদুরের সম্পর্ক খোঁজা নিরর্থক জেনেও
বসে থাকি মাদুরে যদি কিছু পলাতক শব্দ এসে ধরা দেয়।

দৃশ্যপট

দৃশ্যপট মনে আছে
জায়গাটার নাম মনে পড়ছে না
এখানে খুন হয়েছিল একজন কবি
পার্কের ভিতরে পাতা কুড়ানির ভীড়
পাতা ঝরা ল্যাংটা গাছের ডালে ডালে
বেনো রোদে পোড়ে কাউয়ার ঝাঁক
খসখসে ঘাসে আধশোওয়া
নাবালিকা দেহ যৌনমজুর
গোল ঝাপসা আয়নায় দেখে পরের খেপ
ফুল পাখি আঁকা কাগজের বিছানায় শুয়ে
একটানে গিট খুলে টাকা গুজে রাখে
পলিথিনে ভাঁজ করা নধর পেটে
নিম্ন নাভির ব্ল্যাকবোর্ডে কোন হারমিরপুত
আঁকাবাঁকা হাতে চকখড়ি দিয়ে লিখে গেছে
“জাতের মেয়ে কালোও ভালো
নদীর জল ঘোলাও ভালো”

ছররা

মেঘারোহী আগুন বোমা
সূর্য ঠেকায় ছাতা
হিজাব দিয়ে ঢাকা আছে
মন মাধুরীর মাথা;

গতরে তার সবুজ লতা
চক্ষে রুপের ঝিলিক,
ছায়ার সাথে প্রহর জুড়ে
কইছে মনের কথা।

দহন দগ্ধ দুপুরে আজ
ভুলে গেছে নিতে
শিশিরভেজা চুলের জন্য
চালতা রঙের ফিতে:

ধুতরা গাছের শাখায় পাতায়
বুলবুলিদের নাচ
পাতাল সেঁচে নিয়ে এলাম
হিরক দ্যুতির কাঁচ।

 

শূন্য পাঠশালা

হায় হায় ! কি দৃশ্য দেখে যাও কিন্নরী, একটু সময় থাকে যদি
যেখানে এখন ইস্পাত সড়ক সেখানে জঞ্জালের মেলা বসে গেছে
মেয়রের বউ এসে ধাঙড়ের খোলা বুকে নাক গুঁজে বসে থাকে
কি গন্ধ ! আহা !
কি ইতরামি মাখা অসুন্দর !
নদীকে গিলে খেল নর্দমা, পুঁতি গন্ধময় দূষিত ঢাকাবাসী;
প্রিয় ঢাকা, তোমার কি এখনো মন খারাপ, লবঙ্গের মতো জমাটি দুঃখ?
যেখানে নগরভবন সেখানে টোল ছিল।
হরি পণ্ডিতের টোল, এখন শূন্য পাঠশালা।

আলী রেজা। জন্ম ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে। মুক্তিযুদ্ধে আলোড়িত কবি। সত্তরের দশকে ছোট কাগজে লেখালেখি তারপর যুদ্ধ, অনটন, আবারো বামপন্থার লড়াই - এগুলোতে জড়িয়ে দীর্ঘ বিরতি। ফেসবুকে পুনরায় পুরানো ভালবাসার চাষবাস। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ একটি, 'পাথরের গুহা'। কবি আলী রেজা মনে করেন, মানুষের...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

তর্জমা

তর্জমা

তর্জমা স্নানে শুচি হবার পর বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নিচে দোলনাচেয়ারে ছড়িয়ে বসা কিছুটা…..