প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
‘একনিয়া’ নামে আমি একটা পিঁপড়েকে চিনতাম যে আমার কাছে প্রায়ই আসতো গল্প করতে। সমস্যা হল যে আমি মানুষ আর সে পিঁপড়ে হওয়ায় পরস্পরের ভাষা বুঝতাম না, কিন্তু তবুও বুঝতাম যে সে আসতো, গল্প করতো, এইখানে – এই স্যাঁতস্যাঁতে গ্রাউন্ড ফ্লোরের বারান্দায়, এই সবুজ রঙের অমসৃণ তেপায়ায়। আপনারা মানে পাঠকরা হয়তো অযাচিতভাবেই সন্দেহ করছেন যে কিভাবে আমি একটা পিঁপড়েকে আলাদাভাবে চিনতে পারলাম, তাই না? আমি স্বীকার করছি ব্যাপারটা অদ্ভুত কিন্তু সত্যি – আমি একনিয়া’কে আলাদাভাবেই চিনতাম; আর সত্যি বলতে কি পছন্দও করতাম বেশ খানিকটা।
একনিয়াকে নিয়ে লিখতে গিয়ে অতীতকাল কেন ব্যবহার করতে হচ্ছে তা আপনারা বুঝতেই পারছেন। যাকগে সে কথা – প্রথমে বলে নেই কিভাবে একনিয়া’র সাথে আমার পরিচয় হল। আমার তিন বছরের মেয়ে লেখা’কে আমার কাছে দিয়ে তার মা গোসল করতে গেল একদিন। আমি লেখা’কে নিয়ে বসলাম সেই স্যাঁতস্যাঁতে বারান্দায় – যেখানে একটা সবুজ তেপায়া থাকে এবং যা কেনার পর থেকেই ছিল অন্য তেপায়া থেকে তুলনামূলকভাবে ভারী ( এবং অমসৃণ )। আমি লেখা’কে একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলাম, ফ্রিজ থেকে একটা ক্যাটবেরী মিল্ক সিল্ক বের করে ধরিয়ে দিলাম আর আমি নিজে নিলাম একটা কোকের ক্যান। এরপর তেপায়া স্ট্যান্ডের উপর খাতা রেখে লিখতে শুরু করলাম যা আসলে উচিত ছিল না…আর তাই চুপচাপ থাকতে না পারা লেখা একের পর এক প্রশ্ন করে মাথা ধরিয়ে দিতে লাগলো; যেমন সে প্রশ্ন করেছিল যে আসলে সবুজ তেপায়ায় তার রান্নার সরঞ্জাম নিয়ে এসে রান্না শুরু করে দেয়া ঠিক হবে কিনা। সে আরও প্রশ্ন করেছিল যে মিল্ক সিল্ক ভাল্লুকেরা ঠিক কিভাবে খেতে পারে। আমি উত্তর দিচ্ছিলাম হ্যাঁ বোধকভাবে যতক্ষণ না আমার মেয়ে চিৎকার না করে উঠে। হ্যাঁ – আপনারা যা ভাবছেন তাই। একটা কালো বড়সড় পিঁপড়ে যা আমাদের দেশে পর্যাপ্ত, তাই এসে লেখা’র পা বেয়ে উঠছে। আমি বিরক্তই হলাম – তিন বছরের মেয়ের উচিত ঝটকা দিয়ে পা থেকে পিঁপড়েটা ফেলে দেয়া, কিন্তু সে তেমন কিছুই করছে না। আমি বিরক্ত হয়ে উঠতে গেলাম চেয়ার থেকে কিন্তু ততক্ষণে ওটা নিচেও নেমে এসেছে। যাই হোক পা দিয়ে পিষে ফেলতে ইচ্ছে হল ওটাকে কিন্তু পারলাম না। আঙ্গুলের একটা বাড়ি দিয়ে মেঝেতে নামিয়ে দিলাম। তাতেই শুরু হল লেখা’র চিৎকার…।
আমার স্ত্রী মেয়ের চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি বের হয়ে এসেছে এবং তার ভাবটা এমন যে ঝগড়া শুরু না করাটা এখন তার দয়ার উপরই। মেয়েটা কেন কাঁদছে, সে কথা না শুনেই বলতে থাকে যে আমি বাচ্চা সামলাতে পারি না… আমি পরাজিত ভঙ্গিতে চেয়ারে বসলাম। লাভ হল না। সকালে বাজার না যাওয়া থেকে শুরু করে এই মধ্যাহ্ন পর্যন্ত অলস যাত্রার কৈফিয়ত আর ধোপে টিকল না। জোহরের আযান পর্যন্ত আমি পেশাদারিত্বের সাথে আমার স্ত্রী’র সাথে ঝগড়া করলাম। জিরিয়ে নেয়ার জন্য চেয়ারে বসতেই দেখলাম তেপায়ার উপর পিঁপড়েটা। পিঁপড়েটা স্বাভাবিক অবস্থায় নেই – সে অদ্ভুতভাবে পেছনের চার পা’কে রেখে সামনের দুই পা উঁচিয়ে আমাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে,। না অভিনন্দন না – মনে করলাম কৃতজ্ঞতা, ওকে মেরে না ফেলার জন্যে। আমি কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করলাম। সে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলো এবং তেপায়া থেকে নিচে নামতে লাগলো। বেশ দ্রুত। আমি আর মনযোগ দিলাম না, অনেক হয়েছে – লিখতে বসে গেলাম।
সেদিন রাতে ঘুমোতে যাবার আগ মুহূর্তে যখন অ্যাশট্রেতে আধ খাওয়া সিগারেটের ছাই ফেলতে যাব, তখনই মনে পড়ল পিঁপড়েটার কথা। আমি ভাবতে থাকলাম, না জানি কেমন আছে সে। অবশ্যই সে কর্মী পিঁপড়ে – পিঁপড়েদের সমাজব্যবস্থা খুবই জঘন্য। বিজ্ঞানীরা ওদের সামাজিক বলে কষ্টটা মুছে রাখে, বাস্তবতা হল শতকরা ৯৫ভাগ পিঁপড়ে জন্মসূত্রেই শ্রমিক/কর্মী পিঁপড়ে। এটা কোন কথা ? আমি খানিকটা রাগ নিয়েই শোবার রুমে গেলাম। অনন্যা (আমার স্ত্রী) আর লেখা ঘুমিয়ে পড়েছে। লেখা’র এক পা তার মায়ের উপর চড়ানো, আমি শোয়ামাত্র ব্যাপারটা উল্টো হবে – আর তেমন না হলে আমারও হয়তো ঘুম হবে না।আমি আবার বসার ঘরে আসলাম, সেখান থেকে কিচেনে। ছোট্র বাসা, কিচেনটা উল্লেখ করার মত ছোট কিন্তু এত চমৎকারভাবে সাজানো ! শুধুমাত্র মেয়েরাই মনে হয় পারে এত সাজতে এবং সাজাতে।
চা হাতে নিয়ে বসার ঘরে আবার আসতেই ফোন’টা বেজে উঠলো। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই – শাকিল ভাই, দুই বছরের সিনিয়র। ভদ্রলোক এখন কানাডা’র একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার, পড়ান পলিটিক্যাল সায়েন্স। আচরণ অবশ্য মোটেও পলিটিক্যাল না, অনেক সাধারণ ও স্বাভাবিক। অনেক কথাই হল, অনেক দিন পরে বলেই কিনা। একপর্যায়ে আমি ভয়ে ভয়ে তাকে পিঁপড়ে নিয়ে ঘটে যাওয়া খুব তুচ্ছ ঘটনাটা বললাম। শাকিল ভাই তার পরিচিত হাসি দিয়ে বললেন যে সে একসময় পিঁপড়ে নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। এইবার আমিই অবাক হলাম – পলিটিক্যাল সায়েন্সের সাথে পিঁপড়ে ?!
আমি প্রশ্ন করলাম, “পিঁপড়েরা, বিশেষত শ্রমিক পিঁপড়েরা কেন রাণীর আয়েশের জন্যে সব করে – ওদের কি জীবন নেই নিজেদের!?”
“ওরা ওইভাবেই প্রোগ্রামড করা। একজন রাণী পিঁপড়ে না থাকলে ওদের সমাজে বংশবৃদ্ধি করবে কে,শ্রমিক পিঁপড়েদের তো প্রজননক্ষমতা নেই!”
“ওদের রাজ্যে প্রচুর গুপ্ত হত্যা হয় – যেমন রাণীর ডিম থেকে জন্ম নেয়া রাজা রাণীদের মেরে ফেলা হয়। শুধুমাত্র একজন যোগ্য রাজা থাকে তাকেও রাণী সঙ্গমের পর মেরে ফেলে। ব্যাপারটা কি স্বাভাবিক?”
“ এটা শুধু পিঁপড়ে না, আরও অনেক পতঙ্গের মাঝেই আছে- ”
“আর আমরা তা মেনে নিচ্ছি?”
“কি আজব কথা আমরা কি করব ইকবাল, তুমি ওদের সোসাইটি,বায়োলজিক্যাল ফ্যাক্ট চেঞ্জ করবে ?!”
“না ইয়ে মানে কোন রাজা পিঁপড়ে চালাকি করতে পারে না, সে সঙ্গমের পর পালাতে পারে না কিছু বিশ্বস্ত শ্রমিক পিঁপড়ে নিয়ে…”
“ উঁহু, ওরা কি মানুষের মত ভাবতে পারে নাকি?”
“ কেন পারে না, ওদের কি চিন্তাভাবনা’র বিবর্তন হবে না ? আদিম কোন এক সমাজের কথা শুনেছিলাম যেখানে বাড়তি শিশুদের রান্নাবান্না করে বাবা-মা’রাই খেতো – আমরা কি এখন সভ্য হই নি ? পিঁপড়েদের ক্ষেত্রে কেন এই ব্যাপারটা ঘটবে না ?”
“ ওদের বিবর্তন শরীরগত, মানসিক নয়। ওদের মস্তিষ্কের বিবর্তন হয় নি…”
“ কেন আমাদের হল, ওদের হয় নি?”
“ এর খুবই সন্তোষজনক ব্যাখা আছে। অনন্যা কি ঘুমিয়ে পড়েছে?”
এরপর অনন্যাকে নিয়ে কিছু কথা হল। অনন্যা,শাকিল ভাই, আমি – আমরা সবাই এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছি। আরও কিছু ফর্মাল কথার পর ফোন ছাড়লাম। এরপর ঘুমোতে গেলাম।
পরদিন সকাল এগারোটায় আমি পা নাচাতে নাচাতে চায়ে চুমুক দিচ্ছি আর লিখছিলাম। ঠিক এগারোটায় এসে ‘সে’ এসে উপস্থিত; একইভঙ্গিতে প্রথমে অভিবাদন জানালো – আগের দিনের মতই, এরপর সে দাঁড়ায় থাকলো। নড়াচড়াও করছিল না মনে হয়েছিল। আমি একটু এগিয়ে গিয়ে সতর্কভাবে দেখলাম সে অ্যান্টেনা নাড়াচ্ছে আর করাতের মত সামনের দুটো উপাঙ্গ মুখে স্পর্শ করছে। আমার মনে হল সে যোগাযোগের চেষ্টা করছে…।
সবুজ তেপায়া। এক মগ ব্ল্যাক কফি। আমার কলমে আটকানো ডান হাত আর সাদা কাগজ। আর পিঁপড়ে। নাম মাথায় এল, ‘একনিয়া’। আফ্রিকান নাম –একনিয়া ছিল আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে আমার সাথে কথা বলতে পারতো না ইংরেজি না জানার ফলে, কিন্তু আস্তে আস্তে সে ইংরেজি শিখতে শুরু করে । সে একটা রেস্টুরেন্টও দিয়েছে ইদানিং। তার কথা আরেকদিন বলা যাবে।
যাই হোক, একনিয়া কিছুক্ষণ দহরম মহরম করে চলে গেল। আমি তার ভাষা কিছুই বুঝলাম না। ঘড়িতে দেখলাম এগারোটা দশ বাজে। খুব বেশি সময় সে থাকে নি। তেপায়া বেয়ে সে মেঝেতে নামল এরপর তাকে আর খেয়ালও করলাম না। লেখালেখিতে আটকে গেলাম। পরদিন বিকেলের দিকে একনিয়া এসে উপস্থিত। আজ ব্ল্যাক কফির মগ নেই। সাদা খাতা আর কলম আছে। সবুজ তেপায়ার উপরে বসা মঞ্চে সে মিনিট পনেরো থেকে চলে গেল। এইভাবে সে প্রতিদিন না আসলেও আসতে থাকলো বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু সে থাকে ১০-২০ মিনিট। পাঠক হয়তো ভাবছেন এরপর আমি তার সাথে কথা বলা শুরু করি। না তা করি নি, আমি ধরে নিয়েছি সে নিজের মত কিছু বলে এবং যোগাযোগের চেষ্টা করে। আমি কাজের ফাঁকে ফাঁকে তার দিকে তাকিয়ে হাসি দেই। এই সামান্য ব্যাপারটা অনন্যার চোখে পড়ল। একদিন কঠিন ভাষায় সে আমাকে ভদ্র সমাজে চলার জন্য জামাকাপড় ঢেলে দিল গায়ে এবং নিয়ে গেল তার বান্ধবী’র কাছে – বুঝতেই পারছেন সাইক্রিয়াটিস্ট। আমি অনন্যার বান্ধবীকে কিছুই বললাম না পিঁপড়ে নিয়ে আর তার ফলে যা হবার তাই হল। অনন্যার বান্ধবী অনন্যাকে অযথা টেনশন করতে মানা করলো, আমি মাঝখান থেকে বিজয়ীর বেশে ফিরে আসলাম।পরদিন থেকে আবার একনিয়া আসতে শুরু করলো। লাভের লাভ যা হলো – আমি পিঁপড়ে নিয়ে বেশ পড়াশুনা শুরু করলাম আর আমার মেয়ে লেখা’কে পিঁপড়ের গল্প শুনাই। অনন্যা এসব কিছুই টের পায় না।
মাসখানেক পরে আমি সায়েন্টিফিক আমেরিকানের ওয়েবপেজে জম্বী পিঁপড়ে ( Zombie Ant ) নিয়ে দারুণ একটা ফিচার পড়লাম। উইকিপিডিয়াতেও পেলাম এই পিঁপড়ের ব্যাপারে তথ্য। Ophiocordyceps unilateralis, একটি প্যারাসাইডাল ফাঙ্গাস যা Zombie Ant- এর মধ্য দিয়ে বংশবিস্তার করে। পুরো ব্যাপারটা অত্যন্ত ভয়ংকর। David Huges নামের এক আমেরিকান ভদ্রলোক আমাজনের রেইনফরেস্টে সর্বপ্রথম এই ব্যাপারটা আবিষ্কার করেন। ডেভিড পেন স্টেটের পতঙ্গবিশারদ। যাই হোক আপনাদেরও বলি কিভাবে Zombie Ant-দের কলোনী ধ্বংস হয়। Zombie Ant-রা সাধারণত গাছে বসবাস করে। এদের বংশবৃদ্ধির এক পর্যায়ে Ophiocordyceps unilateralis –এর স্পোর Zombie Ant – দের শরীরে ইনজেক্ট হয়। সাধারণত স্পোরগুলি সংস্পর্শের মাধ্যমে পিঁপড়েগুলোর শরীরে আটকে যায়। এরপর বায়োকেমিকেল রিঅ্যাকশনে স্পোর শরীরে ঢুকে যায়। স্পোর শরীরে ঢোকার পর অভূতপূর্ব একটা ঘটনা ঘটে, স্পোরটি Zombie Ant – এর সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমে অ্যাটাক করে। পিঁপড়েগুলো দিশেহারা হয়ে গাছ থেকে মাটিতে নামতে থাকে এবং তারা পুরোপুরি কনফিউজড অবস্থায় পৌঁছায়। পিঁপড়েগুলো কাজকর্ম বাদ দিয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে, এমনকি খেতেও ভুলে যায়। এরপর তারা মাটি থেকে ঠিক ২৫-৩০ মিটার উচ্চতায় উঠে গাছের পাতার প্রধান শিরাকে ম্যান্ডিবল(চোয়াল) দিয়ে আঁকড়ে ধরে । পিঁপড়ের এই অবস্থানটা হয় এমন যা Ophiocordyceps unilateralis স্পোরের বংশবৃদ্ধির জন্যে অত্যানুপুকূল। তাপমাত্রা থাকে ২০-৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মাঝে এবং পিঁপড়ের অবস্থান হয় অবশ্যই ছায়ায়। এই কামড়ে থাকা অবস্থায় পিঁপড়েটা মারা যায়। এরপর ২-৩ দিনের মাঝেই নতুন বংশধর Zombie Ant-এর মাথা ফেটে বের হয়ে আসে। ব্যাপারটা শুধু মর্মান্তিক না, কল্পনা করতেও ভয় লাগে।
এই আর্টিকেল পড়ার পর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একনিয়া’কে আফ্রিকা নিয়ে যাব এবং ওই পিঁপড়েদের সাথে মিশতে দিব। কিভাবে হবে জানি না, শাকিল ভাইকে বললে একটা ব্যবস্থা করবে –এই লোকের সাথে প্রচুর পাগল কিসিমের লোকের পরিচয় আছে , একটা ব্যবস্থা করে ঠিকই আমাকে আফ্রিকা’র জঙ্গলে ফেলায়ে দিবে। তাই পরদিন আমি একনিয়া-কে দেখামাত্র বন্দি করে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম । রাত দুটোয় আমি কিচেনের দিকে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।
“ তুমি বসো,আমি চা আনছি।”
“তুমি কি জেগে!?”
“ একনিয়া’কে নিয়ে আর কত ভাববে ? ”
আমি ভয়াবহ ধরণের চমকে উঠলাম। আমি কাউকে কিছুই বলি নি। পিঁপড়ে নিয়ে আমার মাঝে একটা অবসেশন সৃষ্টি হয়েছে এটা জানি তাই বলে আমি বাড়াবাড়ি কি করেছি?
“ লেখার টেবিলে বসে তুমি চারপাশে খুঁজতে শুরু কর কিছু একটা। এটা দেখার পর আমি ভয় পেলাম, এরপর একদিন দেখি যে তুমি একটা কালো পিঁপড়ের দিকে তাকিয়ে আছো…ব্যাপারটা সত্যিই ঘটছে, তুমি বসে থাকো আর একটা কালো পিঁপড়ে আসে কিন্তু ওটা আসলে একটা খেলনা কালো পিঁপড়ে যা তোমার মেয়ে নিয়ে যায় তুমি এটা জানো না কারন পাশে বসা তোমার মেয়েকে তুমি খেয়াল কর না… সে ওই পিঁপড়ে নিয়ে যায় আর রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে ওকে মুভ করায় !”
“ইয়ে, ওর নাম একনিয়া জানলে কিভাবে?”
“খাতার মধ্যে মাঝে মাঝেই লিখতে একনিয়া নামটা, গেস করেছি।”
আমি স্তব্ধ হয়ে বসে থাকলাম। সত্যি সত্যি আমার মেয়ে লেখা’র জিকো মামা মাস দুয়েক আগে কিছু বিচিত্র খেলনা পাঠিয়েছিল যার মধ্যে রিমোট কন্ট্রোলড একটা পিঁপড়ে আর মাছি, সাইজ প্রায় সত্যিকারের পতঙ্গের সমান। মাছিটা হারায় গেলেও পিঁপড়েটা আছে !
সত্যি, এমনও হয়!!
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..