পিতৃধন

অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী
গল্প
পিতৃধন

পিতা সমীপে পুত্র

“আমি পিতৃধন চাই পিতা। আপনি আমাকে পিতৃধন দান করুন।”

মনের মধ্যে তুফান উঠল বুদ্ধের। রাহুল! এই মায়া এড়ানোর জন্যই তো মধ্যরাত্রে সকলের অগোচরে তিনি রাজ প্রাসাদ ত্যাগ করেছিলেন। গৃহত্যাগের পূর্বে নিজের শিশুপুত্রের মুখদর্শন করার এক প্রবল তৃষ্ণা তাঁকে পেয়ে বসে। সেই ইচ্ছা পূর্ণ করতে তিনি ধীরে ধীরে অন্তঃপুরের দিকে এগিয়ে চললেন। দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশও করলেন। প্রদীপের ক্ষীন আলোকে তিনি দেখতে পেলেন, যশোধরা পরম নিশ্চিন্তে রাহুলের মাথায় হাত রেখে ঘুমিয়ে রয়েছেন। তখন তিনি বুদ্ধ নয়, সিদ্ধার্থ। প্রবল ইচ্ছা হয়েছিল, নিজ সন্তানকে একবার বুকে তুলে নিতে। কিন্তু পরক্ষণেই সতর্ক হলেন—এরূপ করতে গিয়ে যদি যশোধরার ঘুম ভেঙ্গে যায়, তাঁর গৃহত্যাগের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে। নিজেকে সংযত করলেন। গৃহত্যাগের পূর্বেই তিনি নিজের একটি তৃষ্ণার ছেদ করলেন। মনে স্থির করলেন, আজ থাক। যদি কখনও ফিরে আসি এখানে, তাহলে পুত্রকে দর্শন করব।

ছেলেবেলা থেকেই কেবল ভোগ আর ভোগ, হাঁফ ধরে যেত তাঁর। পিতা শুদ্ধোধন ভাবতেন, ভোগেই মুক্তি। ভোগই আটকে রাখতে পারে তাঁকে সন্ন্যাসের পথ থেকে। তাঁর ধারণাই ছিল যে সংসার সুখময়। শুধু সুখ সুখ আর অনন্ত সুখ! ভোগ এমনই যে তার মধ্যে একবার নিমজ্জিত হলে আর ওঠা যায় না; কেবলই বেড়ে চলে ভোগতৃষ্ণা। কিন্তু তিনি এটা ভাবেননি যে চরম ভোগ লিপ্সা থেকে আসতে পারে বিতৃষ্ণা; যা বানিয়ে দিতে পারে ত্যাগের পথ।

এখন সেই পুত্র তাঁর সামনে দন্ডায়মান পুত্রের অধিকার নিতে। সে পিতৃধন চায়। বুদ্ধ সতর্ক হলেন।  শান্ত মুখে পুত্রের মুখ দর্শন করতে করতে তথাগত বললেন, “তুমি বিশ্রাম নাও রাহুল। অনেকটা পথ আসতে হয়েছে তোমায়—তুমি ক্লান্ত। কিছু আহার্য ও পাণীয় গ্রহণ কর। তারপর আমরা কথা বলব।”

এক.

প্রথমে একজন অমাত্য।

তাঁকে অনুসরণ করে পরপর নয়জন অমাত্য!

কিন্তু তাঁরা আর কেউ ফিরলেন না রাজগৃহ থেকে!

তারপর অত্যন্ত বিশ্বস্ত রাজঅনুচর কালুদায়ি। তাকে পাঠিয়ে রাজা অত্যন্ত উৎকন্ঠিত ছিলেন। কালুদায়িও সেখানে রয়ে যাবে না তো?

কিন্তু অনুচর সফল হলেন। রাজ-আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন বুদ্ধদেব। সপার্ষদ অগ্রসর হতে থাকলেন কপিলাবস্তুর দিকে। এই খবর দ্রুতগামী অশ্বের সওয়ারী কালুদায়ির মুখে আগাম পেয়ে গেলেন রাজা। তাঁর মনে আশা জাগল, এইবার তবে গৃহে ফিরবে তাঁর জেষ্ঠ্যপুত্র—একবার কেবল এখানে আসার অপেক্ষা। তিনি আদেশ দিলেন,  নগরীকে সুসজ্জিত করার। অলি-গলির প্রতিটি কোণ যেন অতি উজ্জ্বল আলোকমালায় সুসজ্জিত করা হয়। রাজপ্রাসাদ নিকটস্থ ন্যগ্রোধারাম বিহার। রাজা চাইলেন, তাঁর পুত্র সেখানেই অবস্থান করুক।

অবশেষে বুদ্ধদেব সেখানে পৌঁছলেন। ঘোষণা করলেন, এখানে তিনি থাকবেন সাতদিন।

সাতদিন! বড় কম সময়। রাজা চিন্তিত হলেন। কিন্তু এর মধ্যে যে ভাবে হোক, সিদ্ধার্থকে প্রাসাদে ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু কে করবে এই কঠিন কাজ?

সিদ্ধার্থের অনুজ, মহাগৌতমীর পুত্র, রাজকুমার নন্দ এগিয়ে এল। দৃপ্ত ভঙ্গিতে সামনে দাঁড়িয়ে বলল, “আমি যাব, মহারাজ।”

“অমাত্যদের পরিণতির কথা তুমি মনে রেখেছ নিশ্চয়, নন্দ?”

“জানি। কিন্তু আমার বিবাহের খবরে ভ্রাতা সিদ্ধার্থ আর স্থির থাকতে পারবেন না—আমি দেবদত্ত নই। আমি তাঁকে প্রাসাদে নিয়ে আসবই—আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন মহারাজ।”

রাজা শুদ্ধোদন অনেকদিন পর বুক ভরে বাতাস নিলেন। নন্দর মাথায় হাত রেখে বললেন, “আমি পিতা হয়ে তাকে ফেরাতে পারিনি, তুমি ভ্রাতা হয়ে সেই কাজে সফল হও— বিজয়ী হও।”

তিনি বালক সিদ্ধার্থের একদিনের কথা এই মুহূর্তে স্মরণ করতে পারেন। মাঠের মধ্যে অন্য বালকেরা যখন খেলাধূলাতে মগ্ন, মাঠের এক ধারে এক বৃক্ষের নিচে সিদ্ধার্থ ধ্যানরত। সারাদিন ধরে বালক সিদ্ধার্থ সেই বৃক্ষের নিচে ধ্যানস্থ রইলেন, সূর্য ঘুরে গেল, কিন্তু বৃক্ষের ছায়া সরল না! তিনি সেদিনই অনুধাবণ করেছিলেন, তাঁর এই জেষ্ঠ্য পুত্র বড় কোমল, কিন্তু সাধারণ নয়। তার জন্ম-মুহূর্তের নিদান মেনে, বড় সাধক হবার এক প্রবল লক্ষণ তার মধ্যে ক্রমে ক্রমে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠছে। রাজা প্রমাদ গুণলেন। যাই ঘটুক না কেন, সিদ্ধার্থকে কিছুতেই বৈরাগ্যের পথে ঠেলে দেওয়া যাবে না। ভোগবাসনা—একমাত্র অনন্ত ভোগবাসনাই সিদ্ধার্থকে সংসারে ধরে রাখতে সক্ষম হবে। এখানে জরা নেই, ব্যাধি নেই, মৃত্যু নেই—শুধু সুখ সুখ আর অনন্ত সুখ!

কিন্তু তাতেও তাকে আটকাতে পারলেন কই? সব ছেড়ে সদ্য জন্মানো শিশুপুত্রের মায়া কাটিয়ে সে চলে যেতে পারল তো! সে যে তপস্যা করছে, এক দুরূহ তপস্যা—এই খবর কানে আসে তাঁর। নানা কথাও পল্লবিত হয় নগরীর ভেতর। উপবাস নয়, খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে সিদ্ধার্থ তপস্যা করে। এক সময় সে সিদ্ধিলাভ করল।

রাজা শুদ্ধোদন এই সময় সন্দেশ পেলেন, রাজগৃহে সিদ্ধার্থ দুই মাস কাল যাবৎ অবস্থান করছেন। এই সংবাদ পাওয়া মাত্র রাজা একজন অমাত্য পাঠালেন। সে সন্ন্যাস নিয়ে নিল! পরপর নয়জন অমাত্য তাঁর রাজ্য পরিচালনার বৃত্ত থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে গেল এভাবে। রাজার মনে হল, দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধে যেমন রাজকোষ শূন্য হয়ে যায়, সিদ্ধার্থের আগমণে তাঁর রাজ্যে কাঁপন ধরেছে। তাঁর বোধ-বুদ্ধি-যুক্তি-তর্ক ও ধর্মের ভাঁড়ার বুঝি শূন্য হয়ে গেল।

দিনাবসানে নন্দ গিয়েছিল ন্যগ্রোধারাম বিহারে। পরদিন সকালেই প্রাসাদে সংবাদ এল, নন্দ প্রব্রজ্যা নিয়েছে!  তার দক্ষিণ হস্তে ভিক্ষাপাত্র, অঙ্গে পীত অজিন। ন্যগ্রোধধামে পৌঁছে তা দেখে স্তব্ধ হয়ে গেলেন রাজা শুদ্ধোদন।  নতমস্তকে রাজপ্রাসাদে ফিরতে ফিরতে মনের মধ্যে এই বলে তুফান উঠল তাঁর, সিদ্ধার্থ কীরকম সন্ন্যাসী, সে কী সাধনা করেছে এই সপ্তমবর্ষ ধরে যে, মাত্র সপ্তমদিনেই কতশত পুরবাসী, নিন্মবর্গের মানুষ ও অভিজাত মানুষেরা সকলেই তার পাশে আবদ্ধ হচ্ছে?

মনের মধ্যে এই প্রশ্নের উত্তর পেলেন ভিক্ষু হয়ে যাওয়া এক অমাত্যের কথায়। অমাত্য জানালেন যে, বুদ্ধ অপরিমেয় সংখ্যক লোককে পরিপক্ক করে অনুত্তর সম্যক সম্বোধির পথে পরিচালিত করেছেন।

দুই.

সেদিন মধ্যরাত্রি। প্রাসাদের গোপন মন্ত্রণা কক্ষ। মুখোমুখি দন্ডায়মান রাজা শুদ্ধোদন ও তাঁর পুত্রবধূ। সব শুনে রাহুলমাতা কঠিন গলায় জানালেন, তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে পারে একজনই। পুত্র রাহুল।

রাজা শুদ্ধোদন বিস্মিত। এতজন মানুষকে তিনি পাঠালেন, রাহুলমাতা  এই বিষয়ে কোন কথা বলেনি। তবে কি সে অপেক্ষা করছিল যখন সব অস্ত্র ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে, সে নিজের তূণীর সাজাবে?

অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে রাহুলমাতা বললেন, “রাহুল! যার জন্মের পরই সে গৃহত্যাগী হয়। যাকে সে মনে করে রাহু! আপনি কী  ব্যাপারটা এখনও ভাবতে পারেন, মহারাজ?”

রাজা চমকে উঠলেন। প্রথমে এক অমাত্যকে পুত্র দর্শনে ইচ্ছুক রাজা তাকে পাঠিয়েছিলেন তথাগতকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য। কিন্তু সেই অমাত্য রাজগৃহে এসে বুদ্ধদেবকে দর্শনমাত্র আপন কর্তব্য বিস্মৃত হলেন। তিনি একজন ভিক্ষু হয়ে সেখানেই বসবাস আরম্ভ করে দিলেন। এইভাবে পরপর নয়জন! শুদ্ধোদন বিস্মিত। এটা কিভাবে সম্ভব? তাঁর গৃহত্যাগী পুত্র বুদ্ধত্ব লাভ করেছেন—সেটা কি এমন জিনিস যে পরপর এমন দায়িত্ববান এতজন অমাত্য সমস্ত কিছু বিস্মৃত হয়ে ভিক্ষুর জীবন বেছে নিলেন? এর পূর্বে কই, কখনও তো তাদের মধ্যে বৈরাগ্য দেখা যায়নি। এই বিষয়ে তাঁরা কখনও কারও সঙ্গে কোন আলাপও করেননি। রাজকার্য নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন। তবে? কী যাদু সঞ্চার হয়েছে সির্দ্ধাথের মধ্যে যে একে একে তার কাছে আত্মনিবেদন করছে? কিসের ধ্যান করেছে সে এতগুলি দিন? এইভাবে চলতে থাকলে যে গোটা দেশ সির্দ্ধাথের পথের পথিক হয়ে যাবে!

সিদ্ধার্থ যেদিন ন্যগ্রোধারাম বিহারে আসে, শুদ্ধোদন অতি দ্রুত অমাত্যদের নিয়ে অগ্রসর হলেন রাজপ্রাসাদ নিকটস্থ ন্যগ্রোধধাম বিহারের প্রতি। সেখানে পৌঁছে দেখলেন এক অবাক করা দৃশ্য। তাঁর পুত্র গৌতম তাঁর দিকে এগিয়ে আসছেন কিন্তু মাটিতে পা পড়ছে না! বায়ুতাড়িত মেঘের মত শূন্যে ভেসে আসছে নবীন সন্ন্যাসী!

রাজা বলেন, “রাহুলকে আমি সেখানে পাঠাতে রাজি নই। সন্ন্যাসীর কাছে স্ত্রী-পুত্র-পিতা বলে  কেউ নেই—তার উপর সে অতি নিষ্ঠুর প্রকৃতির এক সন্ন্যাসী।”

“তাকে নিষ্ঠুর বলছেন কেন, পিতা?”

“একাকী ধ্যানের জগতে বিরাজ করে যখন বুদ্ধত্ব লাভের পথ আর অল্প একটু বাকি তখন সসৈন্যে এল মার। কিন্তু সে একাকী সিদ্ধার্থের কাছে পরাজিত হল। সেই পূর্ণিমার রাত্রেই সিদ্ধার্থ পরমবুদ্ধ হয়ে ওঠেন। আর ঠিক এই কারণেই আমি রাহুলকে সেখানে পাঠাতে চাই না, রাহুলমাতা। যদি সে রাহুলকেও সেই নির্বাণের পথে ঠেলে দেয়?”

“কিন্তু এটাই যে আমাদের একমাত্র পথ, পিতা। আপনি কত চেষ্টা করলেন, সে কি ফিরল? ফিরল না। তাকে যদি ফিরিয়ে আনতেই হয়, এটাই একমাত্র পথ। আপনি ভেবে দেখুন। যদি সফল হয়, সেই হবে—আর কেউ নয়। পিতা হয়ে পুত্রকে সে নির্বাণের পথে ঠেলে দিতে পারে না। আপনি পারতেন কি?”

রাজা চুপ করে রইলেন। আকাশে বাতাসে এক আশ্চর্য রকমের বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। এমন স্বাদ তার—শরীর শীতল হয়ে আসে। কোথা থেকেও ভেসে আসে বন্য পুষ্পের সুগন্ধ। রাজা অবাক হয়ে দেখলেন, তাঁর রাজ্যের সমস্ত কিছুই কেমন যেন পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে—বাতাস ও মৃত্তিকা পর্যন্ত! ক্ষেত্র হয়ে যাচ্ছে সমতল, উঁচু-নিচু-গহ্বর-ঢিবি এখানে নেই। তিনি দেখেছেন আলোর ভেতর আলো, বাতাসের ভেতর বাতাসের প্রবাহ জেগে উঠতে। প্রজাদের এক হৃদয়ের ভেতর অনেকের হৃদয়, অন্য সুর—কেন এখানে এসেছেন নবীন ওই সন্ন্যাসী?

“আমাদের এবার সতর্ক হয়ে পা ফেলতে হবে, মহারাজ। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।”

“কীরকম?” রাজা কৌতুহলী হলেন।

“আবেগ দ্বারা তাকে ফেরান যাবে না। তাহলে যখন দেবর নন্দ গিয়েছিল, তখনই তিনি ফিরে আসতেন। আপনার অনুপস্থিতিতে রাজ্য কিভাবে চলবে, অমাত্যদের সেই অনুরোধও তিনি রাখেননি। রাহুল যাবে তাঁর কাছে। সে চেয়ে আনবে পিতৃধন।”

“পিতৃধন? সে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী—সে কী দেবে তোমার পুত্রকে? কী আছে তার!”

“তাই তো আমি রাহুলকেই পাঠাতে চাই—আগামীকল্যই।”

“আগামীকল্যই? আমার কাছে কিছুই পরিস্কার হচ্ছে না, বৌমা!”

“বুঝতে পারছেন না, মহারাজ? আগামীকালই আপনার পুত্রের এখানে অবস্থিতির সাতদিন পূর্ণ হচ্ছে। শুধু জন্ম দিলেই পিতা হওয়া যায় না, পিতার সমস্ত দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করতে হয়। সে না নিয়েছে নিজ সন্তানের ভরণপোষনের ভার, না পালন করেছে কোন দায়-দায়িত্ব। এতটুকু শিশু ফেলে সে চলে গেল, বহুজনের হিতায়—তার নিজ সন্তানের হিত কে করে পিতা? অসুস্থ বাচ্চার মাথার গোড়ায় কতরাত্রি বিনিদ্র কাটিয়েছি—সে কী করেছে? পিতা হলেই তার দায়িত্ব পালন শিখতে হয়, তাই না মহারাজ?”রাহুলমাতার গলায় ঝাঁঝ।

রাজা অবাক হয়ে বললেন, “সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী সে। শুনেছি একখন্ড বস্ত্র, একটি জলপাত্র ও একটি লাঠিই তার সম্বল। সে নিজ পুত্রকে কী পিতৃধন দেবে?”

এবার ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি ফুটে উঠল রাহুলমাতার। বললেন, “যার কিছুই নেই, সে কি দেবে? নিজেকেই—তাই না, মহারাজ?”

 রাহুলমাতার ঠোঁটের কোণে এই প্রথম হাসি দেখলেন রাজা, সাত বছর পর।

“আগামী প্রত্যুষেই কালুদায়িকে আমি পাঠাচ্ছি, মহারাজ। এক উত্তম রথ প্রস্তুত করা হয়েছে। রাহুলকেও বলা হয়েছে। ও এই প্রথম তার পিতাকে দেখবে—সে দারুণ উত্তেজিত। অনেক কষ্টে তাকে নিদ্রিত করে তবে এই মন্ত্রণা কক্ষে আসতে পেরেছি। সে ভাবে, তার পিতা এক আশ্চর্য, তিনি অদ্ভূত কার্য করেন। একমাত্র তার পিতাই জানেন মানুষের অন্তরের গভীর মৌলিক প্রবৃত্তির কথা।”

দারুণ আশ্চর্য হয়ে রাজা বললেন, “ওইটুকু বালক এত তত্ত্বকথা জানল কীকরে?”

“সে তার পিতাকে অনুভব করে, মহারাজ।”

অবাক হয়ে রাজা বললেন, “কীরকম?”

“আকাশে যে পূর্ণিমার চন্দ্র উদিত হয়, সে মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে বলে, সমস্ত আলোকরশ্মি বুদ্ধশরীর থেকে বিচ্ছুরিত হয়।”

শুদ্ধোদন বললেন, “তুমি জান, সিদ্ধার্থ এখানে কেন এসেছে?”

“আপনার আমন্ত্রণ ফেরাতে পারবেন না বলেই—এ ছাড়া আর কী কারণ থাকতে পারে?”

তা নয়, বৌমা। আমার মনে হয়, এর পিছনে নিগূঢ কোন কারণ আছে। সিদ্ধার্থ বুদ্ধিমান। কোন পরিকল্পনা ছাড়া সে এ রাজ্যে পা দেয়নি।”

তিন.

বিশ্রামের জন্য বেশি সময় নিল না বালক রাহুল। কারণ সে জানে, তার একমাত্র কাজ তথাগতরূপী নিজ পিতাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া—এটাই তার পিতৃধন। মাতা গতকাল রাত্রেই তাকে কথা সাজিয়ে দিয়েছেন। পিতাকে কী কী সে বলবে এবং কেমন করে—যাতে তার পিতা সন্ন্যাস ছেড়ে প্রাসাদে ফিরে আসেন।

 বিশ্রাম স্থান ছেড়ে বালক উঠে দাঁড়াল। তাকাল তথাগতর দিকে। ঈঙ্গিতপূর্ণ সে চাহনি। পূর্ণ দৃষ্টিতে এতক্ষণ পুত্রকে নিরীক্ষণ করছিলেন তথাগত। তিনি বুঝলেন, রাহুল অতীব বুদ্ধিমান। সে সময় নষ্ট করতে চায় না। মায়ের কাছে কঠিন পণ করে এসেছে, পিতাকে সে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেই সংসারে।

তার সামনে মৃৎপাত্রে কিছু ফল ও শীতল জল রাখা সামান্য পাণীয় ও শুকনো কিছু খাদ্য দ্রুত গ্রহণ করেই সে বলল, “হয়ে গেছে পিতা। এবার আমাকে আমার পিতৃধন দান করুন। বাইরে রথ প্রস্তুত।”

বুদ্ধ নীরব।

রাহুল বলে যেতে থাকল, “পিতা, আপনার গৃহত্যাগের পর থেকেই মাতা মস্তক মুন্ডন করে, চীরবসন পরিধান করেছেন। মাতা সেই থেকেই ভূতলে শয্য গ্রহণ করেন, এমনই মৃৎপাত্রে আহার্য গ্রহণ করেন। আমিও মাতার সঙ্গে খাদ্য নিই, মাতার পাশে শয়ন করি।”

বুদ্ধ চুপ।

বালক পুনরায় বলতে থাকল, “আমার সকল সাথীরা তাদের পিতার সাথে বাগানে যায়, কত খেলাধূলা করে। আমার পিতা নাই, তাই আমি একাকীই খেলা করি। ওদেরকে আমি এবার দেখাব, আমারও পিতা আছেন।”

তথাগত একটু চুপ করে রইলেন। তারপর ধীরে ধীরে বলতে থাকলেন, “আমরা একই সময়ে জন্ম নিয়েছিলাম, রাহুল। আমার সারথি ছন্দক, আমার প্রিয় অশ্ব কন্থক, বোধিবৃক্ষ, ছয়টি কলস আর তোমার মাতা। কন্থক এত বেগে আমাকে নিয়ে দৌড়েছিল যে—সে একরাতে তিরিশ যোজন দূরের শাক্য, কোলিয় ও রামগ্রাম নামক তিনটি রাজ্যের সীমা পেরিয়ে অনোমা নদীর তীরে এসে থমকে দাঁড়ায়। সেই নদীর তীরেই আমি প্রব্রজ্যা নিই। আমার কিছু করার ছিল না। পৃথিবীর মাটি অসহিষ্ণুতার আগুনে ক্রমে ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল। ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা থেকে পৃথিবীকে মুক্তি দিতে আমাকে এই সিধান্ত নিতে হয়েছে।”

কন্ঠস্বর উচ্চে তুলে বালক বলতে থাকল, “সেই অসহিষ্ণুতা কী দূর হয়েছে, পিতা?”

বুদ্ধ মৌন রইলেন।

রাহুল বলে চলে, “আপনার জীবন কী কেবল দুঃখের পিতা? নগরের সবাই তাহলে কেন বলে, ওই বুদ্ধ রাজকুমার আসছে দুঃখের সাগরে সবাইকে ভাসিয়ে দিতে। এটা কী সেই অসহিষ্ণুতার প্রকাশ নয়?”

বুদ্ধ একটু গম্ভীর হলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, পিতা-পুত্রের এই মান-অভিমান পালার মধ্যে থাকতে চায় না বলে নন্দ উঠে যাচ্ছে দূরে। এই কুটিরের বাইরে সে যাবে এখন।

তথাগত সেদিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিলেন। মেঝেতে সার সার পিপিলিকা ডিম মুখে যাচ্ছে। কোথাও কি বৃষ্টি হচ্ছে? কোন এক গোপন বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে মাটি—ফলে তারা নিজেদের ভবিষ্য নিয়ে নিরাপদের দিকে যাচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে পাল্লা দিতে এমন একটা মতবাদ তুলে ধরা হচ্ছে সুকৌশলে—কোন এক প্রাচীন মতবাদের ভবিষ্য নিষ্কণ্টক করার জন্য—তিনি বুঝতে পারছেন।

কিন্তু তিনি তো কিছু প্রমাণ করতে আসেননি। যা ছিল, যা ছিল তাকেই মান্যতা দিতে বলেছেন শুধু। অহিংস এই মতবাদকে আটকাতে গেলে সেই পথেই যুক্তিজাল বুনতে হবে। এই বালকের কানেও সেই খবর গিয়ে পৌঁছেছে। বুদ্ধ ভাবনার গভীরে চুপ করে রইলেন।

চার.

রাহুল মাতার সমস্ত শিক্ষা ভুলে আপন মনে বলে চলেছে, “পিতা কেমন, তা আমি জানি না। কেন তুমি আমাকে তোমার স্নেহ থেকে বঞ্চিত করলেন পিতা? আমিও না হয় একাসনে বসে তপস্যা করতাম। এখন আমাকে বলুন পিতা, বোধি কী? আপনি কিভাবে তা লাভ করলেন? পঞ্চবর্গীয় সন্ন্যাসীর কথা—আমি জানতে চাই পিতা।”

বুদ্ধ শান্ত স্বরে বললেন, “বলব রাহুল। বলব ওই পঞ্চবর্গীয় সন্ন্যাসীর কথা। আমি সেখানে কোন ঈশ্বরের ধ্যান করিনি রাহুল, আমি ধ্যানে বসেছিলাম ঞ্জান-দর্শনের জন্য। তা করতে গিয়ে আমি নিজেকে একেবারে ক্ষয় করে ফেলি।”

“তারপর পিতা?”

“তখন আমার মনে হল, পিতা শুদ্ধোদনের সুবিস্তীর্ণ জমিতে, এক জামগাছের নিচে আমি প্রথম ধ্যান করেছিলাম—সে বৃক্ষ আমাকে সারাদিন ধরে সুশীতল ছায়া দিয়ে গেছে। সেটাই হয়ত সঠিক পথ।”

“তারপর?”

“আমি খাদ্য গ্রহণ শুরু করলাম। এক গ্রাম্য রমণী আমাকে অন্নের যোগান দিত। আমি নৈরঞ্জনা নদীর তীরে এক পরিস্কার জায়গা দেখে ধ্যানে বসলাম। ক্রমে ক্রমে মনের ভিতরে লুকিয়ে থাকা অসহিষ্ণুতাগুলিকে প্রবল প্রঞ্জায় নির্মূল করছিলাম। তখনি আমি আমার পূর্বাপর জীবন বৃত্তান্ত দেখতে পেলাম। জানলাম— দুঃখ আর্যসত্য, দুঃখ নিরোধ আর্যসত্য।”

“প্রথম দীক্ষা তাহলে কে পেল পিতা? ঐ পাঁচজন?”

“হ্যাঁ। তাদের জন্যই আমি ঋষিপতন অভিমুখে গমণ করি। কারণ ওঁরা তখন সেখানে অবস্থান করছেন।

 “দুঃখের কারন কী, পিতা?”

“তৃষ্ণা। এরই ফলে রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়। এর ফলে প্রাণহানিও হয়। আর তাই ডেকে আনে দুঃখ।

“এই দুঃখ কীভাবে বিনাশ করা যায়, পিতা?”

“এই তৃষ্ণারই নিরোধ, পরিত্যাগ ও বিনাশকে দুঃখ নিরোধ বলা হয়।”

“এই পথ বেয়েই কী মাতা দুঃখ পান, পিতা? মাতার দুঃখ দূর করতে চাই। আপনি গৃহে চলুন পিতা। মাতার পাদ্ম-অর্ধ গ্রহণ করুণ।”

বলে রাহুল দেখল, কয়েকজন নগরবাসী তার পিতার সমীপে গমন করে, চরণ বন্দনা করতে শুরু করল। বুদ্ধদেব সারিপুত্রকে ডেকে বললেন, “ওরা প্রব্রজ্যা নেবে। আয়োজন কর।”

পাঁচ.

রাহুল বলে চলে, “আপনি এখানে এসে উপস্থিত হবার কিছুদিন আগে এদিকে বড় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ঘটে গেছে নদীর জল নিয়ে। আপনি তো জানেন, রোহিণি নদীর জল নিয়ে বহুদিন থেকেই আমাদের সঙ্গে কোলিয়দের বিবাদ। সম্প্রতি ওই রাজ্যের কিছু মানুষ আমাদের দেশের কিছু বণিককে ধরে বিনা কারণে পীড়ণ করে। জলের ভাগাভাগির আক্রমণেই এই দ্বন্দ্ব। আর তা অনুভব করে ফলে আমাদের এখানের মানুষও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমরা ওদের চল্লিশটি গো শকট পুড়িয়ে দিই, গো ও বাণিজ্য সম্পদ লুঠ করি । দেবদত্ত খুড়োর নেতৃত্বেই এই সব সংঘটিত হয়। তিনি বলেন, ‘তোর বাবা এখানে থাকলে সব জল ওদের দিয়ে দিত। ফলে মার খেত আমাদের এখানের চাষ ও নৌ-বাণিজ্য। জল না পান করে মরতে হোত আমাদের। অহিংস শান্তির বাণী আউড়ে আর যাই হোক, দেশ চালানো যায় না।’ খুড়ামশাই আরও বলেন, আপনি যুদ্ধে ভয় পান। আপনি যুদ্ধ বিদ্যা ও রাজনীতি শিখতে পারেননি। তাই সন্ন্যাস নিয়েছেন। আর এটাকেই প্রচার করছেন অসহিষ্ণুতা হিসেবে।”

 বুদ্ধ চক্ষু মুদিত অবস্থায় যেন আপন মনে বলে চললেন, “এক বিন্দু জলের দাম কত, রাহুল?”

“এক বিন্দু কেন, কত সহস্র ফোঁটা জল নষ্ট হয়ে যায়—যেমন ধরুন না কেন—বৃষ্টির জল।”

“আর ক্ষত্রিয়ের জীবনের দাম?” বুদ্ধদেব পুত্রের দিকে তাকান।

“সে যে অমূল্য, পিতা।”

“তাহলে জল নিয়ে এই কলহ কেন, রাহুল? নদীর স্রোত যেমন প্রবাহিত হচ্ছে, হোক না। সেখান থেকে যার যা প্রয়োজন, নিক না সে। এক মানুষের জীবনধারণের জন্য কতটুকুই বা জল লাগে আমাদের। আর বাকি রইল সঞ্চয়ের কথা। সেটা তো বৃষ্টির জল থেকেই করা সম্ভব।”

একটু চুপ করে থেকে রাহুল বলে, “আপনি যথার্থ, পিতা। আমি আপনার কথা আরও শুনতে চাই। আপনি বলুন।”

স্মিত হাস্য করে বুদ্ধদেব বলতে থাকলেন, “তখন শত সহস্র শ্বেতহস্তী ধূলিঝড় তুলে দৌড়ে আসছে। এ হল মারের কারসাজি, যাতে আমি তপস্যায় সফল হতে না পারি। সে হল অসহিষ্ণুতার ধারক ও বাহক। হঠাৎ দেখি, বোধিবৃক্ষের অদূরে আমার মাতা দন্ডায়মান। সেই সব হস্তী মাতার পদতলে এসে মুখ থুবড়ে পড়তে লাগল একে একে। তারা ধূলায় মিশে যেতে থাকল। বুঝলাম, আমার জন্মবীজ সমাপ্ত হয়েছে—এই আমার শেষ জন্ম।”

“আমি জানি পিতা। আপনি নগরে আসছেন, খবর রটে গেছে; তখন দেখি পদ্মের ঢেউ। ছাদে দাঁড়িয়ে আমি তা দেখতে পাই। মা বলেন, ও হল পূর্ণিমার প্রবল স্রোত। কিন্তু আমি দেখি অন্য ব্যাপার। তারা আর পদ্ম নেই, হয়ে যাচ্ছেন আপনি। শতশত বুদ্ধ ছুটে চলে আলোক মালার সহিত—যেন আলোই বুদ্ধ।”

শান্ত স্বরে বুদ্ধদেব জানতে চাইলেন, “তুমি আর কী দেখ, রাহুল?’

বালক উঠে দাঁড়িয়ে সামনে দুই হাত প্রসারিত করে গোল করে দু’ দিকে ঘুরিয়ে বলে, “অনন্ত আকাশ দেখি, পিতা। সেই আলোকিত আকাশে ধীরে ধীরে প্রস্ফুটিত হতে থাকে এক বিরাটাকার পদ্ম। আমি শুনেছি, যখন নগরীর পথে পথে আপনি ভিক্ষাত্রে হেঁটে বেড়ান—পীতবসনধারী সন্ন্যাসী আপনি, আপনার প্রতি পদক্ষেপে পদ্মই ফুটে ওঠে। সবই কী মায়া পিতা? আর যদি তা মায়াই হবে, আমার মন জুড়ে এত আনন্দ হচ্ছে কেন? কেন প্রাণের ভেতর হিল্লোল উঠছে! যেন মনে হচ্ছে সকল পদ্ম আকাশে নয়, আমার ভেতরে ফুটে উঠছে।”

অত্যন্ত প্রীত হয়ে বুদ্ধদেব বলেন, “তুমি মহৎ রাহুল। তুমি অনেক উন্নত। তোমাকেই আমি দিয়ে যাব সমস্ত ভুবনের ভার। তুমি যে অলৌকিক লীলা দেখেছ তা কেবলমাত্র পূর্বের ঘটনার পুনরাবৃত্তি।”

রাহুল বলল, “আজ বুঝলাম, মাতার এই দুঃখের কারণ তৃষ্ণা। জানলাম, সংস্কারের নিরোধে বিঞ্জান নিরুদ্ধ হয়, বিঞ্জানের নিরোধে নামরূপ নিরুদ্ধ হয়। নামরূপের নিরোধে ষড়ায়তন, ষড়ায়তনের নিরোধে স্পর্শ নিরুদ্ধ হয়। স্পর্শের নিরোধে বেদনা, বেদনার নিরোধে তৃষ্ণা নিরুদ্ধ হয়। পিতা, আজ থেকে এই হল আমার পিতৃধন।”

গোধূলিলগ্ন সমাপ্ত হল। বৈশাখী পূর্ণিমার উজ্জ্বল আলোকে সমগ্র চরাচর জ্যোৎস্নার আলোকে উদ্ভাসিত। রাহুল বলল, “আমি জানি না পিতার গাত্রস্পর্শ কেমন, কেমন হয় পিতার দেহের গন্ধ। আমি কি আপনাকে স্পর্শ করার অধিকার পেতে পারি?”

 

পুত্র সমীপে পিতা

বুদ্ধদেব গাত্রত্থান করে বললেন, “কোন কথাকেই আপ্তবাক্য বলে মেনে নিও না—এমনকি আমার কথাকেও নয়। আমি অতীতে বহু কল্প রাজা ছিলাম। দেবদত্তের ন্যায় ভাল বন্ধু ছিল বলে আমি ছয়টি পারমিতা আয়ত্ব করতে পেরেছিলাম। তোমার মধ্যে অর্হৎ হবার সব ক্ষমতাই পূর্ণ ভাবে বিদ্যমান। তুমি ভবিষ্যৎ সংসারে একজন বুদ্ধত্ব প্রাপ্ত হবে। তোমাকে একথা স্মরণ করিয়ে দেবার জন্যি যে হেথায় আমার আগমণ, হে পুত্র আমার।”

পিতার চরণে মাথা নত  করে রাহুল বললে, “বহুজন সুখায়-বহুজন হিতায়, অসহিষ্ণুতা দূর করণের জন্য আমি তার জন্য প্রস্তুত, হে তথাগত।”

————————————-

ঋণ:
১) ত্রিখন্ড পুন্ডরীক সূত্র-অনুবাদঃ সরোজকুমার চৌধুরী। আনন্দ পাবলিশার্স। দ্বিতীয় মুদ্রণ ২০১৪।
২) এবং আমরা পত্রিকা। গৌতম বুদ্ধ সংখ্যা। ২০১৪।
৩) অজন্তা অপরূপা। নারায়ণ সান্যাল। ভারতী বুক স্টল। দশম মুদ্রণ। ২০১৩।
৪) মহামানব বুদ্ধ। রাহুল সাংকৃত্যায়ন।চিরায়ত প্রকাশন। নভেম্বর ২০১৩।

অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী। গল্পকার। লেখকের দেশ-ভারতবর্ষ। জন্ম ১৯৭৬ সালে, ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার ছোটচৌঘরা গ্রামে। পড়াশুনো- বাংলা সাহিত্যে এম এ। জীবিকা- চাকুরি। প্রকাশিত বই- একটি। 'মশাট ইস্টিশনের মার্টিন রেল' (১৫টি গল্পের একটি সংকলন)।  প্রকাশিত গল্পের সংখ্যা দুইশত। পশ্চিমবঙ্গের নানা পত্র পত্রিকায়...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

বালির বেহালা

বালির বেহালা

বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..

তদন্ত

তদন্ত

  এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..