আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
জমিয়ে বসতে না বসতে
বদলি করা হল গরম হাওয়ার দেশে
চারপাশ থেকে শিতলকুচি মেঘ
ঝাঁপিয়ে পড়ে টেনে দিল রেখা
যেন জীবনের সম্পূর্ণ নির্বাহন
নির্ভর করছে এইসব জোরদার দখলদারির উপর
যেন আলো ও অন্ধকারের পরিচিত গল্পগুলো
আগে শোনেনি কখনও
এমন ভাবে মুখ দেখালো খোলাখুলি
মাথা গুঁজে দিলেও আলো সবাইকে নেয় না
অন্ধকারও
এটুকু বললেই ভেজাল মিটে যেত
আজকাল অন্ধকারে আলো
আলোতে অন্ধকার ফেলে
আঁক কষে মহাজন
দেখে নিতে চায়
আলো আর অন্ধকারের ভিতর কে কত সফেদ
মুখ টিপে আলো হাসে
অন্ধকারও
সময় সুযোগ বুঝে আশ্চর্যভাবে
অন্ধকার গিলে আলো বসে থাকে চুপ
আলো গিলে অন্ধকার বসে থাকে চুপ
আমি বিশ্বাস করি ওকে
যা করতে পারেনি বলে
ওকে ছেড়ে চলে গেছে দিন
ওর সবকিছু আসলে আমার
কমলা রেশমি চুড়ি ওর হৃদয়
আমার দু’হাতে জলের মতো খেলে
ওর আপন ধ্যানোন্মত্ত সাগর
তাকালেই আমার সবুজ হয়ে ওঠে
এবার বলো কী দেবে আমায়?
দুঃখ দেবে? বধ্যভূমি আনন্দনন্দিত?
আর যাই দাও এমন কিছু দিও
যা দেখে সকলেই বুঝে যায়
এ কেবলই ভিকিরিকে দেওয়া মধুর বিশেষণ নয়
বেগুনি জামার ভিতর বেগুনি বুকের ছাল
টুপটাপ খসে পড়ে
ঘামের শব্দ চেটে নিতে আসে
গুঁড়ি গুঁড়ি পিঁপড়ের দল
তার আগেই সমস্ত ঘাম নিয়ে সে
ঘুমিয়ে পড়ে বাচ্চা ছেলের মতো
তার আগেই তার
ঘুমন্ত মুখ আমি ভালোবেসে ফেলি
ভালোবেসে ফেলি শান্ত ফলটির মতো
ভালোবেসে ফেলি পাহাড়ি স্তব্ধতার মতো
এ কথাই হাজার হাজার বৃষ্টি বলে গেল একটানা
মধ্যরাত তালির শব্দে সমর্থন জানালো একটানা
কারা যেন তুড়ি দিয়ে নেচে উঠল বর্শা হাতে
আমাকে অবাক করে
একই ধুন নিয়ে বারবার নাচল সারারাত
ওহ্ কী নাচ!
যেন হাজার হাজার শকুন
হেঁটে চলেছে স্তেপ পেরিয়ে
রোঁয়া ওঠা রুগ্ন পায়ের
প্রতিটা আঙুলে কর্কশ ছাপ
সময়কে কানা করে চলেছে ফুল ফোটার ঢের আগেই
বাসনার খোঁচা যেন ওদের কাঁধের মাংসে বসিয়েছে
মরণকামড়
ততক্ষণ ছাড়বে না যতক্ষণ না চাঁদ
উলঙ্গ শরীরগুলো নিয়ে
লোফালুফি খেলবে সান্দ্র জ্যোৎস্নায়
কেউ আসবে, কেউ পুরোপুরি এসেছে
এ কথায়
হঠাৎ পৃথিবীর ঘ্রাণ এসে লাগে মুখেচোখে
বুঝতে পারি
খুব কাছাকাছি রয়েছে সে
খুব কাছাকাছি
তার শাপিত নির্জনতা থেকে
বহু জন্মের তাপ উঠে আসে
ঘুমিয়ে পড়েছিলে
দেখলাম
এক বিশেষ জাতের ধোঁয়া
তোমাকে ভেঙে বেরিয়ে এলো
এই খোলা চাদরের দেশে
ধীরে খুব সাবধানে
ওর ভাঁজগুলো খুলতে হল
পুরোনো ভাঁজ
ছিঁড়ে যাওয়ার ভয় তো থাকেই
প্রথম ভাঁজের নাম নশ্বরতা
ভাঁজের ভিতর ভাঁজ
দেখি নাম লেখা তাতে
নশ্বরতার ভিতর নশ্বরতা
এ কেমন নাম?
নামের ভিতর অসংখ্য ভাঁজ
ভাঁজের ভিতর অসংখ্য নাম
নশ্বরতার ভিতর অসংখ্য নশ্বরতা !
অথচ এরা সবাই আলাদা আলাদা
কারোর শিং আছে
কেউ রোদের দিকে তাকিয়ে আছে একটানা
কারোর আবার দুহাতে আঙুল বলতে
চাপ চাপ খোয়াব ফুটে আছে
তোমাকে দেখাবো বলে
ভাঁজ করে বোতলে রেখে দিই ধোঁয়া
জানি তুমি দেখলে খুশি হবে বহুবিধ ভাঁজের ভিতর
ছোট্ট একটা ভাঁজ
কী নিখুঁত নৈপুণ্যে তোমাকে ডেকে উঠল
‘বাবা’
শুধু জানি না
সে ভাঁজের নামও নশ্বরতা জেনে
শেষপর্যন্ত কী করবে তুমি
ওকে মাঝেমাঝে রোদ্দুর মনে হয়
মাঝেমাঝে কুয়াশা
রাগী গাছের মতো ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে আছে
ওর কবিতাও ওরই মতো
এই যদি দেখি শিষ দিচ্ছে পাখি
এই আবার দেখব
মেঘলা বিছানাপত্তর নিয়ে শুলো গিয়ে ওপাশের ঘরে
হাতের উপর মাথা রেখে গুনগুন গাইছে গান
প্রতি তিনদিনে একদিন আমি
ওর কবিতা পড়ি
প্রতি তিনদিনে একদিন
উড়ে যেতে দেখি ধানক্ষেত, পালকশিশির
প্রতি তিনদিনে একদিন
শহরটা বাসি হতে হতে চেয়ে বসে শান্তির জল
প্রসঙ্গ এমনই
শুনতে শুনতে মনে হয় যেন
কতকাল কেউ ভিজে হাওয়ায় হাঁটেনি
কেউ পাশে নেই বলে
মরু হয়ে গেছে সমস্ত জল
আর সেখানে ঘুরঘুর করছে নরম এক বেড়ালছানা
সামান্য স্পর্শের লোভে।
আমি জানতাম না চব্বিশের জুলাইটা এত দীর্ঘ হবে, আমি জানতাম না, অগাস্টকেও রাহুর মত গ্রাস…..
অভিশাপ মেঘের ভেলায় নিঃশ্বাসে ক্লান্তির ছাপ সবুজের নীড়ে আপন ঠিকানার খোঁজ এক ফালি সুখের নেশায়…..
পাখি দম্পতি পাখি গিয়েছিল কতদূর বনে তা কারো নেই জানা। ঠোঁটে ধরা লাল টুকটুকে ফল…..
তারা যেমন বলে, চোখে ধুলো দিলে থেমে যাবে আমার কাব্যময়তা অথচ আমি প্রামান্য দলিলের নই…..