প্যাডেলে স্বপ্ন

মৌ মধুবন্তী
অণুগল্প
Bengali
প্যাডেলে স্বপ্ন

রিকশার প্যাডেলে পা ঠোকরাতে ঠোকরাতে কাজিব ভাবে,আজ সয়মনকে সে এমন আদর দেবে যা জন্মে সে পায় নাই। আর কাজিব নিজেই কি পেয়েছে নাকি তেমন সুখ? কত ভাবে, একদিন কাজে না গিয়া বউটারে নিয়ে সারাদিন সোহাগ ভালোবাসা করবে। কপাল তো বস্তির। দিনের বেলায় বৌ নিয়ে সোহাগ করবে এমন কি সুযোগ আছে? এই হরির মা আসবে জিজ্ঞেস করতে একটু তেল ধার দিতে পারবে কিনা, পরির মা আসবে নুন আছে নাকি।
একটা জলপাই পেয়েছে রাস্তায় কুড়িয়ে, জন্মের টক, খাবে কি করে? লবণ লাগবে। গরীবের মরণ ! জলপাইয়ের সাথে লবণ তো কেউ ফেলে নাই রাস্তায়।

জলপাইটারে হাতের মুঠায় রেখে কাজিব আবার ভাবের জগতে ডুবে যায়।

কেউ আসবে জানতে, আইজ কাজিব কামে যায় নাই কেন? তার কি অসুখ করছে কিনা। এইসবের জবাব দিতে, সয়মন কতবার যে ভাঙ্গা কঞ্চির দরজা আলগোছে খুলবে আর বন্ধ করতে গেলেই , দু’জন দুইদিক থেকে হা হা করে উঠবে। করে কি এই মাইয়া, দিনে দুপুরে স্বামীরে ঘরে নিয়া দরজা ক্যান বন্ধ করে? খিল খিল হাসিতে পাড়া মাতিয়ে দেবে। তারপর, কে জানে হয়ত ভাঙ্গা কঞ্চির বেড়ার ফাঁকে চোখ লাগিয়ে দেখবে, সয়মনের উপরে কাজিব ঝড় তুলছে। সেই ঝড়ের সুখে সয়মন ঝাপটে ধরে আছে তার স্বামীরে। কানে কানে বলছে, এমন জোয়ানী তোমার, আমার উপরে কেন তুমি নিত্য ঢালো না? যৌবন আমারে খালি পোড়ায়, খলবল করে শরীরের ভিতরে। বদনা বদনা রস ঢেলে দাও স্বামী, আমারে তুমি এই আগুন নিভাইয়া নতুন দিনের শাড়ি পরাও- এইসব ভাবতে ভাবতে কাজিব ডাক শোনে, এই রিকশা, যাবে নাকি মনিপুরী পাড়া…

মৌ মধুবন্তী। কবি ও উদ্যোক্তা। পঁচিশ বছরের বেশী দেশ ছেড়ে উত্তর আমেরিকায় বাস। আবৃত্তি ধারণ করেন অন্তরের অন্তঃস্থলে। কবিতা লিখেন বাংলা ও ইংরেজি দুই মাধ্যমেই। তিনি মনে করেন, কাব্য ছাড়া কবির কোন পরিচয় থাকেনা। তাই আত্ম সমালোচনায় প্রত্যয়ী। কবিতাকে ভালোবেসেই...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

দৌড়

দৌড়

একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..