বেশরম
বেশরম কি কঠিন ছিলো, ডুব সাঁতারের রুদ্ধ দম তোমাকে ভুলেছি ঠিক এক বেশরম- আবার পড়েছি…..
আবৃত্তির অডিও শুনুন এখানে:
কণ্ঠ: শাপলা জাকিয়া
প্রিয়তমেষু,
আমরা ছিলাম চিঠি লেখালেখির শেষ জেনারেশন।
ফোন নেই, নেট নেই, রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা
রৌদ্র ছায়ার সেই বাসস্টেশন।
পূর্ব নির্ধারিত স্থানে- অস্থির ছটফট প্রাণে
বারবার হাত ঘড়ি দেখা,
কত অপেক্ষার ধ্রুপদী প্রহর
কেটেছে একা একা।
প্রিয়তমেষু,
কত রাত জেগে জেগে- জলছাপ কাগজে লেখা চিঠি;
ঘ্রাণে ভরা- প্রাণে ভরা- থরথর অবনত দিঠি-
পার্কার ফাউন্টেন পেন’এ
অক্ষরে অক্ষরে আলপনা,
লাল নীল কত শত খামে- ভরেছি কাঙালপনা,
দু’চার গানের কলি,
পুনশ্চঃ পুনশ্চঃ দিয়ে লেখা,
কখনো সুচিত্রা সেন,
চলনে বলনে ছিলে রেখা।
প্রিয়তমেষু,
ল্যান্ড ফোন, ফোন বুথ,
আহা! সেই ক্যাসেটের গান!
আমাদের প্রথম ছবির- জ্বলে গেছে ফুলের বাগান।
অ্যালবামে পিছনের সন- আবছা আবছা লাগে আজ,
উঠেগেছে মলাটের পাশে- সোনালী জরির যত কাজ।
কই গেলো- হাঁসগুলি- সেই ডাক- সেই তৈ তৈ…
কই গেলো ডায়েরি কলম-
ময়ূর পালক গোঁজা বই।
প্রিয়তমেষু,
এ কেমন বেড়েছে বয়স?
আষাঢ়ের কদম আর হাতে নিয়ে দেখিনা বহুদিন;
কতদিন ভোর বেলা খাইনি সে খেজুরের রস।
শিশিরে ভেজা বেলি- কোন ঘাসে পরে থাকে কই?
কে জানে- আজ তুমি কার কাছে,
কে জানে আমি-
তোমার কে হই?
প্রিয়তমেষু,
শিকড় গভীরে গেলে ডালপালা ব্যপ্তিতে বাড়ে,
বড় গাছ কেটে ফেলে দিয়ে-
টব রেখে জানালার ধারে-
কে আর সেই ছায়া পাবে?
আজ আমি চিঠি লিখি যদি- তোমার কাছে কি পৌছাবে?
সেই আগের দিনের মতো-
সেই একই ঠিকানায়?
জানি আমি কেউ নেই গাছের ছায়ায়,
এখন বসার ঘরে- ছায়াহীন এই শহরে-
ক্যাকটাসই ভীষণ মানায়।
বেশরম কি কঠিন ছিলো, ডুব সাঁতারের রুদ্ধ দম তোমাকে ভুলেছি ঠিক এক বেশরম- আবার পড়েছি…..
একি অনাসৃষ্টি নিত্য পণ্য উর্ধ দাম মন তার ভালো নেই, বাজারেতে যেতে যে হবে…..
পাশের রাস্তাতে তিন জন্মের লাশ ; অনিয়মহীন এভাবেই একক অপার্থিব অশরীর ৷ উল্টোদিকে আমি…..
পাষাণের প্রেম বিকট স্তব্ধতায় সুনিপুণ সীমানা প্রাচীর তুলেছ, বেসামাল ভালোবাসার জাগতিক জায়নামাজে। প্রার্থনার গতিরোধ করো…..