ফেলানির লাশের কসম
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
এ-এক প্রেমের শহর,
এ-এক প্রেমের শহর,
এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে।
হাজারো প্রেমের কলি ফোটে এই শহরে!
প্রেমিক-প্রেমিকা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, আজীবন একসাথে থাকবে বলে!
হাজারো প্রেমের-তালা ঝোলে ব্রুকলীন ব্রীজে!
প্রেম আসে বন্যার মত। ঘোরতর তীব্রতা নিয়ে।
এমনতো নয়, এই শহরে এটাই কারও প্রথম প্রেম ছিল!
এটাই কারও প্রথম পরকিয়া ছিল!
এই শহরের অসংখ্য অসুখী নরনারী, জড়িয়ে পড়ে নিষিদ্ধ প্রেমে।
যদিও প্রেমের রাজ্যে নিষিদ্ধ-প্রেম বলে কিছু নেই!
এমনতো নয়, এই শহরে কখনও কারও ব্রেকআপ হয় না।
এখানেও বহু প্রেম ভেঙ্গে যায়।
এই শহরের বাতাসে বহু কান্নার স্মৃতি,
বহু দীর্ঘশ্বাসের স্মৃতি ভেসে বেড়ায়।
ব্রুকলীন ব্রীজের রংবেরঙের ‘ লাভ লকস’ গুলো বাহ্যত প্রেমের মহিমা প্রচার করে।
কিন্তু ব্রেকাপের পর তালা ভাঙ্গার দায় দু’জনেই এড়িয়ে যায়।
তাই হাজারো তাজা-প্রেমের পাশাপাশি মরা-প্রেমগুলোও ঝুলে থাকে লোহার গ্রীলে!
এই শহর বড় ব্যস্ত!
কারও দু’দন্ড ফুরসত নেই, কারও হৃদয় ভাঙার গল্প শোনে।
এই শহর দিন-রাত জেগে থাকে।
তাই কারও নিদ্রাহীনতা বড় তুচ্ছ বিষয় এই শহরে।
নিয়নবাতির আড়ালে, নীলাভ কষ্টগুলো শুধু থোকা-থোকা জমে থাকে।
ব্রেকাপের পর
মন দেয়া-নেয়ার শুরুটা ছিল তোমার দিক থেকেই,
আচমকা একদিন, তুমিই যবনিকা টানলে।
আমি তোমার ব্লকলিস্টে চলে গেলাম।
আমাদের জীবনটাও যেন পাসওয়ার্ড হারানো ফেইসবুক হয়ে গেলো।
আমাদের সমস্ত আনন্দ, সমস্ত হৈহুল্লর, সবটুকু আবেগ থমকে রইল ফেইসবুকের টাইমলাইনে!
পাসওয়ার্ডের চাবি নেই বলে, সেই জগতের দরজা আমার জন্য বন্ধ হয়ে গেলো।
এখন আমাদের দু’জনের মাঝে, সীমাহীন দূরত্ব…
যেন পৃথিবীর দুই প্রান্তে, এক আলোকবর্ষ দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছি আমরা।
বিগত কুড়ি বছরের মত,
আগামি বছরগুলোতেও আমাদের দু’জনের বয়স বাড়বে নিয়ম করে।
কিন্তু, আমরা কেউ আর কাউকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবো না!
আমাদের মন খারাপ হবে, অসুখবিসুখ হবে,
কিন্তু আমরা কেউ কারও খবর রাখবো না।
না ফেইসবুকে, না ম্যাসেন্জারে, না ফোনে…
তোমার আদোর, চুমু খাওয়া, আগলে রাখা সব…সবকিছু আমার মনে পড়বে।
আমার ঘরের দেয়ালে, এখানে-ওখানে, তোমার স্মৃতি জড়ানো জিনিসগুলো,
আমায় তোমার কথা মনে করিয়ে দেবে।
তোমার জন্য আমার বুকে চিনচিনে ব্যাথা হবে।
তোমার সাথে, সারা দিনের, সমস্ত গল্প করতে ইচ্ছে হবে।
আমরা একই শহরে থাকবো,
তবু, আমাদের আর কখনও দেখা হবে না।
আর কোনদিন, কথা হবে না।
ব্রেকাপের পর ভেবেছিলাম,
তোমার সাথে আর দেখা না হলে, আমি মরে যাবো।
কী অদ্ভুত ঘোর লাগা, ভালোবাসা ছিল আমাদের, বল?
তোমার মত, কেউ আমায় ভালোবাসেনি আগে!
আবার, তোমার মত করে কষ্টের নোনাজলে কেউ ডুবিয়ে দেয়নি আমায়।
বুকের ভেতর উথালপাতাল করা কান্নাটা কী করে সামলাই, বলতো?
চেয়েছিলাম, সম্পর্ক না থাকলেও সংযোগটা থাকুক।
কিন্তু তুমি আমায় ফেইসবুকে, ফোনে, জীবনে, সর্বত্র ব্লক করে দিলে।
তোমার সাথে শেষদেখার সেই মূহুর্তটা,
আমায় ভেঁঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল।
তোমার প্রেমহীনতা আমার হৃদয়কে রক্তাক্ত করেছিল!
প্রত্যাখ্যাত, অপমানিত ‘আমি’ তোমার দুয়ার হতে ফিরে এসেছিলাম।
ভেবেছিলাম, তোমার অপ্রেমের প্রতিশোধ নিতে আত্মহত্যা করবো।
কাদম্বরী এই ভুলটাই করেছিল।
নিজে মরে বাঁচিয়ে দিয়েছিল, প্রাণের রবি’কে।
কিন্তু, আমি মরবো না। আমি বাঁচবো!
নিজেকে আমি অবিরত ভাঙ্গবো,
অবিরত গড়ে তুলবো।
হ্যা, আমি প্রবলভাবে, তুমুলভাবে বাঁচবো!
ছাইয়ের গাঁদা থেকে, ফিনিক্স পাখির মত জেগে উঠবো এই আমি!
নির্লজ্জের মত বেঁচে থাকবো, তোমার উপর প্রতিশোধ নেবো বলে!
ভালো থেকো, ভালোবাসায় থেকো রহিত সেন!
তোমাকে কী করে ভুলবো, বল? তোমাকে কী ভোলা যায়?
স্নানের পর যখন পোশাক পরি,
তখন তোমার কথা খুব মনে পড়ে।
তুমি আমাকে পশ্চিমা পোশাকে স্বচ্ছন্দ হতে শিখিয়েছিলে।
তোমার চোখে, নতুনরূপে নিজেকে দেখবো বলে, প্রতিনিয়ত নিজেকে ভেঙ্গেচূড়ে গড়েছি।
আমি শাড়ি পরে, এলো চুলে, কপালে টিপ পরলেও তুমি মুগ্ধ হতে
তুমি বাঙালি রমনীর সাজটাও ভালোবাসতে।
এখনও বাইরে যাওয়ার আগে আয়নায় নিজেকে দেখি।
কিন্তু তোমার চোখের তারায় নিজেকে দেখার সাধটা অপূইর্ণ রয়ে যায়।
রুশদী, অরুন্ধুতি এবং অরবিন্দ আদিগা’র সাথে তুমি আমায় পরিচয় করিয়েছিলে।
তোমার কারনে আমার বুককেইসে ঝুম্পা, অনিতা-কিরন দেশাইরা জায়গা করেছে।
সম্প্রতি ‘নরওয়েজিয়ান উডে’র বিষন্নতা আমাকে ঘোরগ্রস্থ করে রেখেছে।
খুউব ইচ্ছে করে, মুরাকামির লেখা নিয়ে, তোমার সাথে গল্প করি।
কিন্তু ফেইসবুকে তুমি আমায় আনফ্রেন্ড করেছো।
টেলিফোনে, এমনকি জীবন থেকেও আমাকে ব্লক করেছো।
তোমাকে ছাড়া এই শহর আজ বড় উদাসীন। বড্ড আটপৌড়ে।
ঐ সেদিনও, যেখানে-যেখানে আমরা ভালোবাসার মুক্ত ছড়িয়ে ছিলাম,
আজ সেখানে অশ্রু টলমল!
আচমকা বাতাস এসে আমাকে ছুঁইয়ে দিলে, আমি শিহরিত হই।
বাতাসে এখনও তোমার স্পর্শ-গন্ধ রয়ে গেছে।
চলতি পথে, রাস্তার মোড়ে, মারিওনার চেনা ভেষজ-গন্ধটা আজও তোমার কথা মনে করিয়ে দেয়।
শ্রীময়ী সিরিয়ালে ‘রোহিত সেন’কে দেখে আমি চমকে উঠেছিলাম।
আমি পাগোলের মত রোহিত সেনের মাঝে তোমায় খুঁজেছি।
রোহিত সেন ক্যান্সারের কাছে হার মেনে ছিলেন।
তুমি বেঁচে থেকেও হারিয়ে গেলে।
কী অদ্ভুত নিয়তি!
অসুস্থতার ঘোরে, ঘুমন্ত তোমার সেই কান্না আমি এখনও শুনতে পাই,
“মামি, আই’ম কোল্ড, আই’ম সো কোল্ড মামি।”
ঐ অসুস্থ বালকের কান্নায় আমার হৃদয় আদ্র হয়ে ওঠে।
তুমিই বল, তোমাকে কী করে ভুলবো?
তোমার নামটা না হয় রোহিত সেনের আড়ালেই চাপা থাকুক।
ভালো থেকো, ভালোবাসায় থেকো রহিত সেন!
প্রেম নয়, আমি তোমার ক্ষমা প্রার্থনা চাই
একটাসময় তোমার প্রেম আমাকে অক্সিজেন দিয়েছিল।
আজ তোমার অপ্রেম আমাকে কষ্টের নোনা জলে ডুবিয়ে দিয়েছে।
জানি, তোমার প্রেম এবং অপ্রেম দুটোই আমায় আজীবন তাড়িয়ে বেড়াবে!
এখন আমি আর তোমার প্রেম চাই না।
তোমার ক্ষমা প্রার্থনা চাই।
একদিন, হাঁটু গেড়ে বসে প্রনয় ভিক্ষে করেছিলে,
প্রমিস রিং পরিয়ে দিয়েছিলে আমার অনামিকায়,
তোমার ওয়েডিং প্রমিসে আজীবন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলে।
তোমার কণ্ঠে ভালোবাসা, বন্ধুত্ব এবং বিশ্বাসের কথা শুনে সেদিন আমার চোখে জল এসেছিল।
বিনিময়ে আমিও তোমায় শর্তহীন ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম।
আজ যখন ভালোবাসার বন্ধনটা ভেঙ্গে দিলে,
খুব একটা অবাক হইনি,
জানতাম, নিষিদ্ধ প্রেমে এমন একটা দিন আসে, আসবেই।
অনেক মূল্য দিয়ে জানলাম,
যে প্রেমে গোপনীয়তা প্রয়োজন, সেখানে জড়াতে নেই।
সম্পর্কে ভালোবাসা যতটা প্রয়োজন,
তারচেয়ে বেশী প্রয়োজন ছিল শ্রদ্ধার,
তোমার অপ্রেম আমায় ততটা রক্তাক্ত করেনি,
যতটা রক্তাক্ত হয়েছি অপমানে, অশ্রদ্ধায়।
অপ্রেম নিয়েও বাঁচা যায়,
তোমার অপ্রেম আমি সয়ে নেবো।
কিন্তু তোমার অশ্রদ্ধায় আমি কুকড়ে যাচ্ছি, তিলেতিলে মরে যাচ্ছি।
তাই, যে শ্রদ্ধাটুকু তোমাকে দিয়েছিলাম, সেটুকুই আমার ফেরত চাই!
যদি একদিনের জন্যও ভালোবেসে থাকো,
আমি চাই তুমি হাঁটু গেড়ে বসে ক্ষমা চাও।
প্রতিশ্রুতি ভেঙ্গেছো বলে নয়,
ক্ষমা চাইবে, দোষারোপ করেছো বলে।
আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো।
ক্ষমা তোমায় চাইতেই হবে।
দিন, মাস, বছর, দশক, যুগ, শতাব্দী ধরে আমি অপেক্ষা করবো,
জীবন এবং জীবনাবসানেও অপেক্ষা করবো।
আমার ঈশ্বর জানে, তোমার দেয়া অপমান আমায় কতটা পুড়িয়েছে।
আমি চাই, তুমিও অনুশোচনার আগুনে পুড়েপুড়ে ছাই হয়ে যাও।
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..
স্মৃতি চাঁদের আজ দুঃখ পাবার কিছু নেই ! সবুজ পৃথিবীতে আজকের এই বিকেলে আকাশে উড়ে…..