প্রেম ও অতিমারি

পুলক বড়ুয়া
কবিতা
Bengali
প্রেম ও অতিমারি

প্রেম ও অতিমারি

পালকি

ঐ দেখা যায় পালকি,
বউ সাজবে কাল কী!

আমার বাড়ি
সাগরদাঁড়ি,—
মধুকবির দেশে;

আসবে ভালোবেসে!

কৃষ্ণবিবর

এসো এলোচুল এসো প্রিয় খোলাচুল
যাও তুমি এলোচুল যাও খোলাচুল

উত্থান হইতে হোক চরম পতন
প্রিয় ধারাপাত আহা পরম প্রপাত
বরষার ভেলা ওহো মেঘের ভাসান
গহন গহিন কী যে আঁধার অতল
রেশমি তিমির হায় চোরাবালি তীর

খোঁপা খুলে রও বুনো বেণী খুলে বও
এলোকেশী খেলা মেলা পঙ্‌ক্তির মতন
বুকে পিঠে চারু ওই বিনুনির কারু
অকস্মাৎ কী কৃষ্ণবিবর !

 

প্রজ্ঞাপারমিতা

তোমার আঙুলের কী দোষ
তোমার অধর ধোয়া তুলসী
পাতার মতোন ধরাবাঁধা অধরা
তোমার দু’চোখের নিচে কোনো কালিমাকুসুম,
তিলকের মতো শোভা পায় না, জমে নেই;
ধুলিধূসর পথে,—পদচ্ছাপে,—তোমার কোনো পাপচিহ্ন নেই,
ওষ্ঠের যুগল লালিমায় আঁকা আলপনা—
অপরাধবোধ কারুকাজ করে নাা।

তোমার বুকের ওঠানামা, ধুকপুক
তোমার সকল সুখদুখ— বেহেশতি।

আমি অতটা না-দেখে না-ছুঁয়ে
ঠিক অনুমানে না,
ঠিকঠাক মনে মনে নয়,
ঠিকঠিক জরিপ করতে পারি।

দর্জির হাতের ফিতের মতো কোনো
কড়াগন্ডা মাপজোক ছাড়াই মাপতে পারি,
পূর্ণ নিরস্ত্র, বিনেপয়সায়,—একদম কাছে না-এসেও;

বিনামূল্য,—নিশ্চিন্ত-নিরাপত্তা পাবে
কোনো মূল্য,—কোনো ছাড় নয়
এক পয়সাও নয়
এক কানাকড়িও নয়
কিছুই লাগবে না
একটা নিলে একটা ফ্রি-ও নয় ।

দূরে-কাছে-মুখোমুখি, শুধু,
মধ্যিখানে শূন্য-সাঁকো, তাও ভাঙুক,
সোনার কাঠি রূপার কাঠিহীন
অনুভূতির তারহীন
খেয়ালি-চঞ্চল-অনুরাগে,
নির্জন-আলাপনে,

ছায়াহীন কায়াহীন ছোঁয়ায়,
মায়াবী পরশে
ফল্গুধারার মতো, উষ্ণ স্রোতে!

 

জুজুজারি

আমি জুজুজারি,
আমি মহামারী!

আমি ১৭২০
না, না, আমি প্লেগ।
আমি ১৮২০
না, না, আমি কলেরা।
আমি ১৯২০
স্প্যানিশ ফ্লু।
আমি ২০২০
কোভিড ঊনিশ।
মানুষ আমার দু’চোখের বিষ।

আমি অতিমারি,
আমি জুজুজারি!

পুলক বড়ুয়া। কবি। জন্ম বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। লেখাপড়া করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘ওই পূর্বে রাঙা সূর্যে’, এবং ‘পাঠেরা খেলছে মাঠে’।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..