দৌড়
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
স্বাস্থ্যবিভাগের বেশ উঁচু পোস্টেই চাকরি করে নেত্রা। শহরের স্বাস্থকেন্দ্রেই বেশিরভাগ দিনই ডিউটি থাকে ওর। কিন্তু মাঝে মাঝেই মেডিকেল টিম নিয়ে ওকে জেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে যেতে হয়। গ্রামবাসীদের চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমীক্ষাও করতে হয়। এমনই একদিন এক আদিবাসী গ্রামে টিম নিয়ে আসতে হলো ওকে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধদের সাথে কথা বলে, একটা করে ফর্ম ফিল আপ করে জমা দিতে হবে। তাতে ওদের সবার নামে কার্ড আসবে আর ওরা সেই কার্ড নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলে চিকিৎসার বিশেষ সুযোগ সুবিধা পাবে। শাল-মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা আদিবাসী গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। ছোট্ট ছোট্ট মাটির ঘরগুলো কি সুন্দর করে খড়িমাটি আর লালমাটি দিয়ে কারুকাজ করা। গ্রামের পরিবেশ যেমন ছায়াময় আর শান্ত। ওখানের মানুষগুলোও তেমনই শান্ত। একটা গাছের তলায় টেবিল -চেয়ার পেতে নেত্রা আর ওর টিমের লোকজন কাগজ-কলম নিয়ে বসেছে। বৃদ্ধ -বৃদ্ধারা সব একে একে এসে ওদের সব তথ্য জানাচ্ছে। ওরাও ফর্ম ফিল আপ করে, শেষে ওদের টিপসই করিয়ে নিচ্ছে।
নেত্রার টেবিলের সামনে একজন বৃদ্ধা এলো। ওর দিকে একটু তাকিয়ে নেত্রা জিজ্ঞেস করলো-“নাম কি?”
বৃদ্ধা – “বিয়ের আগে সবাই বুধনের বিটি বলতোক্। পরে ডুলুংয়ের বৌ। আর এখুন তো কিশোরের মা।
নাম একটো ছ্যালো বটেক! ফুলমনি! কেউ ডাকে লাই কুনুদিনও!”
নামের জায়গায় ফুলমনি লিখে, আবার জানতে চাইলো – “পদবি কি তোমার? “
বৃদ্ধা – ” বাবার ঘরে ছিলুম তখুন হেমব্রম ছ্যালো। বিয়ের পরে টুডু হইছিলোক বটেক!”
নেত্রা ফর্মে ফুলমনি টুডু লিখলো। তারপর জানতে চাইলো- “বয়স কতো ?”
আকাশের দিকে তাকিয়ে, মনে মনে বিড়বিড় করে, অনেক হিসেব নিকেশ করে ও বললো- “তা হবেক দু কুড়ি পুনেরো – ষুলো।”
নেত্রা জানতে চাইলো- “শিক্ষাগত যোগ্যতা মানে পড়াশুনো করেছো?”
ও তখন বললো- “শিক্ষে যদি বলো মা, ঘরের কাজ, মাঠের কাজ, হাতের কুনু জিনিস করার কাজ, ওইগুলান আমি জানি বটেক! তবে, ওই পড়াশুনো আমি জানি লাই।”
ওর কথা শুনে একটু চুপ হয়ে গেলো নেত্রা। মনে মনে ভাবলো- ‘সত্যিই তো, পড়াশুনা ছাড়া অন্য কোনো কাজ শেখার যোগ্যতাকে, শিক্ষাগত বলা হয় না কেনো?’
তারপর ওকে বললো- “ঠিকানা টা বলো।”
বৃদ্ধা খুবই শ্লেষযুক্ত স্বরে বললো- “ঠিকানাটো আর কি বলি বলো তো?
বাবার ঘরে ছিলুম তখুন ওটোই ঘর ভাবতুম। বিয়ের পরে, সোয়ামীর ঘরটোকেই নিজের মুনে হতোক। এখুন তো বেটার ঘর। আমাদের মেয়েমানুষের আবার ঠিকানা হয় নাকি?”
ঠিকানার জায়গায় গ্রামের নাম লিখে নিয়ে, ফর্মে ওর টিপসই করিয়ে নিয়ে ওকে যেতে বললো নেত্রা।
বৃদ্ধার মুখ থেকে পর পর কতকগুলো অকপট সত্যি কথা শুনে কিছুক্ষণের জন্য কেমন যেন বিহ্বল হয়ে গেলো ও। আনমনা হয়ে ভাবতে লাগলো- ‘কমবেশি সবক্ষেত্রেই মেয়েদের জীবনের গল্পটা এক। শহর-গ্রাম, জাতপাত বা বিত্ত ভেদে কিছুটা হয়তো তারতম্য ঘটেছে। কিন্তু খুব গভীরে গিয়ে চিন্তা করলে, ফুলমনির কথার সঙ্গে আমাদেরও মনের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। আমরাও তো যে কোনো জায়গায় নিজেদেরকে স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশ করতে পারি না। আমাদেরও তো সম্পূর্ণ নিজের বলে কিছু থাকে না। কোনো মেয়ে নিজে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হলেও, সে স্বাধীন নয়।’
আনমনে একটানা ও ভেবেই চলেছে কথাগুলো। এদিকে বাকিরা সবাই চেয়ার টেবিল তুলে, সবকিছু গুছিয়ে ফেলেছে। শুধু ওর টেবিল চেয়ারটায় তুলতে বাকি। একজন বললো-“ম্যাডাম এবার উঠুন! ফিরতে হবে। বিকেল গড়িয়ে এলো!”
ওর কথা শুনে তড়িঘড়ি উঠে পড়লো চেয়ার ছেড়ে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো পাঁচটা বাজে।
সবার সাথেই গাড়িতে এসে বসলো। ফেরার পথে ভাবতে ভাবতে চললো- ‘এতোক্ষণে পলাশ (ওর স্বামী) অফিস থেকে ফিরে গেছে। আর তুতান (ওর ৩ বছরের মেয়ে)কেও নিশ্চয়ই চামেলি ঠিকমতোই রেখেছে।’
গ্রামের মেটোপথ পেড়িয়ে গাড়ি এসে উঠলো পিচ রাস্তায়। আর কিছুক্ষণ পরেই শহরে পৌঁছাবে ওরা। নেত্রা আজ সত্যিই বড় উদাসীন। মনটা কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেছে ওর। ফুলমনির বলা কথাগুলো অনুরণিত হয়েই চলেছে ওর মনজুড়ে…!
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
সকালে উঠে মায়ের মমতামাখা মুড়ি ও লিকার চা খেতাম। তারপর দাদু বলতেন, এবার পড়তে বোস।…..
রোজকার সূর্য ওঠার মত বেলি ভোরে উঠে দরজায় সামনে জল দেয়,ঝাঁট দেয়, ফুল তোলে। তারপর…..
একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট অফিসের চাকরির ইন্টারভিউয়ে জটিল একটি প্রশ্ন করা হলো। প্রশ্নটি হচ্ছে –…..