ফিওদর ত্যুতচেভের দুটি কবিতা

বিশ্বরূপ সান্যাল
অনুবাদ, কবিতা
Bengali
ফিওদর ত্যুতচেভের দুটি কবিতা

মূল রুশ থেকে অনুবাদঃ বিশ্বরূপ সান্যাল

উনবিংশ শতকের রুশ কবিদের অন্যতম ফিওদর ইভানভিচ ত্যুতচেভ (১৮০৩- ১৮৭৩) একাধারে চিন্তাবিদ, কূটনীতিবিদ, প্রবন্ধকার, ১৮৫৭ সাল থেকে পিটারবুর্গ বিজ্ঞান একাডেমীর সদস্য, গোপন উপদেষ্টা।  বিভিন্ন দেশে কূটনীতিক পদে ছিলেন, উনবিংশ শতকের রোমান্টিক কাব্যধারার পুরোধা।

জারমান ভাষা জানা সুত্রে গ্যয়েটের কাব্যর সাথে গভীর পরিচয়, তাঁর অনেক লেখাই গ্যয়েটে অনুপ্রাণিত।

 

শকুন্তলা (গ্যয়টে অনুসরণে)

কি পায় ফুলেরা ডাগর কিশোরী হলে
কুমারী কপোলে মধুর গোলাপি আভা
সুপক্ব ফল কি পাবে পরিণতিতে
ঘন গাঢ় লাল শাঁসে পরিপূর্ণতা।
সাগরে মুকুতা বিকিরণ করে আলো
কে পুলক দেয় তার মত দৃষ্টিকে
উষ্ণতা আর জীবনদায়িনী সুধা
অমোঘ নিটোল যেন অমৃতধারা।

স্বপ্নের ধনরাশির রঙের ছটা-
সৃষ্টির সব বর্ণকে নিয়ে একা
রূপময়তার আকাশে উদিত তারা
কল্পনাভার তীব্রতা রশ্মিতে
মহাকালে যত রচিত কাব্য সবে
মিলে গেছে শুধু তোমাতে, শকুন্তলা।

 

চোখ

বন্ধু তোমার চোখদুটো ভালোবাসি
বিস্মিত করে ঝলকে আগুন খেলা
হঠাৎ যখন তোল তুমি জোড়া দৃষ্টি
বিদ্যুৎস্পৃহা চিরে দেয় যেন নভতল
অর্গলহীন বলয়েতে ঢাকে সৃষ্টি।

তবু জানি আছে আরও বড় মুগ্ধতা
অবনত চোখে উৎসাহহীন ভাবনা
চুম্বনে ঘেরা মুহূর্তে ঘন আবেগে
নিমীলিত পাতা ভেদ করে আসা রশ্মি
নিস্তেজ আর ক্ষীণ আগ্নেয় বাসনা।

 

বিশ্বরূপ সান্যাল। লেখক, অনুবাদক ও গবেষক। জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তর কলকাতায়। ১৯৮১ সাল থেকে রাশিয়াবাসী (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন)। পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়াশুনা করেছেন। সাহিত্যপ্রেমী, অনিয়মিত লেখালিখি করেন। বাংলা, রুশ ও ইংরেজি সাহিত্যর সাথে সুপরিচিত। অংশুমালী সম্পাদনাপরিষদের সদস্য।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ