দীর্ঘশ্বাস
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
ভাবছ তুমি, হয়তো বদলে গেছে সে,
অভিমানগুলো পুষছ তাই অশ্রুজলে,
সম্পর্কগুলো এভাবে দিও না পুড়তে
এই ভুল বোঝাবুঝিদের তীব্র অনলে।
আসলে কবিরাও তো পোড়ে দহনে;
হয়তো উপেক্ষা বা উদাসীনতা নয়,
ভেবে দেখো, দুঃখ তো ওদেরও হয়,
সব কষ্ট কী আর প্রকাশ্যে আনা যায়?
বুভুক্ষু এই জগতে সবাই যায় হারিয়ে,
দিনশেষে এই পরিবর্তনটাই চিরসত্যি;
তবু ভালো মানুষরা পারে না বদলাতে,
ওরা তো ধ্রুবক, পরিবর্তন নেই একরত্তি।।
স্বপ্নগুলোয় জমেছে ধুলো দিন যাপনের স্বাক্ষরে,
অভিসারী সকাল অভিমান পোষে শ্রান্তির অক্ষরে;
অভ্যেস বদলায়, পিছুটানটা তবু নিভৃতে বেঁচে রয়,
প্রেমহীন এই চরাচর, সমক্ষে আত্মপ্রকাশের ভয়।
বোবা টেলিফোনের পাশে একলা সময় কেটে যায়,
নিখাদ নির্জনতা এই দগ্ধ প্রাণের দোসর হতে চায়;
প্রাত্যহিক প্রশ্নচিহ্নের মুখে থমকে দাঁড়ায় অস্তিত্ব,
সুনিপুণ অভিনয়েই গতিশীল সাংসারিক ইতিবৃত্ত।
একঘেয়ে রোজনামচায় জীবন বড়ই গতানুগতিক,
ক্ষণিকের এই পরিচয়গুলো হয়তো বা অপ্রাসঙ্গিক;
এরই মাঝে আলোর হাতছানি দেখাচ্ছে দেখো দিক,
দিনলিপির খাতায় হয়তো কেউ ভীষণ আন্তরিক।।
দুর্গতিনাশিনী দুর্গা আজ স্থবির ভীষণ, মৃন্ময়ী প্রতিকৃতি,
ঘরে-বাইরে দুর্গাদের প্রতি এই সমাজের চূড়ান্ত বিকৃতি,
অবদমনের শৃঙ্খলাবদ্ধ শৈশব-যৌবন-বার্ধক্যে আঘাত,
কন্যাসন্তান অভিশাপ আজও, নিভৃতে চলছে গর্ভপাত;
নির্ভরতা প্রতিটি পদক্ষেপে, নিজস্ব ঠিকানাহীন জীবন,
তির্যক দৃষ্টি, মানবতার ধর্ষণ কিংবা অ্যাসিড আক্রমণ;
দুর্গারা আছে চারপাশে, ভালোবাসার সম্পর্কে স্নেহময়ী,
সমাদর পাক প্রতিটি নারী, শক্তিরূপে তারা তো চিন্ময়ী।
একটা দীর্ঘশ্বাস জমা রয় ফিরে দেখা মুহূর্তদের শেষ ট্রেনে,
নির্ঘুম রাতে একলা আমি স্মৃতিদের আলো-ছায়ার স্টেশনে;
বিরামহীন সময় কেটে যায়, বাউন্ডুলে এই মন তো ভবঘুরে,
আনকোরা শব্দদের ভিড় সাদা পাতার ক্যানভাসটা জুড়ে;
কবিতা যেন অনুভূতির কথামালা, আবহমান ভালো-মন্দ,
দিনশেষে আসলে হাতড়ে বেড়াই টুকরো অতীতের খন্ড;
মূল্যবোধ অমূল্যে বিকোয়, মানবতাহীন দেখনদারির রব,
নিস্তব্ধ মনের প্ল্যাটফর্ম, শেষ ট্রেনে দলছুট স্বপ্নগুলো সব;
সংকীর্ণ চিন্তাদের ঘেরাটোপে মুখ লুকোয় স্বাধীন চেতনা,
মুখে কুলুপ এঁটে মোমবাতি মিছিল, বুকেতে তীব্র বেদনা;
সহনশীলতা, ভঙ্গুরতা, কঠিনত্ব – শুধুই পদার্থের ধর্ম নয়,
জীবনযুদ্ধে হতে হবে স্থিতিস্থাপক – তবেই জীবনের জয়;
সাফল্যের চাবিকাঠিটা লুকিয়ে জীবনবোধের বাতায়নে,
মনের আকাশ উজ্জ্বল করেই দিশারীরা সুউচ্চ আসনে;
শান্ত চোখের তারায় মেঘলা নদীর বুকে আসুক উজান,
রোজনামচায় কাব্য সাজিয়ে বেদনার নীল হয় খানখান;
স্বচ্ছ চিন্তায় আগামীর মননে বিবেক জাগরণের সুরে
শেষ ট্রেনে আসুক ফিরে মূল্যবোধ হৃদয়ের অন্তঃপুরে।।
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
প্রেমের কবিতা যা কিছু পাষাণ, মনে হয় আঁশ বটিতে কুচি-কুচি করে কাটি পালানো ঘাতক সময়…..
তর্জমা স্নানে শুচি হবার পর বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নিচে দোলনাচেয়ারে ছড়িয়ে বসা কিছুটা…..
হয়তো একদিন অস্তিত্বে খুঁজে আত্মপরিচয় নিভৃতে অপেক্ষার প্রহরে এ মন ভালোবাসার রূপালী আলোয় রাঙা মুখ…..