ফিরে দেখার পর

দেবলীনা চক্রবর্তী
কবিতা
Bengali
ফিরে দেখার পর

এখন আষাঢ়

ভোরের মুখে আলোর গল্প শুনে,
ফিরছি ,বেশ অনেক দিন পর!
আমার তো কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই
সর্ষে দানার ঘর।

এখন সঙ্গী আষাঢ়,
বাতাসের গায়ে লেগে পুরাতনী সুর
নিজেকে বাজায় গম্ভীর নিষাদে

আর আকাশকে ভেজায় মেঘ,
বহুদিনের চেনা বিশ্বাসে।

মেহেন্দী রঙা বিষন্নতা পায়ে পায়ে হেঁটে
এগিয়ে আসছে মনের ঘর জুড়ে,
কন্ঠে তারও সুর মল্লার –
আমাকে ভেজায় পরম আশ্বাসে
আমিও ভিজি!
আমার সঙ্গী যে এখন আষাঢ়!

 

অথৈ-জলে

অথচ, আজ সারাদিন একটি’বারও
দেখিনি তোমায় আলো হতে,
ছিলে ছায়ার মতো!

তবু, শেষমেশ আসলে স্বয়ং
মায়া কাটিয়ে, আলস্যতে!

হাতে প্রান্তিক বক্ররেখা’র পথ বাঁচিয়ে
স্থলপদ্ম হবে’ই জানি।
একদিন নয় সন্ধ্যামনি!

হাবিজাবি বলছি এসব,
জলের মনে এখন আমি!

একলা আছি, বাইরে আষাঢ়
আলুথালু ভিতর মহল।

অনভ্যস্ত হাওয়ায় উড়িয়ে আঁচল
দু’এক পশলা বৃষ্টি –
সাথে ফোঁটায় ফোঁটায় শব্দ এলো।

স্কেচ

দিনগুলো পর্দা উড়িয়ে চলে যায়!

ওপাশে এক ঝলক চকমকে আলোর ঝালোর
কিচিমিচি হৈ-হুল্লোড়,

তারপর সব ফেড আউট
আবছায়া – নৈঃশব্দ্য!

এইট-বি পেনসিলের গাঢ় আঁচড়ে দিগন্ত আঁকো, কিছু সূক্ষ্ম দাগ টু-এইচ লিডে,
আর কিছু আঙ্গুলি কারুকাজ।

তবে এক-একটা গোটা ঝকঝকে দিনের আলো’কে এভাবে মিশমিশে সীসা’র রঙে পরিবর্তন করা তোমার কাছে নিছকই খেলা।

বহু দূর থেকে আমি স্তাবকের মতো শুধু দ্যেখি,তোমার ঐ কারিগরি
আর চোখের আরশিতে সাজিয়ে রাখি –
এক একটা চলে যাওয়া দিনের উল্কি!

 

ফিরে দেখার পর

সাবানের ফেনার মতো উপছে পড়া অভিমান
আদতে সবটা’ই জলীয়!
না আছে গন্ধ, না রঙ আছে শুধু প্রবাহ।

কতবার তোমার নশ্বর দেহে ঝাঁপ দিয়ে, দ্যেখেছি তোমার অবহেলা, উদাসীনতা।
তেরচা চোখের কাঁচ বেয়ে পড়েছে শুধু মোহান্ধতা !

ভালোবাসা যে থাকতে নেই,
তোমাকে মনে পরলেও,মনে করে রাখতে নেই
এ জৈব জীবন শুধু’ই পোড়াবার!

তাই সব ভুলে,
আবার ফিরেছি সেই মেহগনি রঙ ধরা বিকেলে
সূর্যাস্তের লাল আভায় পাতা বাহারের নীরব অঙ্গীকারে নিজেকে সজীব করবো বলে।

এখন তুমি যে পথিক হেঁটে চলেছো-
হ্যামলিনের শান্ত – নিরীহ পথে
সম্মোহিনী বাঁশির মহনীয় আবেশে!

হয়ত আরো কোন অবরুদ্ধ দ্বারের খোঁজে…

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..