ফুলের জন্ম

কৌশিক চক্রবর্ত্তী
Uncategorized
Bengali
ফুলের জন্ম

ফুলের জন্ম

ভোরে বসানো চারাগাছকে জল দিয়ে রঙিন করে তুলেছি আরো
বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে আনাচেকানাচে
যতটুকু ফুল ধরার ছিল, তার চে’ বেশি জমেছে পানি
গাছেরা আর স্বাবলম্বী নেই
সালোকসংশ্লেষের প্রতিটি স্তরে তারা পেশ করছে নতুন বায়োডাটা–

এদিকে তাজা আলপিনে ফুটিয়ে রেখেছি নিজের হাত
যত বেলা বেড়েছে, তত নিস্তেজ হয়েছি আমি
জল, হাওয়া আর সারের পর্যাপ্ত যোগান থাকলেও
গাছেদের প্রত্যাবর্তনকালে হাতের অভাবে আর ফিরিয়ে আনা হয়নি প্রতিবাদী ফেস্টুন…

ওরা আর শুধুমাত্র আলোকবর্তিকা নয়,
ওরাই আজ সাইলকের আগে আগে তাজা মাংস কেটে রাখে বুকে–

ওরা শিখে গেছে
আর কতটা স্বাবলম্বী হলে কুঁড়ির মধ্যে জন্ম দেওয়া যায় নতুন পরাগের…

উনুন

এইমাত্র আমার বুকে কারা যেন পুঁতে দিয়ে গেলো সাম্রাজ্যের পতাকা
পৃথিবীর সমস্ত পররাষ্ট্রের মতো আজ থেকে এটিও ভিনদেশ
সকলের চোখের সামনেই নগ্ন হতে কোনো বাধা রইল না আর

এখন নতুন করে সবকিছু গড়ে তোলবার সময়
গ্যালিলিও যেমন বলেছিলেন পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে
ঠিক তেমনি করে আমিও বলি জঙ্গল কেটে বহুতল গড়ে ওঠবার কথা
যেকোনো ধ্বংসের পরও সকলের ইচ্ছে হয়না বিষ নিতে

নিজের দখলদারির ওপর তখন অবাধ যাতায়াত
সমস্ত পাঁচিল ডিঙিয়ে সকলে নিরাপদে ঢুকে পড়ছে নিজের ঘরে
কেবল আমার বুকে নির্বিবাদে ঝোলানো হচ্ছে পররাষ্ট্রের ফলক
সব খোয়ানোর শেষে ঘরে ঘরে অবশিষ্ট নেই আর কোনো মিল
তবু সেইসব ঘরেই অক্ষত রাখা আছে অন্তত একটি করে জ্বলন্ত উনুন…

 

ডানা

প্রথামত বেদী জুড়ে শুকিয়েছ ফুল
দেখোনি অভাবচিহ্ন
আঙুল রাখোনি কোনও নকল ডেরায়-
যারা তবু লুকিয়েছে আঁতুড়ঘরের পাশে
পিঠে রেখে ঢিলেঢালা অবসন্ন চাঁদ
তাদের নকল করে তুমি কবে সাজিয়েছ গাঢ় অবসাদ?

সে হিসাবে লেগে আছে অনেক আঁচড় আর
তোমাকে দায়ী করার নাছোড় তাগিদ-
খবর রাখেনি কেও
এটুকু খাঁচায় আর ছিঁড়ে গেছে ক’টি আস্তরণ…
তোমার শরীরে যত কালো মেঘ
সমস্ত আধোয়া ঢালে দুর্যোগের আসল কারণ…
এখনো সবার মধ্যে তুমি একা ছেঁড়ো শিরস্ত্রাণ
প্রতিটি নির্বিঘ্ন চোখ ছিন্নমূল ডানার প্রমাণ…

 

দাহ্য কেরোসিন

কবিতায় তুলে রেখেছি অনন্যোপায় বুক
সঙ্গে বুনোট তুলোয় ঘেরা জামা–
যাদের দেখা যাচ্ছে না
তারা এখনো আমার খাবারে
মিশিয়ে দিচ্ছে আত্মজ ভেজাল…

মিশে যাচ্ছে মিশে যাচ্ছে…

আরো মিশে গেলে
আমি অক্ষরের শরীরে ঢেলে দেব দাহ্য কেরোসিন…

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ