প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
[ অনুবাদকের কথা: ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা বিশ্বসাহিত্য- অঙ্গনে এক সুপরিচিত নাম। লোরকাকে স্পেনের সর্বাপেক্ষা মহান কবি হিসেবে এবং বিশিষ্ট নাট্যকারদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার জন্ম ৫ জুন ১৮৯৮, স্পেনের ফুয়েন্তে ভ্যাকুয়ারসে। তাঁর পিতা ফেডারিকো গার্সিয়া রড্রিগেজ ছিলেন একজন সম্পন্ন কৃষক। মা ভিসেন্তা লোরকা রোমেরিও ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক এবং পিয়ানোবাদক। স্পেনিয় নামকরণ রীতি অনুসারে ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা নামের গার্সিয়া এসেছে পৈতৃক সূত্রে এবং লোরকা এসেছে মায়ের সূত্রে। মা ভিসেন্তা লোরকা রোমেরিও ছিলেন লোরকার আইডল। ১৯৩৬ সালের ১৯ অথবা ২০ আগস্ট বিনা বিচারে জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর সমর্থকদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান তিনি।
– নাজনীন খলিল ]
এই আপেলগুলোর স্বপ্নে আমি ঘুমুতে চাই,
সমাধিক্ষেত্রের কোলাহল থেকে উঠে এসে।
ওই শিশুটির স্বপ্নে আমি ঘুমুতে চাই
যে উত্তাল সমুদ্রে ছিন্ন করতে চেয়েছিল তার হৃদয়।
মৃতদের রক্তক্ষরণ হয়না একথাটি আর শুনতে চাইনা,
ওই যে গলিত মুখগুলো যায় জলের সন্ধানে,
আমি শিখতে চাইনা ঘাসের এই নির্যাতন,
দেখতে চাইনা ভোরের আগে কর্মচঞ্চল চাঁদের সর্পাকৃতি মুখ।
কিছুক্ষণ ঘুমুতে চাই
কিছুক্ষণ, এক মিনিট, এক শতাব্দী;
কিন্তু সবাইকে অবশ্যই তা জানতে হবে আমি মরে যাইনি।
যেহেতু আমার ঠোঁটগুলোতে স্বর্ণখণ্ড
যেহেতু আমি ওয়েস্ট উইংয়ের এক ক্ষুদে বন্ধু
যেহেতু আমি আমার কান্নার তীব্র ছায়া।
ভোরে আমাকে ঢেকে রেখো একটি আচ্ছাদনে
কারণ ভোর আমার দিকে ছুড়ে দেবে মুঠোভর্তি পিপীলিকা,
এবং আমার জুতোগুলো ভিজিয়ে দিও খর জলে
যেন পিছলে যেতে পারে বৃশ্চিকের চিমটিগুলো।
যেহেতু আমি আপেলগুলোর স্বপ্নে ঘুমুতে চাই
শিখতে চাই সেই আর্তনাদ যা আমাকে শুচি করে দেবে মৃত্তিকার সাথে;
যেহেতু আমি থাকতে চাই ওই তমসাচ্ছন্ন শিশুটির সাথে
যে তার হৃদয় ছিন্ন করতে চেয়েছিল উত্তাল সমুদ্রে।
(Gacela of the Dark Death – Federico Gercia Lorca)
আকাশে কেউ ঘুমায়না। কেউনা, কেউ নয়।
ঘুমায়না কেউ।
চাঁদের প্রাণিগুলো ঘুরছিল আর শুঁকছিল তাদের কুটীরের চারপাশ।
যে লোকগুলো স্বপ্ন দেখেনা তাদের কামড়ে দেবে এসে জীবন্ত গুঁইসাপ,
এবং ভগ্নহৃদয়ে পালিয়ে যাওয়া লোকটাকে পাওয়া যাবে রাস্তার মোড়ে তারাদের মৃদু প্রতিবাদের শান্ত তলদেশে অবিশ্বাস্য কুমিরগুলো।
ঘুমায়না কেউ পৃথিবীতে। কেউ নয়, কেউনা।
কেউ ঘুমায়না।
দূরের এক সমাধিতে একটি শবদেহ
পুড়ছে তিন বৎসর ধরে
কারণ তার হাটুর নীচে একটি গ্রামীণ শুষ্ক ভূমি
এবং যে সকালে তারা সমাধিস্থ করেছিল ওই ছেলেটিকে কেঁদেছিল অনেক
তাকে শান্ত করার জন্য প্রয়োজন ছিল কুকুরগুলোকে ডেকে পাঠানোর।
জীবন একটি স্বপ্ন নয়, সাবধান! সাবধান! সাবধান!
আমরা সিঁড়ি থেকে নেমে যাই ভেজামাটির স্বাদ অনুভবের জন্য
অথবা আরোহন করি বরফের ক্ষুরধার প্রান্তে মৃত ডালিয়ার কণ্ঠস্বরের সাথে।
কিন্তু বিস্মরণ বলে কিছু নেই, স্বপ্নও নেই।
অস্তিত্ব আছে মাংসের। নতুন একগুচ্ছ শিরায়
চুম্বন আমাদের মুখগুলোকে জুড়ে রাখে,
এবং এই ব্যাথাকে যে জেনেছে সে আজীবন জেনেই যাবে
এবং আজীবন মৃত্যুকে বহন করবে তার কাঁধে যে ভয় পায় সে।
একদিন
ঘোড়াগুলো বাস করতে আসবে পান্থশালায়
এবং ক্ষিপ্ত পিঁপড়েগুলো
নিজেদের নিক্ষেপ করবে গরুর চোখে আশ্রিত হলুদ আকাশে।
একদিন
আমরা সংরক্ষিত প্রজাপতিগুলোকে দেখবো মৃতদেহ থেকে উঠে আসতে
কিন্তু তখনও হাঁটছে ধুসর শৈবাল এবং স্তব্ধ নৌকার রাজ্যে।
আমরা দেখবো আমাদের আংটিগুলোর বিচ্ছুরণ এবং জিহ্বা থেকে গোলাপের ঠিকরে ওঠা।
সাবধান! সাবধান হও! সাবধান হও!
যাদের এখনো আছে বজ্রপাত এবং নখরের চিহ্নগুলো,
এবং ওই ছেলেটি যে কাঁদে কোনদিন সেতু আবিষ্কারের গল্প
শোনেনি বলে,
অথবা ওই মৃত লোকটি যে এখন মালিক শুধু তার একটি জুতো এবং মাথাটার,
আমরা অবশ্যই তাদের নিয়ে যাবো সেই দেয়ালের কাছে যেখানে অপেক্ষায় আছে গুঁইসাপ
এবং বিষধরেরা,
যেখানে ভালুকের দাঁতগুলো অপেক্ষায় আছে,
যেখানে অপেক্ষায় আছে ছেলেটির মমিকৃত হাত,
শেষপ্রান্তে দাঁড়ায় উটের কেশরগুলো তীব্র নীল কম্পনের সাথে।
কেউ ঘুমাচ্ছেনা আকাশে। কেউ নয়, কেউনা।
ঘুমাচ্ছেনা কেউ।
যদি কেউ বন্ধ করে তার চোখ
একটি চাবুক, ছেলেরা, একটি চাবুক!
খোলাচোখগুলোর দৃশ্যচিত্র হতে দাও
এবং আগুনের যন্ত্রণাক্ত ক্ষত।
এই পৃথিবীতে কেউ ঘুমাচ্ছেনা। একজনও না, নয় একজনও।
আমি এটা আগেই বলেছি।
কোন একজনও ঘুমাচ্ছেনা।
কিন্তু কেউ যদি রাত্রে তার মন্দিরে খুব বেশি শ্যাঁওলার জন্ম দেয়,
মঞ্চের চোরাদরোজাগুলো খুলে দাও সে যেন চাঁদনি দেখতে পারে
মিথ্যা পানপাত্রগুলো, বিষ এবং রঙ্গমঞ্চের খুলি।
(City That Does Not Sleep – Federico Garcia Lorca)
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..