প্রেম এবং অপ্রেমের কাব্য
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
তুমি কোথাও চলে যাবে
একথা শুনার পরে আর্তনাদের তীব্রশব্দে ঝরে পড়লো আকাশ
মুহুর্মুহু বজ্রপাতে জানিয়ে দিল তার প্রতিবাদের কথা।
তোমার সাথে নির্বাসনে চলে যাচ্ছে তোমার প্রিয় শহর ;
কীনব্রীজের নীচে
সুরমাতীরের স্নিগ্ধবাতাস বয়ে চলা বিকেলগুলো,
ব্যালকনির রকিং চেয়ার,
চায়ের টেবিল,
রাস্তার পাশের ঝাঁকড়া নিমগাছ,
দেওয়াল বেয়ে ওঠা মালতীর ঝাড়
তোমার কথা ভেবে ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেলবে অনেকগুলো দিন ধরে,
টবের ক্রিসেন্থিমাম
তোমার জলস্পর্শের অপেক্ষায় ব্যাকুল হয়ে থাকবে বহুদিন।
আবার কবে পাতা উল্টাবে
এই উদগ্রীব অপেক্ষায় থাকতে থাকতে
ধুলোয় মাখামাখি হবে বুকশেলফে,
প্রিয় বইগুলো তোমার।
দেওয়ালের ছবিগুলো
প্রশ্নবোধক চোখে তাকিয়ে থাকবে কামরার শূন্যতার দিকে।
জানালার বন্ধ কাঁচে ধাক্কা খেতে খেতে
বাতাসেরা ফিসফিস করে
একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করবে –
‘ কেন গেল?
একেবারেই কি গেল?
আর ফিরবেনা? ‘
গেলে কি আর ফেরা হয়?
জানি
এই প্রিয় শহরের কথা ভেবে ভেবে
তোমারও মন কেমন করবে যখনতখন
আঁটসাঁট অস্বস্তিকর পোশাকের মতো
একটা প্রবল বিষন্নতা
জড়িয়ে ধরবে তোমাকে অবিরাম।
বিকেলের ব্যালকনি,
পাড়ার গলিটা
স্বেচ্ছাচারী-দস্যুর মতো ছিনিয়ে নিয়ে
খেলার মাঠ বানিয়ে ফেলা
কিশোর- কিশোরীর প্রাণবন্ত হৈ চৈ – কোলাহল,
মাঠে নেমে আসা শালিকের ঝাঁক ,
বারান্দায় ছড়িয়ে দেওয়া দানা খুঁটে তোলা চড়ুই,
খোলা প্রান্তরের শিরীষ -জারুলের অপরূপ মেলা,
হুডখোলা রিকশায়
শহরের অলিগলি ঘুরে বেড়ানো খুচরো সময়,
চেনা- আধোচেনা মুখগুলো
পিছু থেকে বারবার ডেকে যাবে।
ডেকে যাবে
এ শহরের আচমকা হুট করে নেমে আসা
বৃষ্টিদিন,
মন আকুল করা সোঁদা গন্ধ,
ভেজা কদম- বকুলের ঘ্রাণ।
তখন কি তুমি ভাববে আবার ফেরার কথা?
একবার কোথাও চলে গেলে
ফেরা যায়?
একবার চলে গেলে
ফিরে এসে অবিকল পাওয়া যায়
এমন ঠিকানা কোথাও হয়তো নেই;
তবু ফেরার আকুতিতো মিথ্যে নয়।
চলে গিয়েও পিছুটান
চলে গিয়েও বারবার
ফিরে আসার আশাটুকু…
তখন হাঁটছিলাম রংধনুর পথে
এতোটুকু বাজেনি দুর্লঙ্ঘ অতিক্রমের কোন ব্যাথা,
পথের দুপাশে থোকা থোকা
বর্ণালী রডোডেনড্রোন ফুটেছিল।
এক উল্লসিত পুষ্পবিহার শেষে
চিহ্নিত হলো পায়ের পাতার গাঢ় ক্ষতদাগ।
খুব দ্রুত ঝরে পড়ে সোনালি পরাগ, তাই
ডানায় খুশীর সুগন্ধ মেখে প্রজাপতি উড়ে গেলে
ঈর্ষা হয়।
সেই থেকে
সোনালি নূপুরে একফোঁটা দ্বেষণার মেঘ,
সযতনে আগলে রেখেছি ;
কোন একদিন
পাথুরে নাচঘরে ঝরে যাবে শিঞ্জিনীর তালে।
সব ছবি জমা থাকে চশমার কাঁচে।
মাঝেমাঝে চোখ ঝাপসা হলে
অসময়-আচমকা বৃষ্টির ছাঁট ভেবে মনকে ভুলাই।
এক ঢেউসমুদ্রের খুব মন কেমন করা অন্ধকারে ডুবে যেতে ইচ্ছে করে,
ইচ্ছে করে নিষিদ্ধ করে দিতে
জানালার ফাঁক গলে অনাহুত ঢুকে পড়া
আবছা চাঁদের ছড়ানোছিটানো পাপড়িগুলো।
দূরে কোথাও একটি ‘পিউ কাহা’র কুহুতান
থেকে থেকে নাহয় ডেকেই গেলো অনিবার।
যখন আগাপাছতলা দেখে নিলাম একটি সম্পূর্ণ জীবন;
মনে হলো এই দিনযাপনের ছবিটা
উদভ্রান্ত কাঁপা হাতে আঁকা এক ক্যারিকেচার।
ঈর্ষাতুর তাকিয়ে থাকি অনিমেষ
কোথাও আঁকা হয়নি সেই অসম্ভব ছবিটির দিকে।
কতো কী যে বদলায়!
নিজস্ব অবয়ব দ্বিধাহীন উহ্য ফেলে রেখে
মহুয়ামাতাল ঘোরে
ভিন্ন কোন জীবনের ছায়াপাঠে মগ্ন হই।
চিহ্নিত হবার আগেই শরীরে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রামক-দুরারোগ্য রোগের কণিকা।
প্রতিচ্ছবি বদলে যায়, রোগাক্রান্ত এক আকৃতি ভেসে ওঠে
তবু প্রতিদিন হাসপাতালের রাস্তার এক ফার্লং দূরপথ দিয়ে হেঁটে গেছি।
জীবন ফুরিয়ে যায় যেমনতেমন;
খোলামকুচির মতো অবজ্ঞায় ফেলে দেয়া সময়ের হাহাকার তবু বেঁচে থাকে,
গোধূলির রংয়ে বেজে ওঠা বিদায়ী সানাইয়ের ধুনে
জেগে ওঠে শেষঘন্টার হা-হুতাশ;
অস্তরাগের আবীরে মাখামাখি কিছু প্রত্যাশাও
বাকী থাকে যেন।
মানচিত্রের বাইরে থেকে পৃথিবীটাকে একবার দেখে নিতে চেয়েছিলাম;
জ্বলজ্বলে লাল দাগের বাইরে যেতে পারলোনা চোখ।
প্যাস্টেল পটচিত্রে মোড়ে যাক
দেয়ালের বুদবুদ ওঠা নোনাক্ষতগুলো।
বেজে যাক যুথবদ্ধ নান্দনিক শব্দের ম্যাজিক
উঠুক করতালে ঝমাঝম ধ্বনি
চকচকে ব্লেডের ধারে কাটা আঙ্গুলের ডগা
ধ্রুপদী তালের কিছু রাগরংয়ে ঢাকা পড়ে থাক।
শোণিতস্রোতের ফল্গু বয়ে যাক গোপনে গোপনে।
প্যাডলকে হাত রেখে চাবি খুঁজে না পাওয়ার মতো
অনুচ্চারে আটকে যাওয়া কথাগুলো
বাতিল পাপড়ির মতো শার্সির বাইরে দিয়েছি তো ফেলে!
তবু কেন যে কখনো কখনো
বাতাসের তোড়ে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে ;
জলতরঙ্গ বাজানোর আহ্লাদ-ইচ্ছায়
জলের নুড়িতে পিতলের মুদ্রা ছুড়ে দিলে
যেমন ভোঁতা একটা টং শব্দ বাজে
বেজে ওঠে তেমনি অস্ফুট এক স্বর শুধু ;
যথার্থ সরব নয়।
কথার শূন্যমাঠে কিছু অনুচ্চারিত হাহাকারের
চিহ্নই কেবল জমা হয়।
বাজুক তুমুল কোলাহলের অর্কেস্ট্রা ;
নীরবতার হীনজীর্ণ মাৎস্যন্যায় ভেঙ্গে
কত্থকের বোলে বেজে যাক এক জোড়া প্রবল ঘুঙুর।
এ-এক প্রেমের শহর, এ-এক প্রেমের শহর, এখানকার বাতাস প্রেমের সৌরভ বয়ে আনে। হাজারো প্রেমের কলি…..
পতাকায় মিশে যায় ফেলানির নাম উড়তে থাকে কাঁটাতারে; মানুষের মনে জমে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ বিকল্প মেঘের…..
প্রেমিক হয়তোবা তাকে আমি গড়তে পারতাম তার বুকের ভিতর এপাশ থেকে ওপাশে উল্টে নতুন একটা…..
চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..