ফেরা
অনেক দিন আসিনি
তোমার চোখের কোণে, বুকের পাশে, নিঃশ্বাসের চারপাশে।
ভেবো না আমি পথ ভুলেছি কিংবা তোমাকেও!
আসলে আমি চলে যেতে নয় বরং থেকে যেতেই চেয়েছি তোমাতেই,
সরে গিয়েছি কেবল তুমি চেয়েছ মেনে নিতেই।
জানি, মনে করবে না বললেও সে বলায় জোর থাকেনি শেষ অব্দি।
মনে পড়েছে আমাকে
মনে করেছ আমাকে
অথচ,
সেদিন অঘ্রাণের বিকেল ছিল কেমন যেন আবছা আভার কুয়াশার মতোন ম্লান
গভীর গ্লানিও ছিল বুঝি তোমার আমার হৃদয় জুড়ে!
বোঝা আর না বোঝার পরিচয়হীন আলাপ দীর্ঘ হতে চায়নি বলেই সহজেই বলতে পারা আক্ষেপের আদি ব্যথা, আহ্! চলে যাও, চলে যাচ্ছি।
অতঃপর,
অভিযোগ না রেখেই অভিমানের সাঁকো গড়া।
আচ্ছা,
কি চেয়েছিলে তুমি আমার কাছে অথবা আমি তোমার কাছে?
দোয়াবের উর্বরতায় নাকি বেঁচে থাকে সজীবতা,
তবুও আমরা কেন মরে গেছি?
কার্তিকের রোদের মতোন কেন তেতে উঠিনি?
কেন জ্বলিনি সন্ধ্যার শলতেতে মৃদু আলোক শিখায়?
নাকি অত্যুৎজ্বল প্রগাঢ়তায় নিশ্চুপ অ’প্রেমের আজন্ম মনে রাখা দীর্ঘশ্বাস হতে চেয়েছি দুজনেই?
কি চেয়েছ? কি চেয়েছি? থাক বরং!
অর্ধযুগ অথবা অর্ধশতাব্দী পর আবার না হয় আমরা দুজনেই চলে যেতে অথবা সরে যেতে চাইব আবার কাছে আসার জন্যই।
অসহযোগিতায় বসবাস বহুকালের
শঙ্খ নদীর চরে যেতে হবে যে
আচ্ছা,
ভাদুরের দুপুরেই রওনা হব
ঝুম বৃষ্টি হলে মন্দ হয় না
কার্তিকের কুকুরের কান্নাগুলো কানে বাজে।
একটি লাল শাপলা তুলে হঠাৎ আমার হাতে গুঁজে দিয়ে বলবে,
আমি তোমাকে মনে করেছিলাম।
বলবে,
ভালোবাসি।
কিন্তু কি বলল সে?
বলল,
শাপলা তোলার ছলে একটু কাঁদামাটি হাতে নিয়েছি,
তোমার চিবুকে ছুঁয়ে দিই?
দুর ছাই!
এ কি ধরনের চিন্তা?
নিমন্ত্রণ পেতে চেয়েছিলাম
কিন্তু আমার নিমন্ত্রণে এসে আমায় দিয়ে গেছে বেহিসাবে ফেঁসে,
আমি তো কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
কোথায় আর দেখতে যাই শঙ্খ নদীর ভাদুরে রোদ,
আমি বেহাল বহুদিন চিরুনি না করা চুলের মত।
শেষ হয়েও হয় না শেষ
চিঠিটার পরের পাতাটি আমার কাছে ছিল
তোমার দীর্ঘশ্বাস মেপে মেপে চলে এসেছিল আমারই অধরের কাঁথিতে।
বুঝেছিলাম,
সেটি ছিল পরের পাতার শেষ না হওয়া প্রশ্নবোধক চিহ্ন
যার উত্তর তুমি পেতে চেয়েছিলে অধরে অধর ডুবিয়ে।
তবে,
জেনেছিলাম আমিও,
সময়ের বিষাক্ততার এসিড বৃষ্টি মুহূর্তেই শুষে নিয়েছিল দীর্ঘ যাতনার ফসল।
অতঃপর,
পরের পাতাটি এখন আর আমার কাছেও নেই।