ফেরা

সুদীপ্ত বিশ্বাস
কবিতা
Bengali
ফেরা

আহাম্মকি

মগজে তালাচাবি দিয়ে
বুকের সব লাল গোলাপগুচ্ছ
বাগান উজাড় করে তোমায় দিলাম।

কানাকড়ির চেয়েও কম দামে
বিকিয়ে দিলাম নিজেকে।

সব বাঁ পায়ে মাড়িয়ে মশমশিয়ে চলে গেলে।

বুকের গভীরে বিঁধে থাকা পেরেক
উপড়ে ফেলতে না পেরে,
নির্জন সমাধিতে আজও একা শুয়ে।

আজকাল কেউ স্ফটিক চাইতে এলে
তাকে কাচের টুকরোও দিতে পারি না!

 

ফেরা

মেঘ চাইতেই জল আসে না
জীবন বড় শুখা
অসম্ভবও চাইনি কিছু আমি।
যা ছিল তাও হারিয়ে গেল
হঠাৎ মরু ঝড়ে
এখন চোখে স্বপ্নও নেই দামি।
অতীত এখন আকাশকুসুম
মন খারাপের খাতা
বর্তমানও দেয়াল হয়ে খাড়া
অন্ধকূপে বন্দী হয়ে মিথ্যে ছুটে মরি
হাজার ডেকেও পাই না কারও সাড়া।
মুখোশধারী বন্ধুরা সব
ট্রিগার দিল টিপে
বন্ধুতো নয়, বন্দুক সব আজ।
স্বার্থ লোভের হিংস্র থাবায়
মানুষ এখন পশু,
এখন মানুষ বড়ই ধাপ্পাবাজ।
চাইতে চাইতে পাথর হয়ে
আর চাই না কিছু
ভুলেই গেছি চেয়েছিলাম কি যে!
ঘুরতে ঘুরতে হন্যে হয়ে
আর ঘুরি না আমি
ফিরেও গেছি নিজের কাছে নিজে।

 

আজকাল

বিপদেরা চুপচাপ ওত পেতে থাকে,
নদীর প্রতিটি বাঁকে-বাঁকে।
সাবধান! সাবধান মাঝি
শ্বাপদের চেয়ে হিংস্র মানুষের কারসাজি।
আলো নেই,
চারিদিকে জমেছে আঁধার চাপচাপ
মানুষকে ভালবাসা ভুল নয়, পাপ।

প্রচেষ্টা
– সুদীপ্ত বিশ্বাস
না-ই বা জানো সত্য তুমি
তবুও তুমি অজ্ঞ না
আমরা সবাই অল্প জানি
কেউ-ই বিশেষজ্ঞ না।
কিন্তু চলো চেষ্টা করি
জানতে হবে সত্যটাকে
সত্য জানার ইচ্ছেটুকুই
ঘুচিয়ে দেবে অজ্ঞতাকে।

 

শিরোনামহীন

উপভোগ্য শীত রাতে কথা এলে কমে
বিছানাটা ভরে নিও অনুভূতির ওমে।

নিভে তো যাবেই জেনে তবু জ্বলে ওঠা
ঝরে যাবে জেনে-বুঝে তবু ফুল ফোটা
ব্যথা পাবে, তবু দেখো ভালোবাসে মন
এরই নাম পথচলা, এটাই জীবন।

ঢেউ চাই,ঢেউ।
ঝড়-ঝাপটা,বিরুদ্ধ স্রোত
তবুও প্রদীপ জ্বালে কেউ!

 

সুদীপ্ত বিশ্বাস। কবি। জন্ম ১৯৭৮, ভারতের পশ্চিমবঙ্গরাজ্যের নদিয়া জেলার রানাঘাট। পেশাগতজীবনে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। কবিতা লিখছেন ১৯৯২ সাল থেকে। প্রকাশিত বই: ঝিনুক জীবন, মেঘের মেয়ে, ছড়ার দেশে, পানকৌড়ির ডুব, হৃদি ছুঁয়ে যায়, Oyster Life ইত্যাদি। লেখালিখি ও সরকারি চাকরির...

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..