দৌড়
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
বইমেলা উবাচ
অক্ষর একটা স্বাধীনতা একটা প্রকাশ উন্মাদনা। যা দিয়ে শব্দ শব্দ থেকে বাক্য হয়ে নিজেদের ভাবনাকে প্রকাশ করি। মুখে বলে কলমের আঁচড়ে তৈরি করি নিজের নিজের ভাষায় নিজস্ব ছাপ। পাঠ্যপুস্তক হোক বা বিষয় ভিত্তিক কথা সব কিছুকেই বন্দি করি লেখাতে। তা কখনো গদ্য-পদ্য, ছড়া, প্রবন্ধ, গল্প-উপন্যাস এমনকি আত্মকথাও হতে পারে। এসবের বাইরে ও বহু বিষয় নিয়ে তৈরি হতে থাকে এক ফর্মা থেকে বৃহৎ ফর্মার শব্দ বোঝা। বিন্দু বিন্দু দিয়ে দিয়ে সিন্ধু তৈরীর মতো আবেগ, শ্রম, মেধা, মনন, চিন্তন ও ঐচ্ছিক শক্তির সম্মিলিত প্রয়াসে সৃষ্টি হয় পত্রিকা। ক্ষুদ্র পত্রিকা বৃহৎ পত্রিকা বাণিজ্যিক পত্রিকা। আর এই সব পত্রিকার প্রচার ও বিনিময়ের কেন্দ্র স্থায়ীভাবে থাকলেও ডালা সাজিয়ে দৃষ্টিনন্দনও মনের মত করে পরিবেশনের জন্য সেজে ওঠে মেলা, বইমেলা।
শীত পড়তেই লেখক-পাঠক সম্পাদক ও প্রকাশকের মনের মধ্যে গরম চায়ের মত মৃদু উষ্ণতা এনে দেয় বইমেলা। সরকারি-বেসরকারি দু’ভাবেই সংগঠিত হয় এই মেলা। শহরের ক্ষুদ্র, বৃহৎ পত্রিকা ও তাদের প্রকাশক-সম্পাদকরা যেমন সাজিয়ে তোলেন ছোট বিপণিকেন্দ্র তেমনি বাইরে থেকেও বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা ও বইয়ের দোকানিরা বড় আকারের বিপণন কেন্দ্র ভাড়া নিয়ে নিজেদের সংগ্রহ, সম্পদ নিয়ে সাজিয়ে বসেন বইমেলাতে।
প্রতি বছরই উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র ও বাণিজ্যিক শহর শিলিগুড়িতে অনুষ্ঠিত হয় গেল উত্তরবঙ্গ বইমেলা। বহু বিপণন কেন্দ্রের সাথে থাকে লিটল ম্যাগাজিন বা ক্ষুদ্র পত্রিকার টেবিলের বন্ধন। এবারে সুরক্ষিত ঘেরাবেষ্টিত স্থান প্রায় সম্পূর্ণটাই বদ্ধ ও সামান্য উন্মুক্ত স্থানে নিজেদের পত্রিকা নিয়ে বসেছিলেন প্রায় ৩০টি ক্ষুদ্র পত্রিকার শব্দযোদ্ধারা। পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ দার্জিলিং জেলা কমিটির মুখপত্র সংবর্তিকার টেবিলও ছিল সেখানে। বর্তমানে প্রকাশিত ও পূর্ব প্রকাশিত বহু সংখ্যার সাথে সাথে একুশের ভাষা সংখ্যা ও সংগঠনের সদস্যদের লেখা বই দিয়ে সাজানো হয়েছিল সংবর্তিকার টেবিল। সাথেই ছিল এই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি হওয়া নতুন পত্রিকা দ্রোহকাল অক্ষরে। ছিল “ন হন্যতে, পদ্য, গদ্য পদ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে, উত্তরের কবিমন, ডেগর” এমন অনেক ক্ষুদ্র পত্রিকা। এইসব পত্রিকা যারা তৈরি করে তাঁদের মনের মধ্যে থাকে অদম্য জেদ ও শব্দ নিয়ে লড়াইয়ের নেশা। তাদের প্রাণের সন্তান ক্ষুদ্র পত্রিকা। তাদের চিন্তন, মনন দিয়ে তৈরি পত্রিকাকে তুলে দিতে চায় পাঠকের হাতে। অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার নয় কেবলমাত্র ভালো সাহিত্যকর্মের নির্যাসকে পান করানোর ইচ্ছা থেকেই সৃষ্টি করে ক্ষুদ্র পত্রিকা। আগামীতে আমাদের এই পত্রিকাগুলো যেন নিজেদের গুণগতমান নিয়ে মেরুদন্ড সোজা করে টিকে থাকতে পারে এটাই কাম্য।
ক্ষুদ্র পত্রিকা যেমন আশা নিয়ে বসে তেমনি ব্যক্তিগত বইও স্টলে স্টলে শোভা পায়। বর্তমানে গল্পকার, ঔপন্যাসিকের অভাব নেই। প্রকাশনী সংস্থার সাহায্য নিয়েও ভরসা রাখার ধৈর্য্য বোধহয় তাদের জীবনের অভ্যাস হয়ে ওঠেনি। কিছু গল্পকার ও ঔপন্যাসিক নিজেদের বই বিক্রির জন্য বইয়ের পাইকারি হয়ে উঠতেও দ্বিধা করেননা। প্রতিদিনই মেলাপ্রাঙ্গণে দেখা যায় এমন কিছু বই পাইকারকে কোনো বুকহাউসের সামনে দাঁড়িয়ে ক্রেতা থুড়ি খরিদ্দার ধরার আশায়। খপ করে ধরে কোনরকমে নিজের বইটি বিক্রি করে বেস্টসেলারের তালিকায় নাম লেখানোতে একটা অহংকার বোধ উঁকি দেয়। সোস্যালমিডিয়া তো আছেই বিজ্ঞাপনের প্রচারের জন্য। আমি কত নামজাদা! সাহিত্য সংস্কৃতির জগত এক রুচিশীল ধীরস্থির মননের ক্ষেত্র। ব্যাবসা করার জন্য প্রকাশক আছেন, লেখকের ব্যাপারী হয়ে ওঠার মধ্যে কেমন মাছের আড়তের গন্ধ আসে। বইমেলায় এই দৃশ্য বড়ই দৃষ্টিকটূ। তবুও বইমেলা শীতে মেলা মেলা গন্ধ নিয়ে আসে।
অথচ মেলায় আগত পাঠক কম উল্লাসপ্রেমী বেশি। বইটা যেন মেলা নামের বানিজ্য উৎসবের অনুষঙ্গ। যেখান আচার বড়ি পাপড় পিঠা এবং যত রকমের চটজলদি চটকদার খাবারের পসরার সঙ্গম। শাড়ি, ব্লাউজ, চুড়িদার, জুয়েলারি এমনকি গাড়িও বিজ্ঞাপিত সশরীরে।
পরিশেষে একটা কথা না বললেই নয়, মেলার পরিবেশ যতটা না বইকেন্দ্রিক ছিল তার চেয়ে বেশি ছিল ভোগ্যবস্তুুকেন্দ্রিক। প্রতিদিনই মেলায় জনসমাগম চোখে পড়ার মতো হলেও তার ৭৫% বই থেকে দূরে। মেলামঞ্চে সাহিত্য সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের চেয়ে মনোরঞ্জনের অনুষ্ঠানের প্রাধান্য দৃষ্টিকটূ মনে হয়েছে। মেলা কতৃপক্ষের কাছে আশা করেও সবই দুরাশা মনে হয়। আগামীদিনে এইসব আনুষঙ্গিক বিষয়ের চেয়ে বইকেন্দ্রিক বিষয়কে গুরুত্ব দেয়াটা সম্ভব কিনা তা লাখ টাকার প্রশ্ন!
বর্ষযাপন
রাত বারোটা পেরোতেই সময়ের যাত্রা মেনে একটি সংখ্যা পার করল গোটা বিশ্ব। সময়ের বয়স বাড়বে, আমাদেরও জীবনের একটা বছর বেড়ে যাবে বা সময় কমে যাবে। মন খারাপ না মন ভালো হবে সে ব্যাখ্যা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় আমার কাছে। একদিনে পোলভোল্টের স্টিকটা ২০২২ থেকে ২০২3 নিয়ে ফেলেছে। মনে হলো বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দীর্ঘলম্ফন বা উচ্চলম্ফনের খেলায় অংশগ্রহণ করে নতুন বছরের ক্যালেন্ডারে কোয়ালিফাই করলাম। তাতে ফলাফল এর প্রগতিপত্রে……….।
বহু আশা দূরাশার দোলনায় দোল খেতে খেতে কত বর্ষযাপনের ডিঙি এক উপকূল থেকে অন্য উপকূলে আশ্রয় পায়। আমরাও ডিঙিতে ভেসে ভেসে নিশ্চিত ভবিষ্যৎ খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হই। এরই মাঝে লক্ষ লক্ষ উচ্ছাসপ্রেমী উল্লাসের ফোয়ারায় বর্ষস্নান সারে। হিসেবের খাতায় ডেবিট ক্রেডিট মেলাতে গেলে বেহিসেবী বাস্তব ধাক্কা মেরে কলম কেড়ে নেয়। বাস্তবের নেতা-অভিনেতা এমন কিছু প্রশ্নপত্র নিয়ে উত্তরের অপেক্ষায় উন্মুখ হয়ে থাকে। উত্তর জেনে নেয়ার জন্য কোনো সহায়িকা নেই, অনেকে বহু অর্থ ব্যয় করে নাম নথিভুক্ত করে ভাগ্যবিচারকের দরবারে। যারা লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, সাদা, খয়েরি কিংবা অজানা নামের পাথর সোনায়, রূপায় অথবা ব্রোঞ্জ বা লোহায় মুড়ে পরার প্রেসক্রিপশন করে। অন্ধবিশ্বাস আর অগাধ আশ্বাস মানুষকে কপর্দক শুণ্য হতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনা। কারো জীবনের চাকা উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে তরতর করে ওপরে উঠতে থাকলে আস্থা আর বিশ্বাস অটুট হয়ে ওঠে বিচারকের বিচারে। কিন্তু যাদের ভাগ্য আরও টিমটিমে আলোর পথে মিশতে থাকে তাদের প্রশ্নে বিচারকের যুক্তি প্রগাঢ়…… পাথর বা শেকড় আসল ছিলনা, নিয়মনিষ্ঠায় খামতি আছে। আবার নতুন কৌশলের আশ্রয়ে খদ্দেরকে বেঁধে রাখার চেষ্টা চলে। তবুও নতুন বছরের রেজোলিউশানে নড়চড় হয়না।
নতুনের আগমনে পরিবেশ কি বদলে যায়!বেকার রা বেকারই থেকে যায়,
গরীবরা গরীবের বর্ষযাপনে স্থায়ী হয় এটাইতো পদার্পণের নিগূঢ় সত্যি।
ধনীর ব্যাংক ব্যালেন্স কমে গিয়ে নির্ধনের তহবিলে জমা পড়েনা। আর যেসব অসুস্থ মানুষ নিউ ইয়ারের উচ্ছাসে সুস্থ হয়ে যায়না তাঁরা বিড়বিড় করে কপাল চাপড়ায়। নির্যাতিতা সুবিচার পাওয়ার আশায় প্রশাসনিক চত্বর, আদালতের চক্করে চড়কিবাজি হতে থাকে। মিথ্যাবাদী সত্যের চৌকাঠে পা রাখে কিনা তাও অজানা।
বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক /আবাসিকা আত্মজ/আত্মজার হাত ধরে বাড়ির উঠোনে দাঁড়ানোর স্বপ্ন কখন যে ছাই হয়ে বাতাসে মিশে যায় তা বর্ষবরণের আতসবাজি জানতেও পারেনা।
ক্ষমতাবানের হাতে অসহায়- পুতুলের মতো নেচে নেচে হাতে পায়ে দগদগে ক্ষত, চিকিৎসার সুযোগ নেই।
কৃষকের মাটি কি ঠগ প্রবঞ্চকের হাত থেকে স্বাধীনতার স্বাদ পেয়ে যাবে? দূর দিগন্তের কোনো সীমানায় প্রশ্নের পাতা উড়ে উড়ে পাখি হয়ে যায়।
সব বদলে যাবার প্রশ্নগুলো যদি নেগেটিভ এর বদলে পজিটিভ হয়ে যায় তবে এই এক লাফের অতিক্রমনের উচ্ছাসকে স্বাগত জানাতে কোন দ্বিধা নেই।
আমাদের ইচ্ছেতালিকা গুলো জিগসও পাজেলের মতো টুকরো টুকরো ভাবনাবিলাস এর গোছা। জোড়া লাগানোর চেষ্টা করতে করতে আবার হযবরল হয়ে যায়। যদি জুড়ে যেত এক মুহুর্তের কোনো ম্যাজিকে!
জুড়বে কি?
জোড়া লাগাতে পারলেই নতুন বছরের হাজার-হাজার লক্ষ-কোটি সুন্দর দৃশ্য দুহাতের তালুবন্দি হয়ে যাবে, খবরের কাগজের আকার চোদ্দ থেকে চোদ্দশ পাতায় বদলে যাবে।
একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..
সকালে উঠে মায়ের মমতামাখা মুড়ি ও লিকার চা খেতাম। তারপর দাদু বলতেন, এবার পড়তে বোস।…..
রোজকার সূর্য ওঠার মত বেলি ভোরে উঠে দরজায় সামনে জল দেয়,ঝাঁট দেয়, ফুল তোলে। তারপর…..
একটি সুপ্রতিষ্ঠিত কর্পোরেট অফিসের চাকরির ইন্টারভিউয়ে জটিল একটি প্রশ্ন করা হলো। প্রশ্নটি হচ্ছে –…..