ফরিদ সাইদের ছড়া
মনটা আমার আমি থাকি ঢাকা শহর মনটা থাকে দূরে, আমায় রেখে মনটা কেনো এদিক সেদিক…..
নেইতো এখন কুমোর পাড়া, নেইতো গরুর গাড়ি
আকাশ ছোঁয়া ফ্ল্যাট উঠেছে,ঝাঁ চকচকে বাড়ি,
বংশীবদন যায়না হাটে, যায় সে শপিং মলে
ভাগ্নে মদন রাজনীতিটা খেয়েছে বেশ গুলে,
শুক্রবারে হাট বসেনা, সকাল সন্ধ্যা বাজার
বক্সিগঞ্জে পার্ক হয়েছে, খেলছে শিশু হাজার,
গ্ৰামের মানুষ আর আসেনা, এখন পদ্মাপারে
অনলাইনেই কিনছে সব ক্রেডিট কার্ডে ধারে।
পটল বেগুন উচ্ছে মুলো, ও সব যে রঙ করা
ইতালিয়ান, চাইনিজ সব আছে ফ্রিজে ভরা,
ধামা কুলো সবই অচল তাও বেতের বোনা
প্লাস্টিকে সব ছেয়ে গেছে, শহর গ্ৰামের কোনা।
এখো গুড়েই কলসি ভরা,এখন শুধু ভেজাল
মাছিরা তাই আর আসে না, গুড়ের দেখে হাল,
শীতের রেপার জড়িয়ে গায়ে শুয়ে ছিলাম রাতে
ভোর হতে সব গুলিয়ে গেলো, রবি ঠাকুরের হাটে।
কেষ্টা এবার মাধ্যমিকে এক চান্সেই পাশ
আবার নাকি পড়তে হবে তাতেই যে হাঁসফাঁস
বাপ কাকা’রা পয়সাওয়ালা, বুদ্ধি বলিহারি,
টাকার গরম কথায় কথায়,শুধুই দেখনদারি।
নতুন ক্লাসে কেষ্টা এবার হবে যে কাল ভর্তি,
বাবা কাকা’র বাড়ির সবার মনেতে বেশ ফুর্তি
কেষ্টা বলে কি নেবে আজ,সাইন্স না আর্টস
স্যার বলেছে মন্দ নয় নিতেও পারিস্ কর্মাস,
ক্ষেপেই বাবা অগ্নিশর্মা, তিনটে নে একসাথে
যতই টাকা আজকে লাগুক,ভয়তো নেই তাতে।
ব- বছরটা বেশ কেটে গেল
ভালো মন্দে হেসে খেলে
কু- কুসুমকলি ফোটাবো আজ
তোমায় আমি সঙ্গেপেলে
ল- লগন এবার যাচ্ছে বয়ে
তাহলে আজ কথা দিলে ?
বৈ- বৈরাগী মন উথালপাতাল
বলছি এবার সঙ্গোপনে
রা- রাগ করোনা এবার তুমি
যাচ্ছি যে আজ রণাঙ্গনে
গী- গীত আর সুর সঙ্গে নিয়ে
একতারাতে আপন মনে।
হঠাৎ সেদিন পথে দেখা, বাঘ মামাজির সাথে,
কেঁদে কেটে আমায় বলে জড়িয়ে দুই হাতে,
ধরছি পায়ে, ভাগ্নে আমার,এবার কিছু করো
ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়ে ছিলাম,বললে ধৈর্য ধরো!
কনফ্রাম তো হলোনা আর,কপাল বড়ই মন্দ,
সিংহী মামি ব্লক করেছে, চ্যাটিং করা বন্ধ ।
পুচকে মাসি মিনি পুষি, সেও খাবি খাচ্ছে,
যখন খুশি সেলফি তুলে ফেসবুকে লটকাচ্ছে।
লাইক কমেন্ট পাচ্ছে দেদার, বেশতো অহংকারী
নেংটি ইঁদুর গ্ৰুপ পাকিয়ে দল করেছে ভারি।
জঙ্গলে রোজ সেলাম করে,তখন আমি হিরো,
ফেসবুকেতে সবাই আমায় বানিয়ে দিলো জিরো।
ভাগ্নে এবার বলো আমায় রহস্য আজ কি ?
মাংস খাওয়া ছেড়ে এবার সাজবো বৈরাগী।
আমি বলি ফেসবুকে নয় এসো বকুল বনে,
বন্ধু তুমি অনেক পাবেই, রাখলে শুধু মনে ।
সাত পাকে পড়লো বাঁধা, বাঁধাকপির বিয়ে,
জ্বলছে জ্বালায় মূলোরা সব ওলকপিকে নিয়ে।
ফুলকপি দের ফুল ফোটেনি, ঠোঁট রাঙিয়ে আজ,
পটলচেরা চোখে পটল সেজেছে কি সাজ ।
বিয়ে বাড়ির এই আসরে আলুর কিবা দোষ
টানাটানি ওকেই নিয়ে কনের সে কি রোষ,
পালং, নটে,কলমী-রা সব,এরাই তো বরযাত্রী
শাকের সঙ্গে সব্জিদের,জমকালো এক রাত্রি।
উচ্ছে বেগুন দুই পক্ষেই, শীম আর বীম ফাউ,
উড়ে এসে বসলো জুড়ে, কুমড়ো সাধের লাউ।
হিংচে নাকি বর সেজেছে, লেংচে সেজে হাঁটে
এঁচোড় গুলো বেশ পেকেছে, ভাঙছে হাঁড়ি হাটে।
সবাই বলে হচ্ছে না মিল বাঁধার সাথে হিংচে
লজ্জাতে লাল ঢেঁড়স রানী ঝিঙ্গে কে দেয় খিমচে।
রাত পোহালো বর কনে সব এবার দেবে পাড়ি,
সব্জি ও শাক জমিয়েছে ভাব,আরতো নেই আড়ি।
মনটা আমার আমি থাকি ঢাকা শহর মনটা থাকে দূরে, আমায় রেখে মনটা কেনো এদিক সেদিক…..
লুকিয়ে চলি তোমার থেকে নির্জন হতে নির্জনে, পাবার খাতা পূর্ণ নাহোক লক্ষ্যটা থাক অর্জনে! লুকিয়ে…..
দিদি বলেন, “লেখা পাঠাও হোক না সেটা যাচ্ছেতাই” অমন লেখা লিখব আমি? প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছে…..