বনচর ঘুঘু

মনোয়ারা স্মৃতি
কবিতা
Bengali
বনচর ঘুঘু

বনচর ঘুঘু

সে পথটা ওয়ানওয়ে, একতরফা যেন
সমস্তটুকু লয়ে যে পথে তার কাছে যাই,
বেদেনির দুলকি চালে তুলে দেই আগল
সে-ই পথে খামখেয়ালির দাড়ি কমা নাই।

সে দূরের মানুষ, যেন-বা বনচর ঘুঘু
রাতের সব ঘুম লিখে দিয়েছি তার নামে,
বুকের ক্যানভাসে নির্বাধের আকাশ খুঁজি
আমায় বিকায় সে আরোপিত জলের দামে।

 

থেকে যেতে হয়

এই ভাবে ছেড়ে যেতে নেই
গণিকার দেহ ছেড়ে যাওয়ার মতো
রেড ওয়াইনের খালি গ্লাসের মতো
সুখ টানে ছোড়া উচ্ছিষ্টের মতো করে
ছেড়ে যেতে নেই।
পেছনে কিছু একটা তো থেকেই যায়
হয়ত-বা এক জোড়া চোখ কিংবা মায়া,
নতুবা আনাড়ি শাড়ি খসে পড়া ছায়া।

এই ভাবে চলে যেতে নেই।
শতবর্ষী পাহাড়ের বুক ছিন্ন করে
পালিয়ে যাওয়া পাথুরে নদীর মতো।
দংশনে বিষ রেখে যাবার মতো করে
চলে যেতে নেই।
না ফিরেও থেকে যেতে হয়,
চিবুকে গড়িয়ে পড়া চুম্বনের মতো
শীৎকারের গভীর উচ্চারণের মতো।
দেবালয়ে প্রাণ রাখা পূজারির মতো
থেকে যেতে হয়।

 

প্রিয় ঋণখেলাপী

সকল পুঁজি লিখে দিয়ে তার নামে
হয়েছি বাস্তুহারা,
দিনাতিপাতের সঞ্চয় রাখিনি নিজ পরিসরে।
থরে-বিথরে লিখে রাখিনি সহস্র পাওনার হিসেব,
হালখাতাহীন বণিক হয়ে আছি ভেতর ঘরে।
মনসিন্দুকে জমা আছে সুগভীর ক্ষতের টেরাকোটা,
জমা আছে ভুলের সম্পাদনায় ভবিতব্যকথা।
নিজ সাম্রাজ্যে গুম হয় ঐশ্বর্যের নেফারতিতি।
পরিশোধে নেই তবু বসত করে মনের সর্বব্যাপি,
কিস্তির শেষ চালে নিত্যই জিতে প্রিয় ঋণখেলাপী।

মনোয়ারা স্মৃতি। কবি। বাস করেন ঢাকা বিভাগের নরসিংদীতে। লিখছেন দীর্ঘদিন ধরেই। মূলত কবিতা লিখেন। কিন্তু গল্পতেও আগ্রহ রয়েছে তার।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ