বাঁদরনাচ

অন্তরা দাঁ
কবিতা
Bengali
বাঁদরনাচ

অপ্রণয়

নিভু নিভু আগুনের পাশে এসে দাঁড়ায়
তোলপাড় হওয়া একটি অসতী জীবন
ময়ূরপঙ্খী বজরা’য় কবে ভেসে গেছে
সুসময়, আলো আর বাতাসে’র প্রাচুর্য
ভাঙা হাল এখন হাতড়ায় জল
তবু তৃষ্ণা তো জীবন্ময়, হিরণ্য ইচ্ছে
সাঁতারে অক্ষম শরীর অসাড় হয়ে আসে
জেগে থাকে ক্লেদ ব’য়ে
মৃত তারা গোণে অপ্রণয়ে।

 

তখন হেমন্ত

বিকেল মুখ ফিরিয়েছে তখন
তার খোলা পিঠে অস্তরাগে’র আভাস
সন্ধে’র শিরশিরে আদর যখন
উন্মুখ হয় ছাতিমগন্ধে
ধানের শীষে পুরু হয়ে আসে
নরম দুধেল সম্ভাবনা
তখন হেমন্ত!

ঠিক বুকের ভেতর খামচে ধরে কে?
বিষণ্ণ সেতারে’র কোমল-গান্ধার
আরোহন ছুঁতে চায় অবরোহনের স্পৃহা
তখন নিঃসীম পুড়েছি একা
যখন হেমন্ত!

 

জন্মদিন

বয়েস বেড়েছে হিসেবে জানায়
আঙুলে’র কড় গুনে
জন্মইস্তক লগ্ন হওয়া দিন।
ছুঁয়ে যায় আলগোছে
আয়নায় গাঢ় চোখে তাকালে
ভেংচি কাটে ডাকনামে’র বালিকা’টি
কেজো মাথা ঈষৎ টনটনে
শেয়ার মার্কেটে’র মত ওঠানামা করে
ইচ্ছে’র পারদ
খ’সে যায় আঙুলে’র মুঠো গলে।

আলগা করে শরীর জড়ায়
ফেলে আসা ছোটবেলা
বুকের ভেতর বেজে ওঠে
টুং টাং বৃন্দাবনী সারঙ।

প্রতিবার জন্মদিনে বেড়ে যায় বয়েস
অভিজ্ঞতা, কষ্ট আর বলিরেখা
শুধু
উচ্চতায় খাটো হয়ে আসি আমি।

 

বাঁদরনাচ

সাত বছর বয়েসে জীবন মানে
মায়ের আঁচল
সতেরোয় প্রেমিক গোপন আমার
সাতাশে সন্তানের কচি আঙুল
ধরেছি মুঠিতে
এখন সাঁইত্রিশ পেরিয়েছি
তবু, জীবন ছোঁয়নি আমায়
আমি দু’হাত বাড়িয়ে ধরতে যাই
লাগ…লাগ…লাগ
ডুগডুগি হাতে বাঁদর নাচায় জীবন
আমি লাফিয়ে, ছুটে, উবু হয়ে
ধুলোয় গড়াগড়ি দিই
ষোলআনা জুটে যায়
কেউ কেউ ছুড়ে দেয় বাতিল আধুলি
যাহ শালা!
সাতচল্লিশ… সাতান্ন…সাতষট্টি
ফোকলা দাঁত, চোখে পিঁচুটি
খেলা দেখায় জীবন।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..