ইমন কল্যাণ
পরিচ্ছেদ ৬ অনেক রাতে ফিরেছিল কল্যাণ ওরফে শহীদুল।গাড়িটা শেডে রাখার পর দু’বার হালকা করে মা…..
রনির ফোনটা বেজে বেজে থেমে গেল কিন্তু কেউ উত্তর করল না, রনিকে ফোনে না পেয়ে মামুন কে ফোন করল-
– কিরে পেত্নী হঠাত এই সময়ে?
– কোন কারন জিজ্ঞাসা না করে এই মুহূর্তে রওনা হয়ে আমার বাসায় আয় আর পারলে রনি আর কাম্রুলকেও নিয়ে আয়। আর শোন আসার সময় বোস্টন পিজ্জা থেকে দুইটা পিজ্জা নিয়ে আসবি।
ঠিক আধা ঘন্টার মাথায় রঙচঙে সাজগোজ করা গওহর সহ কবির রায়নার দরজার কলিং বেলে চাপ দিতেই পেছন থেকে মামুন বলে উঠল- আরে কবির ভাই আপনি?
মামুন কে দেখে কবির একটু অপ্রস্তুত হয়ে তাকাতেই দেখতে পেল রনি আর ওর ওয়াইফ গাড়ি থেকে নামছে। গওহরের মেসেজ পেয়ে রায়না যে চটজলদি ওদের ডেকে এনেছে সেটা ভালোভাবেই বুঝতে পারল।
এদিকে দরজা খুলে রায়না এমনভাবে বলে উঠল “আরে তোরা? আয় আয়” ভাবটা এমন যে ও জানতোই না যে ওরা আসবে। ওদের দিকে তাকিয়ে বলল ভেতরে আসেন, হঠাত আসলেন আমার বাসায় কি দিয়ে যে আপনাদের আপ্যায়ন করি?
– কোন চিন্তা নাই, আমি সবার জন্য পিজ্জা এনেছি, নে সবাইকে দে।
অর্ককে বসার ঘরে সোফায় বস থাকতে দেখে কবিরের বুকের ভেতরটা মুচড়ে উঠল, ছেলেটাকে সেদিনের পর আবার আজ দেখল, কিন্তু একটু ভালোভাবে দেখার আগেই রায়না অর্ককে বলল – বাবা তুমি তোমার ঘরে গিয়ে পড়তে বসো, মা একটু পরে তোমাকে ঘরে খাবার দিয়ে আসব।
এই সেই নানান অকাজের অহেতুক কথাবার্তা বলা, নাস্তা আর কফি পর্ব শেষে কবির জানতে চাইল রায়নার পরের উইকেন্ড অফ কবে, গওহর সামনে থাকাতে রায়না নিজেকে সংযত করে জিগ্যেস করল কেন?
– আহা বলই না
– পরের উইকেন্ড আমার ডিউটি আছে, তার পরের উইকেন্ড অফ, তবে প্রয়োজন হলে অনেক সময় রিস্কেজিউল করে।
– ঠিক আছে তাহলে কামিং উইকেন্ডের পরের উইকেন্ডে আমার বাসায় আসো সবাই।
– আরে না না উইকেন্ডে সম্ভব না অর্কের সাঁতারের প্রাকটিস থাকে।
কবির গওহরের দিকে ফিরে বলল, গওহর তুমিই বল তোমার কথা ডাঃ রায়না ফেলতে পারবে না।
শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো সবাই যাবে, শুধু মামুন বলল – রায়না তোকে ড্রাইভ করতে হবে না আমি এসে তোকে আর বাবাই কে নিয়ে যাব।
বাবাই নামটা শুনে কবির চমকে উঠল, এক সময় রায়না কবিরকে বাবাই নামে ডাকত আর এখন ওর ছেলেকে ডাকে, ওর দেয়া আদরের ডাক নাম।
ছেলেটাকে দেখার জন্য এতো পরিকল্পনা করে আসল অথচ সেই প্রথম পাঁচ মিনিটের মাথায় যে রায়না ওকে ভেতরে পাঠিয়ে দিল আর একবারের জন্যও বাইরে এলো না । রায়না যে ওকে ছেলের কাছে ঘেঁষার সুযোগ দিচ্ছে না বুঝতে পেরেই কবির ওর বাসায় ডেকেছে তাহলে অন্তত ছেলেটাকে কিছু সময়ের জন্য কাছে পাওয়া যাবে। সেদিন অর্ককে দেখার পর আর রনির কাছে ওর পিতৃত্ব কনফার্ম করার পর থেকে কবির এক অজানা টান অনুভব করছে, সবসময় ছেলেটাকে দেখতে ইচ্ছে করছে, মাথায় আদর করে হাত বুলিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। একদিকে রায়নার ওর কাছ থেকে এতো বছর ছেলের কথা লুকিয়ে রাখা, অন্যদিকে জানতে পারলে গওহরের জান্তব প্রতিক্রিয়ার কথা চিন্তা করলে কবিরের সবকিছু তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। যে সন্তানের অস্তিত্ব একসময় সে অস্বীকার করে জীবনে এগিয়ে যেতে গওহরের হাত ধরেছিল আজ সেই সন্তানকে চোখের সামনে হেঁটে চলে বেড়াতে দেখে মনে হচ্ছে কে বলে আমাদের হৃদয় শরীরের বাইরে দেখা যায় না, অর্ককে দেখলে মনে হয় ওর হৃদয় শরীরের বাইরে হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে, অথচ রায়না অত্যন্ত কঠিন হয়ে ওকে ছুঁয়ে দেখতে দিচ্ছে না।
ছেলেটাকে আবার দেখার জন্য পনেরটা দিন অপেক্ষা করতে হবে, প্রতিটা দিন কবিরের বছরের সমান মনে হচ্ছে। এর মধ্যে একদিন অফিস থেকে এক ঘন্টা আগে বেরিয়ে পাশের শপিং মলে ঢুকে ছেলের জন্য একটা সাদা রঙের হুডি কিনে ফেলল, এখন সময় পেলেই কবির বাচ্চাদের জিনিসপত্রের দোকান গুলোতে ঢু মারে, ভালোই লাগে। হুডিটা প্যাকেট করে রনির বাসায় গিয়ে রিকোয়েস্ট করল অর্ককে দিতে, গওহরকে জানতে দিতে চায় না বলেই রনিকে ধরেছে। রনি সাহায্য করতে না চাইলেও রনির ওয়াইফ এগিয়ে এসে বলল আমাকে দেন ভাইয়া আমি দিলে আপু না করবে না।
সকাল থেকেই পেঁজা পেঁজা তুলোর মতো নরম তুষার ঝরতে শুরু করেছে, কবির জানে গওহরের রান্না ও গিলে ফেললেও বাইরের মানুষের সামনে পরিবেশন করার মতো না, তাই আগে থেকেই হোম কেটারিং এ বলে রেখেছিল, বিকেল ছয়টা নাগাদ গিয়ে খাবার গুলো নিয়ে এসে টেবিলে গুছিয়ে ফেলল। সাতটার মধ্যে একে একে সবাই আসতে শুরু করল। সোয়া সাতটার দিকে রায়না এসে যখন ওর সাদাকালো ওভার কোটটা খুলল কবিরের লিভিং রুমের আলোটা মনে হয় কয়েকগুন বেড়ে গেল। সাদার উপর হালকা ফিরোজা রঙের জামদানি, পাড়ে লাগানো সাদা লেস বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে, পিঠের উপর ছেড়ে দেয়া এক ঢাল সিল্কি চুল, কানে ছোট্ট মুক্তোর দুল, রায়নার একহারা চেহারা সব মিলিয়ে একটা মোলায়েম মন ভালো করে দেয়া ক্যানভাসের মতো। অন্যদিকে গওহর বেরিয়ে এলো ক্যাটক্যাটে হাওয়াই মিঠাই রঙের জর্জেট শাড়ি, কানে ইয়া বড় বড় ঝুমকা আর কানের পাশে একগাদা নকল ফুল গুঁজে, রুচির চরম প্রকাশ। মাঝখান থেকে রনি বলে উঠল আরে ভাবি আপনাকে তো চরম লাগছে, এদের সবার আপনার কাছ থেকে সাজগোজ করা শেখা দরকার, রনি আর কামরুলের ওয়াইফ রিতি আর চিত্রা মিটিমিটি হাসছে, রাগে কবিরের মাথা টনটন করছে। রায়না আর অর্ককে নামিয়ে দিয়ে মামুন আসছে বলে গাড়িটা নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল, বিনোদন ভরা পরিবেশে সবার শেষে সে ঢুকল হাতে একটা কেক নিয়ে।
কবির একটু জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতেই রিতি বলল আপনি হয়ত জানেন না আজ আমাদের অর্ক সোনার জন্মদিন এই জন্যই আপু আজকে আপনার বাসায় আসার জন্য রাজি হচ্ছিল না, ছেলেটার জন্মদিনে আপু আমাদেরও বলে না শুধুমাত্র মা-ছেলে একসঙ্গে সারাদিন কাটায়। কবিরের নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছিল, ও ওর নিজের ছেলের জন্মদিনটা পর্যন্ত জানে না। কেক কাটা শেষে রিতি কবিরের দেয়া প্যাকেটটা অর্কর হাতে দিতেই ও জিজ্ঞেস করল কি এটা? রিতি খুলে দেখতে বলল, সাদা হুডিটা দেখে ওর চেহারায় হাজার ভোল্টের আলো জ্বলে উঠল, ঠিক এই রকম একটা সাদা হুডি মাকে কিনে দিতে বলবে বলে ও ভাবছিল।
– মামী তুমি কিভাবে জানলে আমি এই রকম একটা সাদা হুডির কথা ভাবছিলাম?
– পরে দেখো তোমার গায়ে লাগে কিনা, তানাহলে সাইজ পাল্টাতে হবে।
এক্কেবারে ঠিক ঠিক সাইজের হুডিটা গায়ে দেয়ার পর কবিরের ছেলেটাকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরতে ইচ্ছা করছিল। কৃতজ্ঞ চোখে রিতির দিকে তাকাতেই রিতি হালকা করে চোখের পলক ফেলল যেটা রায়নার চোখ এড়ালো না।
পরের দিন রায়না নিজেই কবিরকে ফোনে ধরল-
– বিকেলে জেসপার এভিনিউয়ের রেমিডি ক্যাফেতে আসতে পারবেন?
– আজ? আজ বিকেলে গওহরের ফুফাতো ভাইয়ের বাসায় যেতে হবে।
-ঠিক আছে।
– না কয়টার সময় আসব বলো?
– আমার সাতটার সময় শিফট শেষ হবে, সাতটা পনের মিনিটের দিকে আমি রেমিডিতে পৌঁছে যাব।
-ঠিক আছে, আমি গওহরকে নামিয়ে দিয়ে চলে আসব।
ঠিক সাতটা পনের মিনিটে বেশ জোরে সোরে তুষারপাতের ভেতর রায়না রেমিডি ক্যাফেতে ঢুকে দেখে কবির ওর আগেই এসে গেছে। কফির অর্ডার দিয়ে দুজনে কোনের দিকে একটা টেবিলে বসল।
কফির কাপে চুমুক দিয়ে রায়না বলল-
-কবির আমি তোমাকে আগেও বলেছি শুধু শুধু আমাদের জীবনে জটিলতা সৃষ্টি করো না, কিন্তু তুমি একের পর এক নানান কান্ড করেই চলেছ, আমাকে কি বলবে কেন?
– আমি কি করলাম?
-কাল রিতি অর্ককে যে হুডিটা দিয়েছে সেটা যে তোমার দেয়া আমি বুঝতে পেরেছি।
-রায়না আসলে সেদিন মলে ঢুকে হুডিটা দেখে মনে হলো ছেলেটাকে মানাবে ভালো।
-শুধু আমার ছেলের জন্যই কেন মনে হলো? অন্য কারো জন্য কেন মনে হলো না?
-রায়না অর্ক আমারো ছেলে, আমার কি ইচ্ছা করতে পারে না ওকে কিছু দিতে?
– Oh really? কবে থেকে ও তোমার ছেলে হলো?
– তুমি কি ঝগড়া করার জন্য ডেকেছো? তুমি তো এমন মারমুখী কখনই ছিলে না।
– তুমি অনেক আগের রায়নাকে চেনো, সময়ের প্রয়োজনে আমি অনেক বদলেছি। এখন আমাকে আমার নিজের ভালোমন্দের সাথে সাথে আমার ছেলের ভালোমন্দেরও খেয়াল রাখতে হয়। তুমি হয়ত ভুলে গেছো অনেকদিন আগে যখন আমার তোমাকে সবচাইতে বেশি প্রয়োজন ছিল তুমি আমাকে পেছনে ফেলে দৃঢ় পায়ে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলে। আমি তোমাকে অর্কের জন্ম হওয়া অবধি মনে করেছি, ভেবেছি হয়ত তুমি ফিরে আসবে কিন্তু ঠিক যেদিন আমার ছেলেটা পৃথিবীর আলো দেখেছে, ওকে কোলে নিয়ে আমি প্রতিজ্ঞা করেছি তুমি আমাদের জীবনে একজন মৃত মানুষ, এতো দিন স্বীকার করিনি কিন্তু এখন বলছি হ্যাঁ অর্কের জন্মের জন্য শুক্রাণুটা তোমারই কিন্তু এছাড়া আর কোন কিছুই তোমার না। তুমি ঠিক যতোটা জীবনে আগাতে চেয়েছিলে আমি ঠিক তার চাইতে এক কদম বেশি আগাতে চেয়েছি আর উপরওয়ালার কি রহমত দেখো আমি ঠিকই জীবনের পথটা চলতে পারছি। সারাটা জীবন শুধুই নিজের চাওয়া পাওয়া, ভালোমন্দ, নিজের ভালো লাগা গুলো নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছো, আমাদের পথ অনেক আগেই তুমি নিজে হাতে আলাদা করে দিয়েছো এখন আর উঁকি মারার চেষ্টা করো না, আমরা ভালো আছি আমাদের ভালো থাকতে দাও, আমার কথা নাহয় নাই ভাবলে ছেলেটার কথা ভেবে আমাদের থেকে দূরে থাকো। চলো উঠা যাক, আশা করছি তুমি বুঝতে পারছো আমি কি বলতে চাইছি, নিজের পৃথিবীতে ভালো থাকো।
এরপর বেশ কয়েক মাস হয়ে গেছে কবির আর রায়নার সঙ্গে কোন যোগাযোগ করেনি, রায়নাও নিজের জগতে মশগুল। যদিও গওহর মাঝে মাঝেই ফোন করেছে, যেতে বলেছে অথবা ওর বাসায় আসতে চেয়েছে, প্রতিবারই কাজের বাহানায় রায়না নিষেধ করেছে। ফেব্রুয়ারির এক দুপুরে প্রচন্ড তুসারপাত দেখে রায়না ভাবল আজ যেহেতু বাসায় আছে ছেলেটাকে ঠান্ডার মধ্যে হাঁটতে না দিয়ে নিজেই স্কুল থেকে নিয়ে আসবে। ছুটির পাঁচ মিনিট আগে স্কুলের সামনে গিয়ে দেখে কবির দাঁড়িয়ে আছে, নিতান্তই কাকতালীয় ভেবে গাড়ির ভেতর বসে স্কুল ছুটির অপেক্ষা করতে থাকল। এক্টুপর অর্ক বেরিয়ে এসে যেভাবে কবিরের দিকে তাকিয়ে হাসল রায়নার বুঝতে বাকী থাকল না যে কবির মাঝে মাঝেই এখানে আসে। কবির ছেলের সঙ্গে সাইড ওয়াকের দিকে হেঁটে আসা শুরু করতেই রায়না নেমে এসে হাঁক ছাড়ল, মুহূর্তেই কবির অপ্রস্তুত। অর্ককে গাড়িতে উঠতে বলে কবিরের দিকে ঘুরে জিগ্যেস করল-
-তুমি এখানে? মাঝে-মাঝেই আসো মনে হচ্ছে?
– না মানে এতো স্নো পড়ছে ভাবলাম ছেলেটাকে বাড়ি পৌঁছে দিই।
– মায়া খুব খারাপ জিনিস, মায়া বাড়িয়ো না।
পর পর কয়েকদিন দূর থেকে খেয়াল করে রায়না বুঝতে পারল প্রায় প্রতিদিনই কবির অর্ক কে দেখতে স্কুলে আসে, দুজনে একসঙ্গে হেঁটে হেঁটে বাড়ী পর্যন্ত আসে। শেষ পর্যন্ত অনেক ভেবে চিন্তে রায়না স্কুলের মার্চ ব্রেক এর আগে কবিরকে ফোন করে বলল-
– আমরা এক সপ্তাহের জন্য ভেঙ্কুভার যাচ্ছি, VIA Rail দিয়ে যাব আসব তাহলে রকি মাউন্টেইনের ভেতরের সৌন্দর্যটা দেখা যাবে, তুমি যাবে আমাদের সঙ্গে?
– এক সপ্তাহ? দিনে গিয়ে দিনে আসা যায় এমন জায়গা হলে যাওয়া যায়।
– মানে টা কি? আমি ভাবলাম তুমি যেহেতু প্রতি দিন অর্ককে দেখতে ওর স্কুলে যাচ্ছ তার চাইতে এক সপ্তাহ এক সঙ্গে থাকাটা বেশি ভালো হবে।
– না মানে গওহর জানতে পারলে ঝামেলা করবে।
– তাহলে শুধু শুধু ছেলেটার পেছনে ঘুরছ কেন? নিজে ভালো থাকো আমাদেরও ভালো থাকতে দাও।
– রায়না তুমি কি আমার মনের জানালা হতে পার না? যেখানে আমি নির্ভয়ে আমার সব কথা বলতে পারব।
– এক কাজ করো গওহরকে ছেড়ে আমাদের সঙ্গে এসে থাকো, নির্ভয়েও থাকতে পারবে আবার সব কথাও বলতে পারবে, তাছাড়া অর্ককে দেখার জন্য লুকিয়ে আসতে হবে না।
– সেটা হয়ত সম্ভব না।
– কেন নয়?
– এখানে অনেকেই আমাকে চেনে জানে, এরকম কিছু করলে আমাকে কেউ আর ডাকবে না, একা একা থাকতে হবে।
– সেটাতো আমি তোমার জানালা হলেও হতে পারে।
– তা কেন? কাউকে জানানোর দরকার নেই, শুধু আমরা দুজনে জানব।
– তার মানে তুমি বলতে চাইছো এমন একটা সম্পর্ক যেটা কেউ জানবে না?
– না মানে তুমি ঠিক এভাবে কেন ভাবছো?
– তুমি একটা No Name সম্পর্ক চাইছো, তোমার কি ধারনা গওহর এটা জানতে পারবে না? আর আমিই বা কেন এরকম একটা সম্পর্কে জড়াব? আমি শুধু তোমার মনোভাব বোঝার জন্য ভেঙ্কুভার যাবার কথা বলেছি। ভালো থেকো, রাখছি।
ফোনটা ছেড়ে কবির ভাবতে লাগল কি এমন করা যায় যাতে রায়না আর অর্কর সঙ্গে যোগাযোগটা ঠিক রাখা যায় আবার গওহরও জানতে না পারে, ও রায়না আর অর্ককেও পেতে চায় আবার গওহরের জন্য প্রতি উইকেন্ডে বিভিন্ন দাওয়াতে যাওয়াটাও হারাতে চায় না। কবির জানে যতই শক্ত হওয়ার ভান করুক না কেন ভেতরে ভেতরে রায়না এখনো ওকে আগের মতোই ভালোবাসে, শুধু ওকে একটু চেষ্টা করতে হবে সেটা বাইরে আনতে।
চলবে…
পরিচ্ছেদ ৬ অনেক রাতে ফিরেছিল কল্যাণ ওরফে শহীদুল।গাড়িটা শেডে রাখার পর দু’বার হালকা করে মা…..
পরিচ্ছেদ ৫ আকাশে এখন আর মেঘ নেই। হাওয়া হচ্ছে।কদিন পরেই বর্ষা নামবে।একদিন হাসপাতাল থেকে ফিরতে…..
পরিচ্ছেদ ৪ ভোর হয়ে আসছে।রাতে ভালো ঘুম হয়নি।ঘুমের ঘোরে মনে হচ্ছিল দম বন্ধ হয়ে আসছে।এরকম…..
বাংলার চিত্তাকর্ষক ইতিহাস সম্পর্কে জানার সময়, গৌরের মতো আর কিছু গন্তব্য হতে পারে না।…..