প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
পূর্বে প্রকাশিতের পর…
সবাই কফি নিয়ে বসার পর পুলিশ অফিসার জানালো তারা গতরাতে কবিরের ওয়াইফ গহরকে কাস্টডিতে নিয়েছে। তার নামে এটেম্পট টু মার্ডার মামলা ফাইল হচ্ছে, কিন্তু মামলা কোর্টে ফাইল করার আগে পুলিশ কবিরের স্টেটমেন্ট রেকর্ড করতে চায়। একই সঙ্গে প্রাইমারী চিকিৎসা দেয়া চিকিৎসক হিসেবে ডাক্তার রায়নার বক্তব্যও তাদের প্রয়োজন।
প্রভিনশিয়াল হেলথ সার্ভিসেস এর ‘Collect it, Protect it’ আইনের নিয়ম অনুযায়ী ডাক্তার হিসেবে সে তার রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য এমনকি পুলিশকেও তেমন একটা বলতে পারবে না, মামলা চলাকালীন সময়ে কোর্টের অর্ডার নিয়ে পুলিশ প্রয়োজন অনুযায়ী সব তথ্য হাসপাতাল থেকেই নিতে পারবে, তবুও এরা বলবে তাকে সব বলার জন্য। সেও খুব সুন্দর করে বলবে তার অপারগতার কথা। না বলতে পারাটা যে একটা শিল্প সেটা সে এদেশে এসে শিখেছে। রায়না তার শিল্প প্রয়োগ করে পুলিশ অফিসার আর কবিরকে একান্তে কথা বলতে দিয়ে নিজের কফির কাপ নিয়ে পেছনের বারান্দায় চলে এলো।
প্রকৃতির সৌন্দর্য বরাবরই ওকে টানে, আর এদেশটা একেক সিজনে একেক রকম সৌন্দর্যের পশরা সাজিয়ে বসে। যত্ন পেয়ে বারান্দার ফুলগুলো এতো সুন্দর করে ফুটেছে যে দেখলেই মন ভরে যায়। কিন্তু একটা বিষয় ওকে খুব অবাক করে, এতো ফুলের পশরা চারিদিকে অথচ কখনো প্রজাপতি বা ফড়িঙ বসতে দেখে না। প্রজাপতি যে একেবারে দেখেনি তা না, দেখেছে তবে বাংলাদেশের মতো মাঠেঘাটে না, বাটারফ্লাই কালচার হাউজে দেখেছে। পাশের শহর কেলগ্যারির চিড়িয়াখানার বাটারফ্লাই কালচার হাউজে প্রথম আর এডমন্টন শহর থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে ইস্পরুস গ্রোভে ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টার ডিভোনিয়ান বোটানিক্যাল গার্ডেনে। এখানে সামারেও মাঝে মাঝে কনকনে ঠান্ডা বাতাস থাকার জন্য প্রজাপতি বংশবিস্তারের অনুকূল তাপমাত্রা থাকে না, তাই বাইরে সাধারণত এদের দেখা যায় না। তাই বলে কি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সবাই প্রকৃতির সৃষ্টি এই সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত থাকবে, একেবারেই না। এরা তৈরি করেছে বাটারফ্লাই কালচার হাউজ, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতিরা বংশবিস্তারের জন্য তৈরি কন্ট্রোল্ড অনুকূল তাপমাত্রায় সঠিক মাত্রার খাবার আর পরিচর্যায় বেড়ে উঠছে। আবার এই কালচার হাউজ গুলো এরা এমন জায়গায় করেছে যেখানে বেড়াতে গেলে মানুষ একবার না একবার ঢুঁ মারবেই। যতবারই রায়না বাটারফ্লাই কালচার হাউজে ঢুকেছে কাঁচের ঘরে যত্নে তৈরি করা জঙ্গুলে হাল্কা গরম পরিবেশে উড়ে বেড়ানো হাজার হাজার রঙ্গিন প্রজাপতির মাঝে নিজেকে রূপকথার রাজকন্যা মনে হয়েছে, মনে হয়েছে এই বিশাল প্রজাপতির ঝাঁকের মাঝে আর কেউ নেই, শুধুই সে। মনে মনে সাদা রঙের লম্বা ফ্রক পরে, মাথায় ফুলের মুকুট পরে বাস্কেট ভর্তি গরম গরম বেক করা রুটি আর নানান রকমের ফল নিয়ে নেচে নেচে বেড়িয়েছে।
বারান্দায় বসে ইন্সাইট ম্যাগাজিনের পাতায় চোখ রেখে কফির কাপে ছোট্ট একটা চুমুক দিয়ে রায়নার মন চলে গেল সেই ছোট্ট বেলায়। বাংলাদেশের উত্তরের ছোট শহর দিনাজপুরে রায়নার জন্ম, সরকারী চাকুরীজীবী শহিদ সাহেবের তিন ছেলেমেয়ে আর স্কুল শিক্ষিকা স্ত্রী নিয়ে সাজানো সুখের পরিবার। দুই ছেলে আর এক মেয়ে, প্রত্যেকেই একেকটা যত্নে গড়া রত্ন। লেখাপড়া, গানবাজনা, কবিতা আবৃতি, বিতর্ক প্রতিযোগিতা সবকিছুতেই পারদর্শী। বাবা-মা আর ভাইদের কাছে রায়না ছিল চোখের মণি, মিশন স্কুলের ছাত্রী ক্লাস টু তে পড়া রায়না যখন ইংরেজি পড়ত পাড়ার অনেকেই বলত সে টেলিভিশনে খবর পড়ার মত দারুন ঝরঝরে করে পড়ে। শুধু পরিবারের কাছেই না, মিশন স্কুলের সিস্টারদের কাছে, পরে হাই স্কুলের টিচারদের কাছে, কলেজের টিচারদের কাছেও তার আদরের কমতি ছিলনা। বন্ধু মহলেও ছিল বিশেষ জায়গা।
ছোট্ট রায়না যখন মিশন স্কুলে ভর্তি হোল তখন দুই ভাই আগে থেকেই একই স্কুলের ছাত্র। আদরের দুলালী স্কুল ড্রেস পরে সাদা ফিতা দিয়ে বাঁধা দুই বেণী দুলিয়ে রাজকন্যার মত আগে আগে হাঁটত আর ভাইয়েরা তার বইখাতা নিয়ে পেছনে পেছনে গার্ড অব অনার দিয়ে হাঁটত। এযুগের বাচ্চাদের মতো ওরা স্কুল ব্যাগ বা টিফিন নিয়ে যেত না। সকালে মার হাতে বানানো গরম গরম রুটি, ভাজি, বা খেজুরের ঘুড় দিয়ে নাস্তা করে বইখাতা গুলো বুকের কাছে পরম যত্নে ধরে একই স্কুলে পড়া পাড়ার সব বাচ্চারা দল বেঁধে পায়ে হেঁটে স্কুলে যেত। আবার স্কুল শেষে একইভাবে দল বেঁধে বাসায় ফিরে আসা। রায়নারা যে পাড়ায় থাকত সে পাড়ার বাচ্চাদের জন্য ছিল “আদর্শ শিশু বিদ্যালয়” নামে মিশন স্কুল আর সরকারী প্রাইমারী স্কুল। একটু সঙ্গতি সম্পন্ন পরিবারের বাচ্চারা মিশন স্কুল আর কম সঙ্গতি সম্পন্ন পরিবারের বাচ্চারা সরকারী প্রাইমারী স্কুল। তবে দুটো স্কুল একই পথে হওয়ার কারণে পাড়ার সব বাচ্চারা মোটামুটি এক সঙ্গেই স্কুলে যাওয়া আসা করত।
কানাডায় আসার পর সে ছোটবেলার সেই দল বেঁধে স্কুলে যাওয়া আসাটা আবার দেখতে পায়। ওরা এখন যে শহরে থাকে সেখানে মোটামুটি সব পাড়ার স্কুল্গুলো এক কিলোমিটার হাঁটা দূরত্বের মধ্যে, শীতকালে স্নো না পড়া পর্যন্ত বেশিরভাগ বাচ্চারা হেঁটে যাওয়া আসা করে, এমনকি মাইনাস ৩০ এর মধ্যেও সে বাচ্চাদের স্কুলে হাঁটতে দেখে। তার নিজের ছেলেই তো শীত গ্রীষ্ম সব সময় হেঁটে যাওয়া আসা করে। টরোন্ট বা অটোয়ার মতো বড় শহর সম্পর্কে ওর ধারণা নেই কিন্তু ওরা যে শহরে থাকে এই রকম শহরগুলোতে বাচ্চারা পায়ে হেঁটে, সাইকেল চালিয়ে, খুব বেশী হলে পাবলিক বাসে চড়ে স্কুলে যাওয়াআসা করে, অনেকটা বাংলাদেশের মফঃস্বল শহরগুলোর মতো। তবে দূরত্ব একটু বেশি হলে বাচ্চারা বাৎসরিক ফী দিয়ে ইয়োলো স্কুল বাসে যাওয়া আসা করতে পারে।
পড়াশুনায় রায়না বরাবরই ভালো ছিল। স্কুলের প্রতিটি ক্লাসেই প্রথম স্থান ছিল রায়নার দখলে। ওর ক্লাসের সবচাইতে গুলুগুলু টাইপ ছেলে ছিল মামুন। মামুন আর রায়নার মধ্যে সবসময় একটা চাপা কম্পিটিশন চলত, যদিও উপরে উপরে দুজনে ছিল দারুন বন্ধু। ক্লাস ফাইভের একটা ঘটনার কথা মনে পড়লে এখন রায়নার মনে হয় কি হিংসুটেই না ছিল সে। একদিন সে তার কোমর পর্যন্ত এক ঢাল চুলগুলো শ্যাম্পু করে ধুয়ে চুল ছেড়ে ক্লাসে গিয়েছে আর টিফিনের সময় মামুন পেয়ারা চিবিয়ে থু করে বিচিগুলো রায়নার চুলে ফেলেছে, আর যায় কোথায়, রায়না ৫০ পয়সার তেলওয়ালা তেঁতুলের আঁচার কিনে এনে মামুনকে দারুন সুন্দর করে কাছে ডাকল, রায়না ডেকেছে আর মামুনও গদ্গদ হয়ে যেই না কাছে এসেছে সঙ্গে সঙ্গে সেই তেলওয়ালা আচার মামুনের পিঠে। মামুন বেচারা তো কেঁদেকেটে একাকার কারন এই তেলের দাগ তার সাদা শার্ট থেকে যাবে না আর মা অনেক মারবে। সেই তেলের দাগের জন্য মামুন আসলেই অনেক মার খেয়েছিল। আরেক ক্লাসমেট কাম্রুল, ক্লাসের সবচাইতে পাকা ছেলে, আসলে ইঁচড়ে পাকা বললেই ঠিক হয়, ওই বয়সেই কাম্রুলের কাছে বাংলা সিনেমার সব নায়িকাদের ভিঊ-কাড কালেকশনে ছিল, সে তার সেই কালেকশনের জন্য ছিল বিশাল গর্বিত। গর্বিত কাম্রুল ঈদের ছুটির আগে ঊদার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তার কালেকশন সহ স্কুলে হাজির, সে তার বন্ধুদের মাঝে সেগুলো বিতরন করবে ঈদের উপহার হিসেবে কারন এ বছরের পর ওরা ছেলে মেয়ে আলাদা আলাদা স্কুলে যাবে। রায়নার মনে আছে সে অনজু ঘোষের ছবি নিয়েছিল, যেটা নিয়ে মামুন, কাম্রুল আর রনি এখনও ওকে খেপায়। মামুন, কাম্রুল, রনি, রায়না চার বন্ধুই এখন একই শহরে থাকে। মামুন, কাম্রুল দুজনেই ইঞ্জিনিয়ার, আর সবচাইতে দুষ্টু রনি ইউনিভার্সিটির টিচার এবং পুরোদস্তুর হুজুর।
মিশন স্কুলে ক্লাস ফাইভ শেষ করে ক্লাসমেটদের মধ্যে ছেলেরা চলল বয়েজ স্কুলে আর মেয়েরা গার্লস স্কুলে। স্কুল আলাদা হলেও একই পাড়ায় থাকার কারনে ওদের বন্ধুত্বটা একই রকম থেকে গেল, বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে মাঠে খেলতে যাওয়া, ছুটির দিনে এক সঙ্গে আড্ডা সব চলতে থাকল। আর মেট্রিক পাস করার পর আবার সবাই এক সঙ্গে সরকারী কলেজে। কলেজে ক্লাস শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর ওরা বন্ধুরা ঠিক করল এক সঙ্গে জাকিরুল স্যারের কাছে ফিজিক্স টিউশন নিবে, যেই প্ল্যান সেই কাজ, সবাই মিলে স্যারের সঙ্গে কথা বলতে চলল। শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো ওরা সপ্তাহে পাঁচ দিন ভোর ছয়টার ব্যাচে পড়তে যাবে।
পরের সপ্তাহ থেকে ওরা পড়া শুরু করল, কিন্তু যেতে হয় প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার দূরে ঘাসিপাড়া, শহিদ সাহেব করেন সরকারী চাকুরী, বেতন যা পান তা দিয়ে টেনেটুনে সংসারটা চালিয়ে নেয়া যায় কিন্তু বাড়তি শখ আহ্লাদ মেটানো কোনভাবেই সম্ভব হয় না। একমাত্র মেয়ে চোখের মণি হলেও টিঊশনের টাকা জোগান দিতে পারলেও প্রতিদিন টিঊশনে যাবার জন্য রিক্সা ভাড়া দেয়া সম্ভব না। এদিকে রায়নার বন্ধুরা সবাই ছেলে বলে ভোরবেলা সাইকেল চালিয়ে চলে যেতে পারে কিন্তু ওকে হেঁটে যাওয়াআসা করতে হয়। একই সমস্যা কলেজ যাওয়াআসা নিয়েও। কলেজও বাসা থেকে প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার দূরে। গরমের সময় তাও সমস্যা হয় না, কিন্তু শীত শুরু হতেই ভোরবেলা কুয়াশার জন্য দুই হাত দুরের জিনিসও দেখা যায় না, রনি বুদ্ধি দিলো সাইকেল চালানো শিখে ফেল তাহলে আমাদের সঙ্গে সাইকেল চালিয়ে যেতে পারবি। মামুন আর কামরুল হেসে গড়াগড়ি, কারন রায়না লেখাপড়ায় যতই ভালো হোক ওতো একটা মেয়ে, মেয়েরা আবার সাইকেল চালায় নাকি। ওদের হাসি দেখে রায়নার গা জ্বালা করতে লাগল। পরের দিন শুক্রবার কলেজ, টিঊশন দুটোই ছুটি, সকালে নাস্তা খেয়ে পড়ার টেবিলে বসে জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখতে পেল বাসার পাশের মাঠে চার ফুটি চান্দু খুব কসরত করে বড়দের চায়না ফনিক্স সাইকেল চালাচ্ছে। রায়না জানালা দিয়ে চান্দুকে ডাকল, চান্দু জানালার কাছে আসতেই বলল এই শোন আমাকে সাইকেল চালানো শিখাবি? চান্দু তো খুব অবাক, রায়না আপা বলে কি, মেয়েরা আবার সাইকেল শিখে নাকি? কিন্তু না বলবে সে সাহসও নেই, হাজার হোক রায়না আপা ওকে বলেছে, চান্দু রাজি হয়ে গেলো, কিন্তু কোন সাইকেল দিয়ে শিখবে, চান্দু তো ওর বাবার বড় সাইকেলটা সিটে বসে পেডেলে পা যায় না বলে সিটে না বসে হাফ পেডেল করে চালায়। মাথা চুলকে সমস্যাটার কথা বলতেই রায়না বলল কোন সমস্যা নাই, আমাকে তোর চায়না ফনিক্স দিয়েই শেখা। যেই কথা সেই কাজ, কলেজ থেকে এসে রায়না বিকেলে চান্দুর কাছে সাইকেল চালানো শিখতে লাগল। প্রথম প্রথম কয়েকবার পড়ে গেলেও মোটামুটি তিন দিনের মাথায় রায়না সাইকেল চালানো আয়ত্ত করে ফেলল। রাস্তায় চালানোর সাহস করার জন্য প্রতিদিন নিয়ম করে প্রাকটিস করে পনের দিনের মাথায় ভোরবেলা ভাইয়ার সাইকেল নিয়ে বাসা থেকে বের হল, উদ্দেশ্য বন্ধুদের চমকে দেয়া। মামুন, রনি আর কামরুল জানে যেহেতু হেঁটে যেতে হয় তাই রায়না ওদের থেকে তিরিশ মিনিট আগে বাসা থেকে বের হয়। ভোরবেলায় ফাঁকা রাস্তায় তিন বন্ধু পাশাপাশি সাইকেল চালাচ্ছে, হঠাত করে ওদের অবাক করে দিয়ে পাশ কাটিয়ে রায়না সাইসাই করে সামনে চলে গেল। ঘটনার হতভম্বতায় মামুন সাইকেলসহ পড়েই গেল। এখন সামারে ছেলের পাশাপাশি সাইকেল চালানোর সময় রায়নার মনে হয় ভাগ্যিস ওর বন্ধুরা হাসাহাসি করেছিল আর জেদ করে ও মফস্বল শহরের মেয়ে হয়েও সাইকেল চালাতে শিখেছিল।
ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা শেষে সবাই ভর্তি যুদ্ধের প্রিপারেশন নিতে শুরু করে দিল। বন্ধুদের সবাই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার ইচ্ছা কিন্তু রায়না বাবার ইচ্ছা অনুযায়ী ডাক্তার হতে চায়। চার বন্ধুই দারুন ভালো নম্বর পেয়ে পাস করল, ভর্তি যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত মামুন বুয়েট, কামরুল রাজশাহী বিআইটি, রনি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতি আর রায়না ঢাকা মেডিকেল পেল। কামরুলের জন্য ওদের খুব মন খারাপ, ক্লাস ওয়ান থেকে ওরা এক সঙ্গে, এখন কামরুল রাজশাহীতে থাকবে, ছুটিছাটা ছাড়া ওর সঙ্গে আগের মতো আর যখনতখন দেখা হবে না। শহর ছাড়ার আগের দিন বিকেলে বন্ধুরা একসঙ্গে অনেক্ষন আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরল। পরেরদিন ভোরবেলা ওরা রওনা হবে। কামরুল যাচ্ছে ট্রেনে আর মামুন, রনি, রায়না শ্যামলী পরিবহনে।
রায়নাকে বাবা নিয়ে এসেছে ঢাকায়, ওর দুই ভাইই ঢাকায় থাকে। বড় ভাই গতবছর বুয়েট থেকে পাশ করে বেরিয়েছে, একটা স্কলারশিপ নিয়ে জাপান যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছে, আর ছোট ভাই বুয়েটের শেষ বর্ষের ছাত্র। ঢাকায় পৌঁছে সেদিনই বাবা ওর ভর্তির সব ঝামেলা শেষ করে রাতের বাসেই ফিরে যাবে। শুধু ব্যাংক একাউন্টটা করা হল না, বিকেলে নীলক্ষেতে সবাই মিলে চা খেতেখেতে ঠিক করল ওরা বন্ধুরা মিলে আগামীকাল টিএসসির জনতা ব্যাংক শাখায় একাউন্ট খুলবে। আর বাচ্চারা যেহেতু ছোটবেলার বন্ধু ওদের গার্জিয়ানরা জানে এক সঙ্গে ওরা এই কাজটা করতে পারবে। পরেরদিন সকাল দশটায় ওরা ওদের ভর্তির রসিদ আর দুই কপি ছবি নিয়ে টিএসসির জনতা ব্যাংক শাখায় একাউন্ট খুলতে গেল। ব্যাংকে ঢুকে কার সঙ্গে কথা বলবে ঠিক করে উঠার আগেই হাসিমুখে ওদের দিকে এক অফিসার এগিয়ে এল। পাক্কা পাঁচ ফুট দশ ইঞ্চি উচ্চতার জোড়া ভুরু আর পরিপাটি করে আঁচড়ানো একমাথা ঝাঁকড়া চুলের অধিকারী অফিসার নিজের পরিচয় দিয়ে বলল আমি রায়হান কবির, সিনিয়ার অফিসার, আপনাদের কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
চলবে…
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..