বিচারক

সুদীপ ঘোষাল
অণুগল্প
Bengali
বিচারক

রোজকার সূর্য ওঠার মত বেলি ভোরে উঠে দরজায় সামনে জল দেয়,ঝাঁট দেয়, ফুল তোলে। তারপর চা ফোটে। শৃঙ্খল আর শৃঙ্খলা শব্দদুটি বড় দায়ীত্বের কাছাকাছি। ফুল ফোটে,সূর্য ওঠে এদেরও বোধহয় নিয়মের শৃঙ্খল আছে।যদি রাতে সূর্য ওঠে আর দিনে চাঁদ তাহলে কী দোষ হত।উত্তর খোঁজে বেলি।এখানে তার শৃঙ্খল নেই, কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

সে ভাবে,যে মেয়েটি,বাবা মা কে নিজের শ্রদ্ধা উজাড় করে দিয়েছিলো, সে  আলাদা করে ঈশ্বর চেনে না, আলোকিত পূর্ণিমার মত উজ্জ্বল দুটি চোখে
মা বাবাকে দেখতো, তারপর সেবাব্রত তার কাছে  আনন্দময়…।তারপর সে এক আলোর দূত হলো।অথচ দেবতা বলতে সে বোঝে মানুষ
জোছনার মত উৎসারিত আলো তার মুখমন্ডলে
মানুষ তাকে মানুষ বলছে না।দেবতার আসনে বসেও সে দেবদেবী বোঝে না
ও বোঝে মানুষ,প্রাণী,কীটপতঙ্গ আর নির্জন শিশিরের শিকল…।
তাচ্ছিল্যের হাওয়ায় ট্রেনে, বাসে বিকোয় দু একটি জীবন

পোলিও রোগী, অন্ধ, পাগল চটের চুলের রাশি। তবু ওদের দেহে আছে যোনী।হাড় কংকালসার দেহে ফুটে ওঠে কামের গভীরতা।ফোটোগ্রাফার ছবি তোলে আন্তর্জাতিক নামের লোভে
পুরুষ সে তো শাসক, দেবদূত। অন্ধকার আলোছায়া ছবি দেখে, রক্তমাখা যৌন আনন্দ।লাখ লাখ অর্থে বিকোয় অপরিণত উপচে পড়া পেটের উদ্দিপনার ছবি। শাশ্বত কাল প্রহর গোণে, বিবেক নিদ্রায় অবতীর্ণ।মূঢ সংসার, খিদের পৃথিবী মৃত্যু মাখে। বিষাদ দুনিয়া জীবনের খোঁজে। মৃত্যুকে ছবি করে রাখে…।
তারপর একদিন বেলি ধর্ষিতা হয়।সে ধোঁয়ার মত বেঁকে বেঁকে সমাজকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে।বিচারক হার মানে।ল্যাংটা সমাজের মুখোশ খুলে যায় নিমেষে।

সুদীপ ঘোষাল। গল্পকার। জন্ম ভারতের পশ্চিমব্ঙ্গরাজ্যের কেতুগ্রামের পুরুলিয়া গ্রামে। প্রকাশিত বই: 'মিলনের পথে' (উপন্যাস)। এছাড়াও কয়েকটি গল্প ও কবিতার বই আছে।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

দৌড়

দৌড়

একবার এক দৌড় প্রতিযোগিতায় কেনিয়ার হয়ে দৌড়চ্ছিলেন আবেল মুতাই। খুবই ভালো দৌড়াচ্ছিলেন তিনি। সবাইকে পেছনে…..