বিষাক্ত বাতাস

রুদ্র সান্যাল
কবিতা
Bengali
বিষাক্ত বাতাস

শুধু তোমার জন্যে

তোমার আশ্চর্য চেহারায় আমি বিস্মিত।
পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণার জলের শীতল স্পর্শ,
তোমাকে আলোড়িত করে না আর…

ভেসে যাওয়া স্বপ্ন গুলোর মাঝে বুদবুদের মতো,
অতীতের ছায়া চোরাবালির গভীরে,
মৃত্যু যন্ত্রনায় করে তীব্র আর্তনাদ!

তোমার সুঘ্রাণ অস্তমিত সূর্যের টানে,
ডেকে আনে এই মৃত্যু উপত্যকায় বারবার।
ফিরে ফিরে ঋতু বদলের মতো,

বদলায় তোমার অভিসার…

এভাবে হয় না, এভাবে কখনোই হয় না।
তাও ফিরে ফিরে আসি শুধু তোমার কাছেই…
শুধু তোমার জন্যেই…

 

বিষাক্ত বাতাস

মনের গভীরে এক নিশাচর প্রাণ।
বারবার তার করুন আর্তনাদ,
মনকে করে তোলে এক বিষণ্ণ হতাশ।
কালচে রক্তের ছাপ পড়ে থাকে,
বিষাক্ত বাতাসে।

উদাসী মন উড়ে চলে যায়।
বাদুড়ের দল খেলা করে গভীর অন্ধকারে।
রক্তের রঙ কালচে নীল।
তাজা রক্তের ছাপ তাই আজ কালচে।
মনের গভীরে তাই কুডাক ডাকে।

বিষাক্ত মন তাই উরু উরু ভাব।
কালচে সবুজ কুয়াশায় ঢাকা,
এক অজানা পৃথিবী।
এসিড বৃষ্টির ফোঁটা ফোঁটা স্পর্শ,
পুড়িয়ে দেয় মানবিক আওয়াজ।

যন্ত্রণার শেষ প্রহর আগত।
ক্যান্সারে আক্রান্ত সমাজ।
বিদ্রোহী করে তোলে যান্ত্রিক সভ্যতার
পদচিহ্ন কে।
বিষাক্ত সমাজ আক্রান্ত তার নিজের ক্ষতে।

কঠিন কর্কট রোগ।
ক্ষয় করে তোলে সভ্যতার অগ্রগতিকে।
ধীরে ধীরে কঠিন মৃত্যুর সাথে,
সংগ্রামরত মানবিক বিবেক।
জরাজীর্ণ বাতাসে অজীর্ণ সমাজ।

গরম বাতাস তাই পুড়িয়ে দেয় কোমল
ভালোবাসার নরম অনুভূতিকে।
তুলতুলে মন আজ বিষাক্ত এসিড।
কালচে ধোঁয়ায় তাই পৃথিবী আজ ঢাকা পড়ে যায়।
বিষাক্ত রক্তের তাই এতো চাহিদা।

গাঢ় নীলে ফিকে হয়ে যায় উদাসী বাতাস।
পাখিদের দলে তাই ভিড় করে শকুনেরা।
কালচে লাশের ভিড়ে খেলা করে কৃমির দল।
বিষাক্ত বাতাস তাই শ্বাসরুদ্ধ।
ফুলেদের হাসি আজ স্তব্ধ।

পুঁজে ভরা ক্ষত চিহ্ন নিয়ে বেঁচে থাকে তাই
যান্ত্রিক সভ্যতা।

 

স্মৃতির ধুপকাঠি

স্মৃতির ধুপকাঠির গন্ধে,
আজ চারিদিক মধুময়।
লুকানো যত সব স্মৃতি,বিস্মৃতির আড়াল থেকে,
বেরিয়ে এসেছে আজ।
ধুপ ধুনো দিয়ে পূজা অর্চনায়,
ভেসে যায় স্মৃতিদের দল।

আকাশ বাতাস জুড়ে, শুনি শঙ্খ ধ্বনি।
পুরানো স্মৃতিরা আজ জেগেছে।
বৃষ্টি মেঘের ঘনঘটায়,
কিছু স্মৃতি ঘুরপাক খায় মনের আঙিনায়।
ধুপের গন্ধে, এক অদ্ভুত অনুভূতি।
এক মিষ্টি অনুরণন জাগিয়ে তোলে।

সব স্মৃতি বেদনার নয় …

দীর্ঘশ্বাস

সেদিন সন্ধ্যের আকাশের রঙ ছিল ফ্যাকাশে,
চাঁদ উঠেছিলো সোনালী গোল থালার মতো।
ঝকমকে তারারা খেলা করে মিষ্টি হাসি দিয়ে,
সেই সোনালী থালার আশেপাশে।

দূরে নদী পথে বয়ে চলে যায় একটা ছোট নৌকা।
কোথায় কতো দূরে যাবে, কে তার খোঁজ নেয়!
ঈশান কোণে অল্প স্বল্প মেঘ উঁকিঝুঁকি দেয়।
তারারা সেদিকে আড় চোখে দেখতে থাকে।

মৃদুমন্দ বাতাস বইতে থাকে এপাশে ওপাশে।
একলা চাঁদ দেখতে থাকে তারাদের ছটফটানি।
পূর্ণিমার ঝলসানো রুটির তেজে
আধমড়া হয়ে যায় রাতের পরীরা!

ভিজে যাওয়া মেঘেরা দল বেঁধে ক্রমশ
প্রকাশিত হয় ধীরে ধীরে। রাত গভীর হয়।
গভীর দীর্ঘশ্বাসে রাত্রি ক্রমশ ভারী হতে থাকে।
বৃষ্টি আড়মোড়া ভেঙে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মগ্ন।

নিঃসঙ্গ প্যাঁচা বসে থাকে গুটিশুটি মেরে।
মেঘেদের দাপাদাপি শুরু হয় আকাশের মাঝে।
ফ্যাকাশে আকাশ আরো বেশি ম্লান হয়ে যায়।
তারাদের চঞ্চলতা বেড়ে যায় দ্রুত।
ঝড় আসছে…

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ