বিষাদের আনন্দ

শাহানাজ ইয়াসমিন
কবিতা
Bengali
বিষাদের আনন্দ

বিষাদের আনন্দ

ঈদ মানে আনন্দ?
কিন্তু আমার কাছে মনে হয়
ঈদ মানে নিরানন্দ!

কারণ, এ বিশেষ দিনে
বিশেষভাবে মন পুড়ে
শুধু তাদের জন্য!

যে ছোট্ট শিশুটি রাজপথের
ফুটপাতে পড়ে থাকে!
যে বৃদ্ধ একমুঠো ভাত খেয়ে
বেঁচে থাকার জন্য ছোট বড়ো
সকলের কাছে নিঃসঙ্কোচে
হাত পাতে!

যে চঞ্চল ছেলেটি
অর্থের অভাবে প্রিয়জনের কাছে
পৌছুতে  না পেরে অচঞ্চল হয়ে পড়ে!
ভালো থাকতে পারি না তাদের জন্য
শধু তাদের জন্য!

 

ক্ষত থেকে অক্ষত

ক্ষতগুলো দগদগে ঘাঁ হয়েছে!
শুকনোর যোগ্য না হয়ে দিনে দিনে
অযোগ্য হয়ে পড়ছে!
আর তুমি কীনা উপদেশের কথা বলছো !
হাঃ হাঃ হাঃ
আদেশ উপদেশে অনুরোধ উপরোধ এমনকী
অনুযোগও ধরে রাখতে রাখতে আজ আমি
বড্ড ক্লান্ত!
সাধ্যরে অসাধ্য করে তুলেছে ধের্য!
মনেকরা মনেহওয়া সন্দেহ পরস্পর ভুল বোঝা
এই মুলত ইস্যু!
যা সহজেই ওভারকাম করা যেতো
তাই বলছো তো?
হাঃ হাঃ
মাথাটা একেবারেই গেছে তোমার!
এতেদিন ঠিক ছিলো আজ একেবারেই নষ্ট!
দিনেরপরদিন দর্শকপ্রিয়তা পাবার জন্য
যত্ন করে যে পোস্টারগুলো ওয়ালে লাগাতে!
ওতে আমার বেশ গর্ব হতো।
কারণ কী জানো তো!
ওসব দেখে এখন ঘোর অন্ধকারে যেমন
পড়তে শিখেছি!
ঠিক তেমনি শক্ত হাতে তোমায় উত্তরপত্র
লিখতে শিখেছি !
আজ আরও একটি কথা মনে পড়ছে
কোনো একদিন কবিতার দু’টো লাইন
লিখেছিলাম
ফিরে তোমাকে আসতেই হবে
কল্পনায় স্বপ্নে বা বাস্তবে!
আজ সে লাইন দুটো কানায় কানায়
পূর্ণতা পেয়েছে!
মাঝখানে কিছু মানুষ সুযোগ নিয়েছে ঠিকই
যা ছিলো তোমারই গড়া!
ভালোই করেছ!
ওতে আমারও বেশ উপকার হয়েছে।
চোখের মাঝে যে সাগর ছিলো
জোয়ার এলে তা অথৈ সাগরে পরিণত হয়ে
সামালে বেসামাল হতো !
আজ তা শুকিয়ে খরা মাঠ হয়েছে!
এখন বৃষ্টির অপেক্ষায় এই যুগোল চোখ শুধু
ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে থাকে।

 

একলা আমি

আজও আমি একলা চলি তোমায় ভেবে
যত কোলাহল যত লোকের ভিড়েই আমি
যাই না কেন-
তবুও ভিতরে আমি একা!
বড্ড একা তোমায় ভেবে!

বুকের ভেতরে মনকে মন বসিয়ে দেওয়া কষ্টের
ভারি বোঝা বয়ে বেড়াতে-
ভীষণ কষ্ট হয়!
হাঁপিয়ে যাই কখনো কখনো!
সইতে না পেরে শাসন বারণহীন চোখ দুটো
অসহায়ের মতো লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদে ফেলে!

কপোল গড়িয়ে যখন ফোঁটা ফোঁটা জল বুকের পরে
পায়ের আঙ্গুলের ডগায় পড়ে-
দখিনা বাতাস তখন আলতো স্পর্শে মুছে দিয়ে বলে-
কাঁদ আরো বেশীকরে কাঁদ
হালকা করো নিজেকে!

 

মোহিনী

মোহিন মোহিনী কই গেলে তুমি?
ডাকছো কেন? এই যে আমি এখানে।
আজি ঝর ঝর মুখর বাদরদিনে।
কোথায়?
এই যে
আজি ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে
আহ্ বলো না কোথায়? শুধু এইযে এইযে
বলছো!
তোমার জ্বালায় গানটাও ভালোভাবে গাইতে
পারছিনে গো!
আমি ছাঁদে চলে এসো একসাথে বৃষ্টিতে ভিজি
মানে কী!
ঠাণ্ডা লাগবে জ্বর এলে তো আমাকেই একা সব
সামলাতে হবে!
সামলাবে সে তোমার দায়িত্ব।
বারে! তুমি ইচ্ছে করেই ভিজবে জ্বর ডেকে আনবে
আর আমি কীনা
এটা কিন্তু ঠিক না।
তুমি এখন অনেক অবাধ্য হও
আমার সত্যিই খুব কষ্ট লাগে!
আহ্ এমন করে বলছো কেন?
তুমি কবে থেকে এমন বেরসিক হলে?
আর তুমি যখন অবাধ্য হও!
তখন খেয়াল থাকেনা বুঝি?
কতোটা অবাধ্য হও!
আমারও তখন কষ্ট লাগে বুঝলো?
তুমি তো কখনো বলনি তোমার কষ্ট লাগে!
বলবো কেন?
আমায় কষ্ট দিয়ে তো তুমি সুখ নাও, শান্তি নাও!
আমায় কষ্ট দিয়ে শান্তভাবে যদি একবার বলতে
মোহিনী কষ্ট পেয়েছে?
তাহলে হয়তে অনেক খানি কষ্ট কমে যেত!
কই একবারও তো বলনি!
যাক এমন রোমান্টিক দিনে
আমি তোমার সাথে ঝগড়া করতে চাইছিনে!
আমায় একটু ভিজতে দাও প্লিজ!
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে
জানিনে জানিনে
আচ্ছা থাম থাম থাম
আমি গাইছি তুমি নাচো
এবার হলো তো?
সত্যিই তুমি গাইবে?
বেশতো গাওনা গো!
গাইছি তবে
জানি নে জানি নে কিছুতে কেন যে মন লাগে না
ঝর ঝর মুখর বাদরদিনে।
আজি ঝরা ঝর মুখর বাদর দিনে।

তুমি

কেন মিছে এলোমেলা ভাবনা তোমার!
ভেবনা এমন করে।
আমার হৃদয়ে যার ছায়া পড়েছে
সোতা তুমি!

যার জন্য কবিতায় পড়ে থাকি
গভীর রাতে নির্ঘুম চোখে নীল আকাশে
জোছনার দিকে তাকিয়ে দেখি
সেতো তুমি!

অন্তনয়নে তাকিয়ে দেখো
যার প্রতিচ্ছবি নিয়ে নির্জনে
প্রতিটিক্ষণ মুহুর্তে অপেক্ষায় প্রহর গুনি।
চুম্বনে চুম্বনে যার ললাটে আঁকতে থাকি।
সে তো তুমি!

যার হতাশাগ্রস্থ মুখখানা দেখে
দু’হাত বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরে হৃদয় দিয়ে
অনুভব করি!
যার কণ্ঠে বুকের ভেতরে তরঙ্গ তৈরি করে
ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত শরীরে!
আমি তা অনুভব করি।
সেইতো তুমি!

শাহানাজ ইয়াসমিন। লেখক। জন্ম বাংলাদেশের রংপুর জেলায়, পেশাগত সূত্রে ঢাকায় বাস। তিনি অংশুমালী'র বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকাশিত বই: 'গহিনের প্রেম' (কাব্যগ্রন্থ, ২০১৭),  'মেঘলা আকাশ' (উপন্যাস, ২০১৮), 'সমুদ্রের তরি' (উপন্যাস, ২০১৯), 'ভালোবাসা ছুঁয়ে গেলে' (উপন্যাস, ২০২০)।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ

ঝরা পাতা

ঝরা পাতা

  চারিদিকে কোলাহল শূণ্যতা করেছে গ্রাস, বেদনা বিধুর অতৃপ্ত বাসনায় হাহাকার, অজান্তে নীরবতা তোমার স্পর্শে…..