ঝরা শিউলি
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
রাতুল আজ চা বিস্কুট খেয়ে সাতটাতেই বেরিয়ে গেলো। জলখাবার বাইরে খেয়ে নেবে। টিফিন তৈরির ঝামেলা নেই দেখে পর্ণা ঘর ঝাড়াঝাড়িতে মন দিলো। তাথৈকে ছাতু মুড়ি মেখে দিয়ে নিজেও ছাতু মুড়ি খেয়ে ছাদের ঘরে উঠে এলো পর্ণা। ছাদের ঘর, ঠাকুর ঘর, সিঁড়ির ঝুল ঝেড়ে ঝাঁট দিয়ে নেমে এলো দোতলায়। সেখানেও ঝুল ঝেড়ে ঝাঁট দিয়ে একতলায় নামলো। একতলাটাও ঝাড়াঝাড়ি করে পরিষ্কার করে নেবে ভাবছিলো এমন সময় কলিং বেলের ক্রি-রি-ইং আওয়াজ জানান দিলো কেউ এসেছে। পর্ণার মাথা গায়ে ঝুলের গুঁড়ো ঘামের গন্ধ গরমে একেবারে প্যাচপ্যাচ করছে। ” কে এলে রে বাবা ” বিড়বিড় করতে করতে দরজা খুলে দেখে মিলন কাকুর ছেলে টোটন একগাল হেসে দাঁড়িয়ে আছে।
” রাতুল নেই বৌদি? ”
” না গো, ও তো সেই সকালেই বেরিয়ে গেছে। ”
” যুব সংঘে রেশন কার্ড আধার কার্ড লিঙ্ক হচ্ছে, ফাঁকা আছে যাবেনা? ”
পর্ণা ভারি মুস্কিলে পড়লো। এখন বাজে পৌনে বারোটা। ঘর পরিষ্কার করতে করতে ভাতটা হয়ে গেছে। ডিম আলুটাও সিদ্ধ করে রেখেছে। একতলাটা পরিষ্কার করে স্নান সেরে একটার সময় ডিমের ঝোল বসাবে ভেবেছিলো। দেড়টার আগে তো কেউ খায়না। কিন্তু এখন বেরোতে হলে রান্না হবে কখন। তাছাড়া যা নোংরা হয়ে আছে সে স্নান না করে বেরোনোই যাবেনা। এরমধ্যে আবার মাঝেমাঝেই বৃষ্টি নামছে। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে টোটনকে বললো,
” তুমি বরং ওকে ফোন করে বলে দাও, যদি কাছাকাছি থাকে চলে আসবে, আমি দেখছি কি করি। ”
“আচ্ছা ” বলে টোটন চলে গেলো। পর্ণা দরজা বন্ধ করলো। মা এতক্ষণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব শুনছিলো। পর্ণা বললো,
” তুমি বরং তোমার কার্ডটা নিয়ে চলে যাও, আমি ততক্ষণে স্নান সেরে নিই। ”
মা তাড়াতাড়ি শাড়ী পড়ে কার্ড আর ছাতা বগলদাবা করে বেরিয়ে গেলো। দুদিকের দরজায় তালা লাগিয়ে তাথৈকে কার্টুন চালিয়ে বসালো পর্ণা।
” আমি স্নানে যাচ্ছি, দিদুন এলে আমাকে বলবি, আমি তালা খুলে দেবো। ”
রিমোট হাতে ঘাড় নেড়ে কার্টুনে মন দিলো তাথৈ।
মা ফিরে আসার আগেই পর্ণা স্নান সেরে বেরিয়ে এসে ড্রায়ারে চুল শুকোতে শুকোতে রাতুলকে ফোন করে। রাতুল বললো সে মিনিট কুড়ির মধ্যেই আসছে, পর্ণা যেন তৈরি থাকে। মা ফিরে এলো। পর্ণা চুল বেঁধে জামাটা পড়তে না পড়তেই কলিং বেল বেজে উঠলো। দরজা খুলে দুজনের কার্ড দুটো রাতুলের হাতে দিয়ে জুতো পরতে পড়তে মা কে বললো,
” তুমি বরং একটু ঘন করে ডাল সিদ্ধ বসিয়ে দাও, আজ ওই সিদ্ধ দিয়েই খেতে হবে। ”
“সে চিন্তা করিসনা, তোরা যা তো। ফাঁকাই আছে, আমি এদিকে দেখছি। ”
মিনিট দুয়েকের মধ্যেই দুজনে এসে পৌঁছালো পাড়ার ক্লাবে। চার পাঁচজনের পরে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লো। দশ মিনিটের মধ্যেই কাজ শেষ। আকাশ কালো হয়ে এসেছে ততক্ষণে। পর্ণা গজগজ করে,
“আবার আসবে, তাড়াতাড়ি চ, নইলে স্নান করে উঠে আবার ভিজতে হবে।
” ভিজবি? ”
চোখ নাচায় রাতুল।
” চল ভিজি, অনেকদিন ভিজিনি। ”
” খুব ক্ষিদে পেয়ে গেছে, সকাল থেকে ঝাড়াঝাড়ি করে পেটে ছুঁচো দৌড়চ্ছে যে। ”
” মা আর তাথৈকে খেয়ে নিতে বল, ক্ষিদে তো আমারও পেয়েছে, আধঘন্টা পরে খাবোখন, চ না ভিজি। ”
মা কে ফোন করে পর্ণা বাইকে বসে। ততক্ষণে টুপটাপ করে বৃষ্টি এসে পড়েছে। রাতুল বাড়ির উল্টো রাস্তায় বাইক ঘোরায়। আধা শহরগুলো এখনো পুরোপুরি ইঁটের খাঁচায় ভরে যায়নি। নাগরিক কোলাহল ছেড়ে কিছুটা ভিতরে গেলেই এখনো চাষের জমি আর ফাঁকা মাঠ চোখে পড়ে। মাঝখান দিয়ে চলে গেছে পাকা রাস্তা। রাতুল ধীর গতিতে বাইক চালাচ্ছে। বৃষ্টি ঝেঁপে আসে। পর্ণা রাতুলের পিঠে এলিয়ে পড়ে। পাকা রাস্তা শেষ হয়ে মোরার রাস্তা শুরু হয়। রাতুল গলা ছেড়ে গান ধরে
” রিমঝিম গিরে শাওন, সুলগ সুলগ যায়ে মন, ভিগে আজ ইস মওসম মে, লাগে ক্যায়সে ইয়ে অগন… ”
পর্না চোখ বন্ধ করে এলিয়ে থাকে। কতদিন পর রাতুল গাইলো। গলাটা মন্দ নয়। আজকাল গাওয়ার সময় পায়না। অঝোর ধারায় বৃষ্টি ঝরে। ভিজে যায় নাগরিক চৌখপ। বারবার ভিজে যায় নামতার দাবা ছক।
এক মেয়েটা মুঠো মুঠো জ্যোৎস্না কুড়িয়ে অপরের মুখমন্ডলে চাঁদ দেখত। মানুষের উপকার করার ক্ষেত্রে,…..
শেষ থেকে শুরু। আমি রজকিনী রামী,ধোপার বংশে জন্ম আমার।ঘাটে সখিদের সঙ্গে কাপড় কাচি। একাজটা আমি…..
মালঞ্চার পথে ভোরবেলা। সূর্য সবে উঠছিল। বৈশালী দূর থেকে দেখতে পেল,বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ডে বালুরঘাটের দিকে মুখ…..
আমার বাবা ছিলেন অত্যন্ত সাহসী একজন লড়াকু মনের মানুষ।শত অভাব অভিযোগেও তাকে কোনোদিন ভেঙ্গে…..