প্রক্সি
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
অন্ধকার ঘর!
সবে গ্রীষ্মের দ্বিতীয় দিন বিধায় লোডশেডিঙের কোনোরূপ প্রস্তুতি না থাকায় মোমবাতির অভাবে মোবাইল ফোনের টর্চ জ্বলছে, টেবিলের উপর৷ স্বল্পমূল্যের ফোন; হয়তো সে কারণেই টর্চের আলো বড়জোর জোনাকির আলোর চাইতে খানিকটা বেশি সার্ভিস দিচ্ছে৷ দামি একটি ফোনও সাথে আছে, তারপরেও সেটার টর্চ না জ্বালানোর কারণটা এ মুহূর্তে অস্পষ্ট৷
ফোনটর্চের আলো সরাসরি গিয়ে পড়েছে মাইশার মুখের ওপর৷ সে বললো, “চোখে লাগছে তো৷ সরান না!” সজীব কিছুটা বিব্রত হলো যেন; কাঁপাকাঁপা হাতে চট করে আলোটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিল৷
এই মুহূর্তে মোটামুটি একটি ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে; তবে পরিস্থিতি যা, তাতে করে যে কোনো সময় পরিবেশটা রোম্যান্টিকও হয়ে উঠতে পারে৷ সজীব ও মাইশা কারো এক্সপ্রেশানেই অবশ্য বোঝার উপায় নেই আসলে ঘটনাটা কোনদিকে প্রবাহিত হতে যাচ্ছে৷
আজকে এই যে পরিবেশটা দাঁড়িয়েছে, এর পেছনে মূল প্রভাবক হচ্ছে একটি স্বপ্ন৷ স্বপ্নটি এতটা যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, এর প্রধান কারণ হলো স্বপ্নটি ভোরের দিকে দেখা৷ ভোররাতের স্বপ্ন না-কি সত্যি হয়— এ কথায় মাইশার পরিপূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে৷ বিশ্বাস করার অনেকগুলো কারণও অবশ্য আছে; শুধু শুধুই সে কিছু বিশ্বাস করে না৷ এর আগে ভোররাতের দিকে দেখা তার বেশ কিছু স্বপ্ন বাস্তবে ঘটেছে; হুবহু যে ঘটেছে তা নয়, তবে কোনো না কোনোভাবে স্বপ্নের সাথে সম্পর্ক রেখেই ঘটেছে৷ এই যেমন, মাত্র কিছুদিন আগেই, সে নিজেকে নিয়ে একটি স্বপ্ন দেখলো; দেখলো, সাদা কাফন পরে কবরস্থানের আশপাশ দিয়ে সে হেঁটে বেড়াচ্ছে৷ সকালে ঘুম ভেঙে ঘর থেকে বের হতেই সে হতভম্ব হয়ে গেল, তার পোষা এলসেশিয়ানটি পড়ে আছে, মৃত, মেঝেতে৷
এই তো দুদিন আগেও একটা স্বপ্ন সত্যি হয়েছে৷ স্বপ্নে সে দেখলো, সিলিং থেকে ফ্যানটা খুলে তার গায়ের উপর এসে পড়েছে; এই স্বপ্নটা খুব বাজেভাবে ফলে গেল৷ কলেজ থেকে রিকশা করে ফিরছে৷ রাস্তার পাশেই একটি বিল্ডিঙের কন্সট্রাকশানের কাজ চলছে; হুট করে একগাদা টুকরো টুকরো ভেজা সিমেন্ট এসে পড়লো তার রিকশায়, রিকশায় মানে, যেহেতু হুড খোলা ছিল, পুরোটা তার গায়ে এসে পড়ে এক্কেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা৷ বাসায় ফিরে চুলের পেছনে সে প্রায় অর্ধকৌটা শ্যাম্পু খরচ করে ফেললো৷
স্বপ্নে মাইশার বিশ্বাস থাকলেও সজীব কিন্তু বিপরীত৷ সে কোনো রকম অলৌকিকতায় বিশ্বাস করে না, স্বপ্নে তো নিশ্চয়ই নয়৷ কিন্তু তাতে কী, মাইশা তো বিশ্বাস করে!
স্বপ্নটি দেখেছে মূলত সজীব, কিন্তু স্বপ্নের কেন্দ্রীয় চরিত্রে মাইশা৷ সজীব মাইশাকে স্বপ্নের কথা ইতোমধ্যেই জানিয়েছে; কিন্তু অসংখ্যবার জিজ্ঞেস করা সত্ত্বেও স্বপ্নটি কী সেটা সজীবের মুখ থেকে বের করা যায়নি৷ অগত্যা মাইশার আগমন, স্বপ্নটা তাকে শুনতেই হবে; যদি খারাপ স্বপ্ন হয়ে থাকে, তাহলে সেটা বাস্তবে ঘটার আগেই ব্যবস্থা নিতে হবে৷ এমনিতে সজীব জানিয়েছে যে স্বপ্নটি বিব্রতকর, কোনোভাবেই বলার মতো নয়; তাতে কী, আমাদের মাইশা কোনোভাবেই ছাড়ার পাত্র নয়৷
সজীব সম্ভবত মাইশাকে কিছুটা পছন্দ করে; হয়তো সে কারণেই টর্চের আলো তার মুখের ওপর ফেলেছিল৷ তবে নিশ্চিতভাবে বলাও মুশকিল; কারণ মাইশাকে এতটাই সুন্দর দেখাচ্ছে যে, পৃথিবীর কোনো পুরুষই এই অন্ধকারে তার মুখ থেকে চোখ ফেরাতে পারবে না; সেখানে সজীব তো সজীব৷ সজীব সম্পর্কে এভাবে বলছি তার কারণ, সে কখনোই কোনো মেয়ের দিকে সরাসরি তাকায় না, বিব্রতবোধ করে৷ জীবনে এই প্রথম একটি মেয়ের দিকে সে সরাসরি তাকিয়েছে; এবং তাকানোমাত্রই সে উপলব্ধি করেছে যে পৃথিবীতে এমন সুন্দর আর কিছু সে এ জীবনে দেখেনি৷ কিন্তু, হঠাৎই এর মধ্যে বাধ সাধলো লোডশেডিং; এখন এই অন্ধকারে মাইশাকে ঠিকভাবে দেখাও যাচ্ছে না৷
কিছুক্ষণ আগেও যেখানে দুজনের মুখে কথার তুবড়ি ছুটছিল, ঘরটা অন্ধকার হয়ে যাবার পরপরই সব কেমন নিশ্চুপ-নিস্তব্ধ হয়ে গেল; একেবারে নিশ্ছিদ্র নীরবতা যাকে বলে৷ আওয়াজ বলতে শুধু দুজনের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওঠানামার আওয়াজ৷ হ্যাঁ, শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত ওঠানামা করছে, বিশেষত সজীবের৷ একই সোফায় তার ডানপাশে মাইশা, এতটা কাছ থেকে কোনো মেয়েকে সজীব অনুভব করেনি আগে; মাইশার হাতের একেকটি লোমের নড়াচড়ায় এমন বিশাল হাওয়া খেলে যাচ্ছে ঘরময় যে, তার সমস্ত শরীরজুড়ে কম্পন বয়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে, কাঁটা দিয়ে যাচ্ছে হাতে-মুখে-বুকে৷ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যটি এই মুহূর্তে চাইলেই সে ছুঁয়ে দিতে পারে; অথচ মাত্র চার আঙুলের ব্যবধান কী কঠিন এক দুর্ভেদ্য দেয়াল! এ দেয়াল ভাঙবে কীভাবে? একটা মিরাকল দরকার!
২.
মিরাকল ঘটে গেল!
কোত্থেকে একটা ইঁদুর এসে খসখস শব্দ করতে করতে আলতো করে মাইশার পা স্পর্শ করে বেরিয়ে গেল৷ অন্ধকার ঘরে অশরীরি এক স্পর্শে সে চমকে উঠলো; ঘটনার আকস্মিকতায় চার আঙুলের ব্যবধান ছিন্নভিন্ন করে তার হাতটা এসে পড়লো সজীবের হাতের উপর৷ সাথে সাথে সমস্ত শরীরে শিহরণ, সজীবের; অনেকটা অবচেতনেই হাতটা শক্ত করে আলতো করে সে ধরে রাখলো, মাইশারও যেন এমন কোনো তাড়া নেই হাতটা ছাড়িয়ে নেবার৷ এক মুহূর্তেই বিপ্লব ঘটে গেল৷ মোবাইল ফোন সম্ভবত চার্জ না থাকায় বন্ধ হয়ে গেল হঠাৎ; প্রকৃতি কি বিশেষ কিছু চাচ্ছেন? এক কঠিন নীরবতায় মাইশা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে সজীবের নিঃশ্বাস; সে নিঃশ্বাস ছুঁয়ে গেল তার গাল৷ প্রচণ্ড অন্তর্গত উত্তেজনায় কেঁপে উঠছে পৃথিবী; স্লো মোশনে কারও ঠোঁট এগিয়ে আসছে কাছে, খুব কাছে৷ বুকের ধুকপুকে চমকে গেল বিদ্যুৎ, নিঃশ্বাসবায়ুতে বয়ে গেল কালবৈশাখী; শুধু দুটো হাতের মিলনে পৃথিবীর অন্ধকার রূপ নিলো এক দারুণ আলোকে৷
স্বপ্নটি শোনা হয়নি এখনো৷ কয়েক মুহূর্তের আলোড়নে কেটে গেল মিনিট পনেরো সময়— উত্তেজনায়, দ্বিধায়, হৃদয়কম্পনে৷ অন্ধকার ভেদ করে কেয়ারলেস হুইসপার— “স্বপ্নটা কী ছিলো?” গলা শুকিয়ে গেছে মাইশার; বার দুয়েক ঢোক গিলে নিলো সজীব৷ দুজনের একটি করে হাত এখনো স্বাধীন; হঠাৎ বৃষ্টি৷ মাইশার স্বাধীন হাতটি সজীবের পায়ের উপর, অক্টোপাসের আটটি পায়ের মতো আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরলো— “আজ থাক, অন্য কোনো দিন!”
“যদি আর কখনো এমন সন্ধ্যা না আসে?”
“আসবে, নিশ্চয়ই আসবে৷”
“সেদিন যদি অন্ধকার না থাকে? বৃষ্টি না আসে?”
“স্বপ্নটা বললেন না তো এখনো৷”
“এই তো স্বপ্ন৷”
“হুম, স্বপ্নের মতোই৷”
“স্বপ্নকে আটকে রাখতে নেই; ছেড়ে দিতে হয়৷”
“আজ থাক, অন্য কোনো….”
কথা শেষ হবার আগেই, সজীবের এক হাতে মাইশার হাত, অপর হাতের তর্জনি আটকে দিলো তার ঠোঁটের চলন— “কাল বলে কিছু কি আছে!”
ঠোঁট ছেড়ে সে হাত ছুঁয়ে দিল চুল-কপাল-চোখ; বাম গালে এসে নোঙর করলো সে স্পর্শ, বৃদ্ধাঙ্গুলি আলতো করে ছুঁয়ে দিতে থাকলো বাম থেকে ডানে৷
তার অপর হাতটি মাইশা তুলে নিল ডান গালের ওপর; সজীবের দুহাতের মধ্যে এখন একটি পরিপূর্ণ চাঁদ, সমস্ত চেতনাজুড়ে আলোর ঝলক দিতে থাকলো তার জ্যোৎস্না; অন্ধকার ঘরে এ এক অদ্ভুত আলোর নাচন, হৃদয়ে— “স্বপ্নটা সত্যি করি চলো!”
“কী ছিলো স্বপ্নটা?”
“এই তো স্বপ্ন!”
সজীবের নিরীহ ঠোঁট দুটো হঠাৎ মেতে উঠতে চায় দস্যিপনায়; মৃদু কম্পন খেলে যায় ঠোঁটে৷ তার ডান হাত কচ্ছপের গতিতে পেরিয়ে গেল কাঁধ, পিঠ; কোমরের পেছন থেকে তার হাত দুটো এক ঝটকায় কাছে টেনে নিলো মাইশার শরীর—
বুকের সাথে মিলে গেল বুক,
যেন এক দারুণ সুখের এক বড্ড অসুখ!
মূর্তিমান এক কবিতার স্পর্শে ঝিম ধরে গেল মস্তিষ্কে; আনন্দে-উত্তেজনায় চোখ দুটো বন্ধ হয়ে গেল মাইশার, শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে জাপটে ধরলো সজীবের পিঠ; আলতো ছুঁয়ে দিতে থাকলো ঘাড়-চুল-গাল— “আজ না হয় থাক!”
মুখের সে কথায় কিছুই এসে যায় না শরীরের; তার ক্ষীপ্রতা ক্রমেই বেড়ে উঠতে থাকে বৃষ্টির ক্রমবর্ধমান গতির সমানুপাতে৷ এই বুঝি ঘটে যাবে এক মহাপ্রলয়; চারটি স্তরে মিল যাবে ঠোঁট, দুটো নদী মিলেমিশে হয়ে যাবে একাকার৷
স্তব্ধতা ভেঙে হুট করে মোবাইলটা বেজে উঠল; কীভাবে? সেটা তো বন্ধ ছিলো!
৩.
মাইশার ঘুম ভেঙে গেল!
দারুণ উত্তেজক বিব্রতকর এক স্বপ্নের ক্লাইমেক্সে এসে তার স্বপ্নভঙ্গ হলো৷ কিছুটা ধাতস্থ হয়েই ক্যালেন্ডারের পাতায় তাকিয়ে দিনটি মিলিয়ে নিল; হ্যাঁ, আজ বৈশাখের দ্বিতীয় দিনই তো, স্বপ্নে যেমনটি ছিল! এমন একটি স্বপ্ন সে কেন দেখলো? প্রচণ্ড রকম দ্বিধা ও বিভ্রান্তিসমেত সজীবকে ফোন করতে গিয়েই মোবাইলে একটি মেসেজ দেখতে পেল; কাকতালীয়ভাবে সজীবের মেসেজ৷ যদিও মাইশা মনেপ্রাণে মানে, এটা কোনোভাবেই কাকতালীয় নয়; ভোররাতে দেখা তার স্বপ্ন কোনো না কোনোভাবে বাস্তবে ঘটবেই, কিছুটা এডিট করে হলেও ঘটবে৷
সজীবের মেসেজ: “তোমার কি হলুদ রঙের কোনো ড্রেস আছে?”
প্রশ্নটা বিভ্রান্তিকর; ফিরতি মেসেজে মাইশা জানালো: “আছে তো; কিন্তু কেন বলেন তো?”
“নাহ, কিছু না; এমনিতেই৷”
“না না, বলেন, প্লিজ৷”
“জীবনে প্রথমবারের মতো পরিচিত কোনো মেয়েকে আমি স্বপ্ন দেখেছি৷”
“এবং সেটা আমি?”
মাইশার বুক কেঁপে উঠলো৷
বললো, “কী দেখলেন স্বপ্নে?”
“উমহু, বলা যাবে না৷”
“অপ্রিয় কিছু?”
“অপ্রিয় নয় ঠিক৷”
“তো?”
“বিব্রতকর৷”
“হোক, স্বপ্নটা আমি শুনতে চাই৷”
“কিন্তু….”
“কোনো কিন্তু নয়, প্লিজ বলুন৷”
“এত অস্থির কেন হচ্ছো?”
“অস্থির হচ্ছি, কারণ স্বপ্ন আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷”
“দেখা হতে পারে?”
“নিশ্চয়ই পারে! কখন?”
পুরো ব্যাপারটা মাইশার মাথার মধ্যে তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে৷ প্রথমত, সজীবকে নিয়ে কী লজ্জাব্যঞ্জক একটা স্বপ্নই না সে দেখলো; দ্বিতীয়ত, সজীবও মাইশাকে স্বপ্নে দেখেছে— একই রাতে, একই সাথে; এবং তার ভাষায় স্বপ্নটি বিব্রতকর৷ আসলে হচ্ছেটা কী? একই সাথে দুটো মানুষ একে অপরকে নিয়ে একই ধরনের স্বপ্ন দেখতে পারে? এত দৃঢ় টেলিপ্যাথি বাস্তবে হয়?
সন্ধ্যার খানিকক্ষণ আগে দুজন মুখোমুখি; নদীর ধার, শুষ্ক বালুর চর৷ যেহেতু সকালে মেসেজে সজীব আগেভাগেই নিজে থেকেই ধরা দিয়েছে, মাইশা এখন পর্যন্ত ধরা দেয়নি৷
সাদা কামিজে মাইশাকে দেখাচ্ছে পরীর মতোন, সজীবের শরীরজুড়ে মেঘ-বসন৷ সে মেঘ ছড়িয়েছে আকাশেও, যে কোনো সময় বিদ্যুৎচমকে ফাঁটল ধরবে সেখানে৷ অন্ধকার হয়ে আসছে ক্রমেই৷
মহাকাশ দাপিয়ে-কাঁপিয়ে বিকট আওয়াজে হঠাৎ বিদ্যুৎচমক; আতঙ্কিত চিৎকারে মাইশা লুকিয়ে পড়লো সজীবের বুকের ভেতর৷ সজীবের অস্বাভাবিক হৃদকম্পনে কেঁপে কেঁপে উঠছে মাইশার বুক৷ মাইশার পিঠে সজীবের বাম হাতের নিরাপত্তাবলয়; ডান হাতে মাইশার মুখটা তুলে আলতো করে তার কপালে ছুঁয়ে দিল ঠোঁট৷ সাথে সাথে মাইশার মৃদু কণ্ঠস্বর— “কপালে চুমু দেয়ার মানে জানেন?” সজীবের ব্যস্ত ঠোঁট সে প্রশ্নের উত্তর দিতে বিচলিত নয়৷
মাইশা স্বাভাবিক; সে জানতো এ স্বপ্ন সত্যি তো হবেই, ভোররাতের স্বপ্ন সত্যি না হয়ে পারেই না৷ একটি দারুণ উত্তেজক সন্ধ্যার জন্য সে প্রস্তুত ছিল; বুকের মধ্যে সম্ভাব্য ঝড়ঝাপ্টার জন্যও৷ তার মনে হতে লাগলো— না, কিচ্ছু নেই; এ সুবিস্তৃত আকাশের নিচে তারা দুজন ছাড়া আর কিচ্ছু নেই, কেউ নেই৷ প্রবল অন্ধকারে বৃষ্টিজলে ধুয়ে গেল দ্বিধা, শরীরের সাথে লেপ্টে থাকা ভেজা কামিজে শরীরের স্পষ্ট স্পর্শ৷ হঠাৎ কানের পেছনে আঙুলের স্পর্শে সারা শরীরে শিহরণ, মাইশার অনিয়ন্ত্রিত শরীর একটি অবলম্বনের আকাঙ্ক্ষায় উন্মত্ত হয়ে মিশে গেল সজীবের গায়ে৷ কেউ নেই, কোথাও কেউ নেই; চাইলেই মেতে ওঠা যায় আদিম উন্মাদনায়৷ কে না জানে— শরীরের চেয়ে বড় কোনো সত্যি নেই, সত্যি নেই, সত্যি নেই!
হঠাৎ চোখ খুলে— সে কী, মধ্যরাত! চরম অবহেলায় পাশে পড়ে থাকা হাতঘড়িতে সময় রাত নয়টা বেজে একচল্লিশ; বৃষ্টিশেষের তুমুল ঠাণ্ডা হাওয়ায় দুজনের শরীর থেকে মুছে গেছে ভেজা ইতিহাস৷ মাইশা বললো, “এবার যেতে হবে৷ স্বপ্নটা বলবেন?”
“স্বপ্নে ছিলাম তুমি আর আমি; সাথে ছিল অন্ধকার, বৃষ্টি আর দুটো শরীর৷”
“চলেন ওঠা যাক৷”
“এখনই?”
“হ্যাঁ, ইতিহাস মুছে দিতে কিছুটা সময় লেগে যায়!”
তারপর ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে যাবো। আমার দেরি হবে আসতে। স্বামী অমর বলে, ঠিক আছে।…..
নভেম্বর চলছে। অনির সাথে আজ দেখা হবে তা জানাই ছিল। এই তো ক’দিন আগেই দেখা…..
বুড়িমাসি বলেন,জীবনটা বালির ঘর গো।ঢেউ এলে ধুয়ে যায় জীবনের মায়া।তবু বড় ভালবাসা ওদের দাম্পত্যে।রোদের চাদরের…..
এক ড্রইং রুমে বসে রয়েছে সদ্য কিশোর উত্তীর্ণ তরুণ গোয়েন্দা সজীব। সামনের টেবিলে ছড়িয়ে…..