দীর্ঘশ্বাস
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
নিজস্ব বিছানা রোদপোড়া মানুষের ঘাম শোষে প্রতিরাতে
ঘামের লবণ মাখে রমণবিলাসী আশ্রিত পাশবালিশ
দিনের ক্লান্তি মুছে চাদরের কোণে ঘনরাত বাঁধা পড়ে আবেশে
বিছানা রঙীন, ব্যক্তিগত, আপন হয় কাঙ্খিত আদরের বানে।
ক্লান্ত ভোর তবু গাঁটছড়া খুলে বিছানাকে ছেড়েদেয় সকালের রোদে
বিছানা তপ্ত হয় ধানক্ষেত মেঠোপথ অচেনা অলিগলি বেয়ে,
মাটিধ্বসা বারান্দা বাবুদের ঢেঁকিঘর চেনা বটতলাদের ছাড়িয়ে
বিছানা গোলক হয়, বিছানা গড়ায় পৃথিবীর আনাচে কানাচে।
২.
প্রতিটি সকালে বিছানা ছড়িয়ে যায় অনিঃশেষ পথে
মাঠঘাট খামার ফুটপাত বস্তি পেরিয়ে আরো বহু দূরে
শহুরে রাস্তার পাশে ফেলেরাখা বড় পাইপের ভেতর
কাতরতা চেপে বাচ্চা জন্মনেয় নিঃশব্দ নিজস্ব বিছানায়
ধানে দুধ আসে, মাচানে মাথা রেখে চিচিঙ্গা আরামে শোয়
কাগজ কুড়ুনি হাতরুটি সেঁকে বাজারের ভাঙা দোকানের কোণে
কুকুর ছানারা শীতরাতে বিছানা পাতে উষ্ণ ছাইয়ের গাদায়।
৩.
অনুমিত রাতের বিছানায় নরমে রেখেছি হাত
সব-সব কথাদের জমাকৃত ব্যথাদের বুঝে নিয়ে
নিজহাতে শুইয়ে দিই আশ্চর্য নরম বিছানায়,
আমার ঘুমের ফাঁকে কথারা পাকখায় মেঝেতে কার্নিসে
আরো দূর ধানক্ষেত ঝোপঝাড় চেনাদেশ পেরিয়ে
পাক খেতে খেতে শেষে ঘুরে নেয় তারাদের দেশ,
তারারা আলসে বিছানা ঝেড়ে উঠে বসে রাতে
তারপর ব্যথাদের হাত ধরে বিছানায় ফেরে কথা,
কথাদের গলা ভাঙে রাতজাগা খালাসির মত
বেদনে সৃজনে ছড়ানো সময়, বিছানা ব্যক্তিগত।
ভালো নেই ভালো নেই ধূসর সন্ধ্যা বিষণ্ন বিকেল, চারিপাশ ভালো নেই কফির কাপ পথের ধুলো…..
প্রেমের কবিতা যা কিছু পাষাণ, মনে হয় আঁশ বটিতে কুচি-কুচি করে কাটি পালানো ঘাতক সময়…..
তর্জমা স্নানে শুচি হবার পর বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নিচে দোলনাচেয়ারে ছড়িয়ে বসা কিছুটা…..
হয়তো একদিন অস্তিত্বে খুঁজে আত্মপরিচয় নিভৃতে অপেক্ষার প্রহরে এ মন ভালোবাসার রূপালী আলোয় রাঙা মুখ…..