ব্রতী মুখোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা

ব্রতী মুখোপাধ্যায়
কবিতা
Bengali
ব্রতী মুখোপাধ্যায়ের দুটি কবিতা

এক্ষুণি ছিলাম আর এক্ষুনি নেই, যে মুহূর্তে সত্যি এমনধারা দুষ্টুমিময় তড়িততারে শেষদফা লেজ দুলিয়ে বুকের নিচে নীল দেখিয়ে পাখি উড়ে গেল, মুহূর্তটি পুড়ে গেল খুব সম্ভব নাবুনিয়াদি ভোরবেলার সূর্যছোঁয়ায় সোনা হয়ে হয়ে

বুক থেকে নেমে যেতেই বিষণ্ণমুখ শূন্য নিরবয়ব হই আয় হাতছানি দিল, আর তাতেই লাল হলুদ শ্যাম রঙের চিঠির পর চিঠি সামনেই মেলা, অবেলায় দেখা যখন যা খিলখিল হাসি গাইল অকালের শিরীষ, নাহলে আঙুলগুলোয় যদি ছাড়বই না ছিল, জলের নাম দেয়াল বলে আরশিআঁখি ধরা পড়েনি

পড়ার টেবিলে মেঘদূত যেই আমি গীতগোবিন্দ শেষ করেছি সকাল করেই ঘোলাটে আঁধার বিছিয়ে দিয়ে কার্তিকেও মেঘ, যাওয়ার পর ফিরে আসে না অমিছে না জেনেবুঝেও যায় কেন জিগগেস করলে ওইরকম নিচের ঠোঁটের ডানদিক করে কাঁদোকাঁদো যে প্রিয়তিল সেখানটায় দোলনমতো কিছু, একটুখনই

দুষ্টুমিও ইচ্ছেবশ না বলুক আর না বলুক, বুক থেকে নেমে যাওয়াও ইচ্ছেবশ না বলুক আর না বলুক, কাঁদলেই দেখা গেছে এগিয়ে আসে কোমলতম আঁচল, আর একটি রাত্রির আশীর্বাদ পাব ভেবে পশ্চিমেই চেয়ে থাকি, ধানজমি গাছগাছালি ঘরবাড়ি পথঘাট শেষ হতেই আছি এবং নেই নিয়ে মধুর ভেতর বিষ আর বিষের ভেতর মধু নিয়ে আ মরে যাই আমার নিশব্দ ফুলখালি

দুই.

নদীও শুকিয়ে যায়
চোখের জল!
কিচ্ছু বলে না,
থাক সঙ্গে যে কদিন সাধ

লাগছে আরশিআরশি চেয়ে ফুলখালির ছেঁড়া বোষ্টুমি
দিনের বেলা হাতের কাজ, ছোটাছুটি, স্বজনবন্ধু, এই ওই সেই
দিনের বেলা, সব কিছু দিনের বেলা যেমন

রজনী
রজনীর গন্ধ ঠোঁট ছুঁয়ে
নীলরঙের আগুন, তার ভেতর একটুখানি লালগোলাপের মধু
তার ভেতর একটুখানি ঝালরদোলানো ব্যথা
বলা নেই কওয়া নেই পোড়ায়

পুরাতন বাদামি দুপুর, মাধবীসন্ধেরা
পায়ে পায়ে পাশাপাশি স্পষ্ট
ফুল্লরা, প্রফুল্ল চোখ, স্পর্শ

ঘুম আসে না, ছায়া ছায়া ছায়া
শিরীষগাছের ফুলপল্লব জানে, ভোরবেলা ঘাসবিছনার রোদ অব্দি জানে
মোছেইনি
কবে
একটিমাত্র কলম দিয়ে দুজন কী যে লিখেছিলাম

সারাদিন যেমনতেমন,
মরে যাব, মাগো, রাত নিলাজ যদি।

এই বিভাগের অন্যান্য লেখাসমূহ